পর্ব ১০
জীবনরেখা
চোখ খুলতেই দেখলাম তীব্র সাদা আলোয় ঘরটা যেন ভেসে যাচ্ছে। উপরে ধবধবে সাদা ছাদ, চারিদিকে একই রকম সাদা দেয়াল। প্রথমে বুঝতেই পারিনি এ আমি কোথায় এলাম।
—আপনার ঘুম ভাঙল?
এক মায়াবী কণ্ঠ ভেসে এল কানে। চোখ তুলে তাকাতেই মাথার কাছে দাঁড়ানো এক সুন্দর মুখ ভেসে উঠল। অল্প বয়সী। সাদা পোশাক পরা মেয়েটাকে দেখে বুঝলাম আমি হাসপাতালে কোথাও। ওকে দেখে মনে হল ও যেন আমার জেগে ওঠার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। জানি না কেন যেন ওকে দেখে প্রথমেই মনে হল ছবি তোলার কথা। কেন বলতে পারব না। আসলে ওই সময় আমি যা যা করেছি এখন সব কিছুই কেমন যেন আবছা আবছা লাগছে আর তার চেয়েও বড় কথা ঠিক কেন এমন করলাম তার কারণ বুঝতে পারছি না।
—আপনি উঠতে পারবেন?
—হুম।
যদিও শিওর ছিলাম না। মনে হচ্ছিল আর-একটু ঘুমুলে মন্দ হয় না। তবুও কেন যেন বললাম পারব।
—আমি কোথায়?
—চার তলায়।
এর আগে এখানে আমি কখনও আসিনি। কীভাবে এলাম সেটাও জানি না।
—আপনি উঠে পোশাকটা পরতে পারবেন?
—ঠিক আছে।
আমার গায়ে ছিল সোয়েটার। পরনে ওদের দেওয়া সাময়িক একটা হাফপ্যান্ট। আমাকে ওটা খুলে নিজের প্যান্ট পরতে হবে। আমি ওর দিকে তাকালাম। যেন বলতে চাইলাম ও ঘর থেকে চলে গেলে আমার সুবিধা হবে।
—কোনও অসুবিধা নেই। আপনি চেঞ্জ করুন।
ওর কথায় বুঝলাম আমাকে ওর সামনেই চেঞ্জ করতে হবে, আমাকে একা রেখে ও যাবে না। চেঞ্জ করে তৈরি হলাম।
—আপনি ওইইয়াইয়িতে মানে জেআইএনআর-এ কাজ করেন?
—হ্যাঁ।
—ইন্ডিয়া থেকে?
—না। আমি বাংলাদেশ থেকে। আপনি দুবনার?
—না, আমি কিম্রি থেকে। শুনেছেন সেই শহরের কথা?
—হ্যাঁ। গেছিও কয়েক বার। ছবি তুলেছি। মাঝেমধ্যে এক-আধটু ছবিও তুলি।
আমি নিজেই বলতে পারব না কেন এটা বললাম।
—আমিও ছবি তুলি। আর পোজ দিতেও পছন্দ করি।
জানি না ও কী বলতে চাইল আর আমিই বা কী বুঝলাম। কী মনে করে ভিজিটিং কার্ড ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললাম,
—ছবি তোলার ইচ্ছে হলে ফোন করবেন। চেষ্টা করব তুলতে।
—ঠিক আছে। আপনি নিজে যেতে পারবেন নাকি আমি ধরব?
—না, ধরার দরকার নেই। চলুন।
এরপর ও আমাকে লিফটে করে নীচে নিয়ে এল। ঠিক যে রুমটায় আমার অপারেশন হয়েছিল সেখানে বসিয়ে রেখে চলে গেল। আমার জানা হল না ওর নাম। এমনকি এখন ওর মুখটা পর্যন্ত মনে করতে পারছি না।
এটা ঘটেছে ১০ মার্চ। বলতে গেলে জীবনের প্রথম অপারেশন। সেই ১৯৯৫ থেকে ইএনটি স্পেশালিস্ট আমাকে বলছেন নাকের অপারেশনটা করিয়ে নিতে। শ্বাস নিতে একটু কষ্ট হয়। তবুও রাজি হইনি। কেমন যেন ভয় করে। এখন মনে হল অপারেশনে ভয়ের কিছু নেই। সময় করে নাকটাকে মানুষ করতে হবে।
অসুখ বিসুখের সঙ্গে আমার বরাবরই বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান, যদিও শান্তিপূর্ণ বলা কঠিন। এমনকি ওদের জন্য শরীরে একটা রেস্ট হাউজ খুলেছি। যার যখন প্রয়োজন এসে থেকে যায় কিছু দিন। তবে এবার কেন যেন কয়েকটা অসুখ জেঁকে বসেছে, কিছুতেই যেতে চাইছে না। সমস্যা হল ওরা বেশি আরাম পেলে আমার ব্যারাম বাড়ে। এখানেও সেই নিত্যতার সূত্রই কাজ করে। অসুখের ভূত তাড়াতে তাই ডাকতে হল কবিরাজ মানে ডাক্তার। সঙ্গে সঙ্গে কিছু চেকআপ। সেখানেই পলিপের দর্শন, বায়োপসি ইত্যাদি। প্রথম টেস্ট করল ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালবাসা দিবসে। জীবনে এই প্রথম জেনারেল এনেস্থিসিয়া। সেদিন অবশ্য ঘুম ভাঙে একতলায়, পরিচিতা মহিলার ডাকে। তাই ভড়কে যাইনি। বললেন ভয়ের কিছু নেই। দশ দিন পরে বাইয়োপসির রেজাল্ট দেবে। তারপর ঠিক করতে হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
আসলে কয়েক মাস ধরেই একটু অস্বস্তি অনুভব করছিলাম। তাই একটু টেনশন যে ছিল না তা নয়। যাহোক এখন অপেক্ষা ছাড়া কিছুই করার নেই। বাসায় অবশ্য কিছু বলিনি। সাধারণত আমার অসুখ-বিসুখ হলে নিজে ডাক্তারের কাছে চলে যাই। এসব সমস্যা সমাধান করার জন্যই তো ডাক্তার। তাছাড়া আমার স্ত্রী ডাক্তারদের দুচোখে দেখতে পারে না। সন্তান প্রসব ছাড়া অন্য কোনও কারণে ডাক্তারদের কাছে যেতেই চায় না। আমি ঠিক উল্টো। তাই আমার চিকিৎসাপত্র সব নিজের দায়িত্বে। দরকার না হলে জানাইও না। এবার সেভা বেড়াতে এলে কথায় কথায় ওকে বললাম।
—বায়োপসি কী জন্যে?
—অঙ্কোলজিক্যাল সমস্যা মানে ক্যান্সার কিনা সেটা জানার জন্য।
—হুম। যদি তেমন কিছু হয়?
—আমার তো কখনও নামীদামি অসুখ হয়নি। হলে গর্ব করতে পারব।
আমরা দুজনে এ নিয়ে একটু হাসাহাসি করলাম। গুলিয়া একটু গম্ভীর হয়ে গেল। ফ্যামিলি গ্রুপে লিখলে আন্তন জানতে চাইল এখন কেমন আছি। ক্রিস্টিনা লিখল,
—কিছু হলে জানিও। আমি পিতেরবুরগ থেকে চলে আসব।
মনিকা এ নিয়ে কিছুই লিখল না।
২৪ তারিখে রেজাল্ট দেবার কথা ছিল, তবে যিনি সেটা করবেন তিনি অসুস্থ থাকায় ডেট পিছিয়ে গেল। বলল ২ মার্চ যোগাযোগ করতে। ২৮ ফেব্রুয়ারি আমার ক্লাস ছিল। ২৭ তারিখ গেলাম মস্কো। মনিকাকে ঠাট্টা করে বললাম,
—এখন থেকে তুই হবি বাসার প্রধান। সব দায়িত্ব তো তোর ওপরেই পড়বে।
—তোমার সব ব্যাপারে হাসিঠাট্টা না করলেই নয়।
—ঠাট্টার কী আছে। যদি তেমন কিছু হয় তোকেই তো দায়িত্ব নিতে হবে।
পরের দিন ক্লাস শেষে বাসায় ফিরলাম। আমার গাড়ি রাত ৮টায়। মনিকাকে লিখলাম আমি বেরুচ্ছি।
—আমি চলে আসব। একটু অপেক্ষা করো।
জামাকাপড় পরতে পরতে মনিকা চলে এল। দেখলাম ও পোশাক বদলায়নি। সেভা জিজ্ঞেস করল,
—মনিকা তুই কোথায় যাবি?
—দেখি ময়লাটা ফেলে আসি আর পাপাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
আমি একটু অবাকই হলাম। বাসা থেকে বেরিয়েই দেখি ওর চোখে জল।
—তুমি না থাকলে আমরাও থাকব না।
—আচ্ছা, এখনও তো কিছু হয়নি। প্রথমত এটা একটা টেস্ট। যদি খারাপ কিছু হয় চিকিৎসা করা যাবে। এত ঘাবড়ানোর কী আছে?
—ওই যে তুমি বললে?
—আমি ঠাট্টা করলাম। যা বাসায় যা। পরশু রেজাল্ট দেবে। তখন দেখা যাবে কী করা যায়।
আসলে আমার এই ঠাট্টা যে মনিকাকে এতটা ভাবিয়ে তুলবে সেটা কখনও ভাবিনি। এই প্রথম নিজেও একটু সিরিয়াস হলাম বায়োপসির রেজাল্টের ব্যাপারে। দুই তারিখে যখন সেটা আনতে গেলাম ডাক্তার বললেন,
—ভয়ের কোনও কারণ নেই। আর কয়েকটা পলিপ আছে, সেগুলো রিমুভ করব। এরপর আবার বছরখানেক পরে দেখাতে হবে। আপনি ফর্মালিটিগুলো তাড়াতাড়ি শেষ করুন, আমি অপেক্ষা করব।
আমি এটা জেনে প্রথমেই মনিকাকে লিখলাম,
—ভয়ের কিছু নেই। সব ঠিকঠাক। শুধু আর-একবার ডাক্তারের কাছে গিয়ে পলিপগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।
—ঠিক আছে।
একটা পাথর যেন বুক থেকে নেমে গেল।
আমার মনে পড়ল খোরশেদ ভাইয়ের কথা। উনি আমার বছর দশেকের সিনিয়র। মস্কোয় মেডিসিনে পড়াশুনা করে এখন আমেরিকায় আছেন। খুব আদর করতেন। আমাকে প্রায়ই বলতেন,
—অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়।
এটা অবশ্য তখনকার মস্কো জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভেবেছিলাম শেষমেশ একটা নামীদামি অসুখ এসে ভর করবে তাও হল না। যাকগে। কী আর করা। আমি জীবনে যতটা না ফল নিয়ে ভাবি তার চেয়ে বেশি ভাবি প্রক্রিয়া নিয়ে। ফটো তোলার সময়ও তাই। সেটা করতে গিয়ে যে উত্তেজনা, যে উৎসাহ সেটাই আমার বড় পাওয়া। ছবি খুব ভাল না হলেও এ নিয়ে মাথা ঘামাই না। একই কথা কাজের ক্ষেত্রে।
বেতনের চেয়েও কাজের আনন্দ আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে মেডিক্যাল টেস্টে একেবারেই উল্টো। না না, বলব না যে এখানে ফলাফল নিয়ে আমি চিন্তিত নই, তবে সেটা করার প্রস্তুতি খুবই বিরক্তিকর। এটা এবার আমি হাড়ে হাড়ে টের পেলাম।
অনেক আগে মৃত্যুকে খুব ভয় পেতাম। এতই ভয় পেতাম যে মরে মরেই বেঁচে থাকতাম। তারপর এদেশে পড়তে এসে ভয়টা অনেকটাই কমে যায়। সেটা নতুন করে শুরু হয় বাচ্চাদের জন্মের পরে। ওদের নিজেদের পায়ে দাঁড় না করিয়ে কি মরা যায়। বিশেষ করে নব্বুইয়ের দশকের আর এই শতাব্দীর প্রথম দিকে, যখন উগ্রবাদীদের প্রবল প্রতাপ ছিল তখন ঘর থেকে বাইরে বেরুতেই ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যেত। তবে কসমোলজির ভেতরে যতই ঢুকেছি নিজের ক্ষুদ্রতা ততই বিশাল হয়ে উঠেছে। আর এতে করে বেঁচে থাকার প্রতি অনীহা নয়, বেঁচে থাকার গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। আর গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকার সময় মৃত্যুকে আরও কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তাই এ নিয়ে এখন ভয়ভাবনা তেমন আর নেই। তাছাড়া আরও একটা জিনিস জানি, স্বপ্নের কোনও শেষ নেই, শেষ নেই পরিকল্পনার। এক সময় মনে হত এই এই জিনিস পেলেই জীবন সার্থক। এখন জানি, জীবনে কখনওই এমন দিন আসবে না, যেদিন বলতে পারব আমার আর কিছুই করার, কিছুই দেখার, কিছুই জানার বাকি নেই। মানে স্বপ্নটা সব সময় অপূর্ণই থেকে যাবে। আর তাই যদি হয় তাহলে জীবন নামে এই চলার পথ কখন আর কোথায় শেষ হবে এ নিয়ে ভাবা সময়ের অপচয়।
কথামত ২০ মার্চ আবার বায়োপসির রেজাল্ট দিল। সব ঠিকঠাক। আপাতত আবার কিছুদিন শান্তিতে ঘুমানো যাবে, লাকিলি সেটা রেস্ট ইন পিস হবে না। বাসায় সবাই খুব খুশি।
২৮ মার্চ আবার ক্লাস ছিল। ২৭ তারিখে মস্কো গেলাম। মনিকা আর সেভার সঙ্গে সময় কাটল ভালই। ওরাই আজকাল রান্না করে। আমি তাই বসে বসে টিভি দেখি বা বই পড়ি। গতকাল মানে ২৮ মার্চ দুবনায় রওনা হবার আগে টিভি দেখছিলাম। সেটা একটা টক শো। এখন টক শো মানেই ইউক্রেন নিয়ে কথা। সেভা পাশে বসে ছিল।
—তুমি এসব দেখে কী মজা পাও? কোনও সিনেমা দেখলেই তো পারো।
—আমি তো মজা পাওয়ার জন্য দেখি না। কিছু ইনফরমেশন নেই।
—কিন্তু এখানে তো অনেক ভুলভাল বলে। প্রোপ্যাগান্ডা।
—না রে। প্রত্যেকেই আমরা কোনও না কোনও কিছু দেখে নিজের মত করে ইন্টারপ্রেট করি। বলার সময় কেউ এক বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়, অন্য লোক অন্য বিষয়ে। আমার কাজ শুধু তথ্য জানা ওদের ইন্টারপ্রিটেশন বাদ দিয়ে। আমি তো শুধু ওদের দেখি না, অন্য বিভিন্ন মাধ্যম থেকেও খবর নিই।
—এসব জেনে কী হয়?
—মাঝেমধ্যে এ নিয়ে লিখি।
—কোথায়?
—বাংলাদেশের পত্রিকায়।
—পয়সা নাও না নিশ্চয়ই।
—না।
—সেটাই ভাল। তুমি এমনি এমনি ছবি তোলো বলে ছবি খুব ভাল হয়।
—হ্যাঁ। পেশা হলে ভালবাসা থাকে না। আর ভালবেসে কিছু না করলে সেটা ভাল হয় না।
—কিন্তু এই যে এত তথ্য জানো এটা তোমাকে আপসেট করে না।
—না। আমি চেষ্টা করি শুধু দরকারি তথ্যটা নিজের ভেতর রাখতে। যেটা দরকার নেই সেটা নিয়ে খুব একটা না ভাবতে।
—আমি এটা খেয়াল করেছি।
—কী?
—তুমি সহজে আপসেট হও না।
সেভার সঙ্গে আমার অনেক ক্ষেত্রেই মিল আছে। তবে অমিল অনেক। আমি আর যাই করি একাডেমিক পড়াশুনা খুব সিরিয়াসলি করতাম। ও এসব একেবারেই পছন্দ করে না। পড়ে যখন যেটা ভাল লাগে। বর্তমানে একাডেমিক লেখাপড়া অবশ্য আগের মত নেই। এখন অনেকে ভার্সিটি পাশ করেও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, আবার অনেকেই ফর্মাল পড়াশুনা না করে নিজের ইচ্ছেমত কোনও কোর্স করে ঠিক চলে যায়। এতে সুবিধা হল নিজের ভাল লাগাটা নিজের ইচ্ছেমত কাজে লাগানো যায়। তবে এটা সব সময়ই ছিল। প্রতিভা থাকলে রবীন্দ্রনাথদের কেউ আটকে রাখতে পারে না, না থাকলে হাজারটা ডিগ্রিও কোনও কাজে আসে না। সেভা আমাকে প্রায়ই এসব বোঝানোর চেষ্টা করে। নিজের মত করে যুক্তি দেখায়। আমি শুনি। হাসি। কিছু বলি না। সব সময় যে ভুলভাল বলে তা কিন্তু নয়, তবে বাবা হিসেবে আমাকে একটা প্ল্যান বি রাখতেই হয়। তবে চেষ্টা করি নিজের মত এমনভাবে বলতে যাতে ও না ভাবে আমি ওর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি। কারণ কেউ নিজে থেকে গ্রহণ না করলে চাপিয়ে দেওয়া যুক্তি কখনও কোনও কাজে আসে না।
দুবনা, ০৪ জুলাই ২০২২
চিত্র: লেখক
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ১
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ২
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৩
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৪
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৫
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৬
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৭
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৮
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ৯
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ১১
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ১২
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ১৩
রাশিয়ার চিরকুট পর্ব ১৪