Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

অপ্রকাশিত রচনা: বিনয় মজুমদার

বিশ্ব এবং অন্যান্য প্রাণীরা

প্রমাণ করো যে বিশ্বকে গিলে খাওয়ার মত
অত বড় জীব নেই। সেই জীবের কাছে পুরো
বিশ্বটা রসগোল্লার মত ছোট। তোমাকে পাঁচ
মিনিট সময় দিলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রমাণ
করো। আমি মিনিট পাঁচেক এ প্রসঙ্গ আর না বলে
চারপাশে যারা লোকজন এসেছিল আড্ডা দিতে
তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললাম। পাঁচ মিনিট চলে গেল।
শেষে বললাম, প্রমাণ করতে পেরেছ কি?
রসগোল্লার মত বিশ্বকে গিলে খেতে পারে না।
এত বড় প্রাণী নাও থাকতে পারে। কিন্তু যাকে জিজ্ঞাসা
করেছিলাম বিশ্বকে গিলে খাওয়ার মত অত বড়
প্রাণী থাকা অসম্ভব, একথা প্রমাণ করতে
পারল না লোকটি। তখন আমি বললাম, তাই
যদি হয় তবে বিশ্বকে গিলে খাওয়ার
মত বিশাল প্রাণী থাকা সম্ভব।
ঠিক বলেছি তো? জবাবে লোকটি বলল,
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। বিশ্বকে গিলে খাওয়ার
মত প্রাণী থাকা সম্ভব।

আর যা সম্ভব সেটা মাঝে মাঝে ঘটে। এখান
থেকে চাঁদপাড়া সাইকেলে যাওয়া সম্ভব।
সম্ভব যদি হয় তবে সাইকেলে চড়ে
দু-একজন চাঁদপাড়া যায়। সাইকেলে চড়ে
চাঁদপাড়া যাওয়া অসম্ভব, এটা তো তুমি
প্রমাণ করতে পারছ না। যা সম্ভব তা মাঝে মাঝে
ঘটে। বিশ্বকে গিলে খাওয়ার মত বিশাল আকারের
প্রাণীরা রয়েছে।

[৩০/০৭/২০০৬]

লাঠি

আমার হাতের লাঠিখানা
দিয়েছিল বিষ্ণুপদ বালা;
পেশায় সে ডাক্তার এবং
সুযোগ পেলেই কিছু কবিতাও লেখে।
বর্তমানে আমি বসে আছি সেই
কবি বিষ্ণুপদ বালার ঘরেই।
বিষ্ণু তো আমাকে বলে যে সাদা কাগজ দেখলেই
কবিতা লেখার ইচ্ছে করে।
কলম তো তার হাতের কাছেই থাকে। ফলেই—
আমাকে সে বলল যে, কবিতা বলুন—
আমার কাগজে আমি লিখে নিই সে কবিতাটিকে।
ফলে আমি মুখ তো খুলেছি, কবিতাই বলে যাচ্ছি তার
অনুরোধমত, আমার জিজ্ঞাসা হল, আমি
এখানে আসার আগে কোনও কবিই এসেছিল কি না
জবাবে সে বলল যে, না কেউ আসেনি।

আমার হাতের লাঠিখানা আমাকে যে
কতবার সমূহ পতন থেকে বাঁচিয়েছে তার
হিসাব দেওয়াই কষ্ট। একটু আগেই রেললাইনের পাশ দিয়ে
হাঁটবার কালে একবার বেঁচে গেছি এই লাঠিখানার দৌলতে।

[০৮/০৮/২০০৬]

* কবি বিষ্ণুপদ বালার ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
Advertisement
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Asim Das
Asim Das
2 years ago

অসাধারণ। এক নিপুণ শিল্পত্ব আড়াল করে কবি বিনয় তাঁর শেষ লেখা গুলোকে আদর দিয়ে গেছেন।

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

স্বামী বিবেকানন্দ : প্রয়াণদিনে স্মরণ

বিবেকানন্দই সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক বাঙালি তথা ভারতীয়। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ১৯১২-পর্বে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাওয়ার পর, এবং তার পরের বছর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু এর প্রায় কুড়ি বছর পূর্বেই বিবেকানন্দ শিকাগো-বক্তৃতা ও আমেরিকা-ইয়োরোপে এক নাগাড়ে প্রথম দফায় চার বছর থাকার সুবাদে আমেরিকার বিদ্বজ্জনমহলে যেমন, তেমনই জার্মানির মাক্সমুলার, ফ্রান্সের রোমাঁ রোলাঁ, রাশিয়ার টলস্টয় প্রমুখের শ্রদ্ধা এবং মনোযোগ আদায় করেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

প্রফুল্ল রায়: ব্রাত্য সময়ের কথাকার

প্রফুল্ল রায় নাকি অতীশ দীপঙ্করের বংশের। দেশভাগের অভিশাপেই দেশছাড়া হতে হয় তাঁকে, ১৯৫০-এ। একটা বিধুর বিষয় আমরা লক্ষ্য না করে পারি না। দেশভাগ সুনীল-শ্যামল-মহাশ্বেতা-শীর্ষেন্দু-অতীনদের কেবল ভূমিচ্যুত করেই ছাড়ল না, এমনকি তাঁদের কারুবাসনাকেও অন্যতর রূপ দেওয়ালো। দেশভাগ না হলে আমরা সুনীলের হাতে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, শীর্ষেন্দুর ‘দূরবীণ’ বা প্রফুল্ল রায়ের ‘পূর্বপার্বতী’ পেতাম না, যেমন পেতাম না শওকত ওসমানের ‘কর্ণফুলি’ বা হাসান আজিজুল হকের ‘আগুনপাখি।’

Read More »
শৌনক দত্ত

মন্দ মেয়ে ভদ্র অভিনেত্রী: সুকুমারী দত্ত

বিনোদিনী দাসীর বর্ণময় জীবনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া এই ‘তারকা অভিনেত্রী’-র বহুমাত্রিক জীবনটিও কম রঙিন নয় বরং বিস্মৃত নক্ষত্র এক, যিনি ১২৮২ বঙ্গাব্দের ৩ শ্রাবণ (১৮৭৫ খ্রি., মূল্য ছিল ১ টাকা) ‘অপূর্ব্বসতী’ নাটকটি লিখে বাংলা নাট্যাতিহাসের প্রথম নারী নাট্যকার হিসেবে সুবিদিত হয়ে আছেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

আষাঢ়স্য প্রথম দিবস ও কালিদাস

পণ্ডিতেরা তর্ক তুলেছেন, কালিদাস ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ লেখেননি৷ কেননা একেবারে পয়লা আষাঢ়েই যে মেঘ নেমে বৃষ্টি আসবে, তা হয় না। তাঁদের মতে, ওটা আষাঢ়ের শেষদিন, ‘আষাঢ়স্য প্রশম দিবস’ হবে। কিন্তু প্রথম দিবস-ই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এবং তা এতটাই যে, কালিদাসকে নিয়ে ভারত সরকার যে ডাকটিকিট বের করেছে, সেখানে ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবসে’ শ্লোকটি উৎকীর্ণ।

Read More »
রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »