Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

‘গালিলেও-র জীবন’-কে যেভাবে দেখাতে চেয়েছেন বের্টল্ট ব্রেশট্

এরিক বেন্টলি একবার বলেছিলেন, ‘নাট্য-সমালোচনার একটা প্রকাশ্য গুপ্তকথা এই যে, ঐতিহাসিক নাটক অনৈতিহাসিকই হয়।’ ব্রের্টল্ট ব্রেশট্‌-এর একটি বিখ্যাত নাটক ‘গালিলেও-র জীবন’। সারা পৃথিবীর বহুভাষায় বহু প্রযোজনা হয়েছে নাটকটির। বাংলায় কলকাতা নাট্যকেন্দ্র আর বহুরূপীর প্রযোজনা দুটিও বিখ্যাত। কিন্তু ব্রেশট্‌-এর ওই নাটক দেখে কেউ যদি ভাবেন যে গালিলেও-র জীবন ও কাজ সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানলেন তাহলে ভুল হবে। সে-নাটকের অনেক কিছুর সঙ্গেই ঐতিহাসিক তথ্যর বিরোধ আছে। নাটকটি ঠিক জীবনীমূলক নাটকও নয়, বরং একে দার্শনিক নাটক বলা যেতে পারে।

তো সেই নাটকটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে লেখা রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্যর কতকগুলি প্রবন্ধের একটি সংকলন “বের্টল্ট ব্রেশট্‌-এর ‘গালিলেও-র জীবন’”। বইটিতে নাটকটির বিভিন্ন প্রযোজনা নিয়ে একটি পরিশিষ্ট লিখেছেন শুভেন্দু সরকার।

ব্রেশট্‌-এর এপিক থিয়েটার-এর একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল চেনাকে অচেনা করে হাজির করা, ‘গালিলেও-র জীবন’-ও তার ব্যতিক্রম নয়। না, এই নাটকে নাট্যকার একেবারেই গালিলেও-কে নায়ক হিসেবে দর্শকের কাছে হাজির করতে চাননি, বরং উল্টোটাই নাট্যকারের উদ্দেশ্য। গালিলেও-কে দোষী সাব্যস্ত করাই ছিল নাট্যকারের উদ্দেশ্য। সূর্য নয়, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘুরছে— কোপারনিকাসের এই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করেও গালিলেও যেভাবে পরে পেছু হঠেছেন, স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তিনি ভুল বলেছিলেন বলে, ব্যর্থ হয়েছেন জিওদার্নো ব্রুনো-র মত সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব নিয়ে বৈপ্লবিক ভূমিকা পালন করতে সেটি তুলে ধরাই ছিল নাট্যকার ব্রেশট্‌-এর লক্ষ্য। গালিলেও-র এই পিছিয়ে আসা যে জনমানসে যুক্তি আর বিজ্ঞানবোধের বিকাশে আবারও এক বাধার সৃষ্টি করল এই ছিল তাঁর নাটকের বক্তব্য।

নাটকটি প্রথমে জার্মানে লেখা হয় ১৯৩৮ সালে। সেই প্রথম পাঠের ব্রেশট্‌-এর কোনও ভূমিকা ছাড়াই জুরিখে নাটকটির একটি প্রযোজনা হয়েছিল ১৯৪৩-এ । তারপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এ চার্লস লটন ও ব্রেশট্‌-এর যৌথতায় নাটকটির একটি ইংরেজি অনুবাদ প্রযোজিত হয় ১৯৪৭-এ। কিন্তু প্রথম পাঠের চেয়ে তা অনেকটাই আলাদা। আবার পরে কোলন এবং বার্লিনে নাটকটির তৃতীয় পাঠ তৈরি করেন ব্রেশট্‌, তাতেও দ্বিতীয় পাঠের থেকে কিছু বদল আসে। ১৯৫৭-য় সেই নাটকের প্রথম প্রযোজনা হয় ব্রেশট্‌-এর মৃত্যুর পরে। নাৎসি জমানার উত্থানের পর থেকে দেশছাড়া ব্রেশট্‌-কে নিরাপত্তার কারণে ঘুরে বেড়াতে হয় ইউরোপের নানান দেশে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সবশেষে তিনি ফিরে আসেন সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানিতে। নাটকটির তিনটি পাঠে তাই সমসাময়িক যুগের ছাপ পড়েছে। বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের পরে ব্রেশট্‌-এর চোখে গালিলেও হয়ে পড়েছিলেন আরও বড় দোষী। গালিলেও যেন চিহ্নিত হন আধুনিক বিজ্ঞান জগতের আদিপাপী হিসেবে।

রামকৃষ্ণবাবুর কথায়, “যুক্তির জন্যে, সত্যের জন্যে, অবাধে বিজ্ঞানচর্চার দাবি কায়েম করার জন্যে গালিলেও লড়েন নি— এই ছিল, প্রথম পাঠে, গালিলেও-র পাপ। এবার তার সঙ্গে আর-এক পাপ যুক্ত হলো। এই ‘অতি নতুন’ যুগে [দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর সময়ে] যে বিজ্ঞানীরা দেখা দিলেন— ‘আবিষ্কারকুশলী বামনদের বংশ, যে কোনো বাবদে যাদের ভাড়া করা যাবে’— বিদ্বান্‌ বুদ্ধিমান কৃতী কিন্তু নীতিহীন মনুষ্যত্ববর্জিত জীব— জনসাধারণের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন— তাদেরও দায় চাপল গালিলেও-র ঘাড়ে।”

এখানে এসেছে বিজ্ঞানকৈবল্যর কথা। কলাকৈবল্যর মতই বিজ্ঞানের জন্যেই বিজ্ঞানের কাজ করে চলা, মানুষের কথা মাথায় না রেখেই। ব্রেশট্‌-কে ভাবিয়েছিল এই বিজ্ঞানকৈবল্যর ব্যাপারটাই। এর রূপ যে কত মারাত্মক হতে পারে তার নির্দশন তখন হিরোশিমা-নাগাসাকির পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ। ব্রেশট্‌ একটা সুতো দেখাতে চেয়েছিলেন। গালিলেও-র পৃথিবী-কেন্দ্রিক ধারণার তত্ত্ব থেকে পিছিয়ে আসাই যেন কর্তৃপক্ষর কাছে মুক্তচিন্তার পরাজয়, মানুষের কাছ থেকে সরে এসে বিজ্ঞানীদের দাসত্ববৃত্তির শুরু। নাটকে গালিলেও-কে ব্রেশট্‌ এমনই এক নেতিবাচক রঙে আঁকতে চেয়েছিলেন, কোনও মহানুভবতার রঙে নয়।

কিন্তু মজাটা হল, নাটকটির সবক’টি প্রযোজনাই কিন্তু খোদ নাট্যকারকেই একেবারে ক্লিন বোল্ড করে দিল। এমনকি যে প্রযোজনাগুলিতে ব্রেশট্‌ স্বয়ং যুক্ত ছিলেন সেগুলোও নাট্যকারের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে দিল। ‘গালিলেও-র জীবন’ দেখে যুগে যুগে দেশে দেশে দর্শকরা কিন্তু গালিলেও-র প্রতি সহানুভূতিশীলই হলেন, কোনও নেতিবাচক দিক নয় গালিলেও-র মহত্বই যেন উদ্ভাসিত হল দর্শকদের মনে। ‘গালিলেও-র জীবন’ কালজয়ী নাটক হিসেবে চিহ্নিত হল কিন্তু নাট্যকারের উদ্দেশ্য হল সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এর কারণ কী? সে নিয়েই বইটিতে এসেছে নানান আগ্রহ-জাগানো আলোচনা। ব্রেশট্‌ নিজেই বিভিন্ন দৃশ্যে গালিলেওকে এমনভাবে গড়েছিলেন যে পরে স্রেফ ভাল খাওয়া-পরার লোভেই গালিলেও আপস করলেন সে-কথা বলতে চাইলেও দর্শকমনে গালিলেওকে নিয়ে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হল না। এপিক থিয়েটারের জনক দর্শককে ভাবাতে চাইলেন কিন্তু নাটক দেখে দর্শক ভেসে গেলেন সমানুভূতির বন্যায়।

নাটকটির বিভিন্ন প্রযোজনার খুঁটিনাটি, রিভিউ ইত্যাদি ধরে ধরে আলোচনা এগিয়েছে, বিশেষত আমেরিকা ও বার্লিনের প্রযোজনা নিয়ে বিশদে তুলনামূলক আলোচনা রয়েছে। বাংলা প্রযোজনাগুলি নিয়েও আলোচনা আছে। নাট্যকার কী চেয়েছিলেন, সেগুলোর প্রমাণ হিসেবে এসেছে ব্রেশট্‌-এর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার, নাটকটির ভূমিকায় তাঁর বক্তব্য, টেপরেকর্ডারে ধরে রাখা নাটকটির মহলায় ব্রেশট্-এর নানান মন্তব্য। আসলে নাট্যকার আর দর্শকের মাঝে আরও অনেকে থাকেন, পরিচালক, অভিনেতা ইত্যাদিরা। এঁদের প্রভাবেও নাট্যকারের কথা বদলে পৌঁছতে পারে দর্শকদের কাছে। লেখা নাটক আর অভিনীত নাটকের মধ্যে অনেকটা বদল যেন অনিবার্য।

এপিক থিয়েটার-এর আর-একটা বৈশিষ্ট্য হল এর দৃশ্যগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠে। তবু কীভাবে কতগুলো ছোট ছোট প্রতীক ব্যবহার করে ব্রেশট্‌ ‘গালিলেও-র জীবন’-এ দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটা যোগসূত্র রচনা করেছিলেন তা নিয়ে একটি চমৎকার আলোচনা আছে বইটির একটা অধ্যায়ে। সংলাপে দুধের দামের প্রসঙ্গ এনে, কিংবা গালিলেও-র কাছে রাখা একটি ছোট পাথরকে ব্যবহার করে কীভাবে ব্রেশট্‌ কাজটি করেছিলেন সেটির বিশদ ব্যাখ্যা রয়েছে বইটিতে।

‘গালিলেও-র জীবন’ নাটকটিতে তো গালিলেও নায়ক নন, তবে সেই নাটকের নায়ক কে? ভালটের বেনিয়ামিন বলেছিলেন, এই নাটকের নায়ক জনগণ। গালিলেও, সূর্যকেন্দ্রিক পৃথিবীর ধারণা আর চার্চ ও বিজ্ঞানের সংঘাতে জনগণের ভূমিকা কোথায়? সে নিয়ে একটি অধ্যায় রয়েছে বইটিতে। সূর্য না পৃথিবী কে কার চারদিকে ঘুরছে তার প্রমাণ-অপ্রমাণে তো দুধের দাম কমে না কিংবা জলপাইচাষির দুরবস্থা দূর হয় না। কিন্তু গালিলেও তাঁর সূর্যকেন্দ্রিক বইটি এলিটীয় লাতিনে না লিখে চাষি, মেছুনিদের ভাষা ইতালীয়তেই লিখেছিলেন। দূরবীন ঘুরছিল হাতে হাতে। আর হেটো আলোচনাতেও উঠে আসছিল সূর্যকেন্দ্রিক ধারণার কথা। ঈশ্বর আর ধর্মগ্রন্থর ওপরে নির্ভর করে যে মানুষগুলো সমস্ত পার্থিব দুঃখকষ্ট মেনে নিচ্ছিলেন, শিরোমণিদের চাবুকের সামনে নতজানু হয়ে পেতে দিচ্ছিলেন পিঠ— সেই তাঁরাও গালিলেও-র বই থেকে জানতে পারছিলেন ধর্মগ্রন্থ ভুল, ব্রহ্মাণ্ড পরিচালনায় ঈশ্বরের কোনও ভূমিকা নেই, সূর্য নিছকই এক লিভার যা কিনা পৃথিবীকে ঘোরাচ্ছে। ধর্মবিশ্বাসের এই টলে যাওয়াটাতেই ভয় পেয়েছিল চার্চ তথা কর্তৃপক্ষ। ব্রহ্মাণ্ডে ঈশ্বরের ভূমিকা অস্বীকার করতে শিখলে পৃথিবীতে শিরোমণিদের ভূমিকা অস্বীকার করতে কতক্ষণ? তাই গালিলেও-র বিরুদ্ধে ইনকুইজিশন। আর একটু সুখে থাকার লোভে গালিলেও-র পিছিয়ে আসা— যা নষ্ট করে দেয় ব্রহ্মাণ্ড তথা পৃথিবীতে কর্তৃত্ব অস্বীকার করার সোনালি সম্ভাবনাকে। আর সেই সূত্রেই ব্রেশট্‌ গালিলেও-কে দোষী সাব্যস্ত করেন।

বইটিতে অনেকক’টি দুষ্প্রাপ্য ছবি আছে নাটকটির বিভিন্ন প্রযোজনার। ঝকঝকে ছাপা সুখপাঠ্য একটি বই। অবশ্যই সংগ্রহযোগ্য।

বের্টল্ট ব্রেশট্‌-এর ‘গালিলেও-র জীবন’।। রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য।। পুনশ্চ

সুকুমার অনুরাগীরা প্রবন্ধগুলি পড়লে উপকৃতই হবেন

‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ’ বিকৃতি, চার্বাকদের হেয় করতে

মার্কসীয় নন্দনতত্ত্ব কোন মাপকাঠিতে শিল্পসাহিত্যকে বিচার করে

শুধুই প্রকৃতিপ্রেমী নন, বাস্তববাদেরও নিখুঁত শিল্পী বিভূতিভূষণ

ধর্ম কেন নিজেকে ‘বিজ্ঞান’ প্রমাণে মরিয়া

ভারতের ঐতিহ্যর অন্যতম শরিক বস্তুবাদী চার্বাক দর্শন

হে মহাজীবন, আর এ তত্ত্ব নয়

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের এক বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
J.Ghosh
J.Ghosh
3 years ago

অসাধারণ ?

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »