Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

সুকুমার অনুরাগীরা প্রবন্ধগুলি পড়লে উপকৃতই হবেন

সুকুমার পর্ব

বইটিতে সুকুমার রায়কে নিয়ে চারটি প্রবন্ধ আছে। সুকুমার অনুরাগীদের কাছে সেগুলি অবশ্যপাঠ্য হওয়া উচিত। প্রথম প্রবন্ধ, ‘সুকুমার রায়ের য র ল ব হ’ রামকৃষ্ণবাবু শুরু করেছেন এইভাবে, ‘সুকুমার রায় নিয়ে প্রবন্ধ? ব্যাপারটাই হাস্যকর। চেস্টারটন একবার বলেছিলেন: বেচারা, বেচারা ছোট্ট অ্যালিস, তাকে ধরে শুধু পড়ানোই হচ্ছে না, মাস্টারিও করানো হচ্ছে। পরীক্ষায় প্রশ্ন আসবে: নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সম্বন্ধে যাহা জান লিখ: মিম্‌সি, গিম্বল, …; টুইডিলডাম ও টুইডিলডি-র পার্থক্য কী? ইত্যাদি ইত্যাদি। সুকুমার রায় নিয়ে কিছু লিখলে— প্রবন্ধ না-বলে যদি আলোচনাও বলি— এ রকম ঠাট্টা শুনতে হতে পারে। সে-ঝুঁকি নিয়েও ব্যাপারটা একবার ভালো করে দেখা যাক।’
লেখক সুকুমার রায়ের সাহিত্যকে ঠিক কী চোখে দেখেন?
‘কতক শিশু-সাহিত্যিক আছেন যাঁদের নাম শিশু-সাহিত্যের এলাকাতেই আটকে থাকে। আর কতক লেখক— যাঁরা ‘ক্লাসিক’ নামের অধিকারী— ঐ গণ্ডী ছাড়িয়ে আবালবৃদ্ধ সকলের মুখে মুখে ফেরেন। পৃথিবীতে অবশ্য এ জাতের লেখক মেরেকেটে এক ডজনের বেশি পাওয়া যাবে না। তাঁদেরই একজন সুকুমার রায়।’
সুকুমার রায়কে ননসেন্স, আজগুবি সাহিত্যকার হিসেবেই দেখার একটা চল আছে। ছন্দ আর অর্থহীন মজা। আদৌ কি তাই? লীলা মজুমদার লিখেছেন, ‘সব চাইতে মজার কথা হল সুকুমার রায় নিজে কখনও এমন একটি পদও রচনা করেন নি, যাতে অর্থ এবং রস দুই-ই নেই।’ তিনি আরও লেখেন, ‘অর্থের বাঁধন কেটে দিলে কি অনর্থের সৃষ্টি হতে পারে তাই নিয়েই তাঁর একটি নাটিকা রচিত হয়েছিল।’ এখানে ‘শ্রীশ্রীশব্দকল্পদ্রুম’ নাটকের কথা বলা হচ্ছে। ‘ভাবুক সভা’-তেও সে-কথা আছে।
রামকৃষ্ণবাবু দেখিয়েছেন নিছক আজগুবি নয়, সুকুমার রায়ের ননসেন্স সাহিত্য আসলে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গবিদ্রূপের খনি। ‘শ্রীশ্রীশব্দকল্পদ্রুম’, ‘ভাবুক সভা’ কিংবা ‘চলচিত্তচঞ্চরি’— ‘তিনটি নাটকেই খুব হালকাভাবে একদল লোককে নিয়ে মজা করা হয়েছে।’ কাদের নিয়ে? লেখকের মতে, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ আর শান্তিনিকেতন ব্রহ্মাচর্যাশ্রম-এর লোকজনদের নিয়ে। ‘‘সুকুমার রায় নিজে রবীন্দ্রনাথের অনুরাগী হলেও এই ‘রাবীন্দ্রিক’ ঢংগুলো দুচক্ষে দেখতে পারতেন না। ‘ভাবুক সভা’য় ভাবের নামতা শুনে রবীন্দ্রনাথ সুকুমার রায়কে বলেছিলেন, এ তুমি আমাকে উদ্দেশ করেই লিখেছ।”
কিংবা ‘লক্ষ্মণের শক্তিশেল’? রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য লিখছেন, ‘‘মাইকেল আর রামকে নিয়ে কী করেছিলেন? বড় জোর একটু ভীতু আর কাঁদুনে স্বভাব। সুকুমার রায়ের রাম, সব শেষে, কিছু না করে, হনুমান-বিভীষণ-সুগ্রীব আর জাম্বুবানের মতো নিজের কোলে ঝোল টানতে ব্যস্ত। রাবণ তো পরিষ্কার লক্ষ্মণের ‘পকেট লুণ্ঠন’ করে। বজরঙ্গবলী হনুমান যেমন আস্ত বকশিশখোর, কলা বা বাতাসা না-দিলে গতর নাড়ে না।”
‘হ য ব র ল’ তো আদালতকে চরমতম বিদ্রূপ।
এবং ‘আবোল-তাবোল’। বইটির নাম আর ‘নাইকো মানে নাইকো সুর’-এর জন্যেই বোধহয় বইটি ননসেন্স, আজগুবি সাহিত্যর আওতায় চলে গেছে। বাচ্চারা সেটা পড়ে খুব মজা পায় ঠিকই কিন্তু ‘একুশে আইন’ কি নিছকই শিশুসাহিত্য? কিংবা ‘ট্যাঁশগরু’ অথবা ‘সৎপাত্র’, ‘রামগরুড়ের ছানা’ ইত্যাদিরা। রামকৃষ্ণবাবু দেখিয়েছেন সুকুমার রায়ের কবিতায়, এবং কিছু কিছু গল্পেও, সবচেয়ে উদ্ভট চরিত্র হচ্ছে রাজা। বোম্বাগড়ের রাজা কিংবা ‘দ্রিঘাংচু’-র রাজা, বেলতলার রাজা বা ‘গন্ধবিচার’-এর রাজা— সকলেই ‘সপরিবার সপারিষদ পাগল।’ এমনভাবে বারবার রাজাদের উন্মাদ সাজানো কি স্রেফ আজগুবি সাহিত্যসৃষ্টির লক্ষ্যে?

রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য উদাহরণ দিয়ে দিয়ে দেখিয়েছেন ক্যারল-এর এর থেকে কর্জ করা হলেও সুকুমার রায়ের ‘খিচুড়ি’ কবিতার ‘হাঁসজারু’ ইত্যাদি জোড়কলমের শব্দগুলো ঠিক ক্যারলের পোর্টম্যান্টো বা তোরঙ্গ শব্দ নয়। ক্যারল শব্দ জুড়তেন অর্থ ধরে। সুকুমার জুড়তেন বর্ণ ধরে। হাঁস+সজারু= হাঁসজারু, হাতি+তিমি= হাতিমি। মানে একটা শব্দর শেষ বর্ণ আর অন্যটির শুরুর বর্ণ কমন। আজগুবির আবেগে এ কাজ হয় না, মগজের পরিশ্রম লাগে।
এমনকি সুকুমার রায়ের ইস্কুলের গল্পগুলোও তো উদ্দেশ্যমূলক। পাগলা দাশুকে দিয়ে বা অন্য কোনও উপায়ে চালিয়াত বা সবজান্তাদের শায়েস্তা করা, ফাঁকিবাজ, মারকুটে কিংবা অদ্ভুত চরিত্রর মাস্টারমশাইদের নিয়ে ব্যঙ্গ। এমনকি কিছু গল্প তো একেবারে নীতিবাদী। পাগলা দাশু নিয়ে লেখকের মন্তব্য, “মাঘ ১৩২৩-এ পাগলা দাশুর আগমন নয়— আবির্ভাব। মাত্র চারটি গল্পের সুবাদে (‘ডিটেকটিভ’ গল্পে দাশুর বিশেষ কোনো ভূমিকা নেই) এই ছোকরা বিশ্বসাহিত্যে পাকা জায়গা করে নিয়েছে।”
সুকুমার রায়ের সাহিত্য ছোটবেলায় পড়লে একরকম লাগবে। কিন্তু বুদ্ধি পাকলে সেখানে খুঁজে পাওয়া যাবে অনেক কিছু। যাকে কেবলই ননসেন্স আজগুবির লাইনে ফেলা যাবে না। এই প্রবন্ধে রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য সেই ভাবনারই খেই ধরিয়ে দেওয়ার কাজটি করেছেন।
পরের দুটি প্রবন্ধ, ‘সুকুমার রায়: মহত্তম অধমর্ণ’ ১ এবং ২। সুকুমার রায়ের সাহিত্যের মৌলিকতা ও প্রভাব নিয়ে আলোচনা। একটা ‘সটীক সুকুমার রায় সমগ্র’-র সলতে পাকানো যেন এ দুটো প্রবন্ধে করা হয়েছে। সংস্কৃত উদ্ধৃতির উৎস, প্যারডির সূত্র, ইত্যাদি নিয়ে এখানে আলোচনা আছে।
সাহিত্যে প্রভাব নিয়ে এই দুটি প্রবন্ধে খুব কাজের কিছু কথা আছে। এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, কোনও সাহিত্যিকের লেখা আগের বা সমসাময়িক অন্য কারুর সঙ্গে খানিক মিলে গেলেই ‘চোর চোর’ বলে চ্যাঁচানো। আগে কিন্তু এই সমস্যা ছিল না। ‘প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্যে— কী এদেশে কী ইওরোপ— এর পাট ছিল না। একই গল্প নিয়ে ডজন ডজন কাব্য লেখা হত… কেউ কারুর থেকে চুরি করেছেন— এমন নালিশ তো উঠত না… । শেক্সপিয়র-এর সব নাটকের আখ্যানই পরকীয়।’ প্রভাব শুধু প্লটেই থাকত না। এই বইতে রামকৃষ্ণবাবু একটি হিসেব দেখিয়েছেন, হিসেবটি করেছিলেন এডমন্ড ম্যালোন। শেক্সপিয়র-এর ‘ষষ্ঠ হেনরি’ নাটকের তিনটে পর্বে ৬০৪৩টি চরণের মধ্যে ১৭৭১টি তাঁর আগের কারও রচনা; আর মৌলিক রচনা হচ্ছে ১৮৯৯টি চরণ। বাকিগুলির পেছনে আছে অন্য লেখকদের প্রত্যক্ষ প্রভাব। সাহিত্য যত মহৎ সে তত তার আগের বা সমসাময়িক সাহিত্যর কাছে ঋণী— এমন বলাটাও বোধহয় অতিরঞ্জন হবে না। আসলে কপিরাইট নিয়ে ব্যবসাই প্রভাবকে চুরি বলে চালানো হালফ্যাশনের আসল কারণ।
অথচ সুকুমার রায়ের লেখায় প্রভাবের কথা তুললেই একদলের গোঁসা হয়, আর একদল নাক কুঁচকে বলেন, ‘বাংলার সব ভাল কাজই বিদেশিদের অনুকরণে’।
শেষ প্রবন্ধটি সুকুমার রায়ের অসমাপ্ত রচনা ‘বর্ণমালাতত্ত্ব’ প্রসঙ্গে।
রামকৃষ্ণবাবু দেখিয়েছেন সুকুমার রায়ের অদ্ভুর রসের কবিতাগুলি বাংলা সাহিত্যে একেবারেই মৌলিক। সুকুমার রায়ের আঁকা ‘আবোল-তাবোল’-এর ছবি নিয়েও আলোচনা আছে প্রবন্ধগুলিতে।
মোট কথা, সুকুমার অনুরাগীরা প্রবন্ধগুলি পড়লে উপকৃতই হবেন। বইটিতে ‘সুকুমার রায়’ পর্ব ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বেশ ক’টি পর্ব ভাগ করে আরও ২৭টি প্রবন্ধ আছে। সেগুলো স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অত্যন্ত মূল্যবান। সেগুলি নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। তবু শুধু ‘সুকুমার রায়’ পর্বটির চারটি প্রবন্ধর জন্যেও বইটি সংগ্রহযোগ্য।

নির্বাচিত নিবন্ধ ।। রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য ।। অনুষ্টুপ ।। ৩০০ টাকা

‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ’ বিকৃতি, চার্বাকদের হেয় করতে

মার্কসীয় নন্দনতত্ত্ব কোন মাপকাঠিতে শিল্পসাহিত্যকে বিচার করে

শুধুই প্রকৃতিপ্রেমী নন, বাস্তববাদেরও নিখুঁত শিল্পী বিভূতিভূষণ

ধর্ম কেন নিজেকে ‘বিজ্ঞান’ প্রমাণে মরিয়া

‘গালিলেও-র জীবন’-কে যেভাবে দেখাতে চেয়েছেন বের্টল্ট ব্রেশট্

ভারতের ঐতিহ্যর অন্যতম শরিক বস্তুবাদী চার্বাক দর্শন

হে মহাজীবন, আর এ তত্ত্ব নয়

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের এক বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

আষাঢ়স্য প্রথম দিবস ও কালিদাস

পণ্ডিতেরা তর্ক তুলেছেন, কালিদাস ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ লেখেননি৷ কেননা একেবারে পয়লা আষাঢ়েই যে মেঘ নেমে বৃষ্টি আসবে, তা হয় না। তাঁদের মতে, ওটা আষাঢ়ের শেষদিন, ‘আষাঢ়স্য প্রশম দিবস’ হবে। কিন্তু প্রথম দিবস-ই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এবং তা এতটাই যে, কালিদাসকে নিয়ে ভারত সরকার যে ডাকটিকিট বের করেছে, সেখানে ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবসে’ শ্লোকটি উৎকীর্ণ।

Read More »
রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সোমেন চন্দ: এক বহ্নিময় কথাকার

মাত্র সতের বছর বয়সে তিনি একটি উপন্যাস রচনায় হাত দিয়েছিলেন, যদিও তা অসমাপ্ত থাকে। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘বন্যা’। পরবর্তীকালে উপন্যাসটি অসমাপ্ত-ই থেকে যায়। আরও দুঃখের বিষয়, এর বৃহদংশ হারিয়েও গেছে। আজ যে সোমেন চন্দের লেখককৃতির জন্য আমরা তাঁকে স্মরণ করি, তা হল তাঁর বেশ কিছু অসামান্য ছোটগল্প। সংখ্যায় খুব বেশি নয়, মাত্র চব্বিশটি। আরও কিছু গল্প লিখলেও তা কালের ধুলোয় হারিয়ে গেছে। গল্পের সংখ্যা সামান্য, তবে অসামান্যতা রয়েছে সেগুলির রচনার পারিপাট্যে, বিষয়বস্তু চয়নে, শিল্পিত প্রকাশে ও লেখনীর মুনশিয়ানায়। এছাড়া তিনি দুটি নাটিকাও লেখেন, ‘বিপ্লব’ ও ‘প্রস্তাবনা’। লেখেন কিছু প্রবন্ধ। তাঁর ছোটগল্পগুলি এতটাই শিল্পোত্তীর্ণ ছিল যে, তাঁর জীবিতকালেই একাধিক ভাষায় তা অনূদিত হয়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »