Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

তন্ময় ভট্টাচার্যর কবিতাগুচ্ছ

কেরানি

মৃত্যু সেরে, কেউ কেউ ফিরে আসে আবারও ডেরায়
চাহনি স্মরণ করে, জমিয়ে সঙ্গম, শেষে রাত
ফুলকি দিতে-না-দিতে ঢোঁক গেলে, চিন্তামণি আলো
প্রবল বিপত্তি ঠেলে কেন যে পাতায় এসে পড়ে
মনে হয়, ছায়া দিয়ে ঢাকা ভাল আপাদমস্তক
আরও যৌথ অসম্ভব, একই অঙ্গে কী এত বিস্ময়
হায় লীলা রাধাকৃষ্ণ ছিল বটে কখনও টম্বুর
আজি শঙ্কা জাগে কাল মরিতে যাইতে পারিব তো

ফট্‌

আমার সমস্ত চিন্তা একপেশে। শামুকের মত।
সারা রাজ্য ঘুরে এসে, ঘরের বাইরে ঠিক থেমে যায়।
যত্ন নিয়ে ভাবে,
এবার আলাদা কিছু হবে না তো! তাহলে বরং
খানিক অপেক্ষা করি, উঁকি মেরে হাঁটাচলা দেখি—

হঠাৎ আটকে দিলে, ফ্রেমে চেপ্টে আজীবন দাগ হব কিনা

কতটা উঁচুতে গেলে
ছুঁড়বে, আঘাত লাগবে না

একদিন দেখা গেল, বুকে ধরে রাখতে না-পেরে
নিজেই নাগালে ভারী চলে আসছি

আমার সমস্ত ব্যথা তুমি যে ব্যথিত করে দেবে
সে-কথা জেনেও
মুখ নিয়ে যাচ্ছি, বারবার, রোদ ভাবছি বারান্দা এলেই

খোলস গুঁড়িয়ে দিলে
বুকে তো ঠেকাতে পারলে না!

কোথাও কারওর প্রতি সামান্য নালিশ লেখা নেই

যাওয়া-আসা

এভাবে দুয়ার বন্ধ জানালা বন্ধ আর খিড়কি বলতে কিছু নেই
পথে পড়ে রয়েছে সকাল

ফোঁটা ফোঁটা আলো যাচ্ছে যেদিকে বিদায়
দায়ী করে যায়নি, এবং

নিজে নিজে নেমে এসে শুয়ে আছে গাছের গোড়ায়
দু’চার লোকের ভিড়, খবর দেওয়া তো দরকার

কিন্তু বলবে কাকে
কী হবে, সবাই যদি জেনে যায়

কাল রাত্রে ছেড়ে আসা সম্পর্ক আমার

তাহলে উঠোনে মাটি চাপা দিই। লোকলজ্জা, ভয়…
কেউ পুঁছলে বলে দেব— বাড়ি গেছে, ক’দিন পরেই
ফিরবে। এর মধ্যে সামলে নেব সব

স্বাভাবিক হাসিঠাট্টা, যেন কেউ ছিল না কোথাও

ওদের পতঙ্গস্মৃতি, সহজেই ভুলে যাবে
নতুন সম্পর্ক এনে বসাতে চাইবে তারপর

মেনে নেওয়া ভাল, আমি আপত্তি করি না এসবের

আবার অনিষ্ট হবে। লোকালয়ে ছিছিক্কার—
মাটির গুরুত্ব বুঝে তুমিও কঙ্কাল হবে ফের

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
মণিশংকর বিশ্বাস
মণিশংকর বিশ্বাস
2 years ago

‘মৃত্যু সেরে’! অসামান্য কবিতাগুচ্ছ!

Recent Posts

কাজী তানভীর হোসেন

ধানমন্ডিতে পলাশী, ৫-ই আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কয়েকদিন ধরে যা ঘটেছিল, তা শুরু থেকেই গণআন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পরিণত হয়েছিল। আজ আমরা কার্যক্রম দেখেই চিনে যাই ঘটনাটি কারা ঘটাচ্ছে। আগুন আর অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব রয়েছে বিএনপি-জামাত ও রোহিঙ্গাদের। তারা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা করে না।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

আমরা বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিলাম, যাঁকে খুব সঙ্গত কারণেই ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ বলা হয়। পেয়েছি প্রফুল্লচন্দ্র সেন ও অজয় মুখোপাধ্যায়ের মতো স্বার্থত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী। এবং জ্যোতি বসুর মতো সম্ভ্রান্ত, বিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখর কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ছিলেন বুদ্ধদেব। কেননা তাঁর মতো সংস্কৃতিমনা, দেশবিদেশের শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক সম্পর্কে সর্বদা অবহিত, এককথায় এক আধুনিক বিশ্বনাগরিক মানুষ পাইনি। এখানেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনন্যতা।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর দুটি কবিতা

তারার আলো লাগে না ভাল, বিজলীবাতি ঘরে/ জ্বালাই তাই অন্তহীন, একলা দিন কাটে/ চেতনা সব হয় নীরব, বেদনা ঝরে পড়ে/ যজ্ঞবেদী সাজানো থাকে, জ্বলে না তাতে ধূপ/ রাখে না পদচিহ্ন কেউ ঘরের চৌকাঠে/ শরীরে ভয়, নারীরা নয় এখন অপরূপ/ তারারা সব নিঝুম ঘুমে, চাঁদের নেই দেখা/ অর্ধমৃত, কাটাই শীত ও গ্রীষ্ম একা একা

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বিশ্বকর্মার ব্রতকথা

বিশ্বকর্মা পুজোতেও কেউ কেউ বিশ্বকর্মার ব্রত পালন করে থাকেন। এমনিতে বিশ্বকর্মা যেহেতু স্থাপত্য ও কারিগরির দেবতা, তাই কলকারখানাতেই এই দেবতার পুজো হয়ে থাকে। সেখানে ব্রতকথার স্থান নেই। আবার কোন অলৌকিক কারণে এবং কবে থেকে যে এদিন ঘুড়িখেলার চল হয়েছে জানা নেই। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শহর ও গ্রামের আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ও নানা আকৃতির ঘুড়িতে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

উত্তমকুমার কখনও বাংলাদেশে পা রাখেননি!

ভাবতে অবাক লাগে, ‘৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ উত্তমকুমারকে অভিনয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি। টালিগঞ্জের কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছিলেন সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে। অন্যদিকে ববিতা, অলিভিয়া ও আরও কেউ কেউ টলিউডের ছবিতে কাজ করেছেন। ঋত্বিক ঘটক, রাজেন তরফদার ও পরে গৌতম ঘোষ ছবি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশে এসে, কিন্তু উত্তমকুমারকে আহ্বান করার অবকাশ হয়নি এখানকার ছবি-করিয়েদের।

Read More »