Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

বালি ও ফেনা: পঞ্চম কিস্তি

কাহলিল জিব্রান

ভাষান্তর: অনিন্দিতা মণ্ডল

৮৭

ওরা বলে পাখিটি বুকে কাঁটা নিয়ে প্রেমের গান গেয়েছিল। আমরাও তো তাই গাই। এছাড়া আর কীভাবেই বা প্রেমের গান গাইব।

৮৮

প্রতিভা হল ধীর-লয়ে বসন্তের প্রবেশ মাত্রই কোকিলের গানের মতো।

৮৯

কেউ যতই মুক্ত হোন না কেন দেহের প্রয়োজন থেকে মুক্তি নেই।

৯০

আমার বা তোমার থেকে একজন উন্মাদ কখনওই কম সঙ্গীতজ্ঞ নয়। তফাৎ শুধু এই যে তাঁর বাদ্যযন্ত্রগুলি সুরে বাঁধা নেই।

৯১

মায়ের হৃদয়ের গান শিশুর ঠোঁট গায়।

৯২

কোনও আকাঙ্ক্ষাই অপূর্ণ থাকে না।

৯৩

আমি নিজের অপরসত্ত্বার সঙ্গে কখনওই একমত হইনি। সত্য যেন আমাদের মধ্যে থেকেই যায়।

৯৪

তোমার অন্যসত্ত্বা সবসময়ই তোমার জন্য দুঃখিত। আমার দুঃখই তোমার সেই সত্ত্বাকে পুষ্ট করে। অতএব এ মঙ্গলদায়ক।

৯৫

দেহ ও আত্মায় প্রকৃতপক্ষে কোনও বিবাদ নেই। শুধু, যাদের আত্মা নিদ্রিত ও দেহ বেসুরো, তাদের মনেই বিবাদ।

৯৬

জীবনের অন্তরে প্রবেশ করলে সমস্তই সুন্দর দেখবে। এমনকি সুন্দর দেখতে অপারগ এমন অন্ধ চোখের মধ্যেও সুন্দরকে খুঁজে পাবে।

৯৭

আমরা সুন্দরকে আবিষ্কার করতেই বেঁচে থাকি। বাকি সবই সেই অপেক্ষার রূপ।

৯৮

একটি বীজ বপন করো, ধরিত্রী তোমাকে একটি ফুল দেবে। স্বপ্নকে আকাশে পাঠাও। সে তোমাকে তোমার প্রিয়তমকে দেবে।

৯৯

যেদিন তুমি জন্মালে সেদিনই শয়তান মরল। সুতরাং দেবদূতের দেখা পেতে তোমাকে আর নরকের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না।

১০০

বহু নারী পুরুষের হৃদয় বাঁধে। খুব কমই তাকে ধারণ করতে পারে।

১০১

যা তোমার আছে তাকেই আবার চেয়ো না।

১০২

যখন একটি পুরুষের হাত একটি নারীর হাত ছুঁয়েছে তখন তারা দুজনেই স্বর্গ ছুঁয়েছে।

১০৩

প্রেমিক ও প্রেমিকার মাঝে ভালবাসা একটি স্বচ্ছ ওড়না।

১০৪

প্রতিটি পুরুষ দুটি নারীকে ভালবাসে। একটি তার কল্পনায় সৃষ্ট। অপরটি এখনও জন্মায়নি।

১০৫

যে পুরুষ নারীর সহস্র তুচ্ছ দোষকে ক্ষমা করতে পারে না, সে তার মহৎ গুণগুলির রস গ্রহণ করতে পারে না।

১০৬

ভালবাসা যদি প্রতিদিন নতুন না হয়ে ওঠে তবে তা অভ্যাসে পরিণত হয়, এবং তারপর দাসত্বে।

১০৭

দুজন প্রেমিক একে অপরকে আলিঙ্গন করে না, করে তাদের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকে যা, তাকে।

>>> ক্রমশ >>>
চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়

***

লেখক পরিচিতি

কাহলিল জিব্রান (Kahlil Gibran) একজন লেবানিজ-আমেরিকান কবি, শিল্পী ও দার্শনিক। ১৮৮৩ সালে লেবাননে জন্ম। বাল্য কেটেছে জন্মভূমিতে। আমেরিকার বোস্টনে আসেন কৈশোরে। আবার লেবাননে শিক্ষালাভ করতে যান। তাঁর দর্শনে মধ্যপ্রাচ্যের সুফী ভাবধারার স্পষ্ট ছাপ। সুফী মরমিয়াদের মতই তাঁর দর্শনে বালির ধারা যেন প্রাণের ধারা। প্রাচ্য দর্শনের মধ্যে ইসলামের একেশ্বরবাদের সঙ্গে ঔপনিষদিক দর্শনের প্রভাবও দেখতে পাওয়া যায়। তিনি আরবি ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই লিখেছেন। তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘দ্য প্রফেট’ প্রকাশ হয় ১৯২৩ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রকাশিত এই লেখাটির মধ্যে প্রচলিত পাশ্চাত্য দর্শনের বিপ্রতীপ একটি কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছিল। প্রফেটের সমগোত্রীয় লেখা ‘স্যান্ড অ্যান্ড ফোম’। দর্শনকাব্য বলা চলে। পুস্তকের অলংকরণ তাঁর নিজের করা। এটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত।

আরও পড়ুন…

বালি ও ফেনা প্রথম কিস্তি

বালি ও ফেনা: দ্বিতীয় কিস্তি

বালি ও ফেনা: তৃতীয় কিস্তি

বালি ও ফেনা: চতুর্থ কিস্তি

5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
নুশান
নুশান
1 year ago

চমৎকৃত হয়ে পড়ি, বালি ও ফেনা কিস্তিগুলো।

Recent Posts

কাজী তানভীর হোসেন

ধানমন্ডিতে পলাশী, ৫-ই আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কয়েকদিন ধরে যা ঘটেছিল, তা শুরু থেকেই গণআন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পরিণত হয়েছিল। আজ আমরা কার্যক্রম দেখেই চিনে যাই ঘটনাটি কারা ঘটাচ্ছে। আগুন আর অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব রয়েছে বিএনপি-জামাত ও রোহিঙ্গাদের। তারা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা করে না।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

আমরা বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিলাম, যাঁকে খুব সঙ্গত কারণেই ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ বলা হয়। পেয়েছি প্রফুল্লচন্দ্র সেন ও অজয় মুখোপাধ্যায়ের মতো স্বার্থত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী। এবং জ্যোতি বসুর মতো সম্ভ্রান্ত, বিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখর কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ছিলেন বুদ্ধদেব। কেননা তাঁর মতো সংস্কৃতিমনা, দেশবিদেশের শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক সম্পর্কে সর্বদা অবহিত, এককথায় এক আধুনিক বিশ্বনাগরিক মানুষ পাইনি। এখানেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনন্যতা।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর দুটি কবিতা

তারার আলো লাগে না ভাল, বিজলীবাতি ঘরে/ জ্বালাই তাই অন্তহীন, একলা দিন কাটে/ চেতনা সব হয় নীরব, বেদনা ঝরে পড়ে/ যজ্ঞবেদী সাজানো থাকে, জ্বলে না তাতে ধূপ/ রাখে না পদচিহ্ন কেউ ঘরের চৌকাঠে/ শরীরে ভয়, নারীরা নয় এখন অপরূপ/ তারারা সব নিঝুম ঘুমে, চাঁদের নেই দেখা/ অর্ধমৃত, কাটাই শীত ও গ্রীষ্ম একা একা

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বিশ্বকর্মার ব্রতকথা

বিশ্বকর্মা পুজোতেও কেউ কেউ বিশ্বকর্মার ব্রত পালন করে থাকেন। এমনিতে বিশ্বকর্মা যেহেতু স্থাপত্য ও কারিগরির দেবতা, তাই কলকারখানাতেই এই দেবতার পুজো হয়ে থাকে। সেখানে ব্রতকথার স্থান নেই। আবার কোন অলৌকিক কারণে এবং কবে থেকে যে এদিন ঘুড়িখেলার চল হয়েছে জানা নেই। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শহর ও গ্রামের আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ও নানা আকৃতির ঘুড়িতে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

উত্তমকুমার কখনও বাংলাদেশে পা রাখেননি!

ভাবতে অবাক লাগে, ‘৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ উত্তমকুমারকে অভিনয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি। টালিগঞ্জের কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছিলেন সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে। অন্যদিকে ববিতা, অলিভিয়া ও আরও কেউ কেউ টলিউডের ছবিতে কাজ করেছেন। ঋত্বিক ঘটক, রাজেন তরফদার ও পরে গৌতম ঘোষ ছবি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশে এসে, কিন্তু উত্তমকুমারকে আহ্বান করার অবকাশ হয়নি এখানকার ছবি-করিয়েদের।

Read More »