‘আর একটু জোরে টাইনে চালা লিটন, পৌনে সাতডার ডাউন ট্রেনডা ধরতি না পারলি ক্ষতি হইয়ে যাবেনে মেলা।’
লিটনের উদ্দেশে কথা ছুড়ে দিয়ে পান মুখে দিল শিখা। মাটির রাস্তার ওপর সবে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। বর্ষার জল পড়ে মাটি জায়গায় জায়গায় বসে গেছে। লিটন গায়ের শক্তি দিয়ে ভ্যান টানতেই খই ফোটার মতো জলকাদা ছিটতে লাগল। কিছুদূর যেতে পিচের রাস্তায় উঠে ভ্যান স্টেশনের দিকে ছুটল। ভ্যানের যাত্রী দুজন। দুজনেই মহিলা। একজন মালতি, অন্যজনের নাম শিখা। দুজনেই ওপার বাংলা থেকে শেকড় ছিঁড়ে এদেশে এসেছে খুব বেশিদিন হয়নি। মালতি চল্লিশের কোঠা পার হওয়া শীর্ণকায়া আর শিখাকে দেখে বোঝার উপায় নেই। সে যেন স্থিরযৌবনা, সুন্দরী না হলেও আলগা একটা চটক আছে তার মুখে। জীবিকার জন্য যে পথ সে বেছে নিয়েছে, সে পথের অলিতে গলিতে তার চাহানেওয়ালার অভাব নেই। শয়তানগুলোর মুখে সবসময় যেন লালা ঝরছে। কিন্তু শিখা? সে চায় নিখিলকে, সে যে তার জোড়ের পাখি।
চল্লিশ ছুঁই ছুঁই নিখিল। পেটানো চেহারা। মাথার চুল পাতিয়ে আঁচড়ায়। চুলের মধ্যে সমুদ্রের ঢেউ। বেশ লাগে শিখার। নিখিলকে সে কখনওই জোরে কথা বলতে শোনেনি। মাঝে মাঝে অবাক হয় শিখা, কী করে এই লাইনে এতদিন টিকে আছে সে? হারামিগুলো যা জিনিস সব এক একটা। সেবার মার্কেটে যে ঘটনা ঘটল এখনও মনে আছে শিখার। মালতি, লিটনের বউ বেবি আর সে মিলে মোট ছ’শো আঠারো পিস মাল নিয়েছিল। ময়ূখলাল মাল গুনেটুনে বলল, ‘ছ’শো তিন পিস মাল আছে।’
ছ’শো তিন পিস শুনেই শিখার মাথায় আগুন ধরে যায়। সে বলে, ‘হারামের মাল নাকি রে ময়ূখলাল? রাখ সব মাল, তোর কাছে ব্যাচব না।’
শিখার সেদিনের সেই ভয়ংকর রূপ আজও মনে আছে ময়ূখলালের। পরে সে নিখিলের কাছে বলেছিল, ‘নিখিলদা, তোমার শিখা তো একদম বিজলী আছে!’ শুনে শিখা মনে মনে বলে, ‘শালা, বিজলী না হলি পনেরো পিস মাল হাঁসে খেইত।’
স্টেশন আসতেই দুজনে নেমে সাইকেল গ্যারাজের পাশ দিয়ে এগিয়ে একটা ঝুপড়ির মধ্যে প্রবেশ করল। সেখানে নিখিল মাল নিয়ে অপেক্ষা করছে। মালতি ভেতরে ঢুকেই কয়েক পিস মাল কোমরে জড়িয়ে নিয়ে তার ওপর দিয়ে শাড়িটা পরে শিখার দিকে তাকাল। ইশারায় তাকে এগিয়ে যেতে বলে নিজের মালের ব্যাগ নিয়ে বের হবার আগে নিখিলের উদ্দেশে বলল, ‘আইজ শুক্কুরবার, রাতির শোয়ে সিনেমা দেখতি যাব কিন্তু, মনে থাকে যেন কথাডা।’ নিখিল হেসে সম্মতি জানায়।
পিঠে এবং হাতে করে দুটি ব্যাগ নিয়ে সে হনহন করে হেঁটে প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে চলল। কিছুদূর যেতে নজরে এল শিখা মণিপুরী নৃত্যশিল্পীদের মতোই এগিয়ে চলেছে। পৌঁছে দুজনে মিলে ডাউন ট্রেনে চড়ে বসল।
এভাবেই চলছিল বেশ। মাঝেমধ্যে পুলিশি ঝামেলা তো ছিলই। এর মধ্যে একদিন তো বেশ ঝামেলাতেই পড়তে হয়েছিল শিখাকে। থানার মেজবাবুর অবশ্য কোনও দোষ ছিল না। যত দোষ শালা এই বাঁজা শরীরটার। উদয়াস্ত হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও শরীরে মাতলা নদীর মতো যৌবনের কলকলানি যে!
শিখা আর মালতি মাঝেমধ্যে একটুআধটু নেশা করত। সেদিন নাইট শো সিনেমা দেখে ফেরার পথে সাধনের দোকান থেকে দুটো পেপসি খেয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ফিরছিল। কাঁচা রাস্তায় ভ্যান ঘুরতেই ব্যাস। লাঠি উঁচিয়ে ভ্যান দাঁড় করিয়ে শুরু হল জেরা করা। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল শিখার। মেজবাবুর গলা শুনতে পাওয়া গেল। লাঠিধারী পুলিশটা তাকে মেজবাবুর কাছে যেতে বলল। শিখা ভ্যান থেকে নামতে গিয়ে টাল সামলাতে না পেরে পুলিশটার গায়ের ওপর পড়ল। বিরক্ত হয়ে পুলিশটা বলল, ‘স্যার, একেবারে মাতাল!’
মেজবাবু বললেন, ‘নিয়ে আয় এখানে।’
পুলিশটার কাঁধে ভর দিয়ে জিপের কাছে পৌঁছে গাড়িতে ঠেস দিয়ে দাঁড়াল। কিছু সময় পর সে অনুভব করল, একটি অভিজ্ঞ শক্ত হাত তার শরীরের বিশেষ বিশেষ স্থানে ঘুরছে। নেশার ঘোরে প্রথমটায় বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে দেরি হল না শিখার। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা কেসে ধরে নিয়ে আটকে দেবে, সেই ভয়ে সে কোনও শব্দ করতে পারল না।
অনেকদিন তার শরীরের একান্ত গোপন ইচ্ছেগুলো ঘুমিয়েছিল। ওইদিনের ঘটনার পর শিখার মনে হল একটা পুরুষ সঙ্গী দরকার। নিখিলকে নিয়ে নানারকম ভাবনা তার মনে ভিড় করতে লাগল। রাতে শোবার আগে সে মালতিকে মনের কথা জানাল। সব শুনে মালতি বলল, ‘শুনিছি, ওদেশে সংসার আছে।’ এ কথা শুনে শিখা বলল, ‘আমরা ধোয়া তুলসীপাতা নাকি?’ একথা বলে শাড়ির আঁচল আঙুলে প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে বলল, ‘আসল কথা কি বল দিনি? একজন জোড় সঙ্গী না থাকলি, জীবনের স্বাদ-আহ্লাদ পূরণ হয় না। জীবন তো একটাই বল? এই জীবনে আনন্দের সময়টুকু চলে গেলি বাকি সময় তো রোগবালাই নিয়ে কাইটে যাবেনে। তহন মনের মানুষের জন্য কপাল চাপড়ালি কপাল ব্যথা ছাড়া কিছু হবে নানে। তাই যা করতি হবে তাড়াতাড়ি।’ মালতি সব শুনে বলল, ‘তাড়াতাড়ি করতি তো হবে, কিন্তু নিখিলরি রাজি করাতি হবে তো!’ শিখা জলভরা চোখে মালতির হাতদুটি চেপে ধরে বলল, ‘তুই ছাড়া আমার আর কেডা আছে বল? তুই ওরে ঠিক রাজি করাতি পারবি।’
ওদেশে থাকতেই মালতি শিখাকে খুব স্নেহ করত। সন্তান না হওয়ার কারণে স্বামীর ঘরে শিখার লাঞ্ছনার শেষ ছিল না। যেদিন তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরে নতুন বউ এনে শিখাকে চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে বের করে দিয়েছিল, সেদিন মালতিই গোপনে আশ্রয় দিয়েছিল। আজও মালতি শিখাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে বলল, ‘কাইল তো কাজ নেই, কাইল-ই ধরতি হবে। কোথায় পাব তারে?’ শিখা উত্তর দিল, ‘কাইল বিকেলে বাসস্ট্যান্ডে, বিশুর চা-র দোকানে পাওয়া যাবে।’
পরের দিন বিকেলের দিকে বৃষ্টির মধ্যে বিশুর চায়ের দোকানের সামনে এসে লিটনের ভ্যান থেকে নামল মালতি। নিখিল বেঞ্চিতে বসে চায়ের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। মালতি কাছে যেতে গ্লাসের তলানিটা বাইরে ছুড়ে বিড়ির দুদিকে ফুঁ দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল নিখিল, ‘কোথাও গিয়েছিলে নাকি?’ হাতের ভেজা ছাতাটা দোকানের একপাশে নামিয়ে মালতি বলল, ‘না, তোমার কাছেই আসলাম।’ মালতিকে বসার জায়গা দিতে বেঞ্চের একপাশে সরে যেতে যেতে নিখিল বলল, ‘আমার কাছে! ঠিক আছে, আগে বসে চা খাও।’ মালতি নিখিলের পাশে গিয়ে বসল। নিখিল বিশুকে বলল, ‘বিশু, সুন্দর করে একটা দুধ-চা আর দুটো টোস্ট দে।’
মালতি বলল, ‘না না টোস্ট খাব না। চা দিলিই হবেনে।’
বিশু চায়ের গ্লাস মালতির সামনে রেখে চলে গেল। মালতি লক্ষ্য করল বর্ষার কারণে দোকানে ভিড় কম। সে চায়ের গ্লাসে চুমুক দিতে, নিখিল জানতে চাইল, ‘বর্ষা মাথায় আমার কাছে, কী ব্যাপার বলো তো মালতিদি?’
মালতি কোনও ভনিতা না করেই বলল, ‘ও তো তোমারে নিয়ে ঘর বাঁধতি চায়।’
পোড়া বিড়ি বৃষ্টির জলে ছুড়ে দিয়ে মালতির দিকে তাকিয়ে নিখিল বলল, ‘কী বলছ তুমি!’
‘কাইল রাতির বেলায় আমার হাতদুটো ধইরে কান্নাকাটি করে বলল, তোমারে না পালি সে বাঁচপে না।’
মালতির কথা শুনে নিখিলের ওপার বাংলার পূর্বগাঁয়ের কথা মনে পড়ে গেল। ছোট্ট একটি গ্রাম। শীলবাড়ির ছেলে সে। একই স্কুলে ওরা পড়ত। পড়ার সময় লক্ষ্য করত, মেয়েটা ওকে দেখলেই কেমন সুন্দর করে তাকাত। সেও মিষ্টি করে হাসত। দুই ক্লাস পর্যন্ত মেয়েটিকে দেখেছিল। তারপর অনেক বছর পর গঞ্জে যাওয়ার পথে দেখা। মেয়েটি ডাক্তার দেখাতে, আর সে ব্যবসার মাল আনতে গঞ্জে চলেছে। অবাক হয়েছিল নিখিল। এতগুলো বছর পর একে অপরকে চিনতে পারল কী করে? তারপর ইছামতি দিয়ে কত জল গড়িয়ে গেল। নিখিল এদেশে চলে এলও। মেয়েটি বাঁজা অপবাদ মাথায় নিয়ে মালতির হাত ধরে চলে এল এপারে।
নিখিল মনে মনে পছন্দ করে শিখাকে। কিন্তু শিখার যে কী মতিগতি! সে মালতিকে বলল, ‘একথা শিখা তোমাকে বলেছে?’ মালতি বলল, ‘তালি আর কচ্ছি কী!’
এ ঘটনার মাসখানেকের পরের কথা। শ্রীপুর কলোনিতে বণিকবাড়িতে ছোট্ট একটি ঘর ভাড়া নিয়েছে ওরা। জীবিকার জন্য সারাদিন বাইরে কাটিয়ে জোড়ের পাখির মতো ওরাও রাতে বাসায় ফেরে। রাত কাটিয়ে কেউ আগে, কেউ পরে, আবার কখনও দুজনে একসঙ্গে কাকভোরে বেরিয়ে যায়।
এভাবেই কেটে যায় প্রায় আট মাস। একদিন বিকেলের দিকে একগাড়ি কাপড় নিয়ে ঘরে ফেরে শিখা। ঘটনাটা কলোনির অনেকের নজরে পড়ে। তারা বাড়ির মালিককে অভিযোগ জানায়। ভীত বাড়িমালিক শিখাকে ডেকে ঘর ছেড়ে দিতে বলে। শ্রীপুর কলোনির পাশের গ্রাম হরিনগর, মালতির সাহায্যে সেখানে ঘর পেয়ে চলে যায় তারা।
পরে শিখা জানতে পারে, শ্রীপুর কলোনিতে তাদের লাইনে কাজ করা একজন মহিলার বাড়ি। সে নিখিল আর শিখাকে চিনতে পারে। শিখা হিন্দু না, ওপারে তার ঘরসংসার সব আছে, এইসব নানারকম কথা বলে কলোনির মানুষজনের কানভারি করে। আগুনে ঘি ঢালার মতো ঘটনা ঘটে গাড়ি ভরে বিদেশি মাল আসা দেখে। ব্যাস, আর যায় কোথায়!
যাইহোক, হরিনগরে এসে শিখার ভালই হয়েছে। অনেক দিন পর সে মালতির কাছে ফিরতে পেরেছে। মালতির শরীরটাও ইদানীং ভাল যাচ্ছে না, সারারাত কাশির জ্বালায় একটুও ঘুমোতে পারে না মালতি। ক’দিন আগে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ওষুধ দিয়েছে আর কী সব রক্ত কফ পরীক্ষা করতে বলেছে, তার সঙ্গে বুকের ছবি। সে অবস্থায় কাজে বেরচ্ছে মালতি।
এদিকে, গতকাল রাত থেকে নিখিলের কেমন জ্বর এসেছে বলে মনে হচ্ছে। শিখা স্নান করে কাজে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে লাগল। শাড়ির আঁচল বাঁ কাঁধের পেছনদিকে ছুড়ে দিয়ে বাকি অংশ দুহাত দিয়ে কুচি ভাঁজ করে পেটের সামনের দিকে গুঁজে দিয়ে মুখ তুলতেই খাটে শোয়া নিখিলের দিকে নজর পড়ল। নিখিল তার দিকেই অপলক তাকিয়ে। সে এগিয়ে গিয়ে নিখিলের কপালে ডান হাতের তালু ঠেকিয়ে বুঝতে পারল জ্বর এখনও আছে। শিখা নিখিলের কোঁকড়া চুলে হাত বুলিয়ে বলল, ‘কত কইরে নিষেধ করলাম, শরীরডা খারাপ, আইজ আর সোয়াগ করতি হবে না, কে শোনে কার কথা! সোয়াগে সোয়াগে পাগল কইরে ছাড়ইল! এহন ভোগো।’
নিখিল হাসতে হাসতে উঠে বসে। একটা ভাঁজ করা কাগজ শিখার দিকে বাড়িয়ে দেয়। কাগজটা নিয়ে ব্লাউজের ভেতর চালান করে শিখা। নিখিল সেটা লক্ষ্য করে বলল, ‘ঘামে ভিজে যাবে।’ শিখা বের হওয়ার আগে বলল, ‘শোনো, দুধ জ্বাল দিয়ে রাখিছি। সময়মতো বিস্কুট দিয়ে খাইয়ে নিয়ো। শুয়ি থাকবা। বাইরে বেরাবা না মোটে।’
বাড়ি থেকে বেরনোর সময় শিখার নিজেকে কেমন দুর্বল মনে হল। অল্প অল্প গা গোলাতে লাগল। মনে পড়ল, গেল সপ্তায় তার ‘শরীর-খারাপ’ হওয়ার ডেট পেরিয়ে গেছে। বুকও ভারি ভারি লাগছে। তবে মালতিকে কিছু বলল না। ভাবল, রাতদুপুর পর্যন্ত জাগিয়ে নিখিল যেভাবে তাকে পিষ্ট করেছে, তার জন্যও এমনটা হতে পারে। সারাটা দিন মার্কেটে ঘুরে দুজন বাদে সবার টাকা আদায় করে ফেলেছে। এবার মালতিকে ডেকে নিয়ে খাবার হোটেলে ঢুকতে যাবে, এমন সময় শিখার ঠিক সামনে এসে দাঁড়াল ফেকু মিয়া।
ফেকু মিয়া ওদেশে শিখার স্বামী, ফখরুদ্দিন মণ্ডল। সে শিখার কাছে এসে দাঁত বের করে বলল, ‘যা মর্জিনা, বাড়ি যেইয়ে দ্যাখ, নিখিল কেমন শুইয়ে আছে!’
শিখা চোখের সামনে অন্ধকার দেখল। ফেকু মিয়াও অদৃশ্য হয়ে গেল। ফেকুকে দেখেই শিখার বুকের ভেতর হাতুড়ির ঘা পড়েছিল। তার কথা শোনার পর সারা শরীরের রক্ত ঠান্ডা হতে শুরু করেছে। সে রাস্তার ওপর ধপ করে বসে পড়ল। তা দেখে মালতি দৌড়ে এসে পাশের চায়ের দোকান থেকে জলের জগ নিয়ে এল। হাতে করে খানিক জল নিয়ে শিখার চোখেমুখে ছিটিয়ে দিল। চেতনা ফিরে পেয়ে জগ থেকে সামান্য জল গলায় ঢেলে উঠে দাঁড়াল শিখা। চোখেমুখে গভীর উদ্বেগ। সে মালতিকে বলল, ‘জগটা দিয়ে আয়, এখনি ট্রেন ধরতি হবে!’
সারা রাস্তা শিখার মনে কু ডাকছে। সে মালতিকে জড়িয়ে ধরে জানাল ফেকুর আগমনের কথা। মালতি দেখল শিখার গায়ের তাপমাত্রা সামান্য বেশিই। তার মেয়েলি মনে কৌতূহল, শিখার চোখেমুখে কি মাতৃত্বের লক্ষণ? তবে সেকথা উত্থাপন করার সময় এখন না। শিখা ছটফট করতে থাকল, রাস্তা আর শেষ হয় না। অবশেষে স্টেশনে নেমে লিটনের ভ্যানে চেপে বাড়ির পথে রওনা হল দুজনে। ঘরে ফিরে শিখা দেখতে পেল, দরজা হাট করে খোলা। খাটেই রক্তাক্ত অবস্থায় নিখিল পড়ে। সারা বিছানা রক্তে ভেজা। সেই দৃশ্য আর বেশিক্ষণ দেখতে পারল না সে। জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ার মুহূর্তে তাকে জাপটে ধরে ফেলল মালতি।
বাহঃ ভালো লাগলো, বেশ অন্যরকম….
সুন্দর, দারুন গল্প, মনের রাখার মতন।