Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ছবিবৃত্তান্ত

পুরো নাম ছায়াছবি, ছোট করে ছবি। সেই ছবিকে আজকের স্তরে তুলে ধরতে যুগ যুগ ধরে মানুষের যে নিষ্ঠা ও পরিশ্রম জড়িয়ে আছে, তা ভাবতে বসলে বিস্ময়ে হতবাক হতে হয়। এর পেছনে আছে কত সাফল্য, ব্যর্থতা, সুখদুঃখ ও নানান মজার কাহিনি। ছবির দুনিয়ার সেইসব অনবদ্য গল্পকাহিনি নিয়ে ধারাবাহিক ‘ছবিবৃত্তান্ত’।

চতুর্থ কিস্তি

ল্যুমিয়েরদের ফিল্মও কিনেটোস্কোপের ফিল্মের আকৃতির, তবে কিনেটোস্কোপের আয়তাকার চারটে ছিদ্রের বদলে এটায় গোলাকার দুটি ছিদ্র ছিল। ১২ জুনের পর সিনেমাটোগ্রাফ ফিরে যায় গবেষণাগারে আরও উন্নত হওয়ার জন্য এবং ব্যবসায়িকভাবে সিনেমাটোগ্রাফের প্রদর্শন শুরু হয় ২৮ ডিসেম্বর, ১৮৯৫, গ্র‌্যান্ড কাফেতে (Le Salon Indien du Grand Café, Boulevard des Capucines)।
ছবির তালিকা: ১. La Sortie de l’Usine Lumière à Lyon, ২. Le Jardinier, ৩. Le Débarquement du Congrès de Photographie à Lyon, ৪. La Voltige, ৫. La Pêche aux poissons rouges, ৬. Les Forgerons, ৭. Repas de bébé, ৮. Le Saut à la couverture, ৯. La Places des Cordeliers à Lyon এবং ১০. La Mer। দেখানো হয় লন্ডনে ১৮৯৬-এর ফেব্রুয়ারিতে, এপ্রিলে ভিয়েনা ও জেনেভায় এবং জুনে মাদ্রিদ, বেলগ্রেদ ও নিউ ইয়র্কে।
১৯০০-তে ল্যুমিয়েরা তাঁদের যন্ত্রের সত্ত্ব পাথে কোম্পানিকে [Société Pathé Frères (Pathé Brothers Company)] বিক্রি করে দেন।
দুই গ্রিক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কিনেটোস্কোপ ইংল্যান্ডের মাটিতে জনপ্রিয় হয়ে গেল, বেড়ে গেল চাহিদা। তবে নিউ ইয়র্ক থেকে ৩০০ ডলারের মেশিন আমদানি করার ব্যাপারটাকে এড়ানোর জন্য, রবার্ট উইলিয়াম পলের (১৮৬৯-১৯৪৩) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, দক্ষ যন্ত্রবিদ পল কিনেটোস্কোপের নকল তৈরি করে ফেললেন। তাঁর যন্ত্রের প্রদর্শনী হল লন্ডনের আলর্স কোর্ট-এ (Earl’s Court )। তবে পলের যন্ত্রের ব্যবহারিক প্রয়োগ কিন্তু নির্ভরশীল ছিল ‘ব্ল্যাক মারিয়া’-য় তোলা ছবির ওপর। ইংল্যান্ডে ফিল্মের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এডিসন কোম্পানির ম্যানেজার গিলেমোর-এর সন্দেহ হওয়ায়, তিনি ফিল্মের যোগান বন্ধ করে দেন ও ফ্র্যাঙ্ক জে. ম্যাকগুয়ার এবং জোসেফ ডি. ব্যাঙ্কাস নামে দু’জন অ্যাটার্নিকে পাঠান সরেজমিন তদন্ত করতে। এদিকে চালু ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় পলের মাথায় হাত। তিনি নিজেই ক্যামেরা তৈরির চেষ্টা শুরু করেন ও অবিরাম গতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বির্ট একরস নামে এক ফটোগ্রাফার ও ফটোগ্রাফিক ব্যবসায়ীর সাহায্যে ক্যামেরায় সবিরাম গতি আনার চেষ্টা করেন ও সফল হন। নকশা ছিল একরস-এর, পল এর সামান্য রদবদল ঘটান। ১৮৯৫ সালে পল-একরসের চুক্তি হয়। পলের ক্যামেরার আকৃতি এডিসনের কিনেটোগ্রাফ ক্যামেরার চেয়ে ছোট ছিল ও সেকেন্ডে ২০ খানা ছবি তোলা যেত। খরচের দিক থেকেও কিনেটোগ্রাফের অর্ধেক ছিল এই ক্যামেরা। এই ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলি, A bootblack at work in a London street, Rough Sea at Dover।
১৮৯৫-এর অক্টোবর নাগাদ পল অনুভব করলেন ক্যামেরায় সবিরাম গতির মতই প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রেও তা অত্যন্ত জরুরি। বহু প্রচেষ্টার পর পল প্রক্ষেপণের ব্যাপারেও সাফল্য পেলেন। ১৮৯৬-এর ২০ ফেব্রুয়ারি Finsbury Technical College-এ দেখানো হল পলের যন্ত্র। ইংল্যান্ডে তৈরি প্রথম প্রক্ষেপণ যন্ত্রের নাম হল Theatrograph। পল এর জন্য উপযুক্ত সম্মানও পেলেন।
১৮৯৪-তে প্রকাশিত এইচ. জি. ওয়েলস-এর লেখা ‘Time Machine’-এর চলচ্চিত্রায়নের কথা ভেবেছিলেন পল, এমনকি ওয়েলস-এর সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তাও বলেছিলেন। আর্থিক অপ্রাচুর্য ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য কারণে তার বাস্তবায়ন হয়নি ঠিকই তবে তাঁর এই প্রয়াস আমাদের শ্রদ্ধাবনত করে তোলে।
১৮৯৫ সালে ল্যাথামদের ‘প্যান্টোপটিকন’ যন্ত্রে সংযোজিত হয় বৈদ্যুতিক Arc lamp। তার নাম রাখা হয় ‘আইডলোস্কোপ’। ল্যাথামের ভাইপো এল. আর. ল্যাথাম চাকরি হারিয়ে বেকার হওয়ায় এই ব্যবসায় নেমে পড়েন ও ল্যামডা কোম্পানির কাছ থেকে তিন হাজার ডলারের বিনিময়ে ল্যাথামদের বাসভূমি ভার্জিনিয়া প্রদেশে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর অনুমতিও পান। চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটাই প্রথম প্রাদেশিক স্বত্ব বিক্রির ঘটনা। ভার্জিনিয়ার নরফোক-এ প্রথম প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয় ও এই ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর বন্ধু হেনরি সি. লিন্ডারম্যান। একটা গুদামঘর ভাড়া নিয়ে, দেড়শো চেয়ার পেতে, সাদা পর্দা টাঙিয়ে প্রস্তুতি নিলেও সময়মত ছবি এসে না পৌঁছনোয় পৃথিবীর প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু পিছিয়ে যায় আগস্ট মাসে। তবে তা হয়েছিল ওই ব্যবস্থাপনাতেই এবং টিকিটের মূল্য ছিল পঁচিশ সেন্ট।
বিভিন্ন ব্যাপারে ডিকশনের সঙ্গে ল্যাথাম ভাইদের মতানৈক্য ঘটায় ও কোম্পানির ভিতরেও নানারকম গণ্ডগোল সৃষ্টি হওয়ায় ডিকশন ল্যামডা কোম্পানিতে তাঁর বিনিয়োগ করা কুড়ি হাজার ডলার তুলে নেন।

১৮৯৫-তে গ্রীষ্মের শেষে আটলান্টায় Cotton States and International Exposition মেলায় স্থির করা হয় ফ্যান্টোস্কোপের ছবি দেখানো হবে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সেই বিশাল মেলায় আর্মাটের ফ্যান্টোস্কোপ, গ্রে ল্যাথামের আইডলোস্কোপ এবং র‌্যাফ ও গ্যামনের কিনেটোস্কোপের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। র‌্যাফ ও গ্যামন প্রদর্শনী বাবদ আট হাজার ডলার ব্যয় করলেও মানুষ আর তখন ফুটোয় চোখ রেখে প্রদর্শনী দেখতে চাইত না। আর্মাটকে প্রদর্শনীর বাইরে লোক রেখে ঘোষণা করতে হয়েছিল, ছবি দেখার পর ভাল লাগলেই তবে দর্শক পয়সা দেবেন। খুবই শোচনীয় অবস্থা হয় কিনেটোস্কোপের।
আর্মাট প্রজেক্টরের একটা ত্রুটি বার করলেন। দেখা গেল, প্রজেক্টর একবার চলা আর থামা ও আবার চলার মধ্যে যে কম্পন সৃষ্টি হচ্ছিল, তার ফলে ফিল্ম খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তিনি বহু চিন্তাভাবনা করে ফিল্ম রিলের কাছে ৪ ইঞ্চি থেকে ৫ ইঞ্চি ফাঁস তৈরি করেন যাতে ঝাঁকুনি পুরো রিলে না লাগে।
এই ল্যাথাম ল্যুপের ব্যবহার রেক্টর প্রথম করেন ক্যামেরায় আর আর্মাট করে প্রজেক্টরে। আর্মাট-জেনকিনসনের সমস্ত ঝগড়া-বিবাদকে উপেক্ষা করে ফ্যান্টোস্কোপের আবিষ্কারের সম্মান নির্দশন মেডেল— Elliott Cresson Medal জেনকিনসকেই দেওয়া হয়। ওয়াশিংটনের Smithsonian Institution-এর National Museum of Natural History-তে সংরক্ষিত হয় ফ্যান্টোস্কোপ, আবিষ্কর্তা সি. ফ্রান্সিস জেনকিনস।
তবু আর্মাট তাঁর গবেষণা চালিয়ে যান। তিনি সাইকেলের দূরত্ব মাপার যন্ত্রের (odometer) কার্যাবলি লক্ষ্য করে জেনেভা ক্রসের মত এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা প্রজেক্টর ফিল্মকে দেয় আরও স্বচ্ছন্দ, সবিরাম গতি, যা আজকের দিনের প্রজেক্টরেও পাওয়া যায়।
এইচ. এন. মার্ভিন বৈদ্যুতিক শক্তি পরিচালিত ছিদ্র করার যন্ত্র ড্রিল মেশিনের অবিষ্কারক। হারম্যান ক্যাসলার ইলেকট্রিক কোম্পানির যন্ত্রনির্মাতা, ই. বি. কুপম্যান মজার খেলনা ও যন্ত্রপাতির ব্যবসায়ী (Magic Introduction Company, ব্রডওয়ে, নিউ ইয়র্ক) আর ডিকশন, তিনিও ল্যাথামদের কাছ থেকে চলে আসার পর এই ব্যবসায় নেমে পড়েন। আর এইভাবেই গড়ে উঠল K.M.C.D. Syndicate (অর্থাৎ, Koopman, Marvin, Casler ও Dickson), যা নির্মাণ করল চোখ লাগিয়ে দেখার যন্ত্র মিউটোস্কোপ (Mutoscope) ও ক্যাসলার নির্মিত ক্যামেরা Mutoscope Camera— যার সামনে এলেন নাট্যজগতের বিখ্যাত অভিনেতা জোসেফ জেফারসন, তাঁর মঞ্চসফল রিপ ভ্যানের কিছু দৃশ্যায়নের জন্য, যেমন— Rip’s Awakening, Rip’s Toast ইত্যাদি। K.M.C.D. তাদের নতুন যন্ত্র ১৮৯৫ সালের শীতকাল নাগাদ বাজারে ছাড়ে। কিনেটোস্কোপকে হারিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেল মিউটোস্কোপ। এরপরই জন্ম American Mutoscope and Biograph Company-র। আর সেই সময়েই লুমিয়ের, পল, আর্মাট, ল্যাথামদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় চলে এল নতুন প্রক্ষেপণ যন্ত্র Biograph।
১৮৯৬ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে দশখানা Vitascope মেশিন তৈরি হয়। বাজ্যিক স্বার্থে র‍্যাফ, গ্যামনরা এতে এডিসনের নাম জুড়ে দেওয়ায়, ১৮৯৬-এর ৪ এপ্রিল New York Herald, New York Journal এডিসনের ভিটাস্কোপের ভূয়সী প্রশংসা করে। ১৮৯৬-এর ২০ এপ্রিল ভিটাস্কোপের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় আর ছবি দেখানো শুরু হয় ২৩ এপ্রিল থেকে।
পল সিনকুভালি লন্ডনে এসে দেখেন পলের ‘থিয়েট্রোগ্রাফ’ ও ল্যুমিয়েরদের ‘সিনেমাটোগ্রাফ’-এর মধ্যে জোর প্রতিযোগিতা চলছে। তুলনামূলক বিচারে ভিটাস্কোপের চেয়ে সিনেমাটোগ্রাফ অনেক নিম্নমানের। ভিটাস্কোপে শাটার না থাকায় প্রক্ষিপ্ত চিত্র অনেক বেশি উজ্জ্বল, স্থির ও স্বচ্ছন্দ ছিল।
১৮৯৬ সালে ব্ল্যাক মারিয়া স্টুডিওতে যে সমস্ত শিল্পী কাজ করতেন, তাঁদের উপার্জন ছিল যাতায়াতের খরচ বাদে দশ থেকে পনেরো ডলার। ১৮৯৭-এর ১৭ মার্চ ল্যামডা কোম্পানির করবেট ও ফিৎসিমনস-এর মুষ্ঠিযুদ্ধের যে ছবি তোলে তা এগারো হাজার ফুটের। কোনও একটা ঘটনা তোলার জন্য এটাই পৃথিবীর দীর্ঘতম ছবি। এই ছবি তুলতে রেক্টর চারটে ক্যামেরা ব্যবহার করেন। রেক্টর এডিসনের কাছ থেকে ক্যামেরা যোগাড় করেন, তাতে কম আলোতে প্রতিচ্ছবি গ্রহণের কার্যকরী ক্ষমতা এবং সেকেন্ডে ৪৮-এর বদলে ২৪ ফ্রেম করায়, ফিল্মের খরচ অনেকটাই কমাতে পেরেছিলেন।
ল্যাথামদের সংস্থা ভাগ হয়ে যাওয়ায় মেজর ল্যাথাম, এফ. এ. অ্যান্থনির সঙ্গে কথা বলেন। অ্যান্থনির সংস্থা E & H T (Anthony & Company), যাদের ফটোগ্রাফির জিনিসপত্রের ব্যবসা ছিল, তারা বিখ্যাত হয় Ansco Company নামে। এরা বারোখানা প্রজেক্টর প্রস্তুত করে এবং আগে যা আইডলোস্কোপ নামে পরিচিত ছিল তাকেই বাই-অপটিকন নামে বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
১৯০১ সালে Ansco Company, Goodwin Camera & Film Company অধিগ্রহণ করে। ১৯০২ সালে Eastman Kodak Company-র সঙ্গে Ansco Company-র মামলা শুরু হয়। ফলশ্রুতি, ল্যাথামদের এই ব্যবসা থেকে বিদায়।
বর্তমানে সিনেমা হলে যে ওজন নেওয়ার যন্ত্র দেখা যায়, সেই স্বয়ংক্রিয় ওজন যন্ত্রের আবিষ্কারক এডওয়ার্ড আমেট। থিয়েটার জগতের লোক জর্জ কে. স্পুর-এর সঙ্গে আমেট-এর যোগাযোগের ফলেই পরবর্তীকালের বিখ্যাত Essanay Studios-এর জন্ম। ১৮৯৬ সালে জর্জ ক্লেইন নামে এক ব্যবসায়ীর সহায়তায়, স্পুর-এর আর্থিক সাহায্যে আমেট বাজারে ছাড়েন তাঁর ম্যাগনিস্কোপ (Magniscope) যন্ত্রটি। ডালাসে কিনেটোস্কোপের প্রদর্শনী দেখে মুগ্ধ এক বিজ্ঞানমনস্ক তরুণ উইলিয়াম এন. সেলিগ William Model Works-এর অ্যান্ড্রু শুস্টেক-এর সহায়তায় ও কারিগরী দক্ষতায় Selig Standred Camera এবং Selig Polyscope (প্রক্ষেপণ যন্ত্র) তৈরি করেন এবং শুরু করেন Selig Polyscope Company, শিকাগোতে। এদের তৈরি জনপ্রিয় ছবি The Tramp and the Dog।
লাইম্যান এইচ. হাউ তৈরি করেন Animatoscope যন্ত্র, যার বিশেষত্ব হল প্রজেক্টরের উপরের রিল থেকে নেমে আসা ফিল্মগুলো জড়ো হত তলায় রাখা একটি রিলে। এর ফলে সরাসরি তা গুটিয়ে যাওয়ায়, পরের বার ছবি চালু করার জন্য গোটানোর পরিশ্রম বহুলাংশে লাঘব হত। যদিও অ্যানিম্যাটোস্কোপেই পৃথিবীতে সর্বপ্রথম এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল, তবু তা নকল হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি।
এরই মধ্যে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় ঘটে যায় বেশ কয়েকটি ঘটনা।

>>> ক্রমশ >>>

চিত্র : গুগল

ছবিবৃত্তান্ত প্রথম কিস্তি

ছবিবৃত্তান্ত দ্বিতীয় কিস্তি

ছবিবৃত্তান্ত তৃতীয় কিস্তি

ছবিবৃত্তান্ত পঞ্চম কিস্তি

ছবিবৃত্তান্ত ষষ্ঠ কিস্তি

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »