
ঋভু চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্প
মন্ত্রী এলে কুকুরের পটি পায় বড়বাবু এই নিয়ে পাঁচবার রাস্তাটায় গাড়ি চেপে যাতায়াত করলেন। প্রতিবারেই কিছু না কিছু ভুলত্রুটির মাঝে কাউকে না কাউকে ধমকানিও দিলেন।

মন্ত্রী এলে কুকুরের পটি পায় বড়বাবু এই নিয়ে পাঁচবার রাস্তাটায় গাড়ি চেপে যাতায়াত করলেন। প্রতিবারেই কিছু না কিছু ভুলত্রুটির মাঝে কাউকে না কাউকে ধমকানিও দিলেন।

ভালভাষা উৎসব সংখ্যা ২০২৩|| ‘তুমি বয়সে আমার থেকে অনেক ছোট, তারপরে বাইরের লোক, সব কথা তো বলা যায় না। তবে জানো, আমার বিয়ে হয়েছে একটা শিশুর সাথে। সেই বউভাতের রাত থেকে আমার চোখের জল পড়া আরম্ভ হয়েছে, এখনও পড়ছে, যতদিন বাঁচব হয়তো ততদিন পড়বে।’ লিখেছেন ঋভু চট্টোপাধ্যায়।

India’s First Bengali Daily Journal. বাংলাতে শিব মন্দিরের সংখ্যা অনেক। মনে করা হয়, এই বঙ্গায়ণ বর্গী আক্রমণের পরে হয়। যদিও এর আগে শিবকে বাঙালি ঘরের মানুষ করে নিয়েছিল, বাঙালি তাই ‘ধান ভানতেও শিবের গীত’ গায়। বাঙালি শিবকে ঘরের জামাই করবার পাশে কৃষক হিসাবেও পূজা করে। বাঙালি শিব ঠাকুরকে নিয়ে বিশেষভাবে কাব্য ও গান রচনা করেছে, যাকে ‘শিবায়ন’ বা শিব-সংকীর্তন’ বলা হয়।

India’s First Bengali Daily Magazine. এমন সময় এক ভদ্রমহিলা আড়াল থেকে বললেন, ‘কই গো, এদিকে একবার এসো।’ আমি ভদ্রমহিলাকে সেভাবে দেখতে পেলাম না। কথাগুলো বলেই উনি ঘরের ভেতরে চলে গেলেন। আমার কিছুটা অবাক লাগলেও সেভাবে কিছু মনে করলাম না। খেতে বসে আন্তরিকতার সাথে অতিরিক্ত খাবার দেখেই আমার মাথাখারাপ হতে আরম্ভ করল। রীতাদের বাড়ি থেকে কয়েকজন এসে আমার খাবার থালার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল, ‘এই কচি বয়েস, ধাঁসারে গিলো।’

India’s First Bengali Daily Magazine. ঝিনুকের এইসব এক্কেবারে ভাল লাগছিল না। বাবাকে পুলিশে মারবে না তো? একটা কাকিমা একটু আগে কয়েকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে হেড মিসের চরিত্র নিয়ে বদনাম করছিলেন। অন্য অনেকে শুনছিলেন। ঝিনুক সরে এসে স্কুলের মেন গেটের পাশে একটা কালভার্টের ওপর এসে বসল। দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে আসছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। মাথাটা দুটো হাতের ভিতর চেপে ধরে বসে থাকতে থাকতে সামনেটা এক্কেবারে অন্ধকার হয়ে গেল।

India’s First Bengali Daily Magazine. অভিযোগ করা হয়, যদুনাথ সিংহের ‘ইন্ডিয়ান সাইকোলজি অফ পারসেপশন’ থেকে হবহু পাতার পর পাতা রাধাকৃষ্ণণ তাঁর ‘ইন্ডিয়ান ফিলোসফি’-র দ্বিতীয় খণ্ডে টুকে দেন। ঘটনাচক্রে এই সময় রাধাকৃষ্ণণের ‘দ্য বেদান্ত অ্যাকর্ডিং টু শংকর অ্যান্ড রামানুজ’ নামের অপর একটি বই প্রকাশ হয়, এবং এই বই থেকেই যদুনাথ সেই ‘চুরি’-র কথা জানতে পারেন। যে বইয়ের মাধ্যমে রাধাকৃষ্ণণ সমগ্র ভারতবর্ষের সামগ্রিক দর্শন তুলে ধরবার চেষ্টা করেন, সেই বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ড নিয়েই মূলত রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

India’s First Bengali Daily Magazine. পরের দিন হেডস্যারের ফোনে খুব সকালেই ঘুম ভেঙে গেল। ফোন ধরতেই উনি প্রথমেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলে চলে আসতে বললেন। কারণ ফলাফল কিছু না বললেও বোঝা গেল উনি খুব রেগে আছেন। হেডস্যারের বাড়ি স্কুল থেকে বারো কিমির মধ্যে। কিন্তু কোনও দিন তো এমনি সকালে স্কুলে পৌঁছে যান না, তাহলে কি গতকাল অফিসের চাবি না লাগিয়ে বেরিয়ে গেছিল, চুরি হয়ে গেল কিছু?

India’s First Bengali Story Portal. আপাতদৃষ্টিতে মহাভারত হয়ে দাঁড়িয়েছে নিছক কৌরব ও পাণ্ডবদের দ্বন্দ্বের গল্প, আর সেই মহাযুদ্ধের আড়ালে মূল কাহিনি যেন ঢাকা পড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ধৃতরাষ্ট্র ও গান্ধারীর একশো সন্তান থাকলেও আমরা দুর্যোধন ও দুঃশাসন ছাড়া বাকি অনেকের নাম পর্যন্ত জানি না। কিন্তু আদতে দুর্যোধনের অন্য ভাইদের সবাই পাণ্ডব-বিদ্বেষী ছিলেন না, এমনকি অনেক ভাই প্রকাশ্যে দুর্যোধনের বিরোধিতা করে তাঁর রোষানলেও পড়েন। অনেকেই পাণ্ডবদের পরমবন্ধু ছিলেন, আবার শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত বলেও পরিচিত ছিলেন অনেকেই।

India’s First Bengali Story Portal. তাঁর যে সব গল্পগুলি বিতর্কিত হয়েছিল সেগুলি হল, ‘কালি সালোয়ার’, ‘ধুঁয়া’ ( ধোঁয়া), ‘বু’ ( গন্ধ), ‘ঠান্ডা গোস্ত’( শীতল মাংস), ‘টোবা টেক সিং’, ‘তামাশা’, ‘খালি বোতল’ এবং ‘উপর, নিচে, অউর দারমিয়ান’। ‘কালি সালোয়ার’ গল্পের জন্যে তাঁকে মোট তিনবার দিল্লি থেকে লাহোরের আদালতে যেতে হয়েছিল। ‘ধুঁয়া’ ও ‘বু’ গল্পের জন্যে সেই সময়কার বম্বে থেকে লাহোর আদালতে যেতে হয়েছিল। কিন্তু মান্টোর নিজের কথায়, ‘‘ঠান্ডা গোস্ত’ নিয়ে হয়রানি সবাইকে ছাড়িয়ে গেল।’’

India’s First Bengali Story Portal. বাবা ও দাদা দুজনেই সঙ্গীত অনুরাগী হলেও বাবা আলাউদ্দিনের সঙ্গীত শিক্ষার পথ সুগম হয়নি। মা হরসুন্দরী ছেলের স্কুল কামাই করে সঙ্গীত শুনতে চলে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এমনকি একবার তিনদিন খাওয়াও বন্ধ করে দেন ছেলের। কিন্তু তাঁর সঙ্গীত প্রতিভাকে কোনও অবস্থাতেই বন্ধ করে রাখা যায়নি, বরং আট বছর বয়সে সঙ্গীত শিক্ষার জন্যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বাড়ি থেকে পালিয়ে ঘটনাচক্রে এক যাত্রাদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। তাদের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরতে থাকেন। ওই যাত্রাদলে থাকাকালীন বাবা আলাউদ্দীন তবলা, পাখোয়াজ, হারমোনিয়াম বাজাতে শেখেন।

নবান্ন। এটি কেবল একটি ঋতুভিত্তিক পার্বণ নয়; এটি সেই বৈদিক পূর্ব কাল থেকে ঐতিহ্যের নিরবচ্ছিন্ন ধারায় (যা প্রাচীন পুথি ও পাল আমলের লোক-আচারে চিত্রিত) এই সুবিস্তীর্ণ বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষের ‘অন্নময় ব্রহ্মের’ প্রতি নিবেদিত এক গভীর নান্দনিক অর্ঘ্য, যেখানে লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে শস্যের অধিষ্ঠাত্রী লোকদেবতার আহ্বানও লুকিয়ে থাকে। নবান্ন হল জীবন ও প্রকৃতির এক বিশাল মহাকাব্য, যা মানুষ, তার ধৈর্য, শ্রম এবং প্রকৃতির উদারতাকে এক মঞ্চে তুলে ধরে মানব-অস্তিত্বের শ্রম-মহিমা ঘোষণা করে।

বুদ্ধদেব বসুর অন্যতম অবদান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য (Comparative Literature) বিষয়টির প্রবর্তন। সারা ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়-মানে এ বিষয়ে পড়ানোর সূচনা তাঁর মাধ্যমেই হয়েছিল। এর ফল হয়েছিল সুদূরপ্রসারী। এর ফলে তিনি যে বেশ কয়েকজন সার্থক আন্তর্জাতিক সাহিত্যবোধসম্পন্ন সাহিত্যিক তৈরি করেছিলেন তা-ই নয়, বিশ্বসাহিত্যের বহু ধ্রুপদী রচনা বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে তাঁরা বাংলা অনুবাদসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। অনুবাদকদের মধ্যে কয়েকজন হলেন নবনীতা দেবসেন, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবীর রায়চৌধুরী প্রমুখ। এবং স্বয়ং বুদ্ধদেব।

দরজায় আটকানো কাগজটার থেকে চোখ সরিয়ে নিল বিজয়া। ওসব আইনের বুলি তার মুখস্থ। নতুন করে আর শেখার কিছু নেই। এরপর, লিফটের দিকে না গিয়ে সে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে উঠে বসল গাড়িতে। চোখের সামনে পরপর ভেসে উঠছে স্মৃতির জলছবি। নিজের সুখের ঘরের দুয়ারে দাঁড়িয়ে ‘ডিফল্ট ইএমআই’-এর নোটিস পড়তে মনের জোর চাই। অনেক কষ্ট করে সে দৃশ্য দেখে নিচে নেমে আসতে হল বিজয়াকে।

তালিবান। জঙ্গিগোষ্ঠী বলেই দুনিয়াজোড়া ডাক। আফগানিস্তানের ঊষর মরুভূমি, সশস্ত্র যোদ্ধা চলেছে হননের উদ্দেশ্যে। মানে, স্বাধীন হতে… দিনান্তে তাঁদের কেউ কেউ কবিতা লিখতেন। ২০১২ সালে লন্ডনের প্রকাশনা C. Hurst & Co Publishers Ltd প্রথম সংকলন প্রকাশ করে ‘Poetry of the Taliban’। সেই সম্ভার থেকে নির্বাচিত তিনটি কবিতার অনুবাদ।

দূর পাহাড়ের গায়ে ডানা মেলে/ বসে আছে একটুকরো মেঘ। বৈরাগী প্রজাপতি।/ সন্ন্যাস-মৌনতা ভেঙে যে পাহাড় একদিন/ অশ্রাব্য-মুখর হবে, ছল-কোলাহলে ভেসে যাবে তার/ ভার্জিন-ফুলগোছা, হয়তো বা কোনও খরস্রোতা/ শুকিয়ে শুকিয়ে হবে কাঠ,/ অনভিপ্রেত প্রত্যয়-অসদ্গতি!

আরও উপযুক্ত, আরও আরও সাশ্রয়ী, এসবের টানে প্রযুক্তি গবেষণা এগিয়ে চলে। সময়ের উদ্বর্তনে পুরনো সে-সব আলোর অনেকেই আজ আর নেই। নিয়ন আলো কিন্তু যাই যাই করে আজও পুরোপুরি যেতে পারেনি। এই এলইডি আলোর দাপটের সময়কালেও।