বাইকটা রেখে অফিসের বারান্দার সামনে যেতেই অরূপের চোখদুটো কপালের ওপরে উঠে যায়। এদের আর বলে কিছু হবে না। এই কয়েকদিন আগেই ভি.ই.সি. কমিটির মিটিং ডেকে এই অবস্থাটার কথা বলা হল। মিটিংয়ের মাঝে তো কেউ কোনও কথা বলে না। সবাই ইয়েস ম্যান হয়েই বসে থাকে। পঞ্চায়েতের সদস্যা মালা বাগদিকে ব্যক্তিগতভাবে অরূপ এইসব দেখার কথা বলতেই উনি খুব আগ্রহ নিয়েই উত্তর দেন, ‘আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন মাস্টারমশাই, আমি এই ব্যাপারে খোঁজ লিব, দরকারে পাড়া থেকে দু-একজনকে নিয়ে রেতে উখানকে যাব গা।’
কথাগুলো মনে পড়তে অরূপের হাসি পেল। একটা বোতল লাথি মেরে সরিয়ে অফিসের চাবি খোলে। ভেতর থেকে একটা ঝাঁটা এনে বারান্দার সামনেটা পরিষ্কার করে। রাগে শরীরটা কড়কড় করছে। গ্রামের এইসব লোকগুলোর কি বিন্দুমাত্র বিচারবুদ্ধি নেই? স্কুলটাকে ওপেনবার করে দিয়েছে। মদের বোতলের সাথে চানাচুর, চিপস বাদাম ভাজা, ওদের এখন পোয়া আঠারো। কয়েকদিন আগেই পাশের স্কুলের রমাপদদাকে ফোন করছিল। দাদা বেশ রসিয়ে বলেন, “ভাই, সেদিন স্কুলে যেতেই দেখি কয়েকটা ছেলে গাজর, শশা নিয়ে বসে পড়েছে। ভূত দ্যাখার মত আমাকে দেখল। যাবার আগে বলে গেল, ‘চল চল, সকালে আর হবে না, বিকালের দিকে আসব।’ স্কুলে বাউন্ডারি না থাকলে এমনি হবেই।”
স্কুল খোলা থাকার সময় একদিন স্কুল ছুটির পর হেডস্যারের সাথে এস.আই. অফিসে গিয়ে অরূপ পুরো ব্যাপারটা জানিয়ে আসে। থানাতে জানানোর জন্যেও জিজ্ঞাসা করেছিল। কিন্তু এস.আই. স্যার রাজি হননি। উল্টে গ্রামের লোক ও পঞ্চায়েত সদস্যর সাথে আলোচনা করে বিষয়টা দেখতে বলেন।
গ্রামের কিছু ছেলেছোকরা অথবা বড় মানুষ সন্ধে নামতেই একপাশে পড়ে থাকা স্কুলের বারান্দাতে বসে বসে মদ গিলছে। চারদিকটা নোংরা করছে, ক্লাসের ভেতরে মদের বোতল ফেলছে, এটাতে কে কী বলবে। শেষে হেডস্যার নিজেই বলেন, ‘ছেড়ে দাও, দূর থেকে আসি, থানা-পুলিশ করলে কে কোথা থেকে…’
অরূপ বারান্দার সাথে অফিস রুমটাও ঝাঁট দেয়।
—স্যার! আজ তুমি একা এয়েচ?
অরূপ অফিসের বাইরে এসে দ্যাখে ক্লাস ফোরের ইসমাইল অফিসের বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছে। অরূপকে দেখতে পেয়েই বলে, ‘দাও সার, আমি ঝেঁটোই দিছি।’
—নারে এই একটু, তোকে ঝাঁটা হাত করতে হবে না। এখন তুই এলি ক্যানো? এক্ষুনি কেউ দেখলে ছবি তুলে কোথাও দিয়ে দেবে, তখন আবার আমার সমস্যা।
—কে আসবেক সার? মায়ের জান খারাপ, আর বাবা কাজে গেইছে।’
—কী করতে এলি বল?
—ভাইয়ের একট সার্টিফিকেট লাগবেক, ব্যাঙ্কে খাতা খুলবে।
—ছবি এনেছিস?
—না।
—ঠিক আছে, কাল তোর মাকে ভাইয়ের একটা ছবি নিয়ে আসতে বলবি। আজ হেডস্যার আসেননি। কাল আসবেন।
অরূপ কথা বলবার মাঝেই বারান্দাটা পরিষ্কার করে নেয়। ক্লাসগুলো খুলে একটু পরিষ্কার করতে পারলে ভাল হত। ব্যাটারা বোতলগুলো ক্লাসের ভেতরে ছুড়ে দেয়। বোতলের কাচ ভেঙে যা তা অবস্থা হয়।
তলপেটটা কয়েকদিন ধরে ব্যথা করছে। আমাশয় করেছে, কিন্তু বাথরুমের যা অবস্থা সব মাথায় উঠে যাবে। টয়লেটটাই বাইরে করতে হচ্ছে। স্কুল না খুললে পরিষ্কার করে লাভ নেই।
অফিসে ঢুকতে গিয়ে অরূপের চোখ যায় ইসমাইলের দিকে। তখনও অফিসের সামনের জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে আছে। অরূপ জিজ্ঞেস করে, ‘কী রে বাড়ি যা…’
—স্কুল কবে খুলবে সার? অরূপের চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসে।
—এই প্রশ্নের উত্তর তো আমার কাছে নেই বাবু, এগুলো সব বড় মাথার লোকজনেরা চিন্তাভাবনা করে। আমরা তো ছোট মাথার লোকজন, যা করতে বলছে করছি। দেখলি তো এসে ঝাঁট দিয়ে অফিসের তালা খুললাম। প্রতিদিন এখানে কারা বসে বল তো?
—আমরা সন্ধেবেলায় দেখতে আসব সার?
—না, শেষকালে কোথা থেকে কী হবে তোর বাড়ির লোক আমাকে পেটাক।
ইসমাইল চলে যেতে অরূপ আবার অফিসের ভেতরে চলে যায়। বইগুলো তখনও বস্তা থেকে বাইরে গোছানো হয়নি। অরূপ টেক্সটবুক রেজিস্টার খুলে স্টুডেন্টদের নামগুলো এন্ট্রি করবার সময় বাইরে আর-এক জনের গলার আওয়াজ শোনে। দরজার দিকে চোখ দিতেই দেখে একজন অভিভাবক এসেছেন। ‘বলুন…’ অরূপ জিজ্ঞেস করে।
—হেডস্যার আসেননি?
—না, উনি কাল আসবেন। এখন তো স্কুল বন্ধ, আমরা পালা করে আসছি।
—একটা দরকার ছিল। আপনাকে বলব, নাকি স্যার এলেই…
—বলুন।
—কিলো পঁচিশ চাল লাগবে। গ্রামে একটা কালীপুজো হয়, এবার নরনারায়ণ সেবা হবে।
—এই অবস্থায় সেবা!
—গাঁয়ে ঘরে কিছু নাই, ওসব আপনাদের শহরের রোগ।
—সে ঠিক আছে, কিন্তু স্কুলের চালের অবস্থা ভাল নয়, আসলে এখন তো কেউ খায় না, চাল ওজন করে দিয়ে দিতে হয়।
—কিছু তো বাঁচে?
—কিচ্ছু বাঁচে না, সবার মাথা গুনে চাল পাঠায়। আমরা রাঁধুনিদেরই দিতে পারছি না। ওরা রেগে স্কুলের কোনও কাজেও আসে না। আমরাই মাল ওজন করে, প্যাকেটে ভরি।
ভদ্রলোক আর কথা না বাড়ালেও চোখমুখ দেখে বেশ বোঝা গেল খুব একটা খুশি হননি। অফিস থেকে বেরোনোর সময় ‘ক’জন ছাত্র ছাত্রী’, ‘দু’জন শিক্ষক কেন রোজ আসেন না’, ‘এই চারদিকটা এত নোংরা কেন’, সব কিছু জিজ্ঞেস করে হেডমাস্টারের ফোন নম্বর নিয়ে অফিস ছাড়েন।
অরূপ এবার একটা চেয়ার-টেবিল বাইরের বারান্দাতে বের করে সেখানে গিয়ে বসে। সামনের মাঠটা শুকিয়ে গেছে। স্কুল চালু থাকলে বাচ্চাগুলোর ছুটোছুটি আর নালিশের বহরে ঘাসগুলোও অতিষ্ঠ হয়ে উঠত। এর ওকে চুল টেনে দেওয়া, ওর একে খিমচে দেওয়ার নালিশগুলো বড্ড ফাঁকা লাগে। ভাল লাগে না, এই অনন্ত সময় যেন গিলে আসে, কোনও কাজে মন আসে না।
অরূপের বাড়ি থেকে স্কুল প্রায় তিরিশ-পঁয়ত্রিশ কিমি দূর, এখন স্কুল বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন কাজে প্রায়ই আসতে হয়। বাইক নিয়ে আসছে, এখানেই একটা ভাল লাগা ভালবাসা বোধ। অন্য ধর্মের লোকের সংখ্যা বেশি থাকলেও বহু বছর ধরে এই স্কুলে সরস্বতী পুজো হয়ে আসছে। অরূপ স্কুলে আসবার পরে সেও সবার সাথে মিলে যায়। কয়েক বছর আগে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। দাসপাড়ার ক্লাস ফোরে পড়া বিশ্বজিৎ অরূপকে আলাদা করে বলে, ‘স্যার আপনারা ওই রফিকদের পূজার সময় সব কাজ করতে বলেন, এটা ভাল লাগে না। আমাদের পূজা আমরাই কিছু করতে পারি না।’
অরূপ বিশ্বজিৎকে বোঝালেও জানতে পারে তাদের দাসপাড়ায় প্রথম এই আলোচনাটা হয়েছে। হেডস্যারকে কথাগুলো বলতেই উনি অবশ্য কোনও রকম পাত্তা দেন না। পরের দিন বিশ্বজিৎকে ডেকে দই-চিঁড়েগুলো সবার হাতে তুলে দিতে বলেন। বিসর্জন করবার কথাটাও বলেন।
এই সময়েই বাচ্চাদের খেলা হয়। স্কুলে আসার পর থেকেই অরূপ সক্রিয়ভাবে স্পোর্টসের সাথে থাকে। পেপার ওয়ার্কের কাজ করে। এখন ওটাও বন্ধ। মাঝখান থেকে হচ্ছে কী সবার কাছে এই শিক্ষকরা একরকমের শ্রেণিশত্রু হয়ে উঠেছে। কথায় কথায়, ‘আপনারা তো বসে বসে মাইনে পাচ্ছেন।’ এই কয়েক বছরের মধ্যে অরূপের মনে হয়েছে সরকারও মনে হয় এটাই চায়।
অফিসের ভেতর থেকে ফোনের রিং বেজে ওঠে। অরূপ ভেতরে গিয়ে ফোন তুলতেই দ্যাখে হেডমাস্টারমশাই ফোন করেছেন। রিসিভ করতেই স্যার বলেন, ‘তুমি আরেকবার ওই স্কুল বিল্ডিংয়ের ছবিগুলো পাঠিয়ে দাও। এস.আই.-এর গ্রুপে আমাদের স্কুলের আবার ছবি চেয়েছে।’
অরূপ আর জিজ্ঞেস করে না, ‘স্যার এই নিয়ে তিনবার ছবি পাঠানো হল। আমার মোবাইল, আমার নেট, এগুলো সরকারের কাজের জন্যে কিনেছি?’
কথা বললেই এখন ফালতু ঝামেলা। কয়েকটা কথা বলবার পরেই সেই ভদ্রলোকের চাল চাওয়ার কথাগুলো উঠে আসে। হেডস্যার স্কুলের পরিবেশটার কথা বলেন। অরূপ শুধু শুনে যায়। স্কুল বন্ধ। ফোন রেখে অরূপ আবার নিজের কাজে বসে। বস্তা থেকে সব বই বের করে ক্লাস অনুযায়ী সাজিয়ে রাখে। ভ্যানের জলিলদাকে টাকা দেওয়া হয়নি। এটাও পকেট থেকে যায়। অফিস থেকে বই জুতো বা কোনও কিছু স্কুলে আনবার জন্যে যে টাকা দেওয়া হয় সেটা প্রয়োজনের তিন ভাগের এক ভাগ। তাও আসে দু’বছর তিন বছর পর। কিছু বললেই ওদের মুখে কথা লাগানোই থাকে, ‘ম্যানেজ করে নিন।’
‘ম্যানেজ মানে?’ অরূপ প্রথম বছরে হেডস্যারকে জিজ্ঞেস করেছিল। হেসে উঠেছিলেন স্যার, ‘চুরি। স্কুল ও মিড ডে মিল চালাতে গেলে তোমাকে চুরি করতে হবে, সেটাই বলছেন।’
সেদিন অবাক হলেও এখন অনেক ব্যাপারেই অরূপ অভিজ্ঞ হয়ে গেছে। বুঝে নিয়েছে এখানে কাজ করতে গেলে কথা বলা চলবে না।
বই গুছিয়ে ও রেজিস্টারে ছাত্রছাত্রীদের সব নাম তুলতে অনেক সময় লাগে। একা একা ভাল লাগে না। অবশ্য দুজনের স্কুলে একা না এসেও তো উপায় নেই। অরূপ সব কিছু গুছিয়ে ঘড়ির দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায়। তিনটে বেজে গেছে। এবার বেরোতে হবে। হেডস্যার আগামীকাল এসে হয়তো আবার ঝাঁট দিয়ে মদের বোতল ফেলে অফিস খুলবেন। স্কুলের মাঠে কয়েকটা বাচ্চা ব্যাটবল নিয়ে এল। স্কুল চলাকালীন এই সময় বা একটু আগে পরে এই মাঠে খেলতে আসত। হেডস্যার সেই সময় মাঝে মাঝে বারণ করলেও শুনত না। একবার তো গ্রামের কয়েক জনের সাথে স্যারের একটু কথা কাটাকাটিও হয়। পরে মিটে যায়, স্যার স্কুল চলাকালীন কাউকে এই স্কুলের মাঠে খেলতে আসতে বারণ করেছিলেন। মাঠের ওদিকে খেললে এদিকের ছাত্রছাত্রীদের মনে চলে যেতে পারে।
অরূপ ইসমাইলকে দেখতে পায়, অরূপের দিকে তাকিয়ে বলে, ‘সার তুমি এখনও যাও নাই।’
—নারে বাবু, কাজ ছিল।
বাইকটা স্টার্ট করতে যাবে এমন সময় ইসমাইল বলে উঠল, ‘স্যার, আজ রেতে ইখানকে এসে দেখি যাব, কে কে মদ খেচে, দেখলে ঢিল ছুড়ে দিব।’
—বাদ দে, আবার কোথা থেকে কী ঝামেলা হবে, শেষে তোর বাড়ি থেকে আমাকে বকবে।
—কিছু বলবেক নাই সার।
শেষের কথাগুলো সেরকমভাবে কানে না গেলেও পরের দিন হেডস্যারের ফোনে খুব সকালেই ঘুম ভেঙে গেল। ফোন ধরতেই উনি প্রথমেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলে চলে আসতে বললেন। কারণ ফলাফল কিছু না বললেও বোঝা গেল উনি খুব রেগে আছেন। হেডস্যারের বাড়ি স্কুল থেকে বারো কিমির মধ্যে। কিন্তু কোনও দিন তো এমনি সকালে স্কুলে পৌঁছে যান না, তাহলে কি গতকাল অফিসের চাবি না লাগিয়ে বেরিয়ে গেছিল, চুরি হয়ে গেল কিছু?
সারাটা রাস্তা এই চিন্তা মাথার মধ্যে এক্কেবারে কিলবিল করে উঠছিল। স্কুলে পৌঁছেও অরূপ বেশ ঘাবড়ে যায়। চারদিকে বেশ ভিড়। পুলিশের গাড়িও দেখতে পায়। কাছে যেতে হেডস্যার পুলিশের এক অফিসারের সাথে আলাপ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ইনিই গতকাল স্কুলে ছিলেন।’
অরূপ কোনও কিছু বুঝতে না পেরে একবার হেডস্যার, একবার সেই অফিসারের মুখের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থাকে। ‘কী হয়েছে?’ জিজ্ঞেস করতেই হেডস্যার উত্তর দেন, ‘আরে গতকাল রাত কয়েকটা ছেলে স্কুল দেখতে আসে। যথারীতি স্কুলে তখন সবাই বসে গেছে। ছেলেরা ঢিল ছুড়লে এরাও বোতল ছোড়ে। মাতালদের কি আর মাথার ঠিক থাকে। সমস্যা হল সেই বোতলে একটি ছেলের মাথা ফেটে যায়। সকালেই গ্রাম থেকে আমাকে ফোন করে। আমি ভাবি তুমিই হয়তো গতকাল কাউকে এমনভাবে আসতে বলেছিলে।’
—না না স্যার, আমি বরং বারণ করেছিলাম…। অরূপ উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
—তোমাকে ভয় পেতে হবে না, আমি সব জেনেছি। ইসমাইলের মা এখানে এসে বলেছে।
অরূপের ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়বার মত অবস্থা হয়। যাক তাহলে শান্তি। ওর নিজের জন্যে কোনও কিছু হয়নি। অরূপ স্কুলের অফিসে যাবার সময় আবার চারদিকে সেই মদের বোতল পড়ে থাকতে দ্যাখে। হেডস্যারের সাথে পুলিশের সেই অফিসারের কথা বলতে দেখে অরূপ তাদের কাছে এসে বলে, ‘স্যার, যে জন্যে এই ঝামেলা আপনারা যদি…’
—ওনার সাথে এইমাত্র কথা হল। হিন্দুপাড়ার মন্দির ও এদিকের মসজিদ দুদিক থেকেই মাইকিং করানো হবে। ওনারাও প্রতি রাতে গ্রামে আসবেন, কথা দিয়েছেন।
অরূপ আর কোনও কথা বলতে পারে না। পুলিশের সাথে কথা না হলেও এই রকম মিটিং কিন্তু অনেক বার হয়েছে, তাও স্কুল বন্ধ হলেই…। কথাগুলো খুব বলতে ইচ্ছে করলেও কে যেন চেপে ধরে, ‘এখানে কিছু বলতে নেই…’