Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

শিবরাত্রি, শিব ও ভারতীয় মিশ্র সংস্কৃতি

শিবরাত্রি হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান যা ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। এই চতুর্দশীটিকে বছরের সবচেয়ে অন্ধকার রাত্রি বলা হয় এবং মহাশিবরাত্রি অজ্ঞতা দূর করবার জন্যে পালিত হয়। প্রজাপতি দক্ষের শিবকে অপমান করবার পরে সতীর দেহত্যাগ ও তৎপরবর্তীকালে শিবের রেগে যাওয়ার কাহিনি আমরা জানি। এরপর বিষ্ণু কর্তৃক সতীর অঙ্গচ্ছেদের পর শিবের রাগ কমার ঘটনার কথা আমরা প্রায় সব কিছুই সেই ছোট বয়স থেকেই জেনে আসছি। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলার মন্দাকিনী ও শোন নদীর সংযোগস্থলে ত্রিযুগীনারায়ণ গ্রামের আশেপাশের জায়গাটি হিমালয় রাজার রাজধানী ছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু এরপরেও কিছু নতুন বিষয় আছে। যেমন সতীর দেহ বিভিন্ন জায়গায় পড়ে যাওয়ার পর শিবের মধ্যে এক চরম ঔদাসীন্য ও বৈরাগ্য জেগে ওঠে। শিব ঠিক করেন আর কোনও নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নয়। অন্যদিকে তারকাসুরের অত্যাচারে সেই সময় তিন ভুবন প্রায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। সেই সময় দেবতারা ব্রহ্মার কাছে গেলে তিনি জানান, হর-পার্বতীর মিলনে জন্ম নেওয়া কার্তিকের হাতেই তারকাসুরের বধ হবে। কিন্তু পার্বতী শিবের প্রেমে আকুল হলেও শিব তো তখন এইসব সম্পর্ক থেকে অনেক দূরে। সেই সময় শিবের মধ্যে কামের সঞ্চার করতেই ডাক পড়ে রতি ও কামদেবের। এরপরে শিবের রোষানলে কামদেবের ভষ্ম হয়ে যাওয়া এইসব কাহিনিও আমরা জানি। তবে সেখানেও শিব-পার্বতীর মিলনে কার্তিকের জন্ম হয় ও তারকাসুরের বিনাশ হয়। এই শিবরাত্রি শিব-পার্বতীর সেই বিয়ের দিন বলে মনে করা হয়। শিবের গাজনও শিবের বিয়ে বলেই মনে করা হয়। সন্ন্যাসীরা সেখানে বরযাত্রী।

শিবরাত্রির সঙ্গে আর-একটি কাহিনি জড়িয়ে আছে। বহু বছর আগে কাশী বা বারাণসীতে এক ব্যাধ থাকত, যার প্রধান কাজ ছিল পশুশিকার। একদিন শিকার করবার সময় অন্ধকার ঘনিয়ে রাত্রি এসে যায়। ব্যাধ সেই রাতে আর বাড়ি না ফিরে জঙ্গলের মধ্যে একটি বিরাট গাছের ওপর চেপে বসে। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ, তার নিচে একটি শিবলিঙ্গ ছিল। গাছের উপরে ওঠার সময় দু-একটি শিশির ভেজা পাতা শিবলিঙ্গের ওপর পড়ে। ব্যাধ নিজেও সেই রাতে উপোস করে ছিল এবং ঘটনাচক্রে সেটি ছিল শিবরাত্রি। পরের দিন সকালে ব্যাধ তার বাড়িতে ফেরে। খেতে বসবার সময় এক আগন্তুক এসে উপস্থিত হলে ব্যাধ নিজে না খেয়ে সেই খাবার আগন্তুককে খেতে দেয়। এইভাবেই ব্যাধ শিবরাত্রি ব্রত পালনের পুণ্য লাভ করে এবং এই জগতে শিবরাত্রি পূজা আরম্ভ হয়।

আসলে, প্রায় প্রতিটা জাতির মধ্যে প্রেম-ভালবাসা ও যৌনতাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য বিভিন্ন রকমের লোক উৎসব বা প্রথার প্রচলন আছে। হয়তো সময়ের সঙ্গে সেই সব প্রথা অনেকাংশে শালীন হয়েছে কিন্তু মূল বিষয় বদলে যায়নি। যেমন প্রাচীন রোমানদের মধ্যে ‘লুপারকালিয়া’ নামে একটি উৎসব হত। এই উৎসবে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যৌন স্বাধীনতা উপভোগ করত। কিন্তু অবাধ মেলামেশা সেই সময়কার ধর্মীয় মাতব্বর বিশেষ করে চার্চের চোখে অনৈতিক বলে মনে হয়। আসলে, প্রেম-ভালবাসার প্রথা বা উৎসব সারা বিশ্বেই পালিত হয়ে আসছে। নীতিবাগীশদের চোখে কখনও এই উৎসব যৌন উত্তেজনামূলক বলে মনে হত। কিন্তু আমরা কীভাবে ভুলে যাব ইরোস, কিউপিড ও প্রায়াপুস ও ভারতের কাম ও রতি একই সমীকরণের অংশ, এই কামদেবের জন্যেই মিলন হয় শিব-পার্বতীর, থেমে যাওয়া শক্তি তরঙ্গ আবার চলতে শুরু করে, জন্ম হয় কার্তিকের, বিনাশ হয় তারকাসুরের। কিন্তু এই মহামিলনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কামদেব, শিবের ক্রোধে এক্কেবারে ভষ্ম হয়ে যায়। যদিও রতির প্রার্থনাতে আবার পুনরুজ্জীবিত হয় ও কায়াহীন হয়ে ঘুরে বেড়ায়, সেটা অন্য প্রসঙ্গ, কিন্তু এই ঘটনা থেকে শিবের সম্পর্কে ভুল ধারণা গড়ে ওঠে।

ভারত তথা এই বাংলাতে শিব খুবই জনপ্রিয় দেবতা। শুধু জনপ্রিয় বললে অবশ্য ভুল হবে। বহু প্রাচীনকাল থেকে শিবকে লিঙ্গরূপে পুজো করা হচ্ছে। প্রাক আর্যযুগে শিব প্রজনন ও উর্বরতার দেবতা হিসাবে পূজিত হতেন। হরপ্পা থেকে প্রাপ্ত একটি পুরুষ মূর্তি দেখে ঐতিহাসিক ব্যাসাম তাকে পশুপতি শিবের মূর্তি বলে মনে করেন। বৈদিক যুগের প্রথমে আমরা শিবকে অবশ্য দেবতা হিসাবে পাই না, বরং রুদ্রকে ঋগ্বেদে পাই, অথর্ব বেদে শিবের সাতটি নাম পাবার পাশাপাশি শ্বেতাশ্বর উপনিষদে তাঁর নাম পাই মহেশ্বর। অন্যদিকে পতজ্ঞলী ও পাণিনির লেখাতে বিশাখা ও স্কন্ধের সঙ্গে শিবের নাম পাই। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, বৌদ্ধ সাহিত্যে শিবের উল্লেখ আছে। আলেকজান্ডারের ভারতে আসার সময় শিব পূজার উল্লেখের সঙ্গে শিবি নামে এক জাতির কথাও পাই। রামায়ণ মহাভারতেও শিবের উল্লেখ আছে। আর্য সংস্কৃতিতে শিবকে বলা হয় প্রাগার্য সংস্কৃতির দেবতা। আর্যদের প্রথম দিকে শিব ও রুদ্র আলাদা ছিল। রুদ্র ছিলেন ঝড়ঝঞ্জার দেবতা এবং শিব ছিলেন কৃষির দেবতা। পরবর্তীকালে শিব ও রুদ্র মিলে মিশে যায়। এই লিঙ্গরূপের মধ্যেই এক আদিম ইতিহাস তথা প্রথা এখনও পালন করা হচ্ছে।

শিব একদিকে যেমন শক্তি ভিত্তিক কৃষি দেবতা অন্যদিকে প্রজনন তথা সৃজনের দেবতা। আবার অন্যদিকে দেখতে গেলে দেবতাদের মধ্যে শিব কামুক নন, মহাযোগী, এবং বাংলার শিব সংসারী। বলা হয়, প্রাচীন কালের মানুষের সন্তান উৎপাদনের প্রক্রিয়া জানা ছিল। তাদের জীবনযাপন হত গাছের ফলমূল খেয়ে বা পশু শিকার করে। কালক্রমে তারা জানতে ও বুঝতে পারে যেভাবে নারীরূপ ভূমিকে কর্ষণ করে পুরুষ সন্তান উৎপাদন করে ঠিক সেভাবেই এই পৃথিবীকে কর্ষণ করে শস্য উৎপাদন সম্ভব। আরম্ভ হয় পুরুষের লিঙ্গস্বরূপ এক দণ্ড বানিয়ে ভূমি কর্ষণ আরম্ভ হয়। জানা গিয়েছে ‘লিঙ্গ’, ‘লাঙ্গুল’ ও ‘লাঙ্গল’ এই তিন শব্দ একই ধাতুরূপ থেকে সৃষ্টি। এরপর ফসল তোলার সময় নবান্ন উৎসব থেকে জন্ম নিল লিঙ্গ ও পৃথিবীর পূজা, শিবকে তাই প্রজননের দেবতাও বলা হয়। প্রজনন একটি জৈবিক প্রক্রিয়া, এরই প্রতীক হিসাবে গৌরীপষ্ট্রের মধ্যে স্থাপিত শিবলিঙ্গ, যা আদপে একটি বৈজ্ঞানিক সত্যের প্রকাশ। তাই শিবের ধারণা আমাদের অখণ্ড ভারতবর্ষে আর্যরা আসবার অনেক আগেই প্রচলিত ছিল। কিন্তু আর্যরা ভারতে আসার পর এই ধারণা তাদের পরিমণ্ডলে প্রবেশ করে। মনে করা হয় এই শিব থেকেই আর্যরা রুদ্রের কল্পনা করে। সংস্কৃতে রুদ্র শব্দের মানে যেমন রক্তবর্ণ, তেমনিই দ্রাবিড় ভাষাতে শিব শব্দের মানেও রুক্তবর্ণ।

বাংলাতে শিব মন্দিরের সংখ্যা অনেক। মনে করা হয়, এই বঙ্গায়ণ বর্গী আক্রমণের পরে হয়। যদিও এর আগে শিবকে বাঙালি ঘরের মানুষ করে নিয়েছিল, বাঙালি তাই ‘ধান ভানতেও শিবের গীত’ গায়। বাঙালি শিবকে ঘরের জামাই করবার পাশে কৃষক হিসাবেও পূজা করে। বাঙালি শিব ঠাকুরকে নিয়ে বিশেষভাবে কাব্য ও গান রচনা করেছে, যাকে ‘শিবায়ন’ বা শিব-সংকীর্তন’ বলা হয়।

আর্যদের ভারতে আসার আগে শিব পূজার প্রচলন ছিল, তা জানা গিয়েছে। তাই শিব যতই কৃষি বা প্রজননের দেবতা হোন তার আর্যায়ণ ভারতীয় সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক দলিল, যার জন্যেই শিব হিন্দু তথা সনাতন ধর্মের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেবতা হিসাবে আজও পুজো পেয়ে আসছেন।

কভার: পটচিত্র, সংগ্রাহক: অলক্তা মাইতি
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
মোহাম্মদ কাজী মামুন
মোহাম্মদ কাজী মামুন
1 year ago

লিঙ্গ, লাঙ্গুল, আর লাঙ্গল – যে এক সুতোয় গাঁথা, জানা ছিল না। শিব লিঙ্গের সাথে জড়িয়ে আছে নারীস্বরূপ ভূমি কর্ষণ করে পুরুষস্বরূপ ফসল পাওয়ার বিশ্বাস। খুব ইন্টারেস্টিং। ভাল লাগল লেখাটি। বৌদ্ধ ধর্মেও শিব ছিলেন তাহলে? আর অবাধ যৌনতার আচারটিও খুব কৌতূহল জাগাল।

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »