Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

বাঙালিজীবনে নববর্ষ

দ্বিতীয় পর্ব

পহেলা বৈশাখে বাঙালিজীবনে নববর্ষের রথ এগিয়ে চলেছে আজও— জীবনে এবং সাহিত্যে। তাই দেখি ‘পথের পাঁচালী’-তে ইন্দির ঠাকরুন, যিনি কিনা ‘বল্লালী বালাই’, মারা যায় বর্ষশুরুর দিন। আগের দিন দুর্গা তাকে চড়কের মেলাফেরত মুড়কি আর কদমা দিয়ে গেছে। ইন্দির আশীর্বাদও করেছে দুর্গাকে, ‘রাজধানী হও।’ আর পরদিনই মৃত্যু ইন্দিরের। ঘটনাটিকে ওইদিনে নিয়ে এলেন বিভূতিভূষণ, কেন-না ‘ইন্দিরা ঠাকরুনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে সেকালের অবসান হইয়া গেল।’ অতএব মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এইভাবে নববর্ষ নিয়ে এলেন লেখক। তবে পুরোপুরি সেকালের অবসান হয়নি নিশ্চিন্দিপুরের, কেন-না গ্রামে রয়েছেন আরও এক বৃদ্ধা, আতুরী বুড়ি। আতুরীর মৃত্যু চৈত্রসংক্রান্তিতে। এইভাবে যে মানুষের মৃত্যুকে ঋতুসংলগ্ন যুগসংলগ্ন করে দেখানো যায়, বিভূতিভূষণের উপন্যাসটি তার চমৎকার নিদর্শন।

বাংলা নববর্ষ নিয়ে ইদানীং মতদ্বৈততা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। এই দুই দেশে দুটি বিভিন্ন দিনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়। বাংলাদেশ ইংরেজি ১৪-ই এপ্রিল তারিখটিকে বাংলা নববর্ষের ধ্রুব তারিখ করে নিয়েছে। ১৯৫৮-র তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সেখানকার বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে বাংলা সনের সংস্কার সাধিত হয়। সেটি কার্যকর হয় ১৯৬৮ সাল থেকে। এই সংস্কার-কাজে নেতৃত্ব দেন মনীষী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। সংশোধিত সনের দিন ও মাসপঞ্জী নিম্নরূপ: বৈশাখ থেকে ভাদ্র, এই পাঁচ মাস হবে ৩১ দিনের। আশ্বিন থেকে ফাল্গুন মাসগুলি হবে ৩০ দিনের। আর চৈত্রমাস সাধারণভাবে ৩০ দিনের হলেও চার বছর পরপর অধিবর্ষ (লিপ ইয়ার) হিসেবে ৩১ দিনের হবে। এই অধিবর্ষ হল বাংলা বর্ষপঞ্জীতে নতুন সংযোজন। এইভাবে বাংলা সনকে সৌর বছরের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হল। এটা যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। কিন্তু ভারতবর্ষে এভাবে পঞ্জিকা সংশোধন ঘটেনি। ফলে বৈশাখ থেকে চৈত্র মাসগুলি অসমান। কোনওটি ৩২ দিনের, ৩০ দিন কোনওটি, আবার ২৯ দিন। দু’দেশের নববর্ষ এক বা দু’দিনের আগে-পরে হয়ে যাচ্ছে। বাংলা তারিখ অনুযায়ী যে অনুষ্ঠানগুলি পালিত হয়, যেমন রবীন্দ্রনাথের জন্ম ও মৃত্যুদিন ২৫-এ বৈশাখ এবং ২২-এ শ্রাবণ; কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও মৃত্যুদিন ১১-ই জ্যৈষ্ঠ এবং ১২-ই ভাদ্র; বাংলাদেশে পয়লা আষাঢ় বর্ষা-বরণের অনুষ্ঠান, পয়লা অগ্রহায়ণ এবং পয়লা ফাল্গুন যথাক্রমে নবান্ন ও বসন্তবন্দনা যে-দিনগুলোতে উদ্‌যাপিত হয়, বাংলা সে তারিখগুলোর সঙ্গে ভারতবর্ষের তারিখ মেলে না। এই বিভ্রান্তি আশু এড়ানো দরকার।

বিভ্রান্তি তো কেবল বাংলা সন নিয়েই নয়, আছে ইংরেজি বর্ষপঞ্জী নিয়েই। এই অবকাশে সেটা নিয়েও খানিক আলোচনা করা থাক।

ভারতে আকবরের পঞ্জিকা সংস্কারের সমসাময়িককালে ১৫৮২-তে ইউরোপেও পঞ্জিকা সংস্কার করা হয়। এটি করেছিলেন পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি। আজ পর্যন্ত এই ক্যালেন্ডারটি মান্যতা পেয়ে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকা তো বটেই, পৃথিবীর সর্বত্রই এখন গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারের রাজত্ব। এ ক্যালেন্ডারের প্রথম অসঙ্গতি হল, খ্রিস্ট-অব্দ ১ কিন্তু যিশুর আবির্ভাবের দিন নয়। হাস্যকর হলেও সত্যি, যিশুর জন্ম খ্রিস্ট-পূর্ব চার (৪)-এ! আবার ইস্টারের কোনও নির্দিষ্ট দিন নেই। ২২-এ মার্চ থেকে ২৫-এ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ দিনের মধ্যে যে-কোনও দিন হতে পারে। গ্রেগরির আগে রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার ৪৪ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে ৩৬৫ দিনের বর্ষপঞ্জী তৈরি করান। এর পেছনে কার্যকরী ছিল সিজারের মিশর জয়, মিশরীয়দের বর্ষপঞ্জী সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল (তখন ইউরোপে ৩০৪ দিনের বৎসরব্যবস্থা চালু ছিল মাসের সংখ্যা ছিল দশটি)। সিজারকে বর্ষসংস্কারে সাহায্য করেন মিশরের জ্যোতির্বিদ সোসিজেনিস (Sosigenes)। এই বর্ষগণনায় দশের জায়গায় বারো মাসের প্রবর্তন ঘটে। জুলাই মাসটি জুলিয়াস সিজারের নামে, আর সিজারের পরবর্তী সম্রাট অক্টোভিয়াস অগাস্টাসের নামে অগাস্ট নাম চিহ্নিত হয়। ১৭৫২ সাল লেগে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার গৃহীত হতে, তা-ও আইন প্রণয়ন করতে হয়েছিল এ জন্য। ভারতে ব্রিটিশ আমলের সূচনা থেকেই গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রচলন।

গ্রেগরি-পঞ্জীতে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, যেমন ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে, অন্য মান কখনও ৩০ আর কখনও ৩১ দিনে, এর অবৈজ্ঞানিকতা পরবর্তীকালে জ্যোতির্বিদদের কাছে ধরা পড়ে। বিশেষ করে এই ক্যালেন্ডার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের পর্বতারিখগুলোকে প্রচণ্ডরকম বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গুড ফ্রাইডে, পাম সানডে, ক্র্যাশ ওয়েডনেসডে, লো সানডে প্রভৃতি তাই একেবারেই তারিখনির্ভর থাকতে পারছে না। এসব ত্রুটি দূর করবার জন্য সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (UNO) একটি বিশ্বপঞ্জীর পরিকল্পনা করেছিল, যা কার্যকর করা যায়নি।

পরিকল্পনাটি নিয়ে সংক্ষেপে একটু আলোচনা করা যাক। এদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সম্বৎসরের মেয়াদ ৩৬৫.২৫ দিন হলেও বছরের ৩৬৫তম দিন ‘বর্ষশেষ দিন’ বলে ধার্য হবে, অর্থাৎ সেটি কোনও নির্দিষ্ট বার-নামধারী হবে না। তাহলে প্রত্যেক বছরের প্রতিটি তারিখ এক-ই বারের আওতায় এসে যাবে। ২০২৩ সালের পয়লা জানুয়ারি রোববার গেছে। সেই অনুযায়ী বছরের শেষ দিনটি, অর্থাৎ ৩১-এ ডিসেম্বরটি হবে রোববার। কিন্তু দিনটিকে রোববার আখ্যা না দিয়ে ‘বর্ষশেষ দিন’-রূপে আখ্যা দিলে পরের বছরও পয়লা জানুয়ারি রোববার-ই হবে। তাহলে ইংরেজি তারিখের সঙ্গে বারের একটা চিরস্থানী ঐক্য নিয়ে আসা যায়। কেবল অধিবর্ষ বা লিপইয়ার জুন মাসের ৩০-এর পরদিন করা হবে এবং সে দিনটিও যদি বারহীন হয়, তাহলে লিপইয়ারের সমস্যাও মেটে। আসলে সৌরবৎসরের সঙ্গে মাস ও বারের গোড়া থেকেই অসামঞ্জস্য। এই অসঙ্গতি দূর করার যথাযথ উপায় বার করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের এই উদ্যোগ। এটি অবশ্যই জটিলতামুক্ত সর্বজনগ্রাহ্য বর্ষপঞ্জী হতে পারত।

এ-বর্ষপঞ্জী বা ক্যালেন্ডারের আর-একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে বছরকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা। প্রত্যেক ভাগের যে তিনটি করে মাস, তা হবে ৩১, ৩০ ও ৩০, এই মোট ৯১ দিনের। অর্থাৎ জানুয়ারি ৩১, আর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ ৩০ দিনের— এ রকম। তাহলে জানুয়ারি, এপ্রিল, জুলাই আর অক্টোবর মাসের আরম্ভ এক-ই বারে হওয়া সম্ভব। সে রকম ফেব্রুয়ারি, মে, অগাস্ট আর নভেম্বর এক-ই বারে, এবং মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের সূচনাও একই বারে ফেলা যায়। এমন সপ্তাহ-মাস-বৎসর সাযুজ্য সত্যিই গ্রহণযোগ্য হতে পারত, কিন্তু দুর্ভাগ্য, প্রচুর দেশের আপত্তি এতে। অতএব…

আমরা এখন বাংলা নববর্ষের অপরূপতায় ফিরে যাই আবার। দেখি কী তার মঙ্গল সমাচার।

বাংলা নববর্ষ: পুণ্যাহ থেকে মঙ্গলশোভাযাত্রা

আমরা জানি যে, বাংলা নববর্ষকে আকবর নবরূপদান করেছিলেন খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে। এর দীর্ঘদিন বাদে ঔপনিবেশিক আমলে যখন জমিদার-কৃষক সম্পর্কটি প্রায় অহি-নকুলের হয়ে দাঁড়াল, তখন নববর্ষ পেল একটি গালভরা নাম— পুণ্যাহ। প্রজারা বাংলা বছরের প্রথম দিনে খাজনা দিয়ে যাবে জমিদারকে। সেদিন হয়তো জমিদারগৃহে আহারেরও বন্দোবস্ত থাকত। বন্যা খরা দুর্ভিক্ষ যা-ই হোক না কেন, খাজনায় কোনও মাফ নেই, যেমন জমিদারকেও কড়ায় গণ্ডায় সরকারকে দেয় প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে নির্মম ‘Sunset Law’ বা সূর্যাস্ত আইন মোতাবেক। নইলে রাতারাতি জমিদার লাটে উঠত। কত জমিদার যে আইনের অভিশাপে পড়ে জমিদারি হারিয়েছেন। এই মূলত ‘পুণ্যাহ’ দিবসের মাহাত্ম্য। পরাধীন দেশে এর চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করা যায় না।

তবু এরই মধ্যে রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ পুণ্যাহকে প্রজাদের পক্ষে প্রকৃত আনন্দময় করে তুলেছিলেন প্রজাদের সঙ্গে একাসনে বসে, আহার করে। জমিদার ও প্রজার প্রকৃত মিলনক্ষেত্রে পরিণত করলেন দিনটিকে কবি। ‘পঞ্চভূত’ গ্রন্থে পুণ্যাহের অভিনব ব্যাখ্যা রয়েছে রবীন্দ্রনাথের। পুণ্যাহে বংশীধ্বনি হয়, প্রসঙ্গে তাঁর উক্তি, ‘খাজনার টাকার সহিত রাগরাগিণীর কোনো যোগ নেই, খাজাঞ্চিখানা নহবত বাজাইবার কোনো স্থান নহে, কিন্তু যেখানেই ভাবের সম্পর্ক আসিয়া দাঁড়াইল অমনি সেখানে বাঁশি তাহাকে আহ্বান করে, রাগিণী তাহাকে প্রকাশ করে, সৌন্দর্য তাহার সহচর। গ্রামের বাঁশি যথাসাধ্য প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেছে আজ আমার পুণ্যদিন, আজ আমাদের রাজা-প্রজার মিলন, জমিদারি কাছারিতেও মানবাত্মা আপন প্রবেশপথ নির্মাণের চেষ্টা করিতেছে, সেখানেও একখানা ভাবের আসন পাতিয়া রাখিয়াছে।’

পরবর্তীকালে পয়লা বৈশাখ অন্য আর-একভাবে রবীন্দ্রনাথের মাধ্যমে তাৎপর্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে। তাঁর জন্মদিনটি ২৫-এ নয়, পহেলা বৈশাখ পালনের সূচনা করেন তিনি।

স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রেই এখন বাংলা নববর্ষ পালনের সমূহ জৌলুশ ঘনঘটা। এর সূচনা হয়েছিল কিন্তু পাকিস্তান আমলে ‘ছায়ানট’ প্রতিষ্ঠানটির হাত ধরে, শ্রদ্ধেয় ওয়াহিদুল হক এবং সনজিদা খাতুনের উদ্যোগে, রমনার বটমূলে। আজ তা বহু শাখায় তরঙ্গিত হয়ে বাংলাদেশময় ব্যাপ্ত। হালে নববর্ষের দিনটিতে যে পান্তাভাত আর ইলিশ মাছ যুক্ত হয়েছে, তা কিন্তু গোড়ায় ছিল না। মধ্য-আশি থেকে এর সূচনা, তবে নাচ-গান-আবৃত্তির প্রবাহে বাঙালির সাংস্কৃতিক সত্তাকে উদ্বোধিত করার সঙ্কল্প নিয়েই রমনার বটমূলে নববর্ষ পালন, এখন যা এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। বাঙালির নবচেতনার প্রতীক এখন তা।

এর সঙ্গে সম্প্রতি বেশ কয়েক বছর ধরে যোগ হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে। একেবারেই দেশজ পদ্ধতিতে কাঠ, সোলা ও মাটির মাধ্যমে তৈরি পাখি, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, টেপা পুতুল, পালকি, নৌকো, গোরুর গাড়ি, পাখা, ঝালর ইত্যাদি বানিয়ে প্রদর্শনী বেরোয়। ব্যাপ্ত বাংলাদেশের যে সংস্কৃতি জেলায় জেলায় চর্চিত ও প্রশ্রয়প্রাপ্ত, তারই প্রতিনিধিত্ব করে এই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। নয়ের দশকে এই শোভাযাত্রার সূচনা মূলত শিল্পী ইমদাদ হোসেনের পরিকল্পনামাফিক। এখন কেবল ঢাকাতেই নয়, এর প্রসার ছড়িয়ে পড়েছে ত্রিশালে নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা-সহ সমগ্র বাংলাদেশে। মুখোশ, সরার ছবি, ফেস্টুন নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বেরোয়। এর নান্দনিকতা ও ঐতিহ্য একে রাষ্ট্রসংঘের হেরিটেজের মর্যাদা এনে দিয়েছে।

বাংলাদেশ বাংলা নববর্ষকে প্রসারিত করে দিয়েছে সেখানকার আদিবাসী সমাজের মধ্যে যেমন, তেমনই সারা বিশ্বে। তাই লন্ডন শহরের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা ব্রিকলেন-এ পয়লা বৈশাখ আনন্দের জোয়ার নামে। সেখানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে হয় সাহিত্য উৎসব ‘বুকলিট’। হাজার হাজার বাঙালিতে ভরে যায় মাঠ। জার্মানিতেও অনুরূপ চিত্র। প্যারিস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া— সর্বত্রই বাংলা নববর্ষ পালন এক অহংকার।

ভারতের অন্যত্র নববর্ষ পালিত হয় কীভাবে? দেখা যাক এবার।

>>> ক্রমশ >>>
চিত্র: উইকিপিডিয়া

পড়ুন, প্রথম পর্ব

প্রসঙ্গ বাংলা নববর্ষ

পড়ুন, তৃতীয় পর্ব

নববর্ষ: ভারতের নানা রাজ্যে

পড়ুন, চতুর্থ পর্ব

নববর্ষ: দেশে দেশে

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »