[প্রথম পর্বের পর…]
কলকাতা নগরী ও তার জীবনযাত্রা
কলকাতা নগর মূলত গড়ে উঠেছে সামুদ্রিক বন্দরকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে। তখন সে নগরে দেশীয় ও বিদেশি বণিকদেরও জীবন-জীবিকার কোনও নিশ্চয়তাই ছিল না বলা চলে। শ’য়ে শ’য়ে, হাজারে হাজারে দেশি-বিদেশি মানুষ মরেছে এই নগরের জলহাওয়ায়। তারপর যখন ইংরেজ তার ব্যবসা ও শাসন নিয়ে জাঁকিয়ে বসল, তখন সরাসরি ব্রিটিশ ও নেটিভ— এই দুই ধারায় ভাগ হয়ে গেল কালকাতার নাগরিক জীবন। ব্রিটিশ কলোনি বলতে বড় বড় আলো ঝলমল প্রাসাদ, নাচাগানা ভোগসর্বস্ব জীবন। আর নেটিভ কলোনি পূতিগন্ধময় নরক। ইংরেজের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগে এক অংশ বাঙালির অর্থ ও প্রতিপত্তিলাভ, আবার তাদের চাকরি করে বাঙালি বাবুশ্রেণির উদ্ভব। বাঙালি বাবুশ্রেণিও ভোগবিলাসে কিছু কম যেত না, তার ভূরি ভূরি উদাহরণ আছে। একদিকে ইংরেজ টাউনহল বানাচ্ছে তাদের সপ্তাহান্তের বিলাসের জন্য (নেটিভদের মধ্যে করা লটারির টাকায়), তো তাদের কেরানিরা রাইটার্স বিল্ডিংয়ে গুটিকয়েক চাকর, রাঁড় নিয়ে সংসার সাজাচ্ছেন। আরও একটু পদোন্নতি হলে একেবারে বাগানবাড়ি। এহেন বাঙালির শিল্পসংস্কৃতি সম্পর্কিত রুচিবোধ কেমন হবে, তা বোধহয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
রবীন্দ্রনাথ যে কলকাতায় বড় হচ্ছেন, তার খানিক চিত্র আমরা পাই তাঁর রচনা থেকে এবং কলকাতার মোটামুটি যে ইতিহাস আমরা পাই তা থেকে— সেখানে বাইজি নাচ, খেমটা, খেউড়— সবই ছিল। শুধু ছিল না পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে নাচের চল। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত কিছু কিছু ভিতরবাড়িতে ঢুকলেও নাচ কিন্তু বাইরের বিষয়। নাচ হত বাগানবাড়িতে, রাত হত রঙিন। কে কত বড় বাইজি এনে আসর বসাতে পারল, তার প্রতিযোগিতা চলবে জমিদার ও বাবুদের মধ্যে। বাহিরবাড়ির নাচের মূর্ছনা ভেসে আসবে অন্দরে, নাচ আসবে না। তাই বোধহয় জাভা ও বালী দ্বীপ ভ্রমণে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে চিঠি লিখছেন, তাতে এই অঞ্চলের নৃত্য সম্বন্ধে মুগ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জাভাযাত্রীর পত্রে লিখছেন, ‘এখানকার নাচ তাদের ভাষা, মনোহারিতা বা ভোগের বিষয় নয়।’
উনিশ শতকের কলকাতা আবার শুধুমাত্র নবাবিয়ানাতেই মজে ছিল না, আরও নতুন নতুন ঢেউ এসে লেগেছিল এই শতকে বাঙালিবাবুদের জীবনে। হিন্দু কলেজ, সভা সমিতি, সোসাইটি, ধর্মসভা, সতীদাহ নিবারক আইন, প্রথম বাংলা কাগজ, ইয়ং বেঙ্গল, গৌড়ীয় সমাজ, তত্ত্ববোধিনী সভা— এমন আরও কত কী। বাঙালিবাবুর আর এক নতুন অবতার আবির্ভূত হল বলা চলে, উদারপন্থী বাবুসমাজ। যারা বিভিন্ন ‘পাবলিক ইস্যু’-তে কলম ধরেন, সভা সমিতি করেন। উনিশ শতকে কলকাতায় বাঙালির কাছে নতুন নতুন জীবিকার পথ খুলে যেতে জন্ম হয়েছে নবতম মধ্যবিত্ত সমাজের। এমন ধারলা করা যেতে পারে যে, এইসব সভা সমিতি সোসাইটি মোটামুটি তিন ধরনের অবস্থানে ভাগাভাগি হয়ে চলেছিল, সনাতনপন্থী, উদারপন্থী, ও চরমপন্থী। সমস্ত পক্ষেই কিছু সাহেবের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ করেছিলেন তারা। নব্যশিক্ষিত যুবসমাজ যে বিদ্যের গৌরবে উদারপন্থী ও চরমপন্থী হয়ে উঠেছিল, তা আসলেই এই সাহেবি সংসর্গের ফল তা একপ্রকার নিশ্চিত। সাহেবিয়ানাই মূলত এই শ্রেণির বাঙালিবাবুদের লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল বলা যেতে পারে। উনিশ শতকের এই উদারপন্থা ও সংস্কার আন্দোলন যদি প্রকৃত অর্থে দেশের খুব কাজে না লেগে থাকে তার মূল কারণও এই মনোভাব, যার সাথে দেশের আপামর জনগণের যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি। এই আন্দোলন শহুরে মধ্যবিত্ত ও হিন্দুদের আন্দোলন হয়েই রয়ে গিয়েছে। এই ধারা উনিশ শতক ছাড়িয়ে বিশ শতকেও প্রবেশ করেছিল, যার একরকম প্রকাশ আমরা দেখতে পাই রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘গোরা’ উপন্যাসে। এ প্রসঙ্গে আসব খানিক পরে।
বিংশ শতকের গোড়ায় বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব এবং তার বিরুদ্ধে বিপুল আন্দোলন বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসের এক বৃহৎ অধ্যায়। রাজনৈতিক সামাজিক শিক্ষা ধর্ম সমস্ত ক্ষেত্রেই একপ্রকার পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যেতে লাগল এই সময়। রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে বিদ্যালয় স্থাপন করলেন এক ভিন্নতর শিক্ষার আদর্শে। ‘গোরা’, ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাস লিখছেন, প্রকাশিত হচ্ছে যথাক্রমে ১৯১০ ও ১৯১৬ সালে, কোনও ঘটনাই বিচ্ছিন্ন নয়। তারও আগে ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ড থেকে ফিরে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে নাটকের গানের সাথে নাচের সংযোগ ঘটাচ্ছেন তিনি ‘মানময়ী’ নাটকে। ‘আয় তবে সহচরী’ গানটির সাথে বিলিতি ঢঙে নাচ শিখিয়েছিলেন তিনি। শহুরে শিক্ষিতের পালে নাটকের সাথে নৃত্যের হাওয়া লাগাতে এই ছিল তাঁর প্রথম পদক্ষেপ।
রবীন্দ্রনাথের নৃত্য অভিজ্ঞতা
১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে। সেখানকার নাচের আসরের বিস্তৃত বিবরণ আমরা পাই তাঁর ‘ইউরোপ প্রবাসীর পত্র’ থেকে। নাচের আসরে মাঝে মাঝেই যে তাঁকে বড় বিড়ম্বনায় পড়তে হত, তাও তিনি উল্লেখ করেছেন। সহজে সকলের সঙ্গে মিলে উঠতে পারতেন না বলেই হয়তো অপরিচিত সঙ্গিনীর সঙ্গে নাচে প্রায়ই ভুল হত। নাচের আসরের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে সঙ্গিনীর অনুমতি নিয়ে কী নাচ নাচবেন তা লিখিতরূপে ঠিক করতে হত। এ প্রসঙ্গে তিনি সেদেশের নানা প্রকার নাচের নাম উল্লেখও করেছেন, আবার এর মধ্যে কিছু নাচে যে তিনি অত্যন্ত পারদর্শী তাও জানাচ্ছেন। কিন্তু সঙ্গিনী পছন্দ না হলে তিনি নাচে বারবার ভুলও করে ফেলেছেন, কখনও কারও গাউন মাড়িয়ে কারও গায়ের ওপর পড়ে বেতালে পা ফেলে, এমনকি সহনর্তকীর পাও মাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করছেন। আবার পছন্দের সঙ্গিনীর সাথে খুব সুন্দরভাবে ‘গ্যালপ’ নেচেছিলেন বলে নিজেই নিজের তারিফ করছেন।
এই নাচের আসর রবির কেমন লেগেছিল, তা সহজেই অনুমান করা যায়। ঘরভর্তি মেয়ে-পুরুষ জোড়ায় জোড়ায় নাচছে, নাচের ফাঁকে যুগলে নিভৃত সময় কাটাচ্ছে— এ সমস্তই যদি তার খুব খারাপ লাগত বা সংস্কারে বাঁধত তবে নিশ্চিত বারবার ওমুখো হতেন না। পত্রে একাধিক সন্ধ্যার বিবরণ পাওয়া যায়। প্রথমদিকের এই জোড়ায় জোড়ায় নাচে অসোয়াস্তি যেমন ধরা পড়েছে, তেমনই কী যেন একটা উচ্ছ্বাসের ঢেউ উঠত এই ঘরের মধ্যে— তাও উল্লেখ করতে ভোলেননি। সম্ভবত এই উচ্ছ্বাস এই আনন্দের ভাবই তাঁকে নাচের প্রতি বেশি করে টেনেছিল। ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ড থেকে ফিরেই রবীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকো বাড়িতে ‘মানময়ী’ নাটকের অভিনয়ের সময় ‘আয় তবে সহচরী’ গানটি রচনা করে হাতে হাত ধরে বিলিতি ঢঙে নাচিয়েছিলেন। পরে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে নাটকটি পুনরায় পরিবর্তিত আকারে অভিনীত হয় ‘ভারতীয় সংগীত সমাজ’-এর প্রযোজনায়, নাম হয় ‘পূর্ণবসন্ত’। এই গীতিনাট্যটির মহড়ায় কবি নিজে হাততালি দিয়ে নাচ শিখিয়েছিলেন।
সংস্কারের আবহে ঠাকুরবাড়ি
পুরনো সংস্কার কাটিয়ে ঠাকুরবাড়িতে নতুন সংস্কার গড়ে ওঠার যে ধারাবাহিকতা চলেছে দ্বারকানাথ, দেবেন্দ্রনাথের পরবর্তী প্রজন্মেও— এলিট বঙ্গসমাজে তার বেশ প্রভাব পড়েছিল। রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা ও সেজদাদা, সত্যেন্দ্রনাথ ও জ্যোতিরিন্দ্রনাথের কথাও এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ কিশোর রবির জীবনে তাঁর এই দুই দাদার প্রভাব অনেকখানি। মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথের প্রভাবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে কীভাবে পরিবর্তনের বন্যা বইতে লাগল, তা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ উল্লেখ করেছেন তাঁর স্মৃতিকথায়। সত্যেন্দ্রনাথ তাঁর স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনীকে নিয়ে হুডখোলা ফিটন গাড়িতে কলকাতাবাসীকে হতবাক করে বেড়াতে বেরতেন। সত্যেন্দ্রনাথ যখন আমেদাবাদে চাকরিরত ছোট দুই সন্তান নিয়ে জ্ঞানদানন্দিনী একলাই থাকতেন লন্ডন শহর থেকে পঞ্চাশ মাইল দূরে ব্রাইটন নামক সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে। তিনি নিজে আবার এক কদম এগিয়ে দুটি ঘোড়া কিনে স্ত্রীকে নিয়ে ঘোড়সওয়ারি করতেন ময়দানে। জোড়াসাঁকো থেকে ময়দান পর্যন্ত পথচারীর তাক লেগে যেত এমন দৃশ্য দেখে, তা বলাই বাহুল্য। ঠাকুরবাড়ির নতুন প্রজন্ম নারীকে অন্তঃপুর থেকে বাইরে নিয়ে এলেন, ঘরে বাইরে সঙ্গী করে নিলেন বলা যায়। এ সমস্তই রবীন্দ্রনাথের বিলেত যাওয়ার আগের ঘটনা, আর এ সমস্ত ঘটনার যথেষ্ট প্রভাব যে তাঁর ওপর পড়েছিল, তা বলাই বাহুল্য।
উনিশ শতকের নব্য বাঙালি উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত যে শুধুই সাহেবিয়ানায় মজে থাকেনি, বরং বিদেশি সমাজ-সংস্কৃতির দাপটে সে নিজের দিকেও ফিরে দেখতে শিখেছিল— তা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। একদিকে খ্রিস্টান পাদরিদের দাপট, ইংরেজি শিক্ষার বোঝা, অন্যদিকে ইংরেজ সরকারের দাপট— বাঙালি শুধুই তা সহ্য করেছে এবং তাঁবেদারি করেছে বিষয়টা এমনও নয়। নিজের দেশ ধর্ম সমাজ শিক্ষা ও সংস্কৃতির দিকে মনোনিবেশও করেছে একটি অংশের বাঙালি। যে ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেছে, তা সাধন করতে মন দিয়েছে। যুগের সঙ্গে সময়ের সঙ্গে তাকে নতুন করে গড়ে নিতেও উদ্যোগী হয়েছে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি এর মধ্যে অগ্রগণ্য। শুধুমাত্র পরিবারই নয়, রামমোহন থেকে বিদ্যাসাগর, কেশব সেন থেকে দীনবন্ধু মিত্র, মধুসূদন দত্ত, বাংলায় ধর্ম থেকে সমাজ ও সাহিত্য সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বিপুল সংস্কারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন অষ্টাদশ শতক থেকেই।
মাতামহীর মৃত্যুর পর তৎকালীন বিলাসজীবন ছেড়ে প্রাচীন সংস্কৃত দর্শন পাঠে মনোনিবেশ করলেন দেবেন্দ্রনাথ। রাজা রামমোহনের প্রভাবে উপনিষদের তত্ত্বজ্ঞান সম্বন্ধে আগ্রহী হলেন এবং মূর্তিপূজার বিরোধী হয়ে উঠলেন। অতঃপর ‘তত্ত্ববোধিনী সভা’ গঠন ও ধীরে ধীরে ব্রাহ্মসমাজে প্রবেশ। ২৬ বছর বয়সে তিনি ব্রাহ্মসমাজে দীক্ষা নিলেন এবং ব্রাহ্মধর্ম প্রচারে মন দিলেন।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের একের পর এক দৃঢ় পদক্ষেপ ঠাকুরবাড়ির সংস্কারের মূলে আঘাত করেছিল। পৌত্তলিকতা থেকে সরে এসে পারিবারিক বৈষ্ণব ধর্ম ত্যাগ করলেন। পারিবারিক দেবতার পূজা বন্ধ, ব্রাহ্মসভায় প্রকাশ্য বেদপাঠ, ব্রাহ্ম সঙ্গীতের প্রচলন, অপৌত্তলিকভাবে পিতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান এবং রবীন্দ্রনাথের জন্মের দু’বছর বাদে অপৌত্তলিকভাবে সুকুমারী দেবীর বিবাহ— এ সমস্তই তৎকালীন হিন্দুসমাজে যথেষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপ। কুলদেবতার পুজো বন্ধ করে দেওয়াতে পরিবারে পর্যন্ত ভাঙন এসেছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। গিরিন্দ্রনাথের (দ্বারকানাথের তৃতীয় পুত্র) বিধবা স্ত্রী পুত্র, পুত্রবধূ, কন্যা ও জামাতাদের নিয়ে উঠে গিয়েছিলেন দ্বারকানাথের বৈঠকখানা বাড়িতে।
এভাবে ঠাকুরবাড়ির আত্মীয়পরিজন থেকে যেমন তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তেমনই সমাজে অগ্রগণ্য বহু মানুষের সঙ্গে নিজস্ব এক পরিমণ্ডল গড়ে তুলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের নিজস্ব রুচি ও সংস্কার উৎসব তাঁরা নিজেরাই গড়ে নিয়েছিলেন। পুজোআচ্চা বন্ধে সামাজিক পরিসরে হিন্দু সমাজের সঙ্গে ঠাকুরবাড়ির বিচ্ছেদ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে সামাজিক পালাপার্বণ, উৎসবের ক্ষেত্রে জামাইষষ্টি, ভাইফোঁটা চালু থাকল, সাথে যোগ হল ‘মাঘোৎসব’, নববর্ষ (পয়লা বৈশাখ) প্রভৃতি অনুষ্ঠান, যা নতুন এক সংস্কৃতির জন্ম দিল। [চলবে]
চিত্র: ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ গীতিনাট্যে ইন্দিরা দেবী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]
রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]
রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]