Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

পণ্য-অর্থ, শব্দ-অর্থ, মার্ক্স ও অনুবাদ-জিজ্ঞাসা

  • 0. প্রসঙ্গ নির্দেশ

কার্ল মার্ক্স তাঁর রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিচারের ভিত্তি সংক্রান্ত পাণ্ডুলিপিগুলির প্রথম ভাগে, পণ্য-অর্থ ও শব্দ-অর্থ সম্পর্কগুলির সঞ্চালনেরকোনো পণ্যের বিনিময় মূল্যকে তার অর্থ মূল্যে রূপান্তরিত করার আর কোনো ধারণাকে তার মাতৃভাষা হতে কোনো বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করার কাজের মধ্যে তুলনা করে লেখেন [1]: “(Das Geld mit dem Blute zu vergleichen das Wort Circulation gab dazu Anlaß ist ungefähr ebenso richtig wie das Gleichniß des Menenius Agrippa zwischen den Patriciern und dem Magen.) [2] (Das Geld mit der Sprache zu vergleichen ist nicht minder falsch. Die Ideen werden nicht in die Sprache verwandelt, so daß ihre Eigenthümlichkeit aufgelöst und ihr gesellschaftlicher Character neben ihnen in der Sprache existirte, wie die Preisse neben den Waaren. Die Ideen existiren nicht getrennt von der Sprache. Ideen, die aus ihrer Muttersprache erst in eine fremde Sprache übersezt werden müssen, um zu kursiren, um austauschbar zu werden, bieten schon mehr Analogie; die Analogie liegt dann aber nicht in der Sprache, sondern in ihrer Fremdheit.)” [“(অর্থের সাথে রক্তের তুলনা করাটাসঞ্চালন শব্দটির সুবাদে এই তুলনার উদ্ভব ঘটেছেঠিক ততোটাই সঠিক যতোটা মেনেনিয়াস আগ্রিপার কাহিনীতে প্যাট্রিশিয়ানদের সাথে পেটের তুলনা৷) [2] (অর্থের সঙ্গে ভাষার তুলনা করাটাও কম ভুল নয়৷ ভাষায় ব্যক্ত হলে আমাদের ধারণাগুলো এমনভাবে  পাল্টে যায় না, যাতে তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলি হারিয়ে যায়, অথচ মালের পাশে দামের মতো তাদের সামাজিক চরিত্রটি বজায় থাকে। ধারণাগুলো ভাষা থেকে আলাদাভাবে বিরাজ করে না। যখন কোনো ধারণার সঞ্চালনের স্বার্থে, তাকে বিনিময়যোগ্য করে তোলার জন্য, তার মাতৃভাষা হতে অন্য কোনো বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করার প্রয়োজন হয়, তখন তুলনাটা বেশি লাগসই; তবে তুলনা সেখানে ভাষার সাথে নয়, তুলনাটা তার বিদেশিত্বের সাথে।)”]

মার্ক্স এই কথাগুলি লেখেন ১৮৫৭-১৮৫৮ সালের কোনো এক সময়ে৷ তাঁর এই রচনা সম্পাদকদের দেওয়া Grundrisse শিরোনামে ১৯৩৯-২০০৬ কালপর্বে নানা সংস্করণে ও  অনুবাদে প্রকাশিত হয় ৷ এই প্রকাশনাগুলি বিগত কয়েক দশক জুড়ে মার্ক্স চর্চার এলাকায় তুমুল আলোড়ন সৃষ্টিকারী আলোচনার ও তীব্র মতাদর্শগত বিতর্কের রসদ হিশেবে ব্যবহৃত হয়েছে, আজও হয়৷ বিগত ১৯৮২ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে, তুলনামূলক সাহিত্যের ও অনুবাদ  বিদ্যার কোনো কোনো গবেষক-গবেষিকা ভাষা, শব্দ, অর্থ ও অনুবাদ সংক্রান্ত আলোচনায মার্ক্সের এই বক্তব্যটি উল্লেখ ও ব্যবহার করেছেন [3]৷ তবে যাঁরা মার্ক্সের রচনাগুলির সম্পাদনা, চর্চা ও অনুবাদের আলোচনায় এবং অনুবাদক হিশেবে মার্ক্সের কাজের মূল্যায়নে নিয়োজিত [4], আজ পর্যন্ত তাঁদের তরফে এই প্রস্থান বিন্দু হতে উৎসারিত কোনো প্রাসঙ্গিক আলোচনা বর্তমান অনুবাদকের নজরে পড়েনি৷ তাই এই অনুবাদ-জিজ্ঞাসা৷ 

  • 1. বাজারে শ্রম-সময়-পরিবাহী পণ্য-অর্থ (টাকা-পয়সা/ ডিজিটাল মুদ্রা/গুপ্ত মুদ্রা) বিনিময় এবং অনুবাদে ধারণা-পরিবাহী শব্দ-অর্থ (মানে/তাৎপর্য) বিনিময়

 1.1. পণ্য-অর্থ: একটি পণ্য হিশেবে শ্রম-সময়ের, এবং সেই শ্রম-সময় ব্যবহার করে উৎপাদিত অন্যান্য পরিষেবার ও পণ্যের, সঞ্চালনের স্বার্থে তাদের মজুরি, দাম ইত্যাদি অর্থ-মূল্যে/টাকা-পয়সায় রূপান্তরিত করা হয়। এই রূপান্তর বাস্তব শ্রম-সময় ও উৎপাদিত অন্যান্য পরিষেবা ও পণ্য থেকে বিচ্ছিন্ন৷ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদক ও উপভোক্তারা নিজেদের প্রয়োজনের খাতিরে এই বিচ্ছিন্নতার পরিবেশেই বিভিন্ন পরিষেবার ও পণ্যের সঞ্চালনে নিয়োজিত থাকেন ৷

 1.2. শব্দ-অর্থ: এক বা একাধিক ধারণার পরিবাহী কোনো রচনার সঞ্চালনের স্বার্থে তাকে তার উৎস ভাষা থেকে অন্য কোনো লক্ষ্য ভাষায় রূপান্তরিত করা হয় বা অনুবাদ করা হয়৷ এই রূপান্তর বা অনুবাদ রচনাটির উৎস ভাষা হতে তাকে বিচ্ছিন্ন করে৷ অনুবাদক-অনুবাদিকারা ও পাঠক-পাঠিকারা তাঁদের নিজেদের প্রয়োজনের খাতিরে এই বিচ্ছিন্নতার পরিবেশেই বিভিন্ন ধারণার ও রচনার সঞ্চালনে নিয়োজিত থাকেন ৷

অনুবাদ করার সময়ে সমতুল্য বা সমার্থবোধক শব্দ ও পরিভাষা বেছে নেওয়ার বা তৈরি করার কাজটি ঘটে আমাদের নানা সমাজের উঁচু-নিচু, অসমতল রাজনৈতিক অর্থব্যবস্থার চৌহদ্দির ভেতরে, এবং সেখানে বিভিন্ন ভাষা ব্যবহারকারীদের গতিশীল ভাববিনিময় সম্পর্কগুলির উন্মুক্ত ও আঁকাবাঁকা সম্ভাবনার সাংস্কৃতিক পরিবেশে৷ ওপর ওপর দেখলে এই ভাব বিনিময়ে ব্যবহার করা পারিভাষিক ও সাধারণ প্রতিশব্দগুলিশ্রমের অসমতল বাজারের আইনি আড়ালগুলির আওতায় বিনিময় করা শ্রম সময়ের ও মজুরি হিশেবে দেওয়া দামের বা অর্থমূল্যের মতোপরস্পরের সমান, তবে আসলে ও ভেতরে ভেতরে তারা সেই বাজারে ক্ষমতার ও সামর্থ্যের দাপটের জোরে শ্রমের উদ্বৃত্ত মূল্য নিষ্কাশনকে আড়াল করে রাখা বিনিময়ের দুই দিকের মতোইপরস্পর বিচ্ছিন্ন ও অসমান৷ শ্রমের বাজারে শ্রম-সময় একটি পণ্য৷ সেই পণ্য বিক্রেতা মজুরের ও বিনিময়ে অর্থমূল্যে মজুরি দিয়ে সেই শ্রম-সময় ক্রেতা অর্থের মালিকের হাজির হওয়ার ইতিহাস, পটভূমি ও অবস্থা আলাদা, তাই সেখানে একটি পণ্য হিশেবে শ্রম-সময়ের ও অর্থের বিনিময় পরস্পরের সমান নয় ৷ 

  • 2. যখন কোনো ধারণার সঞ্চালনের স্বার্থে কোনো উৎস ভাষা থেকে কোনো লক্ষ্য ভাষায় সেই ধারণার দ্যোতনাকারী শব্দটি অনুবাদ করা হয়, তখন সেখানে শব্দ-অর্থ বিনিময়ের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নতার অনুষঙ্গগুলি ঠিক কেমন তা বোঝার জন্য একটি ধারণার দ্যোতনাকারী একটি বাংলা শব্দের ও অন্য কয়েকটি ভাষায় তার প্রতিশব্দগুলির অর্থ সেই শব্দগুলির ব্যুৎপত্তির আলোকে বিবেচনা করা যাক৷ শব্দটি: (ক) বাংলায়: (ক.1)‘অনুবাদএবং (ক.2) ‘তর্জমা’ (‘তরজমা’), (খ) জার্মানে: ‘Übersetzung’, (গ) রুশিতে: ‘перевод’, আর (ঘ) ইংরেজিতে: ‘translation’  ব্যুৎপত্তি বিচার: 

 ক.1. অনুবাদ: সংস্কৃতअनुवाद’  শব্দ  থেকে প্রতিবর্ণীকৃত→

অনু (পরে)+[(√বদ্=বলা)+অ)=]বাদ→অনুবাদ=যা পরে বলা হয়েছে; যেমন, শিষ্যদের দ্বারা গুরু মহাশয়ের বলা কোনো বাক্যের পুনরাবৃত্তি৷

 ক.2. তর্জমা (তরজমা): আরবি ترجمة (তর্জমঃ) শব্দ  থেকে প্রতিবর্ণীকৃত→ পাল্টে বলা/ভাষান্তর/অনুবাদ ৷

 খ. Übersetzung: über (উপরে) + setzen (সেট করা)→[সম্ভবত  লাতিন trādūcō (স্থানান্তর করা, রূপান্তর করা, অপসারণ করা)→trādūcere (নেতৃত্ব দেওয়া, রাস্তা দেখানো, আনা, পরিবহন করা, পরিচালনা করা, অনুবাদ করা) ক্রিয়াপদগুলির প্রভাবে লক্ষ্যার্থে] →übersetzen+-ung (বিশেষ্য তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত –ung প্রত্যয়)→ ভাষান্তর/অনুবাদ৷

 গ. перевод: пере (উপরে) + водить (নিয়ে যাওয়া)→переводить (ক্রিয়াপদ) →নেতৃত্ব দেওয়া, বোঝানো, স্থানান্তর করাঅনুবাদ করা→перевод (বিশেষ্য)→অনুবাদ৷

 ঘ. translation: লাতিন trānsferō (to transfer/ transport/ transform/ translate)→লাতিন trānslātiō→ ইংরজি: translation→অনুবাদ৷

লক্ষ্য করার বিষয়, এই শব্দগুলির অর্থের (মানের/তাৎপর্যের ) এক বা একাধিক অনুষঙ্গ পরস্পরের সমান হতে পারে, কিন্তু তাদের সকলের সব অর্থের উদ্ভবের ও ইতিহাসের বাকি অনুষঙ্গগুলি একে অপরের  সমতুল্য নয়৷ এই অসমতুল্যতা তাদের বিচ্ছিন্নতার ভিত্তি৷ 

কোনো ভাষার অভিধানে ও পরিভাষা কোশে যে শব্দগুলিকে আমরা সমার্থবোধক বলে বিবেচনা করি সেগুলির বিভিন্ন অর্থের সাথে সেই শব্দগুলির সম্বন্ধ দ্বন্দ্বসমন্বয়মূলক৷ আর তাই অন্য ভাষার প্রতিশব্দগুলির সাথে তাদের পারস্পরিক সম্বন্ধও সেই রকম৷ আমাদের সমাজের ও চিন্তার অন্য সব সম্বন্ধের ক্ষেত্রেই এই কথা সত্য৷ এই সম্বন্ধগুলি কোথাও বা কখনও বেশি সন্তোষজনক, অন্য জায়গায় বা অন্য সময়ে কম৷ 

একটি উপমা ব্যবহার করে বলা যায়, যে সারা পৃথিবীর সব সমাজেই মাতৃভাষা বা ঘরের ভাষা হতে বিদেশি ভাষায় অনুবাদ এবং, তার বিপরীতে বিদেশি ভাষা হতে মাতৃভাষায় বা ঘরের ভাষায় অনুবাদ করার কাজটা যেসব অভিধানের সাহায্যে ও অনুবাদ সংক্রান্ত ভাষাগত লোকাচারের মধ্যে করা হয়, সেগুলি একাধিক এবড়োখেবড়ো এবং গতিশীল ভাষাগত আনত তলের বা ঢালু জমির ওপরে তৈরি হয় ও টলমল করতে করতে দাঁড়িয়ে থাকে। এই জমিগুলির ঢাল বহুমাত্রিক, আর সেই মাত্রাগুলির প্রত্যেকটিই পরস্পর নির্ভরশীল নানা সম্ভাবনাময় এলোমেলো চলরাশি৷  

  • 3. এখানে একটি মাত্রা ভাষাগুলির অসমান শব্দভাণ্ডারের: নানা বিদেশি ভাষার ও মাতৃভাষার নানা অভিধানের বা শব্দকোষের সাহায্য নিয়ে তৈরি করা কিছুটা সমার্থবোধক আর বাকিটা ভিন্নার্থবোধক পরিভাষারগুলির। এই ঢালগুলির এক প্রান্তে যে ভাষাগুলি থেকে কোনো রচনা, বই ইত্যাদি অনুবাদ করা হচ্ছে সেই উৎস ভাষাগুলির আগেভাগেই প্রতিষ্ঠিত ভাষা সংক্রান্ত সম্পদের অবস্থান, আর অন্য প্রান্তে যে ভাষাগুলিতে অনুবাদ করা হচ্ছে সেই লক্ষ্য ভাষাগুলির জায়মান অভিধান, পরিভাষা কোষ ইত্যাদির জায়গা। অধিকাংশ  লক্ষ্য ভাষায় প্রাসঙ্গিক বিদ্যার চর্চা  ও অভিধান ইত্যাদি রচনা করার ঐতিহ্য উৎস ভাষাগুলির প্রাসঙ্গিক সামর্থ্যের তুলনায় দুর্বল। তাই এই ঢালে তাদের জায়গা ভিন্ন ভিন্ন। কয়েকটি প্রাসঙ্গিক উদাহরণের দিকে তাকানো যাক।

প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য (ঋগ্বেদ, পঞ্চতন্ত্র, জাতকমালা, মহাভারত, ত্রিপিটক, রামায়ণ…), ভাষাশাস্ত্র (পাণিনি:অষ্টাধ্যায়ী; যাস্ক: নিরুক্ত), ছন্দশাস্ত্র (পিঙ্গল), অর্থশাস্ত্র (কৌটিল্য/চাণক্য)কামশাস্ত্র (মল্লনাগ বাৎস্যায়ন: কামসূত্র), নাট্যশাস্ত্র (ভরত); এবং, অনতি প্রাচীন যুক্তিশাস্ত্র ও জ্ঞানতত্ত্ব (জয়ন্ত ভট্ট: ন্যায়মঞ্জরী; গঙ্গেশোপাধ্যায়:তত্ত্বচিন্তামণি; ধর্মকীর্তি:ন্যায়বিন্দু; যশোবিজয়জী: জৈন তর্ক ভাষা…),  ইউরোপের, ভারতের ও অন্যান্য অঞ্চলের আধুনিক ভাষায় অনুবাদ করার সময়ে  এই রচনাগুলির সমৃদ্ধ ও প্রাচীন উৎস ভাষাগুলির জায়গা সেই ঢালের ওপরের দিকে, আর দুর্বল ও অর্বাচীন লক্ষ্য ভাষাগুলির জায়গা তার নিচের দিকে।

নিউটনের Philsophiæ Naturalis Principia Mathematica [ফিলোসোফিয়াই নাতুরালিস প্রিঙ্কিপিয়া মাথেমাতিকা] (1687) অনুবাদ করার সময়ে উৎস ভাষা নব্য লাতিনের জায়গা এই ঢালের ওপরে এবং ইংরেজি থেকে শুরু করে রুশ ও চীনা পর্যন্ত সব আধুনিক লক্ষ্য ভাষার জায়গা তার নিচে।

চার্লস ডারউইনের On the Origin of Species [অন দি অরিজিন অফ স্পিসিস] (1859) অনুবাদ করার সময়ে উৎস ভাষা আধুনিক ইংরেজির জায়গা ঢালের ওপরে আর জার্মান থেকে চীনা, বাংলা ইত্যাদি আধুনিক লক্ষ্য ভাষাগুলির জায়গা তার নিচে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের মেঘনাদবধ কাব্য [Meghnādbadh kābya] (1861) হিন্দিতে (1919) ও ইংরেজিতে (1926; 1986; 2004; 2010) অনুবাদ করার সময়ে উৎস ভাষা বাংলার জায়গা এই ঢালের ওপরে আর হিন্দির ও ইংরেজির জায়গা তার নিচে।

উপযুক্ত প্রতিশব্দ না পেলে অনুবাদক অনেক সময়ে উপরের (ঋগ্বেদ থেকে Meghnādbadh kābya পর্যন্ত) গ্রন্থনামগুলির কায়দায় প্রতিবর্ণীকরণ করেন। অনেক সময়ে অনুবাদ করার প্রয়োজনে কোনো পুরোনো ভাষা থেকে যৌথ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া শব্দের সুবাদে প্রতিবর্ণীকরণ  করা হয়, যেমন: বাংলা থেকে হিন্দিতে (মেঘনাদবধ কাব্য/मेघनाद-वध : এখানে সংস্কৃতের উত্তরাধিকার), বা জার্মান থেকে ফরাসিতে ও  ইংরেজিতে (Das Kapital/Le Capital/Capital :এখানে লাতিনের উত্তরাধিকার)।

মার্ক্সের অল্প কয়েকটি রচনার ভাষা গ্রিক ও লাতিন, অধিকাংশ রচনার ভাষা জার্মান, কয়েকটির ভাষা ফরাসি ও ইংরেজি; তাই তাঁর রচনাগুলি অনুবাদ করার সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উৎস ভাষা হিশেবে জার্মানের জায়গা অনুবাদ সংক্রান্ত ঢালের ওপরে আর সব লক্ষ্য ভাষার জায়গা তার নিচের দিকে। বিভিন্ন বিদ্যার ও ললিত সাহিত্যের বই অনুবাদ করার লক্ষ্য ভাষা হিশেবে বাংলা ভাষার বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে দে.: [5] 

  • 4. আরেকটি মাত্রা অনুবাদটি যাঁরা ব্যবহার করবেন বা করছেন তাঁদের অসমান চাহিদা ও প্রত্যাশার: নানা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিক্যাল টেকনোলজির, প্রকৃতি ও সমাজ বিজ্ঞানগুলির এবং ফলিত গণিতের বিভিন্ন শাখার প্রবন্ধ ও বই অনুবাদ করার সময়ে ধারণা বিনিময়ে শতকরা একশো ভাগ সাফল্য অর্জন করার জন্য শিল্প-বাণিজ্যের বাজারের তরফে ব্যবহারিক চাহিদা ও প্রত্যাশা থাকে, আর খুব হেলাফেলা না করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই,খানিকটা মোটা দাগে হলেও, সেই প্রত্যাশা পূরণও হয়।                                         

তবে গণিতের ও বিভিন্ন বিজ্ঞানের ভিত্তিস্থাপনাকারী চিরায়ত সাহিত্য, ললিত সাহিত্য এবং দার্শনিক/ফিলোসোফিক্যাল সাহিত্যের অনুবাদের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই একথা খাটে না। সেখানে আলোচিত ধারণারাজির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তাৎপর্যগুলির জন্য সমতুল্য পরিভাষার সন্ধান বা নির্মাণ অনেক সময়ে অধরা থেকে যায়। অনুবাদে নানা মাপের অর্থবিপর্যয় ঘটে।

কোনো কোনো রচনা একই সময়ে বিজ্ঞানগুলির ও ফিলোসোফির জন্য গুরুত্বপূর্ণ; যেমন, মার্ক্সের গণিতের পাণ্ডুলিপিগুলি। সেখানে উৎস ভাষার ও লক্ষ্য ভাষার পাঠ পাশাপাশি পাতায় বা কলামে দিলে, যেখানে সন্দেহ হচ্ছে সেখানে অনুবাদের খামতি কাটিয়ে উঠে ধারণাগুলি বোঝার কাজটা সহজ হয়। মার্ক্সের গণিতের পাণ্ডুলিপিগুলির ১৯৬৮ সালের মস্কো সংস্করণে তাই করা হয়েছে। 

বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মধ্যে গড় সাক্ষরতার হার ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকের পাঁচ শতাংশ (৫%) থেকে বাড়তে বাড়তে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসে পঁচাত্তর শতাংশ (৭৫%) ছাড়িয়ে গেলেও একশো শতাংশ (১০০%) সাক্ষরতা অর্জন করার লক্ষ্য এখনও বহুদূরে। আরো একটি চিন্তার ব্যাপার ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকে বিংশ শতাব্দীর ষাটের-সত্তরের দশক পর্যন্ত উচ্চশিক্ষিত বাঙালিরা বাংলাভায় নানা বিদ্যাচর্চা করতেন, সেই সব বিদ্যার বই বাংলায় অনুবাদ করতেন; কিন্তু, গত পঞ্চাশ-ষাট বছর যাবৎ সেই চর্চার পরিমাণ ও গুণমান ক্রমাগত নিচে নামছে। পরিণতি: বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বর্তমান প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলা ভাষায় বিভিন্ন বিদ্যাচর্চা করেন না। দু-একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণের কথা বাদ দিলে তাঁরা প্রায় কোনো বিষয়েরই গভীরে ঢুকতে চাইছেন না ও পারছেন না। আর এটা ঘটছে এমন একটা সময়ে যখন, আন্তর্জালের কল্যাণে, যেকোনো বিষয়ের অতীত ইতিহাস থেকে, বর্তমান গবেষণার ফসলগুলি পার হয়ে, ভবিষ্যতে সম্ভাব্য গবেষণাগুলির খসড়া পরিকল্পনাও ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসু মানুষের নাগালের মধ্যে এসে যাচ্ছে। এ এক আশ্চর্য বিরোধাভাস। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে কেউ কেউ বেশি মজুরির বাজারগুলিতে প্রান্তিক শিক্ষা-শ্রমজীবী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলা ভাষায় বিভিন্ন বিদ্যার গ্রন্থ-নিবন্ধ অনুবাদ করার চাহিদা ও প্রত্যাশাও অধোগামী। বেশি বাজেটওয়ালা সরকারি প্রকাশনা ভবনগুলিও অনুবাদের উৎস ভাষার ও লক্ষ্য ভাষার পাশাপাশি পাঠওয়ালা বই ছাপার উদ্যোগ গ্রহণ করে না, চিরায়ত রচনাগুলির ডিজিটাল বই তৈরি করার কথাও ভাবে না।

সাক্ষর বাঙালিদের ঘরের ভাষা এখন নানা ধরনের ইংরেজি-মেশানো-বাংলা, তাই প্রমিত ও রীতিসিদ্ধ সাহিত্যের বাংলা ভাষাকেও তারই আদলে গড়ে-পিটে নেওয়ার একটা চাপ আছে। ভবিষ্যতে হয়তো এই পথে কোলকাতা ও ঢাকার বর্তমান কালের প্রমিত বাংলা ভাষার নতুন কোনো ইংরেজি-মেশানো অপভ্রংশ ও অবহট্ঠ [6] রূপের উদ্ভব ঘটবে। তবে এইবার তার রূপটি ঠিক কেমন হবে, আর তাতে বাজার-হিন্দুস্তানীর উর্দু-হিন্দী রূপগুলির কতোটা মিশেল থাকবে তা আগেভাগে বলা সম্ভব নয়। 

  • 5. অন্য একটি মাত্রা যাঁরা বিভিন্ন বিষয়ের গ্রন্থ-নিবন্ধ রচনা ও অনুবাদ করছেন বা করবেন তাঁদের অসমান সামাজিক যোগানের ও প্রস্তুতির: এঁদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে একাধিক বা বহু ভাষা ব্যবহারকারী ও বিভিন্ন বিদ্যার চর্চায় নিবেদিত উদ্যোগী মানুষের যোগান ও তাঁদের প্রস্তুতির মান নানা সামাজিক উপাদানের ওপর নির্ভর করে। ঊনবিংশ শতাব্দীর কোলকাতায় সেই উপাদানগুলির সমাবেশের অন্যতম ফল: সেখানকার পার্ক স্ট্রিটের এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতীচ্য ও কলেজ স্ট্রিটের প্রাচ্য নবজাগরণ। আর সেই শতাব্দীর লণ্ডনে অনুরূপ সমাবেশের অন্যতম ফল: সমকালীন বিজ্ঞানগুলির বহুমুখী বিচারে নিবেদিত ও আন্তর্জাতিক সামাজিক মুক্তি অভিলাষী মার্ক্সের কাজ।

এখন একটি উদাহরণের আলোকে অনুবাদ প্রসঙ্গে মার্ক্সের 1857-1858 সালের কথাগুলির  যথার্থতা বিচার করে এই আলোচনা শেষ করবো।

  • 6. শ্রম-সময়ের ও অন্যান্য পণ্যের এবং অর্থের অসমান বিনিময়, আর কোনো ধারণার সঞ্চালনের স্বার্থে, ধারণাটিকে বিনিময়যোগ্য করে তোলার জন্য, অন্য কোনো বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করার সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাষার শব্দের ও শব্দার্থের অসমতুল্য বিনিময়ের যে তুলনা মার্ক্স করছেন, তা তাঁর নিজের লেখাপুঁজি”-র অতি বিখ্যাত প্রথম খণ্ডের শিরোনামের প্রায় একশো বছর যাবৎ চালু একটি ইংরেজি অনুবাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

বর্তমানে MEGA2 II/5 (1983) হিশেবে পুনর্মুদ্রিত এই Das Kapital. Kritik der politischen Ökonomie. Erster Band [পুঁজি রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিচার প্রথম খণ্ড], Hamburg (1867) বইটির ইংরেজি অনুবাদ আজও  MEGA2 II/9 (1990) হিশেবে Capital. A Critical Analysis of Capitalist Production [পুঁজি পুঁজিবাদী উৎপাদনের একটি সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ], London (1887) এই পরিবর্তিত ও ভুল  শিরোনামে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

এই ইংরেজি অনুবাদে বিপর্যস্ত শব্দ-অর্থ বিনিময় সম্পর্ক, মার্ক্সের কাজের সম্বন্ধে দুটি বড়ো মাপের ভুল ধারণা তৈরি করেছে ও করে যাচ্ছে। এক: রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র একটি শাস্ত্র, মার্ক্স সেই শাস্ত্রটির নানা ধারণার বিজ্ঞানসম্মত বিচারে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি সেই শাস্ত্রটিকে ঘিরে থাকা নানা মতাদর্শের এবং ভ্রান্ত চেতনার সমালোচনাও করেন। দুই: উৎপাদনের কোনো প্রণালী একটি সামাজিক বাস্তবতা; সেই বাস্তবতার প্রকৃতিটি ঠিক কেমন তার বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করা যায়, কিন্তু কোনো বাস্তবতার সমালোচনা করা পণ্ডশ্রম; মার্ক্স সেরকম কোনো কাজ করেননি। মার্ক্সেরপুঁজি”-র প্রথম খণ্ডের 1887 সালে প্রকাশিত এই ইংরেজি অনুবাদের  সাথে অনুমোদনকারী হিশেবে ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস, আর এডোয়ার্ড আভেলিং ও স্যামুয়েল মুর অনুবাদক হিশেবে জড়িত ছিলেন। 

এই অনুবাদটি প্রকাশিত হওয়ার প্রায় নব্বই বছর পরে Capital: A Critique of Political Economy, Volume One [পুঁজি রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিচার প্রথম খণ্ড] London (1976) এই সঠিক শিরোনামে একটি নতুন ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় । তবে পুরোনো ইংরেজি অনুবাদটি ব্যবহার করেই মার্ক্সের এই রচনা দক্ষিণ এশিয়ার নেপালি, মরাঠি, বাংলা, হিন্দুস্তানী (হিন্দি ও উর্দু), তেলুগু, মালয়ালম প্রভৃতি নানা ভাষায় এবং সম্ভবত যেখানে ইংরেজির চল আছে সেরকম আরো কয়েকটি অঞ্চলের ভাষায় অনূদিত হয়েছে ও হচ্ছে।

বেশ কিছুদিন যাবৎ বর্তমানে প্রচলিত ইংরেজি অনুবাদগুলির নানা খামতি দূর করে নতুন ইংরেজি অনুবাদ করার কথা উঠেছে; আর এই বছরেই একটি মার্কিন অনুবাদ প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে [7]

 টীকা

 [1]  মার্ক্স 2006: 95, লাইন 12-19.

 [2] প্রাচীন রোমের শাসক প্যাট্রিশিয়ানদের সাথে শরীরের মধ্যে পেটের আর শাসিত প্লেবিয়ানদের সাথে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের তুলনা।  দে.: লিভি 2006, 2, 32: 122-123.

 [3] শেল 1982: 106-110; লিউ 1999: 22; রবিনসন 2017: 35; শ্রেড 2017: 128-129; লিউ/আন্ড্রে 2018: 369-372 ; এবং, বেনেট 2022.

 [4] স্মিথ 1997; হাউগ 2017 ; জেকবস 2018, 2022 ; রেইটার 2022; ফন্ডিউ 2022; ফন্ডিউ ও ক্যুতিয়ে 2023 ; বকশি 2021, 2023a, 2023b.

 [5] বকশি ২০০৬; খান ২০২২; সেলিম ২০২৩

 [6] অপভ্রংশ:  https://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%AD%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%82%E0%A6%B6

 অবহট্ঠ:

https://bn.banglapedia.org/index.php/%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%A0

 [7] হাউগ 2017; মার্ক্স (2024 সালে প্রকাশিত হবে)।

উল্লেখ করা প্রবন্ধ ও বই

 খান, সলিমুল্লাহ (২০২২), “অনুবাদ প্রসঙ্গে,” সমকাল (ঢাকা), ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

 জেকবস: Jacobs, Jeffrey Power (2018), How to Do Things with Translations [Cross-Lingual Phrase Embeddings for Translation Analysis], Unpublished paper presented at the Ninth Annual Conference on New Directions in Analyzing Text as Data (TADA), September 21-22, 2018, Seattle, Washington, USA.

__ (2022), “Our Word Is Our Weapon”: Text-Analyzing Wars of Ideas from the French Revolution to the First World War, Unpublished Doctoral Thesis, Columbia University, 2022.

 ডারউইন: Darwin, Charles (1859), On the Origin of Species…, London: John Murray. বাংলা অনুবাদ: চার্লস ডারউইন, অরিজিন অফ স্পিসিস, দুই ভাগে প্রকাশিত (২০০১), ভাষান্তর: শান্তিরঞ্জন ঘোষ, কলকাতা: দীপায়ন

 দত্ত, মাইকেল মধুসূদন (1861), মেঘনাদবধ কাব্য, দুই খণ্ডে প্রকাশিত; প্রথম খণ্ড, কলিকাতা: ২০শে পৌষ ১২৬৭, প্রকাশকের বা মুদ্রাকরের নামের উল্লেখ নেই; দ্বিতীয় খণ্ড, কলিকাতা: শ্রীঈশ্বরচন্দ্র বসু কোং, বহুবাজারস্থিত ১৮২ সংখ্যক ভবনে, স্ট্যানহোপ যন্ত্রে যন্ত্রিত, ১২৬৮ সাল। হিন্দি অনুবাদ 1919: मेघनादवध, मूल लेखक: स्वर्गीय माइकेल मधुसूदन दत्त, अनुवादक: मैथिलीशरण गुप्तमधुप‘, १९१९, पुणर्मुद्रण: १९७५ और १९८४, चिरगाँव (झाँसी): साहित्यसदन। ইংরেজি অনুবাদ: (1) 1926: Meghnad Badh Kavya or The fall of Meghnad (Translation of Michael’s Meghnad Badh Kavya from Bengali into English in Blank Verse), by Rajendra Nath Sen, First Edition 1926, Benares: Published by the author; (2) 1986: Meghanadbadh Kavya, Translated by Shyamal Bandopadhyay, Calcutta: Tomsi Publications; (3) 2004: The Slaying of Meghanada: A Ramayana from Colonial Bengal, translated with an introduction by Clinton B. Seely, Oxford/New York etc.: Oxford University Press; (4) 2010: The Poem of the Killing of Meghnād (Meghnādbadh kābya) by Michael Madhusudan Dutt, translated with an introduction and notes by William Radice, Gurugram: Penguin Books.

 দিউকঁজ়ে ও ব্যুরলো [সম্পা.]: Ducange, Jean-Numa/Antony Burlaud (2023), Marx, a French Passion: The Reception of Marx and Marxisms in France’s Political-Intellectual Life, Leiden/Boston: Brill.

 নিউটন: Newton, Isaac (1687), Philsophiæ Naturalis Principia Mathematica, Londoni: Jussu Societatis Regiæ ac Typis Josephi Streater.

 ফন্ডিউ: Fondu, Guillaume (2022), “From Moscow to Paris: The Russian Roots of the First French Translation of Marx’s Capital,” Chapter 7: 117-131, মুস্তো [সম্পা.]  2022.

 ফন্ডিউ ও ক্যুতিয়ে: Fondu, Guillaume/Jean Quétier (2023), How to translate Marx into French?” Chapter 8: 107-116, দিউকঁজ়ে ও ব্যুরলো [সম্পা.] 2023.

 বকশি, প্রদীপ (২০০৬), “বাংলাভাষায় বিজ্ঞান চর্চা: অনুবাদের প্রয়োজন ও সমস্যা,” মীজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা (ঢাকা), ২৩-২৪তম খণ্ড, ৩য়-৪র্থ সংখ্যা: ৩-৬।

 বকশি: Baksi, Pradip (2021), “Marx in the MEGA,” Mainstream, Volume 59 No. 33, 31 July 2021:

https://libcom.org/article/marx-mega

__(2023a), “Śūnyatā and Karl Marx,” Mainstream, Volume 61 Nos. 9 – 10, February 25 and March 4, 2023:

https://libcom.org/article/sunyata-and-karl-marx

__ (2023b), “Reflections on Cyril Smith (1997), Friedrich Engels and Marx’s critique of political economy,” Capital & Class, Volume 21 Issue 2, Summer 1997: 123-142,  December 2023:

https://libcom.org/article/reflections-cyril-smith-1997-friedrich-engels-and-marxs-critique-political-economy-capital

বেনেট: Bennett, Karen (2022), “Systems of exchange: Translation, money and the ecological turn,” Translation Matters (Porto), 4 (2):6-22.

 মার্ক্স: Marx, Karl (1857-1858), Grundrisse der Kritik der politischen Ökonomie, Erster Teil 1857/58 [রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিচারের ভিত্তি, প্রথম ভাগ 1857/58]: (Grundrisse der Kritik der politischen Ökonomie (Rohentwurf) [রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিচারের ভিত্তি, (কাঁচা খসড়া)] শিরোনামে দুই খণ্ডে প্রথম প্রকাশ: (1939), Anhang [পরিশিষ্ট] (1941); দুই খণ্ডে  প্রথম পুনর্মুদ্রণ:  MEGA2 II/1.1 (1976), II/1.2 (1981);  এক খণ্ডে  দ্বিতীয় পুনর্মুদ্রণে: MEGA2 II/1 (2006): 95, লাইন 12-19; দুটি ইংরেজি অনুবাদে: Pelican ed. (1973): 162-163; MECW 28 (1986): 99.

 __ (2024 সালে প্রকাশিত হবে), a new translation of Capital: Critique of Political Economy, Volume 1, Edited and translated by Paul Reitter, Princeton: Princeton University Press.

 মুস্তো [সম্পা.]: Musto, Marcello [Ed.] (2022), Marx and Le Capital: Evaluation, History, Reception, London/New York: Routledge.

 রবিনসন: Robinson, Douglas (2017), “Liu reading Marx,” in: Critical Translation Studies, Chapter 1: 33-66, London/New York: Routledge.

 রেইটার: Reitter, Paul (2022), “Reading Le Capital: Marx as a Translator,” Chapter 8: 132-143,  মুস্তো [সম্পা.]  2022.

 লিউ: Liu, Lydia He (1999), “The Question of Meaning-Value in the Political Economy of the Sign,” in: Tokens of Exchange: The Problem of Translation in Global Circulation, Edited by Lydia H. Liu: 13-41, Durham/London: Duke University Press.

 লিউ/ আন্ড্রে: Liu, Lydia H., and James St. André (2018),  “The Battleground of Translation: Making Equal in a Global Structure of Inequality,” Alif: Journal of Comparative Poetics (Cairo), No. 38, 2018: 368-387.

 লিভি: Titus Livius (27-9 BCE), Ab Urbe Condita (নগর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ) <রোমের ইতিহাস>, Liber II (দ্বিতীয় খণ্ড), 32: Prima sessio plebis. Meneni Agrippae Parabola membrorum et Ventris; লাতিন হরফে লেখা একটি পুরোনো বাংলা অনুবাদ: তারিণীচরণ মিত্র (1803), Triteeyo Kotha Pet o Shoreerer Khonder, 21-22 in: The Oriental fabulist; or, Polyglot translations of Esop’s and other ancient fables from the English language, into Hindoostanee, Persian, Arabic, Brij Bhakha, Bongla, and Sunkrit (sic), in the roman character, by various hands, under the direction and superintendence of John Gilchrist, for the use of the College of Fort William, Calcutta : Printed at the Hurkaru Office; একটি আধুনিক ইংরেজি অনুবাদ: The First secession of the plebs. Menenius Agrippa’s parable of the limbs and the belly, in: Livy, The History of Rome, Books I-V, translated with introduction and notes by Valerie M. Warrior (2006), 2, 32: 122-123, Indianapolis/Cambridge: Hackert Publishing Company, Inc.

 শেল: Shell, Marc (1982), Money, language and thought: Literary and philosophical economies from the medieval to the modern era, Berkeley/Los Angeles/London: University of California Press.  

 শ্রেড: Shread, Carolyn (2021), “Translation Speaks to Lydia H. Liu”. Translation. A Transdisciplinary Journal (Milano), vol. 5, no. fall, May 2021: 123-32.

 সেলিম, আবদুস (২০২৩), “অনুবাদ: চর্চা থেকে তত্ত্বজ্ঞান,” বাংলা ট্রিবিউন (ঢাকা), ১২ মে ২০২৩

 স্মিথ: Smith, Cyril (1997), “Friedrich Engels and Marx’s Critique of Political Economy,” Capital & Class, Volume 21 Issue 2, Summer 1997: 123-142:

https://libcom.org/library/engels-and-marx-critique-political-economy-cyril-smith

 হাউগ: Haug, Wolfgang Fritz (2017), “On the Need for a New English Translation of Marx’s Capital,” Socialism and Democracy, Volume 31, no. 1 (March 2017): 60-86.

***

কোলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

***

এই লেখাটি আগামী দিনে প্রকাশিতব্য কার্ল মার্ক্স, গণিতের পাণ্ডুলিপি, পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ, খড়্গপুর: কর্নারস্টোন পাবলিকেশনস্ (202৊)-এর অনুবাদকের কথা-র একটি অংশ। যাঁরা মার্ক্সের গণিতের পাণ্ডুলিপিগুলির এই সংস্করণটি পড়বেন না তাঁদেরও এটি কজে লাগতে পারে, এই কথা ভেবে আমাদের ডিজিটাল দিনপঞ্জিকায় প্রকাশ করা হোলো।—সম্পাদকমণ্ডলী, ভালভাষা, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

কাজী তানভীর হোসেন

ধানমন্ডিতে পলাশী, ৫-ই আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কয়েকদিন ধরে যা ঘটেছিল, তা শুরু থেকেই গণআন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পরিণত হয়েছিল। আজ আমরা কার্যক্রম দেখেই চিনে যাই ঘটনাটি কারা ঘটাচ্ছে। আগুন আর অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব রয়েছে বিএনপি-জামাত ও রোহিঙ্গাদের। তারা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা করে না।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

আমরা বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিলাম, যাঁকে খুব সঙ্গত কারণেই ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ বলা হয়। পেয়েছি প্রফুল্লচন্দ্র সেন ও অজয় মুখোপাধ্যায়ের মতো স্বার্থত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী। এবং জ্যোতি বসুর মতো সম্ভ্রান্ত, বিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখর কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ছিলেন বুদ্ধদেব। কেননা তাঁর মতো সংস্কৃতিমনা, দেশবিদেশের শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক সম্পর্কে সর্বদা অবহিত, এককথায় এক আধুনিক বিশ্বনাগরিক মানুষ পাইনি। এখানেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনন্যতা।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর দুটি কবিতা

তারার আলো লাগে না ভাল, বিজলীবাতি ঘরে/ জ্বালাই তাই অন্তহীন, একলা দিন কাটে/ চেতনা সব হয় নীরব, বেদনা ঝরে পড়ে/ যজ্ঞবেদী সাজানো থাকে, জ্বলে না তাতে ধূপ/ রাখে না পদচিহ্ন কেউ ঘরের চৌকাঠে/ শরীরে ভয়, নারীরা নয় এখন অপরূপ/ তারারা সব নিঝুম ঘুমে, চাঁদের নেই দেখা/ অর্ধমৃত, কাটাই শীত ও গ্রীষ্ম একা একা

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বিশ্বকর্মার ব্রতকথা

বিশ্বকর্মা পুজোতেও কেউ কেউ বিশ্বকর্মার ব্রত পালন করে থাকেন। এমনিতে বিশ্বকর্মা যেহেতু স্থাপত্য ও কারিগরির দেবতা, তাই কলকারখানাতেই এই দেবতার পুজো হয়ে থাকে। সেখানে ব্রতকথার স্থান নেই। আবার কোন অলৌকিক কারণে এবং কবে থেকে যে এদিন ঘুড়িখেলার চল হয়েছে জানা নেই। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শহর ও গ্রামের আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ও নানা আকৃতির ঘুড়িতে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

উত্তমকুমার কখনও বাংলাদেশে পা রাখেননি!

ভাবতে অবাক লাগে, ‘৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ উত্তমকুমারকে অভিনয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি। টালিগঞ্জের কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছিলেন সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে। অন্যদিকে ববিতা, অলিভিয়া ও আরও কেউ কেউ টলিউডের ছবিতে কাজ করেছেন। ঋত্বিক ঘটক, রাজেন তরফদার ও পরে গৌতম ঘোষ ছবি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশে এসে, কিন্তু উত্তমকুমারকে আহ্বান করার অবকাশ হয়নি এখানকার ছবি-করিয়েদের।

Read More »