Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

মিড ডে মিল

‘হে ঠাকুর, করোনাকে আরও কয়দিন রেখে দাও গো।’

অদেখা এই ‘ঠাকুর’ নাম্নী শব্দমায়ার প্রতি কথাগুলো ছুড়ে দিয়ে, চটজলদি সব কাজ সারতে থাকে প্রতিমা। মেয়ের ঘরে নাতনি। প্রতিমার কাছেই থাকে। পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করল, বছর তিন সংসার করে এক মেয়ে ঘাড়ে করে ফিরে এল বাপের বাড়ি। মিটে গেল সব প্রেম। প্রতিমা কত করে বারণ করেছিল। শুনবে কেন? ওর কপালে আছে দুর্গতি।

আজ নাতনির স্কুলে মিড ডে মিলের সব জিনিস দেবে। আলু, চাল, সাবান, ছোলা, চিনি, ডাল। এই দিনটা মনটা বেশ খুশি থাকে। সকাল থেকে প্রাণ ঢেলে কাজ করতে থাকে। দু’হাতভরে এক পয়সাও না দিয়ে এত্ত জিনিস, মজাই আলাদা। নাতনি টিয়াকে নিয়ে রাখতে গিয়ে কত সময় যে বিরক্ত হয়েছে, কিন্তু মিড ডে মিলের জিনিস পাওয়ার এ আনন্দ সে কোথায় পেত যদি টিয়া তার কাছে না থাকত।

‘ও টিয়ে, কোথায় গেলি মা? এক কাপ চা বসা দেখি, রওনা দি তোর স্কুলে।’

টিয়া দৌড়ে রান্নাঘরে যায়। দিদা স্কুলে গেলে তার ভারি মজা লাগে। আন্টিদের কথা জানা যায়। আগের মিড ডে মিলে তো আন্টিরা খাতাও দিয়েছে।

দিদা বেরিয়ে গেলে ঘরটা সুন্দর করে গুছোতে থাকে টিয়া। দিদা কত কাজ করে। বড় খাটুনি দিদার। একটু ঘর গুছিয়ে রাখলে দিদা খুব শান্তি পায়। টিয়ার তো এক দিদাই আছে। মা মাঝে মাঝে আসে বটে। এলেই ঝগড়া। দিদা রেগে গিয়ে বলতে থাকে, ‘মেয়েটাকে আমার কাছে ফেলে রেখেছিস, খরচ লাগে সে কথা ভাববি। আমি কী করে চালাব?’

টিয়ার তখন খুব কষ্ট হয়। মা যে কেন তাকে নিজের কাছে নিয়ে যায় না। মা নাকি হাসপাতালে কাজ করে। দরজায় কেউ ধাক্কা দিচ্ছে। দিদা সব বন্ধ রাখতে বলেছে।

‘দরজা খোল টিয়া।’

বুকের ভিতর দলা পাকিয়ে কান্না এল। মায়ের কথাই যে মনে পড়ছিল। দরজাটা খুলে দিয়ে মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল টিয়া। তার যে রোজ রাতে মায়ের বুকে মুখ রাখতে ইচ্ছে করে। ঝুমা মেয়েকে কাছে পেয়ে আকুল কান্নায় ভাঙে। সে মাকে টাকা দেয় না, কেবল জমাচ্ছে। সব জমিয়ে মাকে আর মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে যাবে।

‘কাঁদিস না রে মা, তোকে আমি নিজের কাছে নিয়ে যাব। আমি আর হাসপাতালের একটা দিদি একঘরে থাকি তো রে, কোথায় নেব তোকে?’

টিয়ার মনের অলিগলি বেয়ে একটা প্রশ্ন ঠিকরে বেরিয়ে এল, ‘আমার বাবা কোথায় মা, বলো না মা।’

কী উত্তর দেবে। না সত্যিটাই বলবে।

‘জানি না রে, তুই যখন ছোট, একদিন কোনও কিছু না বলে কোথায় যে চলে গেল। ও আসলে ভেবেছিল, আমার কাজের সব টাকাপয়সা আমি ওকে মাস গেলে দিয়ে দেব। যেই দেয়া বন্ধ করলাম, তখন থেকেই ঝামেলা শুরু। তারপর একদিন চলে গেল।’

খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করছে টিয়া। ওকে মায়ের দুঃখ ঘোচাতেই হবে।

***

‘কী রে, তোর তো ইভনিং ডিউটি। ও ঝুমা রেডি হলি না এখনও?’ একই জায়গায় কাজ করে ঝুমার সঙ্গে থাকে নমিতাদি, সেই তাড়া দেয়। ‘মনখারাপ করে গুমরে থাকিস না। কাজে বের হলেই দেখবি সব ভুলে যন্ত্রের মত চলছিস।’

ঝুমার আজ মনপাথারে ঠকে যাবার জ্বালা ধরেছে। রাজেন যে এমনটা করতে পারে ভাবতে পারেনি ঝুমা। মাকে ফেলে পালিয়েছিল। সরকারি হাসপাতালে একটা চাকরি তখন জুটেছে। রাজেন সে লোভে বিয়েটা করেছিল।

ইস্কুলের প্রিয়া আন্টির কথা সব সময় মনে হয়, কেবল বলতেন, ‘পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াও। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এলে মেয়েরা নিজের মত করে বাঁচতে পারবে। পুরুষের অত্যাচার থেকে বাঁচতে পারবে।’

ঝুমার মনে বড় আশা, একদিন টিয়া অনেক বড় হবে। আর ক’টা ক্লাস পাশ করতে পারলেই কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাবে। স্কুল থেকে এখন কত কিছু দেয়। বই, ব্যাগ, সাইকেল। পড়াশোনা করতে এখন আর চিন্তা নেই। যে ভুল সে করেছে, মেয়েটার যেন তা না হয়।

***

স্কুল খুলে যাচ্ছে। শোনামাত্রই প্রতিমার মেজাজ খারাপ। আর তো মিড ডে মিলের অত জিনিস পাওয়া যাবে না। তবে হ্যাঁ, টিয়ার দুপুরে ভরপেট খাওয়াটা হয়ে যাবে। ঝুমাকে কত আদরে মানুষ করছিল। মেয়ে হাসপাতালে ধরাকরা করে চাকরি যোগাড় করল, টিউশন করত, পয়সাও জমেছিল বেশ। সব নিয়ে ওই রাজেনের সঙ্গে চলে গেল। কত কেঁদেছে প্রতিমা। টাকার লোভ যখন ঝুমা মেটাতে পারেনি, তখনি রাজেন বেপাত্তা।

প্রতিমা তো স্বপ্ন দেখত, চাকরির ফাঁকে আরও পড়াশোনা করবে ঝুমা। সে ক্লাস টেন অবধি পড়েছে। মেয়েটা অন্তত অনেক পড়াশোনা করুক।

***

রাজেনের মেজাজ চট করে তুঙ্গে উঠে গেল। ‘শাল্লা, মাগির তেজ দ্যাখো। টাকাটা দিল না। উল্টে বলছে তোর বউ-মেয়ের কাছে ফিরে যা।’ মাসে মাসে মদের টাকা যোগান সে করতে পারবে না। লতিকার কাছে এসেছিল, বোকাসোকা মেয়েটা বুঝি সারাজীবন রাজেনের হুমকিতে চলবে। মেয়েগুলো সব বড্ড ট্যারা হয়ে যাচ্ছে। কল্যাণী ঘোষপাড়ায় লতিকার ঘুগনির দোকান রমরমিয়ে চলে। টাকা সরিয়ে ফেললেও টের পায়নি এতকাল। কিন্তু এখন সে খুব হিসাব বুঝেছে। না লতিকার চোখ খুলে গেছে। অন্য কোথাও ঘাঁটি গাড়তে হবে।

রাজেন মেয়েমানুষের এত তেজ সহ্য করতে পারে না। করবেও না। তবে কি পাত্তা লাগাবে ঝুমার কাছে। সেই বাচ্চাটা এখন নাকি স্কুলে পড়ে। খোঁজ নিয়েছে রাজেন। পড়াশোনায় ভাল হয়েছে। ঝুমার কাছে ফিরলে লুফে নেবে। গা-গতর আছে খাটিয়ে নেবে ঝুমাকে।

***

শরীরটা ক’দিন বেচাল করছে মায়ের। তবে কি দিন শেষ হয়ে এল? টিয়াকে তো বড় করে তুলতে হবে। শয়তান বাবাটা তো পালিয়েছে। ঝুমা মাকে দেখতে এসে ফিরছিল। একটু রাত হয়ে গেছে। পা চালায় দ্রুত।

পিছন থেকে কে যেন ডাকে, ‘ঝুমরি।’ বুকের ভিতর ছ্যাঁৎ করে ওঠে, এ নামে তো একজনই ডাকত। তবে কী! ঘাড় ঘোরাতেই সে মানুষ। কত চোখের জল ফেলেছে, অপেক্ষায় দিন গুনেছে, কিন্তু আজ দেখামাত্রই কী অবিশ্বাসের বাতাস ছেয়ে ফেলল ঝুমার মনপাথার। ভিতর থেকে কে যেন বলল, ‘সাবধান ঝুমা আর বোকামি করিস না।’

‘বিশ্বাস করো ঝুমরি, তোমাকে আর মেয়েকে নিয়ে যাব আমার কাছে, স্কুলে ভর্তি করে দেব।’

স্কুলে ভর্তি করলে এখন সব পেয়েছির দেশ। কে না জানে। আর ভুল নয়।

সপাটে ফিরে দাঁড়ায়, চোখে আগুন। অনেক বছর আগে যে আগুন জ্বলেনি। আজ সে দাউ দাউ করে দীপ্তমান। শব্দরা ছুটল খরবেগে,
‘খবরদার, একদম চলে যাও। আমার মেয়ে আমি একা মানুষ করতে পারব। আর কখনও যদি আসো, আমি পুলিশে ধরিয়ে দেব। আমার সব টাকাপয়সা নিয়ে পালিয়েছিলে। চলে যাও।’ চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে আসে। রাজেন দেরি করে না। সরে পড়ে।

মনের মধ্যে খচখচ করতে থাকে। মেয়েটার মন যদি বাবার জন্য উচাটন হয়। ঝুমা কী ভুল করল? মেয়ে যদি কোনওদিন বাবার কাছে যেতে চায়।

মায়ের শরীরটা ঠিক নয়। তাই ঝুমা পরদিন আবার আসে। মেয়েকে কাছে টানে, ‘দিদার কিছু হলে ভয় পাস না আমি আছি তো।’

টিয়া চোখ বড় করে তাকায় মায়ের দিকে। মা আর দিদাকেই তো চেনে কেবল। প্রতিমা চুপ করে তাকিয়েছিল টিয়ার দিকে। না জানি কী বলবে মেয়েটা। তার বুকের ভিতর শঙ্কা।

‘আমি ভয় পাই না। আমার তো মা আছে। আর কাউকে চাই না।’

প্রখর উষ্ণ দিনে কোথা থেকে উড়ে এল মিষ্টি স্বস্তি বাতাস। কী যেন মনে পড়ে টিয়ার— ‘দিদা আছে আমার আর আছে মিড ডে মিল।’ বলেই আনন্দে হাততালি দিয়ে ওঠে।

প্রতিমা আর ঝুমার দুচোখে আত্মবিশ্বাসের ফল্গুধারা।

চিত্রণ: মুনির হোসেন
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব ছয়]

রবীন্দ্রভাবনায় যে নৃত্যধারা গড়ে উঠল তা দেশিবিদেশি নৃত্যের সমন্বয়ে এক মিশ্র নৃত্যধারা, তৎকালীন শিক্ষিত শহুরে বাঙালির সংস্কৃতিতে যা নতুন মাত্রা যোগ করল। নাচের প্রতি একরকম আগ্রহ তৈরি করল, কিছু প্রাচীন সংস্কার ভাঙল, মেয়েরা খানিক শরীরের ভাষা প্রকাশে সক্ষম হল। এ কম বড় পাওনা নয়। আরও একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, শিল্পক্ষেত্রে ভাবের সাথে ভাবনার মিল ঘটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টির প্রচেষ্টা। গতে বাঁধা প্র্যাক্টিস নয়। নিজের গড়ে নেওয়া নাচ নিজের বোধ অনুযায়ী।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব পাঁচ]

বাংলার মাটি থেকে একদা এই সুদূর দ্বীপপুঞ্জে ভেসে যেত আসত সপ্তডিঙা মধুকর। আর রবীন্দ্রনাথের পিতামহ, যাঁর কথা তিনি কোথাও প্রায় উল্লেখই করেন না, সেই দ্বারকানাথ-ও বাংলার তৎকালীন ব্যবসায়ীকুলের মধ্যে প্রধান ছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, একদা তাঁর প্রিয় জ্যোতিদাদাও স্টিমারের ব্যবসা করতে গিয়ে ডুবিয়েছেন ঠাকুর পরিবারের সম্পদ। নিজে রবীন্দ্রনাথ বাণিজ্য সেভাবে না করলেও, জমির সম্পর্কে যুক্ত থাকলেও একদা বাংলার সাম্রাজ্য বিস্তার, বাণিজ্য-বিস্তার কী তাঁরও মাথার মধ্যে ছাপ ফেলে রেখেছিল? তাই ইউরোপ থেকে আনা বাল্মিকী প্রতিভার ধারাকে প্রতিস্থাপন করলেন জাভা বালির কৌমনৃত্য দিয়ে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »