১৯২০-র দশকে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের হাত ধরে নিউ অবজেক্টিভিটির ধারণা গোটা পৃথিবীর কাছে আত্মপ্রকাশ করলেও ধীরে ধীরে পরবর্তী সময়ে চিত্রশিল্প থেকে শুরু করে সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রে জাদুবাস্তববাদী শিল্পচর্চার প্রসার লক্ষ্য করা যায়। ১৯৮০ সালের পরবর্তী সময়ে জাদুবাস্তবতা গোটা বিশ্বকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে এমন একটি ধারণা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ১৯৪০-এর সময়ে মধ্য আমেরিকা এবং ১৯৫৫-র পরবর্তী লাতিন আমেরিকায় জাদুবাস্তবতার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এই তত্ত্বটি সম্পর্কে গোটা বিশ্ব আগ্রহী হয়ে পড়ে। এই অধ্যায়ে আমরা চিত্রশিল্প, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের এমন নিদর্শনের কথা আলোচনা করব যেখান থেকে জাদুবাস্তবতার লক্ষণগুলো আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
চিত্রশিল্পে জাদুবাস্তবতা
ভাইমার প্রজাতন্ত্রের ১৯১৯-১৯২৩ কালের অস্থিরতার সময়ে যে চিত্রশিল্পের আন্দোলন হয়েছিল তা ছিল মূলত সুভদ্র বস্তুগত বিচার ও প্রকাশবাদী মানবিকতা এবং যুক্তিবিচারের বিপরীত এক অবস্থান। এই সময়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য একজন শিল্পী অটো ডিক্স। তাঁর অনেক উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে ‘ম্যাচ সেলার ১’-এর (১৯২০) জাদুবাস্তববাদী বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে আলোচনায় আসতে পারি আমরা।
ছবিটিতে ফুটপাতে বসে থাকা একজন অন্ধ দেশলাই বিক্রেতার ছবি আমরা দেখতে পাই। ফুটপাতে তার সামনে একটি ছোট চেহারার কুকুর এবং তিনজন পথচারীর পা ছবিটিতে রয়েছে। অন্ধ দেশলাই বিক্রেতা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, কুকুরটির চেহারা এবং শুয়ে থাকার পদ্ধতি অস্বাভাবিক। পথচারীরা প্রত্যেকেই সুসজ্জিত যদিও তাদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তাদের হাঁটার পদ্ধতি অদ্ভুত। পথচারীদের মধ্যে যিনি নারীর পোশাক পরিধান করেছেন তার শরীর এতটাই ঝুঁকে পড়া যে মনে হবে তিনি পড়ে যাচ্ছেন। ছবিটি এক দেশলাই বিক্রেতার বাস্তব ছবি হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন চরিত্রগুলোর অস্বাভাবিকতায় বাস্তবের ভেতরে অবস্থিত অন্য বাস্তবের কথা আমাদের জানাতে পারে। দেশলাই যদি বারুদ অর্থে ধরা হয় তাহলে বিপ্লবের সমসাময়িক প্রতিবন্ধকতা আমার কাছে এই ছবিটির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন শিল্পী। ছবিটিকে পথচারীরা যাদের পোশাক দেখে তাদের উচ্চবিত্ত হিসেবে সহজেই চিনে নেওয়া যায় তাদের এই বিপ্লবের প্রতি উদাসীনতাও স্পষ্ট। প্রতিবন্ধী দেশলাই বিক্রেতা এখানে সমকালীন বিপ্লব চেতনার প্রতিচ্ছবি বলে আমি মনে করি।
মনে রাখতে হবে জাদুবাস্তবতার যে রূপ বিংশ শতকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছে অটো ডিক্সের ছবি বা সমসাময়িক সময়ে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের ছবিতে তেমনভাবে জাদুবাস্তবতা আসেনি। এই ছবিগুলো অনেক বেশি ইঙ্গিতময়। বাস্তব ছবির মধ্যে তারা এক বৃহত্তর বাস্তবের কথা রেখে গেছেন যা থেকে সমসাময়িক সমাজের অবক্ষয়ের কথা আমরা জানতে পারি।
অটো ডিক্সের এমন বৈশিষ্ট্যযুক্ত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হল ‘ওয়ার ক্রিপেলস’, ‘দ্যি স্কাট প্লেয়ার’, ‘দ্যি গুডবাই টু হ্যাম্বারগ’, ‘দ্যি সেভেন ডেডলি সিন্স’ ইত্যাদি।
এইসময়ের উল্লেখযোগ্য শিল্পীদের মধ্যে জর্জ গ্রস এবং তাঁর ‘সেলফ পোট্রের উইথ মডেল ইন দ্যি স্টুডিও’ ছবিটি উল্লেখযোগ্য। জিন ম্যামেন-এর ‘অ্যাট দ্যি শুটিং গ্যালারি’ এবং কনরাড ফেলিক্সমুলারের ‘দ্যি বেগার অফ প্রাচাটিসে’ ছবিদুটিতে জাদুবাস্তববাদী লক্ষণগুলো ফুটে উঠেছে।
নিউ অবজেক্টিভিটির যে ধারাটি ভাইমার প্রজাতন্ত্রের শিল্পীদের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছিল তার প্রভাব দেখা গেল উত্তর আমেরিকার চিত্রশিল্পীদের চিত্রশিল্পে। অনেকগুলো নাম এই প্রসঙ্গে আসতে পারে। ইভান অলব্রাইট, পিটার ব্লুম, পল ক্যাডমাস, গ্রেয় ফয়, জর্জ টুকার, হেনরি কোনারদের নাম। যেমন আলোচনা করতে পারি ইভান অলব্রাইটের এর ‘ইনটু দ্যি ওয়ার্ল্ড দেয়ার কেম এ সল কলড ইডা’ (১৯২৯), ‘পিকচার অফ ডরিয়ান গ্রে’ (১৯৪৩), ‘এ ফেস ফ্রম জর্জিয়া’ (১৯৭০), ‘অ্যান্ড ম্যান ক্রিয়েটেড গড ইন হিস ওন ইমেজ’ (১৯৩০) এই সমস্ত ছবিগুলোর কথা। ছবিগুলো পোট্রেট অথচ ছবির ভেতর থেকে যেন উঠে আসছে মানুষগুলোর অন্তর্দাহ, অসুখ, রক্তমাংস, বৃদ্ধ থেকে কিশোর বিভিন্ন বয়সের নানা দৃশ্য। ফলে ছবিগুলো কেবলমাত্র পোট্রেট হয়ে থাকছে না। যে মানুষগুলোকে আমরা চোখে দেখি এই বাস্তব জগতে তাকে অতিক্রম করে শিল্পী যেন ভেতরে থাকা মানুষের সত্যি আমাদের সামনে তুলে ধরছেন। এই এক বৃহত্তর সত্য। কানাডার চিত্রশিল্পী এলেক্স কোলভিলের ছবির কথায় এবার আসা যাক। তাঁর পাঁচটি ছবির কথা এই প্রসঙ্গে আমরা বলতে করতে পারি। ‘টু প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড, ফ্যামিলি’, ‘রেনস্ট্রম’, ‘নিউড অ্যান্ড ডামি’, ‘ম্যান ওন ভারান্দা’, ‘হর্স অ্যান্ড ট্রেন’। আলোচনা করা যাক ‘নিউড অ্যান্ড ডামি’ নামক ছবিটি। একটি আসবাবহীন ছোট ঘরের মধ্যে একটি খোলা জানলা। তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি মেয়ে। তার শরীর অনাবৃত। সে তাকিয়ে রয়েছে ঘরের মধ্যে অবস্থিত একটি ডামির দিকে। ডামিটির মাথা, হাত, পা সবই অনুপস্থিত। ডামিটির শরীর এবং উপস্থিত মেয়েটির শরীরের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। ডামিটি যদি এখানে বন্ধনের প্রতীক হয়ে অবস্থান করে তবে অবশ্যই জানলা একটি মুক্তির প্রতীক। নগ্ন মেয়েটি তাকিয়ে রয়েছে তার বন্ধনের দিকে। মেয়েটির মুখে সন্দেহ এবং বিরক্তি মিশ্র একটা ভাব জেগে উঠেছে।
এই ধারার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শিল্পী হিসেবে আমরা বলতে পারি ফ্রিডা কাহলোর কথা। তিনি জাদুবাস্তববাদী চিত্রশিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শিল্পী। তাঁর জাদুবাস্তববাদী ছবিগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘দ্যি টু ফ্রিডাস’ (১৯৩৯), ‘দ্যি উন্ডেড ডিয়ার’ (১৯৪৬), ‘হেনরি ফোরড হসপিটাল’ (১৯৩২), ‘উইথআউট হোপ’ (১৯৪৫), ‘হোয়াট দ্যি ওয়াটার গেভ মি’ (১৯৩৮)। এই ছবিগুলির মধ্যে আলোচনা করতে পারি ‘দ্যি উন্ডেড ডিয়ার’ নামক ছবিটি নিয়ে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে বনের মধ্যে ন’টি তিরবিদ্ধ এক হরিণী। তার পায়ের কাছে কিছু শাখা পড়ে আছে। দূরে দেখা যাচ্ছে জলাশয়। ছবিটিতে হরিণীর মুখের জায়গায় রয়েছে শিল্পী ফ্রিডার মুখ।
শিল্পচর্চার জীবনে দীর্ঘদিনের সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হওয়ার ইতিহাস এভাবে ছবির মাধ্যমে কি বুঝিয়ে দিলেন না ফ্রিডা? বনাঞ্চলটি কি তার নিজস্ব ভাবের জগৎ। সেখানে তিনি এক মুক্ত হরিণের মত শিল্পসৃষ্টি করতে চান। অর্থাৎ বাস্তব একটি পরিবেশে কেবলমাত্র তিরবিদ্ধ হরিণের শরীরে নিজের মুখ প্রতিস্থাপিত করে জাদুবাস্তবতা ঘটালেন শিল্পী। বলে দিলেন নিজের শিল্পী জীবনের যন্ত্রণার কথা এক হরিণের বেশে।
এছাড়াও বিশেষ বিশেষ চিত্রশিল্পীর নাম যদি আমরা করতে চাই তবে আমেরিকান চিত্রশিল্পী এডওয়ার্ড হপার (আরলি সান্ডে মর্নিং), অ্যালেক্সান্ডার কানোল্ড (প্যাভিলিওন), ভারতীয় চিত্রশিল্পী তেনসিং জোসেফ (দ্যি ম্যাড অফ মাকন্দো), বাঙালি চিত্রশিল্পী গণেশ পাইন (দ্যি নিলিং ওয়ারিওর) এবং বিকাশ ভট্টাচার্যর (দ্যি ডল সিরিজ) ছবিতে জাদুবাস্তবতার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সাহিত্যে জাদুবাস্তবতা
জাদুবাস্তববাদী আন্দোলন কেবলমাত্র চিত্রশিল্পেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, ছড়িয়ে পড়েছে সাহিত্য, চলচ্চিত্রের মত শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে। ফ্রাঞ্জ রো সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা ইতালীয় লেখক মাসিমো বনটেমপ্লিকে প্রভাবিত করেছিল। যদিও তাঁর লেখা অনেকাংশেই পরাবাস্তব ঘেঁষা। আলেহো কারপেন্তিয়ার এবং আরতুরো উসলার পিয়েত্রির নাম এই বিষয়ে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। বিশ ও ত্রিশ দশকে ইউরোপে বসবাসকালে তাঁরা দুজনেই ইউরোপিয়ান শিল্প আন্দোলনগুলো দ্বারা প্রভাবিত হন। কারপেন্তিয়ার ইউরোপ থেকে কিউবা ফিরে, হাইতি ঘুরে এসে লাতিন আমেরিকান জাদুবাস্তবতার দিকে জোর দেন। কারপেন্তিয়ারকেই লাতিন আমেরিকার জাদুবাস্তবতার প্রবক্তা বলা হয়ে থাকে।
তিনি প্রথমে তাঁর বক্তব্যকে রূপ দিলেন ভেনেজুয়েলার ‘এল ন্যাশিওনাল’ পত্রিকায় একটি প্রবন্ধে, তারপর বিস্তারে গেলেন ১৯৪৯-এ প্রকাশিত ‘এল রেইনো দে মুস্তে’ শীর্ষক উপন্যাসের প্রস্তাবনায়। এই রচনাটিতে তিনি রোহ-এর জাদুবাস্তবতার ধারণাগুলোকে নকল বলে নিজের বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরলেন। তাঁর মতে সম্ভব এবং অসম্ভবতার একত্র অবস্থান এবং অবিশ্বাস্য মিশ্রণ যা জাদুবাস্তবতায় থাকে তা লাতিন আমেরিকার ইতিহাস এবং রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে উঠে আসে। অপর গল্পলেখক আরতুরো উস্লার পিয়ত্রি ভেনেজুয়েলারের কিছু গল্পলেখককে প্রেরণা দিলেও তিনি অনেকটাই রোহ প্রবর্তিত মতবাদকে সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন এই জাদুবাস্তবতা আধুনিক নিরীক্ষণ প্রবণতার ফলাফল। তবে উস্লার পিয়েত্রি, কারপেন্তিয়ার ব্যক্ত চিন্তা থেকে অনেক দূরে লাতিন আমেরিকার বাইরে সুপরিচিত নন। অপরদিকে জাদুবাস্তবতার ক্ষেত্রে দুনিয়াজোড়া সবচেয়ে বিখ্যাত নাম গাব্রিয়েল গারসিয়া মার্কেজ, কারপেন্তিয়ার কথিত চিন্তার অনুগামী।
এঞ্জেল ফ্লোরেস তাঁর আলোচনায় ম্যাজিকাল রিয়ালিসম কথাটি ব্যবহার করার পক্ষপাতী ছিলেন এবং তিনি হোরহে লুই বোরহেসকেই প্রথম জাদুবাস্তবতাবাদী লেখক বলতে চান। তিনি উস্লার পিয়েত্রি এবং কারপেন্তিয়ারকে লাতিন আমেরিকায় জাদুবাস্তবের প্রবর্তকের সম্মান না দিয়ে বলতে চান জাদুবাস্তবতা স্পেনীয় ভাষার সাহিত্যের রোমান্টিক রিয়ালিস্ট ঐতিহ্যের পাশাপাশি ইউরোপীয় সাহিত্যের ধারা অনুসরণ। ফ্লোরেসের মতে লাতিন আমেরিকায় জাদু বাস্তববাদের প্রেরণা জুগিয়েছিলেন ষোড়শ শতকের মিগুয়েল দে সাভেদ্রা সেরভান্তেস ও বিংশ শতাব্দীর চেক-অস্ট্রিয়ান লেখক ফ্রাঞ্জ কাফকার লেখা, রোহ-এর ধারণা এবং চিত্রশিল্পে ইতালীয় চিত্রকর জিওরজিয়ো দে চিরিক। ফ্লোরেস বলতে চান, লাতিন আমেরিকার জাদু বাস্তবতা ইউরোপীয় সাহিত্য প্রভাবিত। বোরহেস তার উদাহরণ। স্পেনে থাকার সময় বোরহেস ‘উল্ট্রাইস্মো’ আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হন। তাঁর সাহিত্যে অলংকার ও সেন্টিমেন্টবর্জিত মেটাফোরের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। তিনি কাফকার দ্বারাও যথেষ্ট প্রভাবিত হন। কাফকার বেশ কিছু লেখা তিনি স্প্যানিশে অনুবাদ করেন। তাঁর ‘এল আরতে দি ম্যাজিশিয়া’ (১৯৩২) প্রবন্ধটি এই সূত্রে উল্লেখযোগ্য। ফ্লোরেসের প্রবন্ধটি প্রকাশের পর জাদুবাস্তবতা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয় ১৯৫৯-তে। কিউবার বিপ্লবের সাফল্যের পর লাতিন আমেরিকান সাহিত্যে জাদুবাস্তবতা নিয়ে লেখক এবং সমালোচকদের মধ্যে আলোচনা প্রবলভাবে শুরু হয়। লেখকেরা জাদুবাস্তববাদী গল্প এবং উপন্যাস রচনায় আগ্রহী হন এবং তার সঙ্গে ইউরোপীয় আধুনিক সাহিত্যশৈলীও মেশাতে থাকেন। গাব্রিয়েল গারসিয়া মার্কেজ যেমন বলেছিলেন তাঁর সাহিত্যে কাফকা এবং জয়েসের প্রভাব আছে। ফকনারের কাছেও তিনি ঋণ স্বীকার করেছিলেন। লাতিন আমেরিকায় জাদুবাস্তববাদী লেখক হিসেবে কারপেন্তিয়ার বিশেষ করে গাব্রিয়েল গারসিয়া মার্কেজের খ্যাতি ও স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে লোকের ধারণা হয় যে জাদুবাস্তবতা মানেই ল্যাটিন আমেরিকা। কিন্তু জাদুবাস্তবতা তার শিকড় বিস্তার করেছে ভারত, আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়ার বিভিন্ন লেখকদের রচনায়। টনি মরিসন, ইসাবেল এলেন্দে, আনা কাস্তিলো, মিলান কুন্দেরা, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৈয়দ মুস্তফা সিরাজ, ত্রৈলোক্যনাথ এমন অসংখ্য লেখকদের রচনায় জাদুবাস্তবতার উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়।
এবার লাতিন আমেরিকার জাদু বাস্তব ঔপন্যাসিকদের সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা যাক। গারসিয়া মার্কেজের বিখ্যাত উপন্যাস ‘হান্ড্রেড ইয়ার্স অফ সলিটিউড’ লেখা হয় ১৯৬৭-তে মেক্সিকোয়, ১৯৭০ সালে আর্জেন্টিনায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশের আগেই উপন্যাসটি পড়েছেন মেক্সিকোর লেখক কার্লোস ফুয়েন্তেস এবং কিউবান হুলিও কোর্তাসার। আলেহো কারপেন্তিয়ার ইউরোপীয় এবং ল্যাতিন আমেরিকান জাদুবাস্তবতার তফাৎ নির্দেশ করেন এই সময়ে। তার মতে প্রথমটিতে আছে ক্লান্তিকর ভান, যার সঙ্গে জাদুময়তার কোনও যোগাযোগ নেই। ইউরোপ জাদু বলতে বোঝে রূপকথা, মিথ, সেখানে ন্যারেটিভ কৌশল আছে, সাংস্কৃতিক বিশ্বাস নেই। ১৯৫৯-এ কিউবার বিপ্লবের সাফল্যের কালে এসবে ব্যস্ত কারপেন্তিয়ার-এর দশ বছর আগেই লিখেছিলেন বিখ্যাত জাদুবাস্তব উপন্যাস ‘দ্যি কিংডম অফ দিস ওয়ার্ল্ড’। হাইতির পটভূমিতে রচিত এই উপন্যাসে ১৮০০ সালের দাস বিদ্রোহের কথা বলতে গিয়ে তিনি আফ্রিকান সংস্কৃতি ও বিশ্বাস চর্চার, বিশেষ করে ভুডু সংস্কৃতির প্রসঙ্গ আনেন। চরিত্রেরা ইচ্ছেমত আকার বদলাতে পারে সেখানে, মৃত্যুকালে উড়ে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় চরিত্রটি নোয়েল ভুডু সংস্কৃতি বিষয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। তবু সে মান্দাকাল আফ্রিকান মিথলজি শেখে যাতে দাস বিদ্রোহে শক্তিমান হতে পারে। এই উপন্যাসে যে মিশ্র সংস্কৃতির কথা আছে সেটি ল্যাটিন আমেরিকার সত্তার অন্তর্গত। স্থানীয় দেবতা ‘কেজা কোটল’ মায়া ও আজটেক সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের প্রতিমূর্তি, যার মধ্যে এই দেশের নানা সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটেছে। স্থাপত্যের বারোক রীতিকে তিনি উপন্যাসের শৈলী করে নিয়েছিলেন।
গারসিয়া মারকেজের ‘হান্ড্রেড ইয়ার্স অফ সলিটিউড’ উপন্যাসের আবহ স্মৃতি রোমন্থনের আর তার মধ্যে রয়েছে জাদুবাস্তববাদী উপাদান। মাকোন্দোকে কেন্দ্র করে এখানে রয়েছে সহস্র দিনের যুদ্ধের মত দেশজ অশান্তি, সরকারি নিষ্ঠুরতা, কলম্বিয়ার মানসিক ক্ষত, বিভ্রান্তি এবং নিপীড়নের আতিশয্য। লেখকের শৈশবের ভুতুড়ে বাড়ি, নানা কুসংস্কার বাতাবরণে জাদুবাস্তবতার যোগ্য পরিবেশ গড়ে ওঠে। অপ্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রতিরোধের একটি শক্তিশালী ফর্ম হিসেবে এখানে জাদুবাস্তবতাকে ব্যবহার করা হয়। গারসিয়া মার্কেজের লেখায় অনেক বেশি করে ব্যবহার করা হয় লোককথা ও লোকসাহিত্য, যেখানে নিম্নবিত্ত মানুষের স্বর আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ইসাবেল আলেন্দে জাদুবাস্তববাদী মহিলা উপন্যাসিক হিসেবে স্বীকৃতি পান তাঁর ‘দ্যি হাউস অফ দ্যি স্পিরিটস’ উপন্যাসটির জন্য। উপন্যাসটিতে তিনি গারসিয়া মার্কেজের শৈলী অনুসরণ করেছেন। দুটোই পারিবারিক ইতিহাস। তবে আলেন্দে সরকারি নিপীড়নের ভয়াবহ আতঙ্ককে বাস্তববাদী ন্যারেটিভের ধাঁচে উপস্থিত করেন তখন ভৌতিকতার পরিবর্তে মিলিটারি শাসনের তীব্রতা, জনসংগ্রামের প্রচার বড় হয়ে ওঠে। আলবা তার ঠাকুমার ডায়েরি থেকে প্রজন্ম পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক মূল্যায়নকে উপস্থিত করছে— এই কৌশলটিও এখানে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইংরেজিভাষী জগতে এবার একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন। ১৯৭০-এর দশকে কানাডা, পশ্চিম আফ্রিকা, আমেরিকাতে এই ধাঁচের উপন্যাস লেখা শুরু হয়, ছড়িয়ে যায় অন্যত্র। সালমান রুশদি যাঁর রচনাশৈলীতে পরাবাস্তবতা এবং লাতিন আমেরিকার মিথমূলক জাদুবাস্তবতার মিশ্রণ আছে। রুশদি এ ব্যাপারে গারসিয়া মারকেজ, গুন্টার গ্রাস, বুলাগাকভের প্রভাবের কথা স্বীকার করেছেন। আঞ্জেলা কার্টার আশি ও নব্বই দশকে জাদুবাস্তবতাবাদী উপন্যাস ‘ওয়াইস চিলড্রেন’ লেখেন। এই উপন্যাসে শেক্সপিয়রীয় কমেডি, বাখতিন তত্ত্বের প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। ইংরেজিতে যারা জাদুবাস্তবতার উপন্যাস লিখেছেন তাঁরা প্রায় সকলেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা বিরোধী আর তাঁদের রচনায় রাজনৈতিক ভাবনা মুখ্য হয়ে ওঠে। ভারতীয় ইংরেজি ভাষায় এই ধারার লেখক অমিতাভ ঘোষ ও অরুন্ধতী রায়। এই একই সূত্রে আমরা কানাডার রবার্ট ক্রোয়েচ, জ্যাক হজিন্স, মাইকেল ওন্ডাটজে, আফ্রিকার বেন ওকরি, আমোস টুটুয়োলা, আন্দ্রে ব্রিঙ্ক, টনি মরিসন প্রমুখের নাম করতে পারি।
জ্যাক হগিন্সের ‘দ্যি ইনভেন্সন অফ দ্যি ওয়ার্ল্ড’ এবং রবার্ট ক্রোয়েসের ‘হোয়াট দ্যি ক্রো সেইড’ জাদুবাস্তবতার উত্তর উপনিবেশিক রচনা হিসেবে উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দ্রে ব্রিঙ্কের জাদুবাস্তববাদী উপন্যাস ডেভিলস ভ্যালি লেখা হয়েছে উত্তর উপনিবেশিক বঞ্চিত আফ্রিকান পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।
শুধু বড়দের কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে নয়, শিশুসাহিত্যের ক্ষেত্রেও জাদুবাস্তবতার প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজ লেখিকা এডিথ নেসবিটের ‘ফাইভ চিলড্রেন এন্ড ইট’ এবং ‘দ্যি ফিনিক্স অ্যান্ড দ্যি কার্পেট’-কে এর উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে। মাইকেল বন্ড-এর ‘প্যাডিংটন বিয়ার’, ই বি হোয়াইটের ‘স্টুয়ার্ট লিটল’ এইসব উপন্যাস রয়েছে প্রাণীদের মধ্যে মানব বৈশিষ্ট্য, তাদের নিজস্ব জগতের এক মানবিক সংস্করণ।
সংক্ষিপ্ত পরিসরে জাদুবাস্তববাদী সাহিত্যের কিছু উদাহরণ এখানে রাখা হল। শুধুমাত্র লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপে নয়, গোটা বিশ্বে জাদুবাস্তববাদী উপন্যাস লেখার তাগিদ যেভাবে লক্ষ্য করা গেছে ১৯৮০-র পর থেকে তা অকল্পনীয়।
চলচ্চিত্রে জাদুবাস্তবতা
চিত্রশিল্প এবং সাহিত্যের মত চলচ্চিত্রেও জাদুবাস্তবতার প্রয়োগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আলফোন্সো আরাউ ১৯৯২ সালে লরা এস্কুভেলের উপন্যাস ‘লাইক ওয়াটার ফর চকলেট’ অবলম্বনে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ফ্রাঞ্জ কাপ্রার ‘ইটস আ ওয়ান্ডারফুল লাইফ’, স্পাইক জ-এর ‘বিং জন ম্যালকোভিচ’, ব্রাড সিবেরলিঙ্কের ‘সিটি অফ এঞ্জেল’, উইম ওয়েন্ডেরস-এর ‘উইংস ওফ ডিসায়ার’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে জাদুবাস্তববাদী উপাদানের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। ‘লাইফ অফ পাই’, ‘ব্লু ভেলভেট’, ‘প্যান্স ল্যাবেরিন্থ’, ‘আমেলি’, ‘ফিল্ডস অফ ড্রিম’, ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’, ‘দি পারপাল রোস অফ কায়েরো’ প্রভৃতি ছবিগুলোতে জাদুবাস্তবতার প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে এই ছবিগুলো অধিকাংশই হলিউডের মূলধারা চলচ্চিত্রের ছক মেনে চলেছে। তারকভস্কির সিনেমায় জাদুবাস্তবতা যেভাবে এসেছে তা অনেকটাই পরাবাস্তবতা ঘেঁষা। সেখানে প্রতীকবাদের প্রয়োগ অনেক বেশি।
উডি অ্যালেন পরিচালিত ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’ সিনেমাটির কথা যেমন ধরা যাক। একজন লেখক তার বাগদত্তার সঙ্গে প্যারিসে ঘুরতে আসেন। সামাজিক জীবনে ক্লান্ত হয়ে এবং উপন্যাস লেখার অনুপ্রেরণা পাওয়ার জন্য রাতের প্যারিসে তিনি একা একা হেঁটে বেড়ান। এখানেই তার সঙ্গে ঘটে যায় এক আশ্চর্য ঘটনা। মধ্যরাতের সময় তাকে একটা গাড়ি নিয়ে যায় পুরোনো প্যারিসের জীবনে যেখানে অতীতের বিখ্যাত লেখক, শিল্পীরা কেউ মৃত নন। আবার উডি অ্যালেনেরই পরিচালিত ‘পারপল রোস অফ কায়েরো’ সিনেমাটিতে দেখা যায় মুখ্য নারী চরিত্র সিসিলা তার একাকিত্ব থেকে দূরে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন সিনেমায় যান এবং ‘পারপল রোস অফ কায়েরো’ সিনেমাটির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। একদিন এই সিনেমার মুখ্য চরিত্র টম বক্সটার সোনালি পর্দা থেকে বেরিয়ে তার বাস্তব জীবনে আসেন। স্পাইক জ পরিচালিত ‘বিং জন ম্যাল্কোভিচ’ সিনেমায় দেখা যায় একজন পুতুল নাচিয়ে বিখ্যাত অভিনেতা জন ম্যাল্কোভিচের মস্তিষ্কের ভেতর যাওয়ার একটি গুপ্ত পথ আবিষ্কার করেন। এদের মধ্যে জেন পিয়ার জ পরিচালিত ‘আমেলি’ সিনেমাটিতে জাদুবাস্তবতার প্রয়োগ সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। আমেলি জন্মানোর পর তার বাবা তাকে সন্দেহ করে যে তার হৃদয়ের অসুখ রয়েছে। তাই তাকে বাড়িতে রেখে পড়াশুনো করানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা। তার একাকীত্বের সঙ্গে লড়াই করতে আমেলি কল্পনাপ্রবণ হয়ে পড়ে। ছ’বছর বয়সে আমেলির মা দুর্ঘটনায় মারা যান। আঠারো বছর বয়সে আমেলি গৃহত্যাগ করে এবং একটি ক্যাফেতে কাজ করা শুরু করে। একদিন আমেলি খুঁজে পায় সেই জাদুবাক্সটি এবং প্রতিজ্ঞা করে এই বাক্সটি যার তাকে সে ফিরিয়ে দেবে। যদি এই ফিরিয়ে দেওয়া তাকে আনন্দ দেয় তবে জীবন সে অপরের আনন্দ খোঁজার কাজে অতিবাহিত করবে। অপরের আনন্দ খোঁজার এই যাত্রার মধ্যে দিয়ে আমেলি এবং তার আশেপাশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসে। অবশেষে আমেলি নিজের জীবনে খুঁজে পায় ভালবাসা। লাতিন আমেরিকার সিনেমা, সাম্রাজ্যবাদী সিনেমার বিরোধিতায় যে নতুন অভিমুখ গ্রহণ করেছিল তার ফলে নতুন নতুন চিত্রঘরানার সৃষ্টি হয়। এই ঘরানাগুলো মূল ব্যবসায়িক চলচ্চিত্র থেকে নিজেদের অনেকটাই পৃথক করে রেখেছে।
ধীমান দাশগুপ্তের তাঁর ‘জাদুবাস্তবতা : বাংলা সাহিত্য, লাতিন আমেরিকান সিনেমায়’ নামক প্রবন্ধে বলেছেন, “লাতিন আমেরিকার চলচ্চিত্রে আমরা পাই— ঐতিহাসিক পুনর্নির্মাণ (দ্যি লাস্ট ইন্ডিয়ান আপরাইজিং), ইতিহাসের বিনির্মাণ (দ্যি মিস্ট্রি অফ দ্যি স্কারলেট আইস), বিপ্লবাত্মক তথ্যমূলতা (দ্যি আওয়ার অফ দ্যি ফারনেসেস), প্রথা বা বৃত্তির বিনির্মাণ (দ্যি জ্যাকেল অফ নাহু এলতেরো), রাজনৈতিক ইতিহাস হিসেবে ব্যক্তিজীবনে চলচ্চিত্র (লুসিয়া), আভ গার্দ (দ্যি বাউন্ডারি), ব্ল্যাক কমেডি (দ্যি লাস্ট সাপার) ইত্যাদি চলচ্চিত্রগুলো।”১
শৈলী বা ঘরানার দিক থেকে ল্যাটিন লাতিন আমেরিকার চলচ্চিত্র গ্রহণ করেছে নিও-রিয়ালিজম, সোশালিস্ট রিয়ালিজম, ডকুমেন্টারি রিয়ালিজম, সোশ্যাল ডকুমেন্টেশন, ম্যাজিক রিয়ালিজম, ট্রপিকালিজম ইত্যাদি বিভিন্ন মতবাদ বা ইজমকে। এই চলচ্চিত্রগুলোতে ফ্যান্টাসি উপাদানের অস্তিত্ব প্রবল। এই উপাদানগুলো পরবর্তীকালে দানা বেঁধে ম্যাজিক রিয়ালিজম বা জাদুবাস্তবতার রূপ পায়। আফ্রিকি ও ল্যাতিন আমেরিকার সংস্কৃতিতে জাদু ও জাদুবিশ্বাসের যে প্রাধান্য এবং বাস্তব ও রহস্যের মধ্যে যে সৃষ্টিশীল সম্পর্ক তার জন্য রাজনীতি সচেতনতা ও জাদুবাস্তবতার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই, বরং সমন্বয় আছে। ‘দ্যি আওয়ার অফ দ্যি ফারনেসেস’-এর মত বহু চলচ্চিত্রেই রাজনৈতিকতা এবং কাব্যিকতা উভয় দিক থেকেই প্রগতিপন্থী। এই রাজনৈতিকতা ও কাব্যিকতার সঙ্গে জাদুগুণ যুক্ত হয়ে অনেক ছবিকেই অমোঘ ও আত্মঘাতী করে তোলে যা দলমত নির্বিশেষে দর্শককে সচেতন এবং আলোড়িত করে।
লাতিন আমেরিকার ফিল্ম ন্যারেটিভের একটা উল্লেখযোগ্য দিক হল তার সমন্বয় প্রবণতা। তথ্য ও আখ্যান, এপিক ও লিরিক, আবেগ ও যুক্তির সহাবস্থান এবং সমন্বয়। ব্রাজিলের সিনেমা নোভো, চিলির সিনেমা ওফ আরজেন্সি, এস্পিনোসার মতাদর্শ ইম্পারফেক্ট সিনেমা, সোলানাস ও গেটিনোর ম্যানিফেস্টো টুওয়ারড আ থার্ড সিনেমা, কিউবার সিনেমা অফ পভার্টি প্রভৃতির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে লাতিন আমেরিকার সিনেমা অফ আন্ডার ডেভলপমেন্টের নিজস্ব ন্যারেটিভ গুরুত্ব।
তথ্যসূত্র:
১. ধীমান দাশগুপ্ত, ‘‘জাদুবাস্তবতা: বাংলা সাহিত্যে, লাতিন আমেরিকান সিনেমায়’’, দ্র. পলাশ খাটুয়া (সম্পা), ‘ম্যাজিক রিয়ালিজম ও বাংলা সাহিত্য’, কলকাতা, বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ, বইমেলা ২০১৬, পৃষ্ঠা ৯৪।