Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ভাষা-প্রতিবেশী ও আমরা

পশ্চিমবঙ্গে বসে বা এ দিকের যে পত্রপত্রিকা তার নিরিখে বাংলা লেখালেখির যদি একটা সামগ্রিকতা বুঝতে চেষ্টা করা হয় তাহলে যে প্রসঙ্গটি দাঁড়ায় তা হল মূল বাংলাভাষা চর্চার কতখানি আমরা বুঝে উঠতে পারছি। সারা পৃথিবীর যে বাংলা ভাষা চর্চা তার তুলনায় আমাদের ভাষা-চর্চার অবস্থান কোথায়। আমরা কি মাতৃভাষার বেশিরভাগ ক্ষেত্রটাই দখল করে আছি! আমাদের তুলনায় বহির্পশ্চিমবঙ্গের ভাষা-আলোচনা কি নিতান্তই কম, নাকি আমরাই সামগ্রিকতার তুলনায় সীমায়িত অবস্থানে। বাঙালির প্রবাস বা পরবাস বা ভিন্ন-দেশ কি বাঙালিত্বের বৃহত্তর ও শক্তিশালী জায়গাটুকু দখল এবং লালন করে চলেছে? এই তুল্যমূল্য আলোচনার অভিমুখ অনেকটাই পড়শি বা শরিককে চিনে নেওয়ার চেষ্টায়, এই লক্ষ্যে যে, আজকের ইউরোপীয় ভাষা ও মার্কিনি সংস্কৃতির প্রাগ্রসরতার মধ্যে আমাদের ভাষাবান্ধবরা কে কোথায় দাঁড়িয়ে!

এখনের পৃথিবীতে বাংলা মাতৃভাষা এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় তিরিশ কোটি। এর অর্ধেকের সামান্য বেশি সংখ্যক মানুষ বাস করেন বাংলাদেশে। ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, অসমের বরাক উপত্যকা মিলিয়ে আছেন নয় কোটি মানুষ। এছাড়া বিরাট অংশ বাংলাভাষী মানুষ বাস করছেন ভারতের অন্য প্রদেশ, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও কানাডায়। এছাড়া খুব অল্প সংখ্যার অন্য ভাষার মানুষ, যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি হিন্দি বা গুজরাতি, তারা মূল অক্ষরে রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র বা অন্য কোনও লেখা পড়ার জন্য বাংলা ভাষা শিখে থাকেন। এদের সংখ্যাটি একেবারেই নগণ্য, হাতেগোনা, কিন্তু মনে রাখা দরকার এদের বাংলা ভাষা চর্চা, এদের নিষ্ঠা এবং ভাষা শিক্ষার্থে প্রাণপাত খুবই উচ্চমার্গের। হাতের কাছে সাম্প্রতিক উদাহরণ মার্টিন কেম্পসেন, যার বিদেশি শব্দ-মুক্ত অনর্গল বাংলা কথা বলা ও স্বতঃস্ফূর্ত লেখন সত্যিই বিস্ময়কর।

এদের পাশাপাশি ও বিপরীত অবস্থানে সগর্বে উপস্থিত থাকছেন আর এক গোত্রীয় বাঙালি। বিদেশে নয় স্বদেশে মূলত পশ্চিমবঙ্গে যাদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তারা প্রতিনিয়ত বাংলাভাষাকে নিজেদের কণ্ঠ-মূর্ধা-তালু, ঘর ও কর্মস্থল থেকে বিসর্জন দিয়ে চলেছেন এবং তাদের সন্ততিবর্গকেও বাংলা ভুলে থাকার দীক্ষায় উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন। আদমসুমারির হিসাব অনুযায়ী এদের মায়ের ঘরের ভাষা বাংলা, অথচ এরা সোৎসাহে বাংলা ভুলতে চেষ্টা করা বাঙালি। এবং এরা যে ইংরেজি বা আর কোনও বিদেশি ভাষাকে সমস্ত উৎকর্ষ সহ গ্রহণ করতে পারছে তা মোটেই নয়। এরা রবীন্দ্রনাথ পড়েনি, আবার সাম্প্রতিকের পাওলা কোহেল-ও পড়েনি, সিনেমা হলে বা কোনও মলে টাইটানিক, হ্যারি পটার ও জাঙ্গল বুক দেখেছে মাত্র। এরা কিছুই পড়ে না কারণ না-পড়েও ‘এই বেশ ভাল আছি’ থাকা যায়। স্ত্রী-সন্তান সহ বার্গার পিৎজা কেএফসি খায় আর গায়ে বেমানান উল্কি আঁকার মত চটকদারি কিছু ইংরেজি শব্দে নিজেদের আপাত শোভিত রাখে। এরা বাঙালি অথচ বাঙালি নয়। সাহেব তো কোনও কালেই নয়।

কিন্তু ভাষা চর্চার নিরিখ যদি আমরা তৈরি করতে যাই, অন্তত বাংলায় লেখালেখি, সংবাদপত্রের বাইরে পত্রিকা প্রকাশ, ছোট কাগজ ইত্যাদিকে মূল্যমান ধরি‌ তবে দেখব বাংলা ভাষার সংখ্যাগরিষ্ঠ চর্চাটি অবশ্যই বাংলাদেশের ভাগে পড়েছে। বাংলা বই বিক্রি অনেক বেশি বাংলাদেশে। কলেজের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পাঠ্যক্রমও কোথাও কোথাও তারা বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে নিয়ে দিব্বি চালাচ্ছেন, এবং এই আগ্রহ, প্রচেষ্টা, ও উন্মেষ-ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। এর পাশাপাশি বিদেশে, মূলত কানাডা মার্কিন দেশ, ইউরোপ অস্ট্রেলিয়ায় যে সমস্ত বাঙালি প্রবাসের প্রতিকূলতাতেও বাংলা চর্চা করছেন বা বাংলায় লিখছেন তাদের শতকরা পঁচানব্বই ভাগ ঢাকা রংপুর বা সিলেটের অভিবাসী। তাদের পাঠের তৎপরতা, প্রবাসে গ্রন্থাগার স্থাপনার নিরবচ্ছিন্ন উন্মাদনা এবং বাংলায় গল্প উপন্যাস বা কবিতা লেখার ধারাবাহিকতা এই মুহূর্তে লক্ষণীয়। কলকাতায় খুবই কম কিন্তু ঢাকার সমস্ত পত্রপত্রিকার একটি অংশ জুড়ে থাকে এদের রচনা। আমরা কলকাতায় বসে এদের খবর বিচ্ছিন্ন দু-একটি উদাহরণ ছাড়া সেভাবে রাখতেই পারি না।

এর বাইরে ভারতের অন্যত্র যারা বাংলা চর্চা করেন তাদের মধ্যে আছেন ত্রিপুরা রাজ্যের বাঙালিরা। সেখান থেকে একাধিক দৈনিক বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশিত হওয়া ছাড়াও গোটা চারেক লিটল ম্যাগাজিন নিয়মিত ও বেশ কিছু ছোট কাগজ অনিয়মিত প্রকাশিত হয়। যারা পশ্চিমবঙ্গে বসে বই পড়ি তাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেভাবে ত্রিপুরার কবি বা গল্পকারদের লেখা হাতের কাছে পাই না। এক্ষেত্রেও যেটুকু ব্যতিক্রম তা বিচ্ছিন্নতারই নামান্তর। আমাদের মানসপটে লেখক বাহিত হয়ে আগরতলা বা কৈলাশহরের মধ্যবিত্ত জীবন আসে না। পার্বত্য ত্রিপুরার আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিয়ে একাধিক উপন্যাস বাংলা ভাষায় ও দিকে প্রকাশিত হয়ে থাকলেও সেগুলি সর্বাবস্থায় আমাদের হাতের নাগালের বাইরে। এমনকী পশ্চিমবঙ্গ থেকেও যেসব লিটল ম্যাগাজিন বেরোয় সেখানে ব্যতিক্রমী বিষয়, যথা মহাশ্বেতা-মৃণাল-উদয়ন ঘোষ ‌ও নকশাল আন্দোলনের উৎকৃষ্ট পৌনঃপুনিক উপস্থিতি থাকলেও কখনও কোনও ত্রিপুরা-সংখ্যা করা বা ত্রিপুরার লেখকদের খোঁজখবর নেওয়াটা আমাদের শশব্যস্ত সম্পাদকেরা সেভাবে ভাবতে পারেন না। ফলে বাংলা ভাষা চর্চার আর-একটি প্রদেশ, অজস্র বাংলা মাধ্যম স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে বাংলাভাষা পড়ানোর একাধিক কৃতবিদ্য অধ্যাপক হাজির থাকলেও তারা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের থেকে দূরে। আমরা তাদের সন্ধান পাই না, কারণ আমরা কলকাতায় বসে আমাদের রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে আত্মরতিপরায়ণ। ফলত অনুসন্ধিৎসাহীন।

একইভাবে আমাদের পাঠ তালিকায় আন্দামান আসে না। সেই দ্বীপভূমিতে নিয়মিতভাবে বছরে দুটি সংখ্যা বার করে এমন বাংলা লিটল ম্যাগাজিনের সংখ্যা অন্তত দুটি। তাদের কোনও পাতিরাম বা উল্টোডাঙা নেই, কিন্তু ধ্যানবিন্দু রয়েছে এবং সেই ধ্যানের বিন্দুটি হল বাংলাভাষায় নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাওয়া। কলকাতায় থেকে আমরা তাদের নাগাল পাই না বা পেতে চাই না। এবং শহুরে মধ্যবিত্তসুলভ নিরুদ্বিগ্নমননের অবিরত চর্চায় সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে খবরের কাগজে হিমাচল প্রদেশে কোথাও দ্বিতীয় ভাষার তালিকা থেকে বাংলা তুলে দেওয়া হলে সেখানকার বাংলাভাষী শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা আতান্তরে পড়ল এ খবরে আমাদের এখন আর কিছু যায় বা আসে না। রায়গড়-ছত্তিশগড়ে একদা বাঙালি প্রতিষ্ঠিত স্কুলে এখন বাংলা পঠন শিকেয় তুলে দেওয়া হয়েছে, এর ফলে কোন বাংলাভাষী কিশোর মাতৃভাষার কোল থেকে সজোরে কঠোর হিন্দি ভূমিতে নিক্ষিপ্ত হল তাতেই বা কার কী যায় আসে! আমরা বাঙালি, পশ্চিমবঙ্গবাসী, সকালবেলা নির্ভাঁজ সতেজ খবরের কাগজটি ঘরের দুয়ারে আদুরে মেনিবেড়ালটির মত শুয়ে থাকলেই হল, তাকে কুড়িয়ে ঘরে তুলে এনে তার মুখচ্ছবিতে জোট-ঘোঁট-দলত্যাগ প্রভৃতি পাঠ ও দর্শনেই আমাদের মোক্ষ। আমাদের পরম প্রাপ্তি। তার বাইরে আর হাত বাড়াতে চাই না।

ফলে আমরা ক্রমশ প্রতিবেশীহীন। নতুন প্রজন্মের ইংরেজি শিক্ষার প্রাবল্যে শেষাবধি বাংলাহীন বাঙালি হয়ে যাই কিনা তাই বা কে বলে উঠতে পারে!

চিত্র: গুগল
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
স্বপন নাগ
স্বপন নাগ
2 years ago

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ একটি সংকট। কিন্তু বিধৃত হয়েছে বড় সংক্ষেপে। বহির্পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য সাধনার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অবশ্যম্ভাবী ভাবে এসেছে ত্রিপুরা আন্দামান ও আসামের বাংলাচর্চার প্রসঙ্গও। হিমাচল প্রদেশে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা থেকে উচ্ছেদের কথাও। এ সবের বাইরেও এলাহাবাদ কানপুর বেনারস জবলপুর রাঁচি দিল্লি মুম্বাই প্রভৃতি বহির্বঙ্গের যে সমস্ত জায়গা থেকে বাংলাচর্চার বিষয়টি দিনে দিনে শেষ হয়ে যাবার পথে পা বাড়িয়ে বসে আছে, সে বিষয়টিও একইরকম ভয়াবহ এবং চিন্তাজনক। উত্তর প্রদেশের কানপুর শহর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হত এমন একটি পত্রিকা “খেয়া”, দীর্ঘ প্রায় তিরিশ বছরের নিয়মিত প্রকাশনায় বেরিয়েছে আশিরও বেশি সংখ্যা। একটা সময় লেখকদের যৎসামান্য সম্মানদক্ষিণা দেওয়ার নজিরও আছে এই পত্রিকাটির। এমনই অজস্র পত্রিকার কথা বলা যেতে পারে, বাংলা সাহিত্যসাধনায় যাদের অবদান অস্বীকার করা ইতিহাসকেই বিকৃত করার মত অপরাধ হবে। জবলপুরের ‘মধ্যবলয়’, মুম্বাইয়ের ‘প্রবাসে নিজভাষে’, ‘মেঘ’, নাগপুরের ‘খনন’, বেনারসের ‘সবার সাথী’… তেমন অজস্র সংখ্যার কয়েকটি মাত্র।

সাত‍্যকি হালদার
সাত‍্যকি হালদার
2 years ago

ধন্যবাদ স্বপনবাবু। আপনার যথাযথ মন্তব্যটি ব‍্যতিরেকে আমার লেখাটি সম্পূর্ণ হত না।

Recent Posts

নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »
দীপক সাহা

বন্দুকের মুখে দাঁড়িয়ে ইতিহাসকে লেন্সবন্দি করেছেন সাইদা খানম

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে উপমহাদেশের বিখ্যাত প্রায় সকল ব্যক্তিত্ব— ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, ইন্দিরা গান্ধী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানী, বেগম সুফিয়া কামাল, মৈত্রেয়ী দেবী, মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, আশাপূর্ণা দেবী, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কণিকা বন্দোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়— কার ছবি তোলেননি! সেই সঙ্গে রানি এলিজাবেথ, মাদার টেরেসা, মার্শাল টিটো, অড্রে হেপবার্নের মতো বিখ্যাত মানুষদের ছবিও তুলেছেন। এই বিশাল তালিকায় আরও তিনটি নাম যুক্ত করে না দিলে অন্যায় হবে। চন্দ্রবিজয়ী নিল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিনস, মাইকেল কলিন্সের ছবিও তুলেছেন তিনি।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

মামলায় জয়ী হয়ে থোড় কুঁচি দিয়ে কালীর আরাধনা করেন জমিদার-গিন্নি

দেবী কালিকার খড়ের মেড় দেখে মজুমদার গিন্নি দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, মামলার রায় যদি তাঁদের পক্ষে যায় তাহলে কলাগাছের থোড় কুঁচো দিয়ে হলেও জগজ্জননী মা মহাকালীর পুজো করা হবে, আর যদি মামলার রায় তাঁদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে ওই খড়ের মেড় দামোদরের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। যদিও সেদিন দুপুরের মধ্যেই আদালত থেকে মজুমদার জমিদার পক্ষের জয়লাভের খবর পৌঁছেছিল থলিয়ার মজুমদার বাড়িতে। মজুমদার-গিন্নিও অক্ষরে অক্ষরে তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। মামলায় জয়লাভের খবর পাওয়া মাত্রই জমিদার-গিন্নির নির্দেশে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দীপাবলি উৎসবের আয়োজন শুরু হয়ে যায়।

Read More »