Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

দুর্গাপূজা, মূর্তিপূজা: দেশে দেশে

বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব, যা মহালয়া থেকে শুরু করে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, অর্থাৎ কমবেশি এক পক্ষকাল ব্যাপী স্থায়ী। এ-পুজো এখন বাংলাভাযী অঞ্চল ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক, পৃথিবীর একশোটির মতো দেশে পালিত হয়। এবছর নিউইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা, যে পুজোর আয়োজক বেঙ্গলি ক্লাব ইউ এস এ এবং হিন্দু কমিউনিটি অব নিউইয়র্ক।
প্রসঙ্গত, দুর্গামূর্তিনির্মাণে কলকাতার কুমোরটুলি সবচেয়ে খ্যাত। এখান থেকে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে তো বটেই, ভারতের নানা স্থানে এবং বিদেশেও মূর্তি যায়। এটি এমন একটি মৃৎশিল্পপাড়া, যেখান থেকে বারো হাজারের বেশি দুর্গামূর্তি নির্মিত হয়। আর সেসব মূর্তি পাড়ি দেয় মাস্কট, সংযুক্ত আরব আমীরশাহী, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া, সিডনি, লন্ডন, নিউইয়র্ক-সহ পৃথিবীর নানা জায়গায়। সারা বিশ্বের সর্বত্র দুর্গাপুজোর সংখ্যা কত, পরিসংখ্যানবিদেরাও সঠিক বলায় হার মানবেন। কেবল কলকাতাতেই দুহাজার পুজো হয়। বাংলাদেশের যতটুকু খবর জানা আছে, বত্রিশ হাজারের ওপর পুজোর তথ্য জানতে পেরেছি আমরা। চল্লিশ হাজারের ওপর মন্দির যেদেশে, সেই বাংলাদেশে তো এটা হতেই পারে।

দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে কেবল যে ধর্মীয় আবহ তৈরি হয় তা নয়, এর বাণিজ্যিক ও সংস্কৃতিগত দিক-ও কম উল্লেখযোগ্য নয়। কোটি কোটি টাকার পোশাক, কসমেটিকস ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কেনা হয়। রসনাতৃপ্তিতে বাঙালি দরাজদিল বলে খাদ্যের পেছনেও কম খরচ হয় না। আর শারদীয় পুজোকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ পত্রপত্রিকায় ছেয়ে যায় দেশ; হাজারে হাজারে। বহু নতুন লেখকের আবির্ভাব হয়, যাঁরা পরবর্তীকালে স্থায়ী ছাপ রেখে যান বাংলাসাহিত্যে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, শারদ সংখ্যায় লেখার মাধ্যমেই বাংলাসাহিত্যে চিরস্থায়ী দাগ রেখে গেছেন সত্যজিৎ রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো স্বনামধন্যরা!

মূর্তিপূজা, বিশ্বে

প্রাচীন পৃথিবীর নানা দেশে ধর্মকে কেন্দ্র করে মূর্তিপূজার প্রচলন ছিল। ভারতীয় সভ্যতার সূচনালগ্ন যদি সিন্ধু সভ্যতাকে ধরা হয়, তাহলে দেখব, একাধিক দেবেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে। পরবর্তীকালে বৈদিক যুগে প্রাথমিকভাবে যে নিরাকার ও এক ব্রহ্মের উপাসনা, তা পরিবর্তনের মাধ্যমে বহুদেবতাবাদে পরিণত হয়। উপনিষদে বলা হয়, ‘একঃ স বহূনৈচ্ছৎ’, এক তিনি বহু হতে চাইলেন। প্রথমদিকে প্রকৃতিপুজো, যেমন অগ্নি, বায়ু, জলকে উপাসনার অন্তর্ভুক্ত করা হল। ঋগ্বেদ শুরুই হয়েছে অগ্নি বা আগুনকে বন্দনা দিয়ে, ‘অগ্নিম্ ইলে’,– আগুনকে বন্দনা করি। সেযুগের মানুষ প্রকৃতির রহস্য ও কার্যাবলি বুঝত না বলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে প্রকৃতিকে উপাসনা করত। কেবল এই উপমহাদেশেই নয়, মিশর, গ্রীস, রোমেও অনুরূপ দৃষ্টান্ত পাই আমরা। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০-তে মিশরে সৌরদেবতা ‘রা’-কে পাচ্ছি প্রধান দেবতারূপে, ও তৎসহ দেবী আইসিসকেও। মিশরের ওপর বিখ্যাত গবেষক জেমস পি আ্যলেন ১৪০০ মিশরীয় দেবতার কথা জানিয়েছেন। ক্রিস্টান লেইসের মতে, আরও অনেক বেশি। এই উপমহাদেশের মতোই নৈবেদ্য, জীব উৎসর্গ, বলিপ্রদান অনুষ্ঠিত হত মিশরেও। আবার দেবতাদের বিমূর্ত থেকে মূর্ত, মূর্ত থেকে বিমূর্ততার পরিযায়ী বৈশিষ্ট্য-ও লক্ষ্য করা যায়। মিশরীয় সভ্যতার শেষদিকে গ্রীক ও রোমান মূর্তিবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয় মিশরীয় সভ্যতা। পতাকা, বাজপাখি, গোখরো সাপ, এসব প্রতীক একে অন্যের থেকে গ্রহণ করে। রোমের মন্দিরে মিশরীয় প্রভাব পড়ে। আবার গ্রীক দেবী আর্টেমিস, অরণ্যদেবী, গৃহীত হন রোমে, নাম হয় ডায়ানা।
মজার কথা, দেবী দুর্গাও কিন্তু গোড়ায় ছিলেন আরণ্যদেবী। বনদুর্গা নাম ছিল তাঁর। পরে শাকম্ভরী, ক্ষুধার্তকে শাক যোগাতেন তিনি। কৃষিনির্ভর দেশে মূলত কৃষকের দ্বারাই পূজিত হতেন তিনি। পরে অভিজাত মহলে গৃহীত হন। বৈষ্ণবধর্ম যেমন, গোড়ায় ছিল নিম্নবর্গের, পরে ধ্রুপদী হয়ে ওঠে, তাত্ত্বিক ও পণ্ডিতদের মাধ্যমে।

দেবী দুর্গার কথা পাই উপনিষদের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে, যেখানে উমা নামে তিনি পরিচিত। এই দেবী এককালে যে উপমহাদেশে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ছিল, তার প্রমাণ দেয়। ইহজাগতিক সব কিছুর কারয়িত্রী তিনি, এই ভাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কেনোপনিষদের আখ্যানে। পরবর্তীকালে সাংখ্যদর্শন সেই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে। পুরাণ ও রামায়ণে আমরা যে দুর্গাকে পাই, বাংলায় এসে তা অন্য আয়তন লাভ করেছে। সাধারণত হিন্দু দেবদেবী পরিবারসহ পূজিত হন না। আবার দেবদেবীদের নিজস্ব বাহন থাকে, এবং তা একটি-ই। কিন্তু বাঙালির দুর্গা পুরাণে সিংহবাহিনী, অথচ প্রতি বছর যখন তিনি মর্ত্যে আসেন, স্বতন্ত্র বাহন থাকে তাঁর,– গজ, নৌকা, অশ্ব এবং/অথবা দোলা। সমগ্র পুরাণে এটি অভিনব ব্যাপার! বাঙালি দুর্গাকে পুরাণ অতিক্রম করে গড়ে নিয়েছে। যেমন অকালবোধন, সে-ও বাঙালির নিজস্ব নির্মাণ। আর তা আসে কৃত্তিবাস-রচিত রামায়ণের মাধ্যমে।
এখানে আবার একটি স্ববিরোধ-ও রয়ে গেছে। দেবী দুর্গা হিমালয়কন্যা, মেনকা তাঁর মাতা। বৎসরান্তে তিনি বাপের বাড়ি অর্থাৎ বাংলায় আসেন। যদি হিমালয় তাঁর নিবাসস্থল হয়, এবং শিবগৃহ কৈলাস হয় স্বামীর ঘর, যেখানে তিনি সম্বৎসর বাস করেন, তাহলে তিনি ও তাঁর বা মাতার ঘরে আসার মানে তো বাঙালির ঘরে আসা দাঁড়ায় না! আগমনী গানে মেনকা বলছেন, ‘যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুখে রয়েছে’। সব মা-ই মেয়েকে স্বামীগৃহে দুঃখে আছে ভাবে, কিন্তু উমাকে আনতে গিরি কেন বাংলায় আসবেন? এইখানেই রূপকথা- ‍পুরাণকথার জোর, যা বাস্তবকে লঙ্ঘন করে পরাবাস্তবের জন্ম দেয়। অনুরূপ উদাহরণ আরও আছে। প্রচলিত একটি বাংলা ছড়ায় স্বামীগৃহে বাস করা এক কুলবধূ ভাইয়ের অদর্শনে কাতর হয়ে বলছে, ‘গুণবতী ভাই আমার, মন কেমন করে!’ দুঃখের অভিভবে ভাই গুণবান না থেকে ‘গুণবতী’ হয়ে যায়। বাংলা লোকসংস্কৃতির এ এক অনুপম নিদর্শন। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে আমরা দেখি, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে দেবী দুর্গা নানা অসুর নিধন করেন। কখনও শুম্ভনিশুম্ভ, কখনও মধুকৈটভ, কখনও মহিষাসুর। এ যেন গীতায় কথিত শ্রীকৃষ্ণের বাণীর প্রায়োগিক রূপ, ‘পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।/ ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে’, অর্থাৎ সাধু বা ভালমানুষদের পরিত্রাণ (অসৎদের থেকে) এবং খারাপ মানুষের বিনাশ, ধর্মসংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

দেখা যাচ্ছে, দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান কেবল মহিষাসুর-বধ ভিত্তিক। এটাও তাৎপর্যপূর্ণ। এবং আশ্চর্যের এটাও যে যুদ্ধটা সংঘটিত হয়েছিল স্বর্গে, মর্ত্যভূমি তথা বাংলায় নয়। আর যুদ্ধ করতে আসবেন যিনি, নানা দেবতার দেওয়া অস্ত্রভারে সজ্জিত হয়ে, সেখানে তো পুত্রকন্যাদের নিয়ে আসাই উচিত নয়! কোনওকালের যুদ্ধেতিহাসে এমন নজির নেই। যদিও পিতাপুত্রের যুদ্ধে যোগ দেওয়ার ইতিহাস আছে। যেমন অর্জুন ও অভিমন্যু। যেমন প্রায়াম ও হেক্টর।

আসলে বাঙালি নিরন্তর এক অনুসন্ধানী, ব্যতিক্রমী, অভিনব-চিন্তক, ক্রমবিকাশপ্রিয় ও অন্তিমে রহস্যময় জাতি। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলমান আস্তিক নাস্তিকে মিলিত এই জাতি সঙ্ঘারাম আর মিনার, ধ্বজা ও ওংকার, জগমোহন-মিরহাব-স্তূপ-ভস্মাচ্ছাদিত এক জাতি, নিজ মুদ্রাদোষে নয়, মু্দ্রাগুণে আলাদা। তাই তাঁর ইসলামেও নিজস্বতা আছে বনবিবি-সত্যপীর আরাধনায়, শনিপুজোর শিরনিতে, খ্রিস্টমাস উদযাপনে, সুফিবাদে-বৈষ্ণববাদে- কীর্তন-জঙ্গনামা-প্রবারণা-কঠিন চীবরদান মিলিয়ে এক বৈচিত্র্যময় জাতি।

অতএব দুর্গাকে সে নিজের মতো করে, আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে বিনির্মাণ করে নিয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘দেবতারে প্রিয় করি, প্রিয়েরে দেবতা!’ আমাদের কন্যাদের নামে দুর্গা ও তাঁর সমনামের ছড়াছড়ি,– শিবানী, গৌরী, গিরিজা, অদ্রিজা, দেবেশী, হৈমবতী, সতী, অপর্ণা, এমন কত! কখনও সে জননী, যখন গেয়ে উঠি, ‘আজি শঙ্খে শঙ্খে মঙ্গল গাও, জননী এসেছে দ্বারে’! আবার কখনও সে কন্যা, তাই মেনকার কাজরীগাথা তরঙ্গ তোলে, ‘এবার আমার উমা এলে আর উমায় ফেরাবো না!’ রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘কাবুলিওয়ালা’-য় বৈপরীত্য ফুটিয়ে তোলেন শরতে দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনের সঙ্গে মিনির বিবাহ ও পিতৃগৃহ থেকে বিদায়ের। আর বিভূতিভূষণ! অপুকে দুর্গা নামের সঙ্গে যুক্ত করেই ক্ষান্ত হননি, অপুর স্ত্রীকে পর্যন্ত দুর্গার প্রতিশব্দ দিয়েছেন,– অপর্ণা! তাঁর নিজের প্রথমা স্ত্রীর নাম-ও, আশ্চর্য, গৌরী!

কভারের ছবি: দুর্গা, খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দী, বাংলা থেকে।
শারদোৎসব: বাংলাদেশে

দুর্গাপুজো: অতীত দিনের স্মৃতি
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »