আলোকবৃত্ত
আলো থেকে অন্ধকার
নাকি অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ফিরছি,
ছায়া, ছায়া ঘুরছে মাথার ভেতর,
মাথার ভেতর আরেক মাথার জন্ম হতে দেখি,
কাম, ক্রোধ, বরফ, অক্ষর, প্রেত ও প্রসাদ,
কে যেন কখন ভর করে,
আশ্চর্য এইসব ছায়া মেখে ঘুরি আজকাল,
এইসব মাথাপিছু দিন।
অন্ধ বিকেলের দিকে
অন্ধ বিকেলের দিকে রোদ গড়ালে—
কৃষ্ণনীল বাঁশী হয়ে বাজে চাঁপা গাছের শরীর।
তখন ঊর্বশী ছন্দে কটা সমুদ্রচোখ,
রংমানবীরা, মেঘমানবীর মত ভাসতে ভাসতে—
ভাসতে ভাসতে জাদু দেখালে,
মুখে পড়ে আলো।
আর আলো মুখে পড়লে কার না তখন নক্ষত্র ইচ্ছে হয়।
এখন যেমন মধুমাটিতে ছড়ানো আপেল রঙের খিদে,
কে কামড় দেয় না তাতে।
জানি খিদে পেটে পাপ বলে কিছু নেই,
যেভাবে রক্ত শুষবে বলে মশার ঝাঁক,
কখন যুদ্ধমাটিতে হেরে পিঁপড়ে পাহাড়ের কাছে বন্ধক,
এবার শীতে প্রায় ফিস্টি করবে ওরা।
ব্ল্যাকহোল সভ্যতায়
কুকুরের জিভ ফেটে লালচে চিৎকার গড়িয়ে পড়লে—
ফৎফৎ করে নড়ে ওঠে পাগলের রাগ।
সে রাগ তখন রুপোলি ঢিল হয়,
মুঠো হাত আকাশে তুলে—
আবারও নিচে নামালে,
আমিও তো তেমনই নিচে নামিয়ে হাত।
লিখছি, ভাঙছি, কাটাকুটি যা ইচ্ছে তাই করছি।
বেহিসেবি খেলায় মুদ্রারাক্ষস।
রাস্তার কিনারে শুনি বাঁশী বেজে ওঠে।
যে বেলুনওয়ালা বাঁশী বাজায় সে কি জানে না—
এ ব্ল্যাকহোল সভ্যতায় তার ক’জন শ্রোতা ও ক্রেতা,
তবু এমন জাদুকরী আয়োজন?
তবু এমন ছড়িয়ে ঘরানা?
ঘরানা ছড়িয়ে পড়ে ঘাসের আলো ছুঁয়ে,
পরজন্ম নীল অজানায়।
খিদে
এখন গোলাপ উপমা নয়,
এখন ঝলসানো আগুন সেতার।
হাত চায় ভাত, ভাত চায় ডাল,
একপেট খাবার।
ছুটে চলা এ ঘূর্ণি নাগরদোলা,
ধুলো ওড়ায় বিষুব মেলা প্রাঙ্গণ।
হে পৃথিবী, যতদূর বিপ্লবে হাঁটো,
আমাদের এক স্বপ্ন গমখেত প্রয়োজন।
নুন আনতে পান্তা ফুরোলে আজও—
স্বপ্ন হাজার মাটিতে ঘষে যায়।
ছটফট, ছটফট ঘষে শরীর,
ভোটরাষ্ট্র যদিও দলছাপ চেনায়।
চিনতে চিনতে, জানতে জানতে
ভুলে যায় কখন, কোথায় খুলে পড়ে চোখ।
চোখ নেই, চোখ নেই, দেখি না কিছুই,
আমাদের চাওয়া শুধু, অন্নসংস্থান হোক।
বাদামি অ্যাসট্রেতে ছাই
বাদামি অ্যাসট্রেতে ছাই পড়ে আছে,
গরম রাগের মত ছাই পড়ে আছে,
দেশপোড়া ছাই, হাড়পোড়া ছাই।
গাছ-পাথর পোড়া ছাই পড়ে আছে।
মুখে মুখে কারা আগুন ছড়াল,
আর কারা তত আগুন বুকে নিয়ে মশাল জাদুকর,
বদলে রইল পড়ে হিম বরফের চাদর,
যেন ঠান্ডা সভ্যতার ঘুরে দাঁড়াবার নেই কোনও দায়,
ছাই, ছাই, সেই ছাই পড়ে আছে প্রচণ্ড অহমিকায়।