Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

রুয়ান্ডা: ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বর্গোদ্যান

আমরা যারা নব্বই দশকে বড় হয়েছি তাদের কাছে সোমালিয়া, রুয়ান্ডা কিংবা বসনিয়া নামগুলো এক-একটা বিভীষিকার মত। টিভি খুললেই সেসব দেশের যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞের ছবি দেখা যেত। সেসব দেশ এখন কেমন আছে আসুন একটু খোঁজ নিয়ে জানা যাক।

১৯৯৪ সালের ৭ এপ্রিল। হঠাৎ করে রুয়ান্ডা জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ হুতু ঝাপিয়ে পড়ে তুতসি জনগোষ্ঠীর ওপর। এ দাঙ্গায় ১০০ দিনে ৮ লক্ষ মানুষ মারা যায়। সে রুয়ান্ডা এখন আফ্রিকার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ দেশ। রুয়ান্ডাকে বলা হয় আফ্রিকার ‘টেক-হাব’। রুয়ান্ডা ব্যবসা করার জন্য আফ্রিকার দ্বিতীয় সেরা দেশ। সেখানে আফ্রিকার সেরা বিচার বিভাগ, দ্বিতীয় সেরা পুলিশ, তৃতীয় সেরা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। রুয়ান্ডায় প্রতিটি শিশুর জন্য ১টি করে ল্যাপটপ রয়েছে। রুয়ান্ডায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা। এটি লিঙ্গসমতার ক্ষেত্রে আফ্রিকার দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ।

১০০ দিনে মারা গিয়েছিলেন ৮ লক্ষ মানুষ।

রুয়ান্ডা আফ্রিকার নেতৃস্থানীয় ই-কমার্স রাষ্ট্র। এর রাজধানী কিগালি আফ্রিকার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর। এটি আফ্রিকার প্রথম দেশ যেখানে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ড্রোনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। রাষ্ট্র থেকে প্রত্যেক নাগরিকের চক্ষু পরীক্ষা করা হয়। রুয়ান্ডা জরায়ুর ক্যান্সার নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হতে চলেছে। জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা রুয়ান্ডা এয়ার আফ্রিকার সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রুয়ান্ডাকে ইতিমধ্যে আফ্রিকার সিঙ্গাপুর বলা হয়। অথচ ভূবেষ্টিত এ রাষ্ট্রটির জনসংখ্যা যেমন কম, আয়তনেও তেমন ছোট। খুব বেশি যে খনিজ সম্পদ আছে তাও না।

দেশটিতে জার্মান ও বেলজিয়ামের উপনিবেশ ছিল। ১৯৬২ সালে দেশটি স্বাধীন হয়। ১৯৯৪ সালে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ৭০ লক্ষ। এর মধ্যে ৮৫% ছিল হুতু, ১৪% তুতসি এবং ১% তোয়া জনগোষ্ঠী।

বিভীষিকার কাল।

হুতু ও তুতসি জনগোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা কঠিন। তারা একই ভাষায় কথা বলে। দীর্ঘদিন একই সঙ্গে বসবাস করে আসছে। ১৮৮৪ সালে তুতসি রাজার কাছ থেকে জার্মানি রুয়ান্ডার ক্ষমতা কেড়ে নেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৬ সালে জার্মানির কাছ থেকে বেলজিয়াম রুয়ান্ডার শাসন বুঝে নেয়। ক্ষমতা পেয়ে তারা ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসিতে এগোতে থাকে। ১৯২০ সালে তারা প্রতিটি নাগরিকের শারীরিক বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করে হুতু ও তুতসিতে পৃথক করে। প্রত্যেক নাগরিককে পরিচয়পত্র প্রদান করে। যে মানুষগুলো জানতই না তারা কোন জনগোষ্ঠীর, ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো তাদের তা ডেকে এনে জানিয়ে দেয়।

দুটি গোষ্ঠীর সর্দারদের উদ্বুদ্ধ করে এক গোষ্ঠী থেকে আর-এক গোষ্ঠীকে শ্রেষ্ঠতর ভাবতে। বিশেষ শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে তাদের আলাদা করে প্রত্যেককে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। বেলজিয়ামের শাসকগোষ্ঠী সংখ্যালঘিষ্ঠ তুতসিদের কাছে টেনে নেয়। তাদের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সুবিধা দিয়ে এগিয়ে যেতে সুযোগ করে দেয়। তুতসিরা তাতে ভাবতে শুরু করে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হুতুদের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর।

আশ্রয়ের খোঁজে।

১৯৬২ সালে রুয়ান্ডার প্রথম জাতীয় নির্বাচনে হুতুরা ক্ষমতায় আসে। গ্রেগরি কায়িবান্দা প্রেসিডেন্ট হন। রুয়ান্ডা স্বাধীন হয়। ১৯৭৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কায়িবান্দাকে হটিয়ে তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবক মিলিটারি অফিসার জুভেনাল হাবায়ারিমানা ক্ষমতায় আসেন। অনির্বাচিত সরকার সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে জাতিগত বিদ্বেষকে কাজে লাগাতে শুরু করে। তখন থেকে হুতু-তুতসি দাঙ্গা শুরু হয়।
অনেক তুতসি দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নেন।

১৯৯০ সালে রুয়ান্ডান পেট্রিয়াটিক ফ্রন্ট বা আরপিএফ নামে একটি বিদ্রোহী বাহিনীর আবির্ভাব ঘটে। এটি মূলত নির্বাসিত তুতসি যুবকদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল। তারা উগান্ডা থেকে রুয়ান্ডার সরকারি বাহিনীর ওপর আক্রমণ শুরু করেন। ১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট হাবায়ারিমানার সঙ্গে আরপিএফ-এর সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়। কিন্তু এই শান্তিচুক্তি রুয়ান্ডায় শান্তি বয়ে আনেনি। দুই পক্ষেই এই শান্তিচুক্তির বিরোধীদের তৎপরতা শুরু হয়।

প্লাস্টিক ব্যাগ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

১৯৯৪ সালে ৬ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট হাবায়ারিমারাকে বহনকারী বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। সেখানেই প্রেসিডেন্ট মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু কারা এই কাজটি করেছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে হুতু উগ্রবাদীরা এই পুরো সুযোগটা নেয়। দুঃখজনকভাবে সরকারি রেডিও থেকে প্রতিবেশী তুতসিদের হত্যা করার আহ্বান জানানো হয়। সরকারই পুরো হত্যাযজ্ঞকে উৎসাহিত করে। এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী রুয়ান্ডায় নিযুক্ত হয়। তারাও নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। রুয়ান্ডায় ২৬০ জন শান্তিরক্ষী নিহত হন।

এত মৃত্যুর পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অধিক শান্তিরক্ষী নিয়োগে গড়িমসি করে। পরের বছর যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিল কিল্টন স্বীকার করেন রুয়ান্ডায় তারা সঠিক ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত রুয়ান্ডা জুড়ে অরাজকতা ছিল। কোনও সরকারের অস্তিত্ব ছিল না।

এখন আফ্রিকার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ।

জুলাই মাসে আরপিএফ দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে তারা পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। হুতু বিজিমুঙ্গুকে প্রেসিডেন্ট ও তুতসি আরপিএফ-এর কমান্ডার পল কাগামেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করা হয়। আরপিএফ-এর সাফল্য দেখে পালিয়ে যাওয়া তুতসিরা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ফিরতে শুরু করেন। আরপিএফ আবার জাতীয় পুনর্মিলন ও ন্যায়বিচার শুরু করে। রুয়ান্ডার গ্রামে গ্রামে একসময় গাকাকা নামের গ্রাম্য আদালত ছিল। সেটা আবার চালু করা হয়। যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনাল ফর রুয়ান্ডা (আইসিটিআর) প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২০০০ সালে পাস্তুর বিজিমুঙ্গু পদত্যাগের পল কাগামে প্রেসিডেন্ট হন। কাগামে পরবর্তীকালে ২০০৩ এবং ২০১০ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই নির্বাচনগুলিকে ‘রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং বাক-স্বাধীনতার ওপর আঘাত’ বলে সমালোচনা করেছে। রুয়ান্ডার সংবিধানের ১০১নং অনুচ্ছেদ পূর্বে কেউ দুবারের অধিক রাষ্ট্রপতি হতে পারতেন না। কিন্তু ২০১৫-র গণভোটে তার পরিবর্তন করা হয়। সংবিধানের এই পরিবর্তনের মাধ্যমে, কাগামে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে বহাল থাকতে পারবেন। কাগামে ২০১৭ সালে ৯৮.৭৯% ভোট নিয়ে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।

এখন রুয়ান্ডাকে বলা হয় আফ্রিকার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ। আফ্রিকার অন্যতম ‘ফার্স্ট গ্রোয়িং কান্ট্রি’-র খেতাব দেওয়া হয়েছে রুয়ান্ডাকে। রুয়ান্ডা কীভাবে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ হল তার বিবরণ দেব এখানে।

প্রেসিডেন্ট পল কাগামে।

২০০০ সাল থেকে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আছেন পল কাগামে। উনি প্রতি মাসের শেষ শনিবার সারা দেশব্যাপী একটি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। একে কিনিয়ারওয়ান্ডা ভাষায় উমুগান্ডা বলে। যার অর্থ, সাধারণ কোনও উদ্দেশ্যে একত্রিত হওয়া। মাসের এই এক শনিবার রুয়ান্ডার সর্বস্তরের মানুষ নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার করতে নামেন। এমনকি রাষ্ট্রপতি নিজেও এ কাজে হাত দেন। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী সকল নাগরিকের এই কাজে অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়া প্রতি পরিবারকে মাসে দুই হাজার ও কোম্পানিকে ১০ হাজার স্থানীয় মুদ্রায় কর দিতে হয় পরিচ্ছন্নতার জন্য। একে পাবলিক ক্লিনিং ট্যাক্স বলা হয়।

২০০৮ সাল থেকে রুয়ান্ডায় প্লাস্টিক ব্যাগ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। রুয়ান্ডানরা কাগজ, কাপড়, কলার পাতা এবং প্যাপিরাস সহ অন্যান্য জৈব-অপচনযোগ্য উৎস থেকে তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করেন। রুয়ান্ডায় ব্যাপক বনায়ন হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে দেশটির ৩৫ শতাংশ ভূমি বনে আচ্ছাদিত করা হবে।

চিত্র: গুগল
5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »
দীপক সাহা

বন্দুকের মুখে দাঁড়িয়ে ইতিহাসকে লেন্সবন্দি করেছেন সাইদা খানম

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে উপমহাদেশের বিখ্যাত প্রায় সকল ব্যক্তিত্ব— ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, ইন্দিরা গান্ধী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানী, বেগম সুফিয়া কামাল, মৈত্রেয়ী দেবী, মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, আশাপূর্ণা দেবী, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কণিকা বন্দোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়— কার ছবি তোলেননি! সেই সঙ্গে রানি এলিজাবেথ, মাদার টেরেসা, মার্শাল টিটো, অড্রে হেপবার্নের মতো বিখ্যাত মানুষদের ছবিও তুলেছেন। এই বিশাল তালিকায় আরও তিনটি নাম যুক্ত করে না দিলে অন্যায় হবে। চন্দ্রবিজয়ী নিল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিনস, মাইকেল কলিন্সের ছবিও তুলেছেন তিনি।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

মামলায় জয়ী হয়ে থোড় কুঁচি দিয়ে কালীর আরাধনা করেন জমিদার-গিন্নি

দেবী কালিকার খড়ের মেড় দেখে মজুমদার গিন্নি দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, মামলার রায় যদি তাঁদের পক্ষে যায় তাহলে কলাগাছের থোড় কুঁচো দিয়ে হলেও জগজ্জননী মা মহাকালীর পুজো করা হবে, আর যদি মামলার রায় তাঁদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে ওই খড়ের মেড় দামোদরের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। যদিও সেদিন দুপুরের মধ্যেই আদালত থেকে মজুমদার জমিদার পক্ষের জয়লাভের খবর পৌঁছেছিল থলিয়ার মজুমদার বাড়িতে। মজুমদার-গিন্নিও অক্ষরে অক্ষরে তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। মামলায় জয়লাভের খবর পাওয়া মাত্রই জমিদার-গিন্নির নির্দেশে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দীপাবলি উৎসবের আয়োজন শুরু হয়ে যায়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বরিশাল শ্মশান-দীপালি

সমগ্র উপমহাদেশে বরিশাল শ্মশান একটি বিশেষ কারণে অনন্য। এই শ্মশানের বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিবছর কার্তিকী অমাবস্যায়, (যাকে শাস্ত্রে ‘অশ্বযুজা’ মাস বলে) সেখানকার এই শ্মশানে যে কালীপুজো হয়, সেখানকার পুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশীর রাতে লক্ষ লোকের সমাবেশ হয়। উদ্দেশ্য, ওখানে যাঁদের দাহ করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। সমগ্র শ্মশান জুড়ে কয়েক হাজার মঠ বা স্মৃতিসৌধ আছে, মুসলমানদের যেমন আছে বনানী বা অন্য বহু গোরস্তানে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বৌদ্ধসম্প্রদায়ের প্রবারণা ও কঠিন চীবরদান উৎসব

বিশ্বের বহু দেশেই এই উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হয়। স্পেন ও ফ্রান্স-সহ ইয়োরোপীয় দেশে চীনা, জাপানি, বাঙালি বৌদ্ধরা পালন করেন যেমন, তেমনই বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি থেকে কুয়াকাটা-কলাপাড়া এই উৎসবে মেতে ওঠে। ইওরোপীয়দের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকবছর আগে দালাই লামা যেবার শিলিগুড়িতে তাঁর বার্ষিক অনুষ্ঠান করলেন, সেবার প্যারিস থেকে আগত বেশ কিছু ফরাসির সঙ্গে আলাপ হয়, যাঁরা বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত। তাঁদের কাছেই শুনেছিলাম, ফ্রান্সে বহু মানুষ বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নিচ্ছেন।

Read More »
শায়ক মুখোপাধ্যায়

শায়ক মুখোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

যাদের কাছে আজকে তুমি পৌঁছে গেছ,/ সবাই কিন্তু আয়নার মতো এখানে/ এখনও পুরো ফিরে আসতে পারেনি;// আয়না হয়ে কেউ আবার ফেরে নাকি!/ হয়তো কেউ কেউ বা কাছে ফিরে আসে;// সূর্যের রং হরিদ্রাভ কুসুম আলো/ শেষ আশ্রয় হৃদয়শূন্য হয়ে গেলে,/ যারা তবুও মনে করে রক্তের গন্ধ/ আজ শিরায় শিরায় নতুন যাদের/ ফিরে আসা এখানে অথবা যেখানেই দূরে হোক,// সে সবের প্রয়োজন সমস্তটাই ফুরিয়ে গেছে।

Read More »