রস
জ্যৈষ্ঠ গেল। বরষায় কাঁঠালের পিঁড়ি
আম্ররস আচ্ছাদিত। চারিধার ঘিরি
আসিল আষাঢ় মেঘ। মৃদুমন্দ ম’ ম’
বাতাসে আমের গন্ধ। নমো, বঙ্গ নমো!
কত বর্ষ ভজি নাই আহা বঙ্গ নাম
মজিনি কীর্তন ঢপে!… শোভাবিষ্ট গ্রাম
উঠোনে রসালো আমসত্ত্ব, রজো, তমো—
ত্রৈগুণ্যবিষয়া অঙ্গ… নমো, বঙ্গ নমো।
আষাঢ়, শ্রাবণ… ক্রমে ভাদ্র মাস গতে
লেপন করিয়া নিত্য পরতে পরতে
পুতের বাৎসল্য আর পতির শৃঙ্গার
সর্ব রসে রসনার স্বর্ণবর্ণ সার।
অন্ততত্ত্ব, বিশ্ব কয়, নাহি যার সম
বধূর মধুর রস, বঙ্গ নারী নমো।
*
কানাড়া
তালবৃক্ষে হাঁড়ি বান্ধা। রাত দু’পহর।
মধুমাস। সুবাতাস। পটোর পটোর
পাতা দোলে। খড়ো ঘর। আঙিনায় কারা
জোছনায় গান গায় চাঁদিনী কানাড়া—
পা-নাই, গা-নাই ঊর্ধ্বে ধামার আকার
মেঘ জমে কাঁড়ি কাঁড়ি রাঢ়ী কানাড়ার
নিঝুম বীরভূমবৃত্ত ঘুমের ভিতর
ফেলে শ্বাস। ভাদ্র মাস পটোর পটোর
পাতা নড়ে, তাল পড়ে সমে ঘুরে ঘুরে
আলোড়িত-অন্ধকার অতল পুকুরে
ঢেউয়ের রহস্য তার তালে তালে কারা
বরষায় গান গায়… হাঁড়িয়া কানাড়া
বাদিত্র সর্পের শিস— রস-শ্রেষ্ঠ ইহা
দেহ নাশে শিঙ্গা বিধি, সানাইয়েতে বিহা।