দুপুরের রেলস্টেশন
দুপুরে তোমার বাড়ির পাশ থেকে এক সরোদবাদক কৈশোরের ছায়া ফেলে এগিয়ে যায়
কেউ তার পরিচয় জানে না
কোনও এক পুরনো রেলস্টেশন পেরিয়ে তার অদ্ভুত বাড়ি
বাড়ির ভিতরে ছোট ঘর
তোমার নিবিড় ছায়ায় সে ঘরে শান্তি লেগে আছে
দুপুরে আমার করার তেমন কিছু নেই
তোমার বাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকি
দেখি কীভাবে একজন মানুষ সমস্ত ক্ষত মেরামতের মেশিন নিয়ে এই রাস্তা ধরেই সোজা এগিয়ে চলে
একজন কিশোর সরোদবাদক সবার জীবনে গান সৃষ্টি করে
কোনও অজানা রেলস্টেশনে হারিয়ে যায়।
ভুলে গেছি
কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না
একটি জীবন থেকে আরও বড় জীবনের
মাঝে চলে যাওয়া
তোমাকে কতদূর এগিয়ে নিয়ে গেলে
বাড়ি ফিরে যেতে পারবে?
যদি কখনও পিছনে ফিরে তাকাও
মিথ্যে নয় প্রভুর হাত ধরে যে কিশোর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে
তাকে কোথাও একটা আশ্রয় দিতে হয়।
ঘর
তোমার কথা বলতে গেলে আরও শান্ত হয়ে যায় বেদনা
মানুষের এত বেশি আনন্দের ভিতরে কিছু অদ্ভুত দুঃখ থাকা ভাল
বিকেলে ছাদের উপরে লেবু গাছ জড়িয়ে থাকে গোটা শীতকাল
আমাদের দেবতার মন্দিরে পুজো শেষ হয়
বেরিয়ে আসে কিশোর পুরোহিত
যারা নিঃশব্দে চলে যাওয়ার কথা বলে
তাদের অনেক ভিতরে তোমার শরীর খুঁজে দেখি
কেউ একজন ঝুঁকে রয়েছে
ঠান্ডা হাওয়ায় দেবতার চাতালে বসে আছি
ঘুম ভেঙে আবার তোমার কথা বলতে গেলে শান্ত হয়ে যায় সমস্ত ঘর।
ডিসেম্বর
ডিসেম্বর মাসে কবিতা লেখার গতিপথ বদলে যায়
যে কোনও মানুষ তোমার পাশে এসে বসে থাকে
দু-চার মিনিট গল্প করে
যারা নদীর কোনও নির্দিষ্ট নাম নেই বলে
তাদের জন্য শোক পালন করা উচিত
আমাদের বাড়ির কুকুরের রং বদলায়
তুমি চুড়িদারের বদলে শাড়ি পরেছ
ডিসেম্বর মাসে সব বদলে যেতে থাকে
একা একাই অনেক দূরে হেঁটে চলে যায় দুপুরের না ফেরা ঘুম।
বেহাগ
বাড়ির ভিতরে একটা অর্ধেক শীতকাল দাঁড়িয়ে আছে
মৃত্যু কিছু সময় নিয়ে ফিরে যায়
তোমার ভিতরে বেহাগের সুরের মত অস্থির অথচ নির্মল সুর ধরে হেঁটে গেছে একটি হারিয়ে যাওয়া মানুষের চলচ্চিত্র।