Search
Generic filters
Search
Generic filters
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯২১ সালের অক্টোবরে (মতান্তরে, ১৯২৩) অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলায়। কিশোর বয়স থেকেই ঝোঁক ছিল সাহিত্যে, আর আর্তের সেবায়। সেই সময় কলেরা, বসন্ত রোগে গ্রামে মড়ক দেখা দিত। সংক্রমণের ভয়ে সকলে রোগীকে এড়িয়ে চলত। কিশোর বয়সে, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে দল বানিয়ে রোগাক্রান্ত মানুষের সেবাশুশ্রূষায় নেমে পড়তেন নন্দদুলাল। সেই ছেলের দল গ্রামে তৈরি করল লাইব্রেরি, জঙ্গল সাফ করে ক্লাব। ম্যাট্রিকুলেশনের পর দৌলতপুর কলেজে পড়ার সময় ‘প্রেরণা’ নামে একটা হাতেলেখা পত্রিকা প্রকাশ করতেন তিনি। তাতে নিয়মিত লিখতেন। কলেজে পড়ার সময় থেকে সক্রিয় রাজনীতিরও শুরু, প্রথমে স্বদেশী আন্দোলন, পরে বিপ্লবীদলের সান্নিধ্যে আসা। রাজনৈতিক সক্রিয়তা কর্মজীবনেও অক্ষুণ্ণ ছিল। ১৯৪২ সালে প্রথম বিভাগে আইএ পাশ করেন, আর তারপর থেকেই জীবিকার সন্ধান শুরু। তিনি জীবনে অনেকবার পেশা পরিবর্তন করেছেন। পালটে পালটে গেছে বাসস্থান। অবশেষে কলকাতার বাগবাজারে বাসাবাড়িতে থিতু হন, আরও পরে দমদম ক্যান্টনমেন্টে নিজে বাড়ি করে চলে আসেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন অনেক পরে। জীবিকা সন্ধানের তাড়না, পারিবারিক উত্থানপতনের অভিঘাতে সাহিত্যচর্চা বিশেষভাবে ব্যাহত হয়। প্রকাশিত-অপ্রকাশিত অনেক লেখা হারিয়ে যায়। মাঝে ‘আগডুম বাগডুম’ (পরে নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘সিমফনি’) নামে একটি ছোট পত্রিকায় অল্প কিছুদিন লিখেছিলেন। অশীতিপর জীবনের ইতি হয় ২০০৫ সালের মে মাসে। মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছানুসারে মরদেহ চিকিৎসাশাস্ত্রের উন্নতিকল্পে দান করা হয় মেডিক্যাল কলেজে। তাঁর কিছু অপ্রকাশিত রচনার পাণ্ডুলিপি পরিবারের কাছে সংরক্ষিত আছে। ‘কল্পডোম’ ছোটগল্পটি সেগুলির মধ্যে একমাত্র কল্পবিজ্ঞান কাহিনি। পাণ্ডুলিপিতে উল্লিখিত তারিখ অনুসারে গল্পটি ১৯৯৯ সালে রচিত।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »

ছোটগল্প: জমির বিষ

বিষয় মানেই বিষ। তালুকেরও হুল ছিল। বছরে দু’বার খাজনা দিতে হতো। আশ্বিন মাসে দুশ’ টাকা আর চত্তির মাসে শেষ কিস্তি আরো দুশ’ টাকা। এই চারশ’ টাকা খাজনার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। সে বছর বাবার ভীষণ অসুখ। বাতে একদম পঙ্গু, শয্যাশায়ী। অসুস্থ হয়ে জমিদারের ছুটি মিলল। কিন্তু খাজনা জমা দেবার ছুটি ছিল না। চত্তির মাসের শেষ তারিখে টাকা জমা না পড়লেই সম্পত্তি নিলাম হয়ে যেত।

Read More »

ছোটগল্প : ললাট লিপি

ইঞ্জিন থামতেই ড্রাইভার ঝাঁপিয়ে পড়ল, ছুটে গিয়ে ইঞ্জিনের নীচে থেকে পিণ্ডাকার দেহকাণ্ড বুকে করে বের করে আনল। মৃতদেহ লাইনের পাশে শুইয়ে দিয়ে সহকারীকে বলল “তুমি গাড়ি নিয়ে যাও, আমি আর যেতে পারব না।”

Read More »

অপ্রকাশিত রচনা : নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়ের গল্প

ভালভাষা উৎসব সংখ্যা ২০২৩। ‘‘ফাঁকা ছাত খাঁ খাঁ করছে। রাস্তার আলোর প্রতিভাসে আবছায়া ছাত যেন ভয় দেখাচ্ছে। কতক্ষণ আর বৃথা ঘোরাঘুরি করা যায়। আবার ক্লান্তপদে নেমে এলেন দোতলায়। খানিকটা এঘর ওঘর করে উৎকণ্ঠায় অবসন্ন দেহ এলিয়ে দিলেন চেয়ারে। উদ্বেগ উৎকণ্ঠা চরমে উঠে ক্রমে তাকে গ্রাস করল এক পরম নির্লিপ্তিতে।’’ নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্প।

Read More »

ছোটগল্প: কল্পডোম

India’s First Bengali Daily Journal. যা জিদ্দি তাই সিদ্ধি। ভোরেই বেরিয়ে পড়া গেল, কিন্তু কে বেরিয়ে পড়ল! আমাকে তো কোন চেষ্টাই করতে হচ্ছে না— আমি তো পথ চলছি না, পদক্ষেপ করছি না, যেন ভেসে যাচ্ছি পথের ওপর দিয়ে, সে পথ জঙ্গলের ওপর দিয়ে, জলের ওপর দিয়ে পাহাড়পর্বতের ওপর দিয়ে তরতর করে বয়ে চলেছে আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে। বন আমাকে ডাকছে আয়, আয়। পর্বত আমাকে সাদর অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। আমাকে কোন আয়াস করতে হচ্ছে না, আপনা থেকেই এগিয়ে যাচ্ছি। যাচ্ছি, যাচ্ছি, কত কাল ধরে চলে চলে শেষ পর্যন্ত এক শহরে গিয়ে হাজির।

Read More »