Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ছোটগল্প: জমির বিষ

আরে, যা, যা, তোরা ভারি জমি দেখাস। ভারি সাড়ে তিন কাঠার ফুটুনি।

হ্যাঁ, আমার বাবারও তালুক ছিল। হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমিও তালুকদারের বেটা। শুনতে চাস তবে শোন বলি।

গ্রামের নাম ভাতুড়িয়া। সবাই বলত ভাতুড়ে। আর দুষ্টু লোকে কেচ্ছা করত, বলত ভূতুড়ে।

বাবা ছিলেন জমিদারের নায়েব। সে ভারি জমিদার। উপাধি ছিল রাজা। গ্রামে ছিল এক জোতদার– তারাও এক রায়। তাদের বাড়িকে গ্রামের লোকে বলত রায়বাড়ি। মরার আগে রায়মশায় তার মেয়ের বিয়ে দিয়ে এক ঘরজামাই জোটালেন– ভূপতি চাটুজ্যে। আশা তিনি গত হলে সম্পত্তি আর নাবালক ছেলেটিকে মানুষ করবে।

ভূপতি চাটুজ্যে ছিলেন পয়লা নম্বর উড়নচণ্ডী। শ্বশুর বেঁচে থাকতে তাকে গ্রামে তবু দেখা যেত। তিনি গত হলে ভূপতির পাত্তা করে কে?
লক্ষ্মীর আঁচল খুলে দু’চার টাকা যা জুটত তাই নিয়েই তিনি বেপাত্তা।

দেড়-দু’মাস বাদে ভূপতি ফিরলেন। তার আড্ডা ছিল আমাদের বাড়ি। আমরা ছোটরা তাকে ঘিরে জ্বালাতন করতাম– “পিসেমশাই গল্প বলো।” দেশ ঘোরার কল্যাণে গল্পের ভাঁড়ার তার সবসময়েই ভর্তি।

তার গল্পগুলো ছিল বেশ মজার। হাতে যা পয়সা নিয়ে বেরিয়েছিলেন সে তো দশ-পনের দিনেই খতম। বাকি দেড়-দু’মাস চলত তার মাধুকরী। সবই যে আপসে মিলত, তা নয়। তবে যতক্ষণ সম্ভব সে গ্রামমুখো হতো না। এর গাছের নারকেল, ওর বাড়ির চিঁড়ে, কারো বাড়ির গুড়মুড়ি, কোথাওবা প্রসাদান্ন বিতরণে তার কোন খামতি ছিল না।

বাবা ছিলেন নায়েব। বোলবোলাও ছিল খানিকটা। ফলে আমাদের বাড়িতে সবসময়ই একটা বৈঠক জমে থাকত। এক সকালবেলায় একপাশে বসে আমি পড়ছি। ঘরের অন্যপাশে চলছে তাসের আসর। এমন সময় “ভূপতি ঠাউর! ভূপতি ঠাউর!” ঘরের মধ্যে থেকে কে বলল– “এ বাড়িতে নয় এগিয়ে রায়বাড়িতে যাও।”

গজগজ করতে করতে বেজায় চটে “শালা, বাউনের গুষ্টির তুষ্টি করি। আজ যদি টাকা না দেয় ও চোরের ব্যাটার ঘর জ্বালিয়ে দেব।” বাবা চান করতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ লোকটির আস্ফালনে থমকে গিয়ে বললেন– “এই, এদিকে এস, এদিকে এস বলছি।”

লোকটি গজগজ করে লাল চোখ পাকিয়ে চিৎকার করে বলল, “ওঃ! একেবারে নবাব খান জাখান।”

ততক্ষণে বাবার ইঙ্গিতে জনাচারেক ছুটে গেছে, গিয়ে তাকে পাকড়েছে। তবু তার আস্ফালন থামে না। ভোর থেকে কড়া রোদ্দুর ভেঙে এই চোদ্দ ক্রোশ রাস্তা ঠেঙিয়ে তার মেজাজ এমনিই ছিল সপ্তমে। তারপর আবার কাফেরদের জুলুম! তার নবাবি মেজাজ খিঁচড়ে গেল, মুখে খিস্তির বন্যা আর হাত-পা ছোড়াছুড়ি– সে এক বিপর্যয়কর ব্যাপার।

যাই হোক চার জনে জোর করে তাকে টানতে টানতে নিয়ে এল। বাবা অনন্তকে বললেন, “গোয়াল থেকে একগাছা দড়ি নিয়ে আয় তো। ব্যাটাকে বাঁধ ঐ খুঁটির সাথে।” যথারীতি পিঠমোড়া করে খুঁটির সঙ্গে তার হাত পা বাঁধা হলো।

বাবা বললেন, “তুমি কেমন মানুষ? গ্রামের মধ্যে ঢুকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তুমি শাসাও, লোকের ঘরে আগুন দেবে।”

এতক্ষণে লোকটার অবস্থাটা মালুম হয়েছে। হাউমাউ করে সে বলল, “বাবু আমার কি কসুর? আজ তিন মাস হলো আমার কাছ থেকে চোদ্দটা টাকা নিয়ে এসেছে। বলেছিল, পরের হপ্তায় দিয়ে দেবে। মাঝে হাটেবাজারে দেখা হলেই বলেছে, ‘ওহো, তোমার টাকাটা তো দেওয়া হয়নি, দিয়ে আসব, দিয়ে আসব।’ আমার ঘরে আজ একদানা চাল নেই। টাকার জোগাড় না হলে বালবাচ্চা নিয়ে উপোষ যাব।”

বাবার কি মনে হলো, বললেন– “ওরে, ওর বাঁধন খুলে দে। ঘাটে গিয়ে হাত-পা-মুখ ধুয়ে আসুক। ওরে পানু, দেখ তো ভেতরে জিজ্ঞেস করে, ওকে কি খেতে দেওয়া যায়।”

বাবা চান করতে গেলেন। ইতিমধ্যে বারান্দায় জায়গা করে একটা সানকিতে করে মা চিঁড়ে, দুধ, আম আর গুড় তাকে দিয়েছেন। লোকটা খাবারের দিকে তাকিয়ে গুম হয়ে বসে আছে।

বাবা চান করে এসে ওকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বললেন– “খেয়ে নাও কত্তা, না খেয়ে কারো তো কোন উপকার হবে না।” লোকটার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে জল ঝরে পড়ল, “দাদা, আমি কেমন করে খাই, আমার বুড়িমা আর দুটো বাচ্চা আজ দু’দিন দাঁতে দানা কাটেনি।” বাবা বললেন – “তুমি খেয়ে নাও। এত পথ ফিরে যেতে তোমার তো পরিশ্রম হবে। রাস্তায় ঘুরে পড়ে গেলে কার কি উপকার? এসে যখন পড়েছ বালবাচ্চার একটা ব্যবস্থা তো হবেই।” খুব অনিচ্ছার সঙ্গে লোকটা খাবারে হাত দিল।

এমন সময় গণশা ভেতর থেকে এসে বলল– “বাবা, বাবা, পিসেমশাই ঠাকুমার কাছে খাবার খাচ্ছে।” বাবা বললেন– “ওকে অপেক্ষা করতে বলিস, আমি খেয়ে আসি। যেন চলে না যায়।” ততক্ষণে আক্কাজের খাওয়া শেষ হয়েছে। বাবা তাকে বললেন– “ভাই তুমি একটু বিশ্রাম করো। আমি খেয়ে এসে ব্যবস্থা করছি।”

আক্কাজের পেটটা ঠাণ্ডা হয়েছে বটে। কিন্তু তার মনটা হু হু করছে।

বাবা কাছারি যাবার সময় তাকে পনেরটা টাকা আর একটা জালিতে করে কুড়িখানি আম দিয়ে বললেন– “আস্তে আস্তে বাড়ি যাও ভাই। মেপেজুপে খরচ কোরো।”

আক্কাজ সেলাম করে আল্লার দোয়া জানিয়ে আস্তে আস্তে চলে গেল।

সেইদিন সন্ধেবেলায় আসরে বাবা বললেন– “ভূপতি, এমনি করে কি চলবে? তোমার নামে আমি পনের টাকা ধার লিখে রাখলাম।”

এই হলো শুরু। বছর তিনেকের মধ্যেই ভূপতি মহানন্দে দেনা করে চলল।

বছর পাঁচেক বাদে বাবা একদিন ডেকে বললেন– “ভূপতি ভূষণ, মেঘে মেঘে বেলা অনেক হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত তোমার দেনা দাঁড়িয়েছে আটশ’ পঁয়ষট্টি টাকা। শোধ দেবার ক্ষমতাও তোমার নেই, ইচ্ছেও আছে কিনা সন্দেহ!”

ভূপতি ভূষণ অম্লান বদনে হেসে বলল– “ভাববেন না মেজদা, ও তো আমি ঠিক করেই রেখেছি। আপনি এক কাজ করুন। কাগজপত্র তৈরি করে ওই তালুকটা আপনার নামে করে নিন।”

তালুক! বাবারে, সে কি বিরাট! বাড়ি থেকে পোয়াটাক দক্ষিণে এক বিরাট জলা, নাম হন্যের বিল। আড়াইশ’ বিঘের এক জোত। তারমধ্যে শ’দেড়েক বিঘে সারা বছরই জলে ডুবে থাকে। ফসল হয় একটা। চোত-বোশেখ মাসে যখন জল সবচাইতে কম, সেই সময় ধান ছড়ানো হয়। জলের মধ্যেই ধানের চারা বেরোয়। ডগাটুকু জলের ওপর বেরিয়ে থাকে। চারাগুলো খুবই বাড়ে। যত জল হয় সকালে গিয়ে দেখো ডগাটুকু ঠিকই বেরিয়ে আছে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে যখন ধান পাকে তখন নৌকো করে ঐ ধানের ছড়াগুলোকে কেটে আনা হয়। লম্বা গাছ জলের মধ্যেই পচে মাটিতে মেশে।

বাকি শতখানেক বিঘে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমি। সেখানে খারিফ ফসল চাষ হতো। মুগ্, মুসুরি, মটর, ছোলা, সর্ষে, তিল ইত্যাদি।

কিছু জমি ছিল রায়তি। আধাআধি বখরা।

এই সেই তালুক। আর আমি তালুকদারের বেটা।

বিষয় মানেই বিষ। তালুকেরও হুল ছিল। বছরে দু’বার খাজনা দিতে হতো। আশ্বিন মাসে দুশ’ টাকা আর চত্তির মাসে শেষ কিস্তি আরো দুশ’ টাকা। এই চারশ’ টাকা খাজনার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। সে বছর বাবার ভীষণ অসুখ। বাতে একদম পঙ্গু, শয্যাশায়ী। অসুস্থ হয়ে জমিদারের ছুটি মিলল। কিন্তু খাজনা জমা দেবার ছুটি ছিল না। চত্তির মাসের শেষ তারিখে টাকা জমা না পড়লেই সম্পত্তি নিলাম হয়ে যেত। বাবা চলৎশক্তিহীন। তিনি ধরলেন তার মামাতো ভাই, সহকর্মীও, ন’কাকাকে। তিনি যখন দপ্তরে যান তাকে ডেকে তার হাতদুটো ধরে বললেন– “দাদা, আমি তো নড়তে পারিনে। এই দুশ’ টাকা নাও। আমার নামে কাছারিতে জমা করে দিও। ভুলে যেও না বিকেলের মধ্যে জমা না পড়লে তালুক নিলাম হয়ে যাবে।”

রাতে তার খোঁজ করে পাত্তা পাওয়া গেল না। শুধু সেই রাতেই নয়, তারপর থেকে সে পালিয়ে বেড়ায়, মুখও দেখায় না। বাবা এদিকে খবর পেয়েছেন ঐ দিনই ন’কাকা বাবার টাকাতেই নিজের নামে তালুক নিলামে কিনে নিয়েছে।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বছরখানেক লড়ে তবে ঐ তালুকের নিলাম রদ হয়। খরচখরচা এবং ফলনের দরুণ ক্ষতিপূরণ আদায় হয়।

তাই বলছিলাম বিষয় বিষ। সবার সয় না। সে তালুক ছিল, প্রজা, ফসল সবই ছিল। খোয়া গেল দেশভাগের ফলে।

শুনলি তো, আমি ছিলাম তালুকদারের বেটা; তোদের মতো ছটাকী সফরী নয়।

[বানান অপরিবর্তিত]

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »