
ইংরেজি অনুবাদে দেবদাস আচার্যের কবিতা
মূল কবিতা শূন্যতা মেঘলা দিন, মুখভার দুপুর একটানা ফিসফিস্ বৃষ্টি সূর্য নেই আকাশও নেই আমিও যেন কিছু একটা নেই-এর মধ্যেই রয়েছি নেই নেই মনে হলে

মূল কবিতা শূন্যতা মেঘলা দিন, মুখভার দুপুর একটানা ফিসফিস্ বৃষ্টি সূর্য নেই আকাশও নেই আমিও যেন কিছু একটা নেই-এর মধ্যেই রয়েছি নেই নেই মনে হলে

ভালভাষা উৎসব সংখ্যা ২০২৩|| স্কুলে ঢুকেই বিষয়টা আমাদের অসহ্য লাগতে শুরু করেছিল। অন্যান্য ছেলেরা চোখমুখ বুজে নেমে পড়েছিল প্রতিযোগিতায়, শুধু আমরাই পারিনি। কেন পারিনি, তা খুঁজতে যাওয়া বৃথা। তবে মনে হয়, আমরা সকলেই কোনও না কোনওভাবে ছিলাম বিপন্ন। এই বিপন্নতা আমাদের প্রশ্ন করতে শিখিয়েছিল। লিখেছেন দীপ শেখর চক্রবর্তী।

India’s First Bengali Daily Magazine. আমাদের শেষ রেস্তোরাঁর দিন। টিউশন ব্যাচটা শেষ হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল। এরপর পাঁচজন কোথায় কোনদিকে ছিটকে চলে যাব ঠিক নেই। ইতিমধ্যে জয় এবং ডলির মধ্যে কোনও এক সেতুবন্ধন হয়েছে। দুজনেই এখন ঘৃণা করে আমাকে। এই ঘৃণার মাঝেও একদিন ডলির বুক ছুঁয়েছি আমি। একটি চিঠিও দিয়েছে ও আমাকে। যদিও এখন সেসব আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। বুঝি একজনের প্রতি ভিন্ন ঘৃণা, দুজনকে কাছে আনতে পারে।

India’s First Bengali Story Portal. জাদুবাস্তববাদী আন্দোলন কেবলমাত্র চিত্রশিল্পেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, ছড়িয়ে পড়েছে সাহিত্য, চলচ্চিত্রের মত শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে। ফ্রাঞ্জ রো সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা ইতালীয় লেখক মাসিমো বনটেমপ্লিকে প্রভাবিত করেছিল। যদিও তাঁর লেখা অনেকাংশেই পরাবাস্তব ঘেঁষা। আলেহো কারপেন্তিয়ার এবং আরতুরো উসলার পিয়েত্রির নাম এই বিষয়ে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। বিশ ও ত্রিশ দশকে ইউরোপে বসবাসকালে তাঁরা দুজনেই ইউরোপিয়ান শিল্প আন্দোলনগুলো দ্বারা প্রভাবিত হন। কারপেন্তিয়ার ইউরোপ থেকে কিউবা ফিরে, হাইতি ঘুরে এসে লাতিন আমেরিকান জাদুবাস্তবতার দিকে জোর দেন। কারপেন্তিয়ারকেই লাতিন আমেরিকার জাদুবাস্তবতার প্রবক্তা বলা হয়ে থাকে।

মনে হল সেই সকলের মাঝে গিয়ে বসি। তাদের শোকের মাঝে গিয়ে। আগুন জ্বালিয়ে কোনওক্রমে যা রান্না করেছেন তারা শুধু পেট ভরিয়ে রাখার জন্য, মনে হল গিয়ে খাই। হাতে লেগে থাকুক সেই এঁটো। বলি, সেই তেরো-চোদ্দো বছর বয়সী মেয়েটিকে, ‘কাল বাড়ি ফিরে যাচ্ছি, মেয়ে।’ বলা হল না। কাউকে কখনও বলা হয়ে ওঠে না বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা।

মৃত্যুর পর আকিরাকে একজন বলেছিলেন যে তাঁর দাদার মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত অন্ধকার। এই অন্ধকারই টেনে নিয়ে গেছিল তাঁকে মৃত্যুর দিকে। যদিও সবাক চলচ্চিত্র আসার পর নির্বাক চলচ্চিত্রের কথকদের কাজ হারানোকেই অনেকে দায়ী করেন। সারাজীবন ফুল এবং প্রকৃতির মধ্যে থাকা মোনে স্ত্রীর মৃত্যুশয্যার ছবি আঁকতে গিয়ে অন্ধকার চেয়েছিলেন। অথচ তাঁর শিল্পসত্তা সেই অন্ধকারের ওপর বুলিয়ে দিয়েছিল চমৎকার কুয়াশার মত আলো।

হৃদয়পুরের প্রেম না থাকলেও রোজ বিকেল করে আমি অশেষ মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সুন্দরী মেয়েদের দেখি। আমার চোখ তৈরি হয়ে গেছে। যার মধ্যে একটা আলাদা রহস্য আছে তার সঙ্গে যেচে পড়ে বন্ধুত্ব গড়ে নিই। তারপর ধীরে ধীরে তার গল্পগুলোকে বের করে নিই ভেতর থেকে। এই বের করে নেওয়ার পর একজন মেয়ের কী হয় সেই নিয়ে আমার বিশেষ মাথাব্যথা নেই। কারণ সেসব নিয়ে ভাবা একজন লেখকের জন্য দরকারি নয়।

আমি ও নিভা জেনে গেছি এই রহস্যটা। বুঝে গেছি দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্কটুকু। কাল দুপুরের ট্রেন, নামখানা লোকাল। প্রায় তিন ঘণ্টার পথ পেরিয়ে কলকাতা। তারপর নিজ নিজ বাড়ি। নিভার শরীরে আমার গন্ধটা ফিকে হয়ে যেতে হয়তো আড়াইটা দিন। তারপর একদিন হঠাৎ আমার শরীরের বিভিন্ন ছিদ্র থেকে বেরিয়ে আসবে লক্ষ লক্ষ লাল কাঁকড়ার দল আর দূরে কোথাও হিংস্র জন্তুটা উন্মাদের মত হেসে পাশ ফিরে শোবে।

নবান্ন। এটি কেবল একটি ঋতুভিত্তিক পার্বণ নয়; এটি সেই বৈদিক পূর্ব কাল থেকে ঐতিহ্যের নিরবচ্ছিন্ন ধারায় (যা প্রাচীন পুথি ও পাল আমলের লোক-আচারে চিত্রিত) এই সুবিস্তীর্ণ বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষের ‘অন্নময় ব্রহ্মের’ প্রতি নিবেদিত এক গভীর নান্দনিক অর্ঘ্য, যেখানে লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে শস্যের অধিষ্ঠাত্রী লোকদেবতার আহ্বানও লুকিয়ে থাকে। নবান্ন হল জীবন ও প্রকৃতির এক বিশাল মহাকাব্য, যা মানুষ, তার ধৈর্য, শ্রম এবং প্রকৃতির উদারতাকে এক মঞ্চে তুলে ধরে মানব-অস্তিত্বের শ্রম-মহিমা ঘোষণা করে।

বুদ্ধদেব বসুর অন্যতম অবদান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য (Comparative Literature) বিষয়টির প্রবর্তন। সারা ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়-মানে এ বিষয়ে পড়ানোর সূচনা তাঁর মাধ্যমেই হয়েছিল। এর ফল হয়েছিল সুদূরপ্রসারী। এর ফলে তিনি যে বেশ কয়েকজন সার্থক আন্তর্জাতিক সাহিত্যবোধসম্পন্ন সাহিত্যিক তৈরি করেছিলেন তা-ই নয়, বিশ্বসাহিত্যের বহু ধ্রুপদী রচনা বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে তাঁরা বাংলা অনুবাদসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। অনুবাদকদের মধ্যে কয়েকজন হলেন নবনীতা দেবসেন, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবীর রায়চৌধুরী প্রমুখ। এবং স্বয়ং বুদ্ধদেব।

দরজায় আটকানো কাগজটার থেকে চোখ সরিয়ে নিল বিজয়া। ওসব আইনের বুলি তার মুখস্থ। নতুন করে আর শেখার কিছু নেই। এরপর, লিফটের দিকে না গিয়ে সে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে উঠে বসল গাড়িতে। চোখের সামনে পরপর ভেসে উঠছে স্মৃতির জলছবি। নিজের সুখের ঘরের দুয়ারে দাঁড়িয়ে ‘ডিফল্ট ইএমআই’-এর নোটিস পড়তে মনের জোর চাই। অনেক কষ্ট করে সে দৃশ্য দেখে নিচে নেমে আসতে হল বিজয়াকে।

তালিবান। জঙ্গিগোষ্ঠী বলেই দুনিয়াজোড়া ডাক। আফগানিস্তানের ঊষর মরুভূমি, সশস্ত্র যোদ্ধা চলেছে হননের উদ্দেশ্যে। মানে, স্বাধীন হতে… দিনান্তে তাঁদের কেউ কেউ কবিতা লিখতেন। ২০১২ সালে লন্ডনের প্রকাশনা C. Hurst & Co Publishers Ltd প্রথম সংকলন প্রকাশ করে ‘Poetry of the Taliban’। সেই সম্ভার থেকে নির্বাচিত তিনটি কবিতার অনুবাদ।

দূর পাহাড়ের গায়ে ডানা মেলে/ বসে আছে একটুকরো মেঘ। বৈরাগী প্রজাপতি।/ সন্ন্যাস-মৌনতা ভেঙে যে পাহাড় একদিন/ অশ্রাব্য-মুখর হবে, ছল-কোলাহলে ভেসে যাবে তার/ ভার্জিন-ফুলগোছা, হয়তো বা কোনও খরস্রোতা/ শুকিয়ে শুকিয়ে হবে কাঠ,/ অনভিপ্রেত প্রত্যয়-অসদ্গতি!

আরও উপযুক্ত, আরও আরও সাশ্রয়ী, এসবের টানে প্রযুক্তি গবেষণা এগিয়ে চলে। সময়ের উদ্বর্তনে পুরনো সে-সব আলোর অনেকেই আজ আর নেই। নিয়ন আলো কিন্তু যাই যাই করে আজও পুরোপুরি যেতে পারেনি। এই এলইডি আলোর দাপটের সময়কালেও।