Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

ট্যাটুর আমি ট্যাটুর তুমি, উল্কির সাইড এফেক্ট-এ উঁকি

প্রেয়সীর মন ভোলাতে নিজের বুকের বাঁদিকে ট্যাটু আঁকিয়েছিলেন তরুণ। সেই ট্যাটুর রঙিন ছবির মধ্যে লেখান তরুণীর নামও। কিন্তু এত কাণ্ডের পর ভুল হয়ে যায় নামের বানানে। পরে ভুল বুঝতে পারলেও করার কিছু ছিল না। ট্যাটুর ‘সাইড এফেক্ট’ নিয়ে এই চালু রসিকতাটা বাজারে আছে। উল্কির বহুবর্ণ রঙের বহুবিধ এফেক্ট বা প্রভাবও রয়েছে। তাই শরীরে ‘পারমানেন্ট’ উল্কি আঁকানোর আগে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কেও জেনে নেওয়া উচিত। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্যাটু আপনার দেহে মারাত্মক সব প্রভাব ফেলতে পারে। যে সৌন্দর্যের কথা ভেবে শরীরের উল্কিকে আমন্ত্রণ, উল্কির প্রভাবে তা কুৎসিত হয়ে যেতে পারে। এমনকী ক্যানসারের ঝুঁকিও রয়েছে। উল্কি-র ‘সাইড এফেক্ট’ নিয়ে তাই ভেবে দেখার সময় এসেছে।

কী সেই সব ঝুঁকি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? প্রথমটি হচ্ছে স্কিন ইনফেকশন বা ত্বকের সংক্রমণ। উল্কি নামক দেহাঙ্কন শিল্পের পদ্ধতিই আপনার ত্বককে ক্ষতবিক্ষত করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপরের (এপিডার্মাল) এবং মাঝের (ডার্মাল) ত্বকের স্তর। এই দুই স্তরের মাঝখানেই নানা বর্ণের কালি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, বিশেষ ধরনের সুচ দিয়ে ত্বকে সূক্ষ্ম ছিদ্র বানিয়ে। রঙে সাধারণত ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই ভিন্ন ভিন্ন রঙে আপনার স্বাস্থ্যেরও ভিন্ন ভিন্ন ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে যখন সেই উল্কি করা অংশ সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে। সূর্যালোকের অতিবেগুনী রশ্মি আপনার ত্বকের বারোটা বাজাতে পারে। হতে পারে চুলকানি, অ্যালার্জি, কেলয়েড (ত্বকের ওপরে পিণ্ডের আকার) এবং ত্বকের ক্যানসারও।

সূর্যালোকে দুই ধরনের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি (আলট্রাভায়োলেট রে বা ইউভি) থাকে। একটি হল ইউভিএ এবং অন্যটি ইউভিবি। দীর্ঘ তরঙ্গের ইউভিএ রশ্মিগুলি ত্বকের সবচেয়ে পুরু স্তর ডার্মিসের গভীরে প্রবেশ করে। আর স্বল্প তরঙ্গের ইউভিবি রশ্মি সাধারণত ত্বকের পৃষ্ঠের স্তরকে পোড়ায়। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। তাই সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার আগে উল্কিকে এসপিএফে ঢেকে রাখার নিদান দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও যত্নের ওপর বিশেষ জোর দিতে বলছেন তারা। নইলে, সাধের উল্কি আপনার জীবন বিষময় করে তুলতে পারে। ট্যাটু করার আগে দশবার ভাববার পরামর্শ দিচ্ছেন তথ্যাভিজ্ঞরা।

বিশ্বজুড়ে জনমত, জনসংখ্যা বিষয়ক প্রবণতা এবং নানা সামাজিক ইস্যু নিয়ে সমীক্ষা করে মার্কিন বেসরকারি সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, এইমুহূর্তে বিশ্বের অন্তত চল্লিশ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কের প্রত্যেকের শরীরে কমপক্ষে একটি ট্যাটু রয়েছে। আবার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করা মার্কিন বেসরকারি সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের সমীক্ষা বলছে, উল্কিতে ব্যবহৃত রঙের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্ষতির নিরিখে ক্রমানুসারে রয়েছে লাল, হলুদ, নীল এবং সবুজ। উল্কি তৈরির কয়েক বছর পর চামড়ার অভ্যন্তরের কালি খানিক বিবর্ণ হলেও ত্বকের সংক্রমণ এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা অনেক বছর পর্যন্ত থাকেই। তাই ত্বকের মধ্যে এই ধরনের কালি ঢোকানো মানে, আদতে বিপদকে নিমন্ত্রণ করা।

সাবধান করছেন উল্কি বিশেষজ্ঞরাই। তারা বলছেন, উল্কি বা ট্যাটু যদিও এখন আগের চেয়ে ঢের নিরাপদ। তবে যত্রতত্র উল্কি না করিয়ে, বাছতে হবে বিশেষজ্ঞ উল্কি-শিল্পীদেরই। কারণ, বিশেষজ্ঞ ট্যাটু-শিল্পীরা আপনার ত্বকের সংবেদনশীলতা ভালভাবে পরখ করতে পারবেন। সুচকে জীবাণুমুক্ত না করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। তা ছাড়া এইচআইভি, হেপাটাইটিস সি এবং মেথিসিলিন-প্রতিরোধী স্টাফিলোকক্কাস অ্যারিয়াস (এমআরএসএ) প্রভৃতি রক্তবাহিত অসুখের শিকার হতে পারেন। ত্বকের সংক্রমণের ক্ষেত্রে উল্কি আঁকানোর পরবর্তী প্রথম দু’সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। এবং সময় নিয়ে ধাপে ধাপে ট্যাটু আঁকাতে হবে। ইতিমধ্যে অসুবিধা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সুস্থ শরীর ব্যস্ত করার কোনও মানে হয়, বলুন!

চিত্র : গুগল
4.5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

স্বামী বিবেকানন্দ : প্রয়াণদিনে স্মরণ

বিবেকানন্দই সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক বাঙালি তথা ভারতীয়। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ১৯১২-পর্বে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাওয়ার পর, এবং তার পরের বছর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু এর প্রায় কুড়ি বছর পূর্বেই বিবেকানন্দ শিকাগো-বক্তৃতা ও আমেরিকা-ইয়োরোপে এক নাগাড়ে প্রথম দফায় চার বছর থাকার সুবাদে আমেরিকার বিদ্বজ্জনমহলে যেমন, তেমনই জার্মানির মাক্সমুলার, ফ্রান্সের রোমাঁ রোলাঁ, রাশিয়ার টলস্টয় প্রমুখের শ্রদ্ধা এবং মনোযোগ আদায় করেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

প্রফুল্ল রায়: ব্রাত্য সময়ের কথাকার

প্রফুল্ল রায় নাকি অতীশ দীপঙ্করের বংশের। দেশভাগের অভিশাপেই দেশছাড়া হতে হয় তাঁকে, ১৯৫০-এ। একটা বিধুর বিষয় আমরা লক্ষ্য না করে পারি না। দেশভাগ সুনীল-শ্যামল-মহাশ্বেতা-শীর্ষেন্দু-অতীনদের কেবল ভূমিচ্যুত করেই ছাড়ল না, এমনকি তাঁদের কারুবাসনাকেও অন্যতর রূপ দেওয়ালো। দেশভাগ না হলে আমরা সুনীলের হাতে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, শীর্ষেন্দুর ‘দূরবীণ’ বা প্রফুল্ল রায়ের ‘পূর্বপার্বতী’ পেতাম না, যেমন পেতাম না শওকত ওসমানের ‘কর্ণফুলি’ বা হাসান আজিজুল হকের ‘আগুনপাখি।’

Read More »
শৌনক দত্ত

মন্দ মেয়ে ভদ্র অভিনেত্রী: সুকুমারী দত্ত

বিনোদিনী দাসীর বর্ণময় জীবনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া এই ‘তারকা অভিনেত্রী’-র বহুমাত্রিক জীবনটিও কম রঙিন নয় বরং বিস্মৃত নক্ষত্র এক, যিনি ১২৮২ বঙ্গাব্দের ৩ শ্রাবণ (১৮৭৫ খ্রি., মূল্য ছিল ১ টাকা) ‘অপূর্ব্বসতী’ নাটকটি লিখে বাংলা নাট্যাতিহাসের প্রথম নারী নাট্যকার হিসেবে সুবিদিত হয়ে আছেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

আষাঢ়স্য প্রথম দিবস ও কালিদাস

পণ্ডিতেরা তর্ক তুলেছেন, কালিদাস ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ লেখেননি৷ কেননা একেবারে পয়লা আষাঢ়েই যে মেঘ নেমে বৃষ্টি আসবে, তা হয় না। তাঁদের মতে, ওটা আষাঢ়ের শেষদিন, ‘আষাঢ়স্য প্রশম দিবস’ হবে। কিন্তু প্রথম দিবস-ই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এবং তা এতটাই যে, কালিদাসকে নিয়ে ভারত সরকার যে ডাকটিকিট বের করেছে, সেখানে ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবসে’ শ্লোকটি উৎকীর্ণ।

Read More »
রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »