Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

স্বামী বিবেকানন্দ: এক উদার মনীষা

শ্রীরামকৃষ্ণ-সারদাদেবীর প্রাণাধিক প্রিয় নরেন্দ্রনাথ দত্ত, যিনি স্বামী বিবেকানন্দ নামে সমধিক পরিচিত, ছিলেন ঊনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণের অন‍্যতম স্থপতি। দেশেবিদেশে হিন্দুধর্মের মাহাত্ম‍্য প্রচার করে তিনি যেমন এই ধর্মের বিশ্বজনীন বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশে ও বিদেশে, বিশেষ করে ইয়োরোপ-আমেরিকায়, তেমনি সাহিত‍্য-সঙ্গীত-ইতিহাস-সমাজতত্ত্ব নিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তাও ছিল যুগান্তকারী।

বাংলা সাহিত‍্য-ও অন্তত দুটি কারণে ঋণী থাকবে বিবেকানন্দের কাছে। প্রথমত তাঁর বাংলায় লেখা বই (মাত্র ঊনচল্লিশ বছরের আয়ুষ্কালে প্রচুর লিখেছেন তিনি, যা দশখণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তবে সে-লেখার সিংহভাগ-ই ইংরেজিতে) ‘প্রাচ‍্য ও পাশ্চাত‍্য’ আর ‘পরিব্রাজক’, যে বইদুটি নির্ভেজাল চলিত বাংলায় লেখা। তাঁর অন্য অবদান হচ্ছে বাংলা ভাষায় একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ,— ‘উদ্বোধন’, যে পত্রিকাটি ১৮৯৯-এর জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়ে প্রায় সোয়াশো বছর অতিক্রম করে আজ-ও প্রকাশিত হয়ে চলেছে। বাংলা ভাষায় এমন আয়ুর পত্রিকার উদাহরণ দ্বিতীয়রহিত।

বিবেকানন্দ সম্পর্কে তাঁর চেয়ে বয়সে দু’বছরের বড় রবীন্দ্রনাথের উক্তি, যদি কেউ ভারতবর্ষকে জানতে চায়, সে বিবেকানন্দকে জানুক। ম্যাক্স মুলার থেকে রোম্যাঁ রোলাঁ, জওহরলাল নেহরু থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ইংরেজ অভিনেত্রী সারা বার্নাড থেকে ভারতীয় উদ্যোক্তা জামশেদজি টাটা, সকলেই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

এ-হেন বিবেকানন্দের অন্যতম পরিচয় নিহিত তাঁর ধর্মীয় উদারতায়। হিন্দুধর্মের মহিমাপ্রচারে দেশবিদেশ ঘুরলেও তিনি বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও ইসলামধর্মের মাহাত্ম‍্যপ্রচারেও পরাঙ্মুখ ছিলেন না। যিশুকে তিনি এতটাই তাঁর হৃদয়ে স্থান দিয়েছিলেন যে তিনি লিখেছেন, তিনি যদি যিশুর যুগে জন্মাতেন, তাহলে নিজের রক্ত দিয়ে যিশুর পা ধুইয়ে দিতেন! শিকাগো ধর্মসম্মিলনে বক্তৃতা দেবার পর তাঁকে আমেরিকার বহু জনসভা ও প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে হয়। সে-পর্যায়ে একবার একটি সভায় তিনি হজরত মহম্মদ রসুলুল্লাহকে নিয়ে বলেছিলেন।

এর থেকেও বড় যা, তা হল এক মুসলমান মেয়েকে স্বামীজির পুজো করা। ঘটনাটি ঘটে কাশ্মীরে। সেবার তিনি ও তাঁর মানসকন্যা ভগিনী নিবেদিতা কাশ্মীরে গিয়ে শিকারায় দিন কাটাচ্ছেন। একদিন স্বামীজির মনে হল, বাংলামুলুক থেকে এখন তিনি বহু দূরে, আর বাংলাদেশজুড়ে এখন চলছে দুর্গার আরাধনা। কুমারী মেয়েকে পুজো করা দুর্গাপুজোর অঙ্গ, মনে পড়ল স্বামীজির। এবং ইচ্ছে হল কুমারীপুজো করবার। শিকারার মাঝির আট-ন’ বছরের মেয়েকে পাওয়া গেল। তাকেই ফুল, চন্দন ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র দিয়ে পুজো করেছিলেন স্বামীজি। ধর্মীয় উদারতার এমন দৃষ্টান্ত সত‍্যি-ই বিরল। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ভবিষ্যৎ ভারত গড়ে উঠবে হিন্দু ও মুসলমানের মিলিত প্রয়াসে। এ-ও তো উদার ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কথা।

বিবেকানন্দ এই উদারতা পেয়েছিলেন তাঁর গুরু শ্রীরামকৃষ্ণের কাছ থেকে, যাঁর একটি বিখ‍্যাত উক্তি, ‘যত মত তত পথ’। তিনি সমস্ত ধর্মের সাধনা করে তাঁর পরধর্মপ্রীতি দেখিয়েছিলেন। এমনকি তিনি মসজিদে গিয়ে নামাজ পর্যন্ত পড়েছেন। আর শ্রীরামকৃষ্ণজায়া সারদাদেবী সেকালের ব্রাহ্মণ মহিলা হয়ে খ্রিস্টান নিবেদিতার সঙ্গে বসে খেতেন। উপরন্তু নিবেদিতা সম্পর্কে সারদার মন্তব‍্য, ‘নরেন সাগরপার থেকে একটি শ্বেতপদ্ম নিয়ে এসেছে।’ জাতপাতের কুসংস্কারকে কতখানি দূরে সরিয়ে দিতে পারলে এমন আচার-আচরণ সম্ভব?

বিবেকানন্দের সংস্কারমুক্তি ঘটেছিল তাঁর ছোটবেলাতেই। তাঁদের বৈঠকখানায় একাধিক হঁকো থাকত। চাকরবাকরদের কাছে জিগ‍্যেস করে তিনি জানতে পারেন, এক-একটা হুঁকো এক-এক জাতের মানুষের জন‍্য নির্দিষ্ট। এক জাতের লোক অন্য জাতের হুঁকোয় তামাক খেলে নাকি জাত যায়, সেজন্য-ই এই ব‍্যবস্থা। শুনে কিশোর নরেনের ইচ্ছে হল জাত যাওয়ার বিষয়টা পরীক্ষা করতে। তাই সবগুলো হুঁকো টেনে দেখলেন। কিশোর বয়সে অমন হুঁকোসেবন বৈধ নয় যদিও (পরবর্তীকালে স্বামীজি ধূমপায়ী ছিলেন), তবুও কুসংস্কার থেকে মুক্ত হওয়ার পশ্চাৎপট বিবেচনা করলে কাজটিকে তারিফ না করে উপায় থাকে না। পরবর্তীকালে তিনি যখন আসমুদ্রহিমাচল পদব্রজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন বহু মুসলমানের গৃহে রাত কাটিয়েছেন, তাঁদের পরিবেশিত খাবার নিঃসঙ্কোচে খেয়েছেন।

কেননা তিনি জানতেন, সব ধর্মের বাণী-ই শাশ্বত ও শ্রদ্ধেয়। সহজ বুদ্ধিতে তাঁর কাছে এটা ধরা পড়েছিল যেমন, তেমনই ধর্ম ও দর্শন নিয়ে তাঁর অগাধ পড়াশোনা তাঁকে এই বিশ্বাসে উপনীত করিয়েছিল। আবার স্বামীজির ভাবশিষ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মধ‍্যে এই ধর্মীয় উদারতা এমন গভীরপ্রোথিত হয়ে উঠেছিল যে, সুভাষচন্দ্রের যাবতীয় রাজনৈতিক কার্যকলাপে হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদের চিহ্নমাত্র ছিল না। কাজী নজরুল ইসলামের সংবর্ধনাদানে উদ্যোক্তা তিনি, জার্মানির কিয়েল বন্দর থেকে যে সাবমেরিনে তিনি জাপান আসেন, তাতে তাঁর একমাত্র সঙ্গী হন আবিদ হাসান, আর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নেতাজি বর্মায় (অধুনা মিয়ানমার) পৌঁছেই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ছোটেন ভারতের শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহের সমাধিতে। ব্রিটিশ সরকার সিপাহীযুদ্ধের শেষে বাহাদুর শাহ্ জাফরকে রেঙ্গুনে (অধুনা ইয়াঙ্গন) বন্দি করে রেখেছিল, আর ১৮৬২-তে ওখানেই তাঁর মৃত‍্যু হয়।

স্বামী বিবেকানন্দের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন শ্রীরামকষ্ণ, যিনি সাকার উপাসনায় বিশ্বাসী হয়েও বেদান্তকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। শ্রীরামকৃষ্ণের একটি বিখ‍্যাত উক্তি, ‘অদ্বৈতের চাবি আঁচলে বেঁধে যথা ইচ্ছা তথায় যা’। বেদান্ত একেশ্বরবাদী, আর ইসলাম-ও তাই। অদ্বৈত এখানে বেদান্ত বা উপনিষদ। আর বিবেকানন্দ-ও ছিলেন বৈদান্তিক। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইসলামের প্রতি দুজনের— নিবিড় শ্রদ্ধা থাকা সম্ভব।

তাছাড়া আরও একটি বিবেচ‍্য দিক আছে। আবহমান কাল ধরে ভারত তথা এই উপমহাদেশ ধর্মীয় উদারতার প্রশ্রয় দিয়েছে। কেবল বাংলার কথা-ই যদি বলি, তাহলে দেখব, স্বাধীন সুলতানী আমলে মুসলমান সুলতানরা বাংলা ভাষাকে মদত দিচ্ছেন। তেমনি শ্রীচৈতন্যের কাছে হিন্দু-মুসলমানে যে সমদর্শিতা ছিল, তার প্রমাণ যবন হরিদাসকে তাঁর সেরা শিষ্যদের মধ‍্যে (ছয় প্রধান পরিকর) স্থান দেওয়া। অদ্বৈত আচার্য নিজে হরিদাসের উচ্ছিষ্ট পরিষ্কার করেছিলেন। আর পরবর্তীকালে রামমোহন-কেশবচন্দ্র সেন (উল্লেখ‍্য, তাঁর-ই উদ্যোগ কাজ করেছিল ভাই গিরীশচন্দ্র সেনকে দিয়ে মূল আরবি ভাষা থেকে কোরান শরীফ বাংলায় অনুবাদে। তাছাড়া তিনি কৃষ্ণকুমার মিত্রকে দিয়ে লিখিয়েছিলেন হজরত মহম্মদ রসুলুল্লাহর জীবনী)-অশ্বিনীকুমার দত্ত-রবীন্দ্রনাথ প্রমুখের পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা। এই ধারাবাহিকতার মধ‍্যবর্তী করে স্বামীজির ইসলামপ্রীতির গূঢ় কারণকে খুঁজতে হবে।

এজন্যই আজ বিবেকানন্দকে স্মরণ করা জরুরি। তিনি আমাদের ধর্মের মোহ থেকে মুক্ত হতে বলেছেন। সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখিয়েছেন। বলেছেন, খালিপেটে ধর্ম হয় না। বলেছেন, গীতাপাঠের চেয়ে ফুটবল খেললে ধর্মের অধিক নিকটবর্তী হওয়া যায়। বিবেচনাযোগ‍্য কথা এসব।

পরিশেষে জানাই, স্বামীজির আদর্শে মুসলমান নারীকে কুমারীজ্ঞানে পুজো করার রীতি কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন কোথাও কোথাও এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলি, গতবছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়াতে (ঝিঙেপাড়া) সারদা-রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে মুসলমান কুমারীকে পুজো করা হয়েছিল। তবে আমাদের কাছে এ-সবের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ স্বামীজির সার্বিক ধর্মীয় উদারতাকে অনুসরণ করতে শেখা।

চিত্র: গুগল
4 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
পার্থপ্রতিম
পার্থপ্রতিম
1 year ago

খুব সুন্দর লেখা। অজস্র ধন্যবাদ।

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব ছয়]

রবীন্দ্রভাবনায় যে নৃত্যধারা গড়ে উঠল তা দেশিবিদেশি নৃত্যের সমন্বয়ে এক মিশ্র নৃত্যধারা, তৎকালীন শিক্ষিত শহুরে বাঙালির সংস্কৃতিতে যা নতুন মাত্রা যোগ করল। নাচের প্রতি একরকম আগ্রহ তৈরি করল, কিছু প্রাচীন সংস্কার ভাঙল, মেয়েরা খানিক শরীরের ভাষা প্রকাশে সক্ষম হল। এ কম বড় পাওনা নয়। আরও একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, শিল্পক্ষেত্রে ভাবের সাথে ভাবনার মিল ঘটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টির প্রচেষ্টা। গতে বাঁধা প্র্যাক্টিস নয়। নিজের গড়ে নেওয়া নাচ নিজের বোধ অনুযায়ী।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব পাঁচ]

বাংলার মাটি থেকে একদা এই সুদূর দ্বীপপুঞ্জে ভেসে যেত আসত সপ্তডিঙা মধুকর। আর রবীন্দ্রনাথের পিতামহ, যাঁর কথা তিনি কোথাও প্রায় উল্লেখই করেন না, সেই দ্বারকানাথ-ও বাংলার তৎকালীন ব্যবসায়ীকুলের মধ্যে প্রধান ছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, একদা তাঁর প্রিয় জ্যোতিদাদাও স্টিমারের ব্যবসা করতে গিয়ে ডুবিয়েছেন ঠাকুর পরিবারের সম্পদ। নিজে রবীন্দ্রনাথ বাণিজ্য সেভাবে না করলেও, জমির সম্পর্কে যুক্ত থাকলেও একদা বাংলার সাম্রাজ্য বিস্তার, বাণিজ্য-বিস্তার কী তাঁরও মাথার মধ্যে ছাপ ফেলে রেখেছিল? তাই ইউরোপ থেকে আনা বাল্মিকী প্রতিভার ধারাকে প্রতিস্থাপন করলেন জাভা বালির কৌমনৃত্য দিয়ে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »