Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

শাহেদা বেগম: বাংলাদেশের পত্রপত্রিকার আলোয়

পঞ্চম কিস্তি

শাহেদার নাম প্রায়শ-ই আসে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে। আঞ্চলিক সংবাদপত্রে তো কথাই নেই। একজন কৃষিকন‍্যা তিনি এদেশের, গণমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে সাক্ষাৎকার কম ছাপা হয়নি। টিভির নানান চ‍্যানেলে তাঁর প্রসারিত খেতের মধ‍্য দিয়ে চলমান তাঁর কথোপকথন বহুবার দর্শক দেখেছেন।

দৈনিক ‘সমকাল’ পয়লা ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ তাঁর সম্পর্কে একটি লেখার শিরোনাম দিয়েছে ‘ফরিদপুরে সফল কিষানিকে সংবর্ধনা’। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘কিষানি শাহিদা বেগম গত বছর ১২৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজবীজ চাষ করে দুশো মণ পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করেন। চলতি মৌসুমে দুশো মণ পেঁয়াজবীজ চার কোটি টাকায় বিক্রি করে সাড়া ফেলেন দেশ জুড়ে।’

সেই সূত্রেই তাঁকে ‘অনন‍্যা’ সম্মানে ভূষিত করে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকা। বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণির হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ডা. দীপু মণি বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী (প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী), চিকিৎসক এবং আইনের স্নাতক। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সে-অনুষ্ঠান প্রত‍্যক্ষ করার।

‘অনন‍্যা’ সম্মানের মঞ্চে।

সে অনুষ্ঠানে দশজন কৃতী মহিলাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। শাহেদার সঙ্গে আরও যাঁরা পুরস্কৃত হন, তাঁদের নামের তালিকা দেখলেই শাহেদার পুরস্কৃত হওয়ার তাৎপর্যটি সহজে বোঝা যাবে। তালিকায় আছেন প্রযুক্তিতে লতিফা জামাল, নাট‍্যনির্মাণে চয়নিকা চৌধুরী, করপোরেট পেশায় স্বপ্না ভৌমিক, বিজ্ঞানে সেঁজুতি সাহা, ক্রীড়ায় (ক্রিকেট) জাহানারা আলম প্রমুখ। এঁদের সঙ্গে সমাসনে বসাটা শাহেদার যোগ‍্যতাকেই প্রমাণ করে। সম্মাননাপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া সেদিন শাহেদা ব‍্যক্ত করেছিলেন এভাবে, ‘ইচ্ছা ও সাহস থাকলে নারী-পুরুষের মধ‍্যে কোনও পার্থক‍্য থাকে না, সবাই এগিয়ে যেতে পারে।’ ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ এবং পাক্ষিক ‘অনন‍্যা’ পত্রিকার সম্পাদক তথা সাবেক সাংসদ তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘দেশে নারী ব‍্যক্তিত্ব,— যাঁদের এখন সমাজে নানা ভূমিকা রাখতে দেখা যায়, তাঁদের প্রায় বেশিরভাগ নারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে অনন‍্যা।’ গত ত্রিশ বছরে তাঁরা তিনশোজন নারীকে এই সম্মানে ভূষিত করেছেন।

‘অনন্যা’ পুরস্কার গ্রহণে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এর সম্পাদক তথা সাবেক সাংসদ তাসমিমা হোসেনের সঙ্গে।

বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকা শাহেদাকে আখ‍্যায়িত করেছে ‘পিঁয়াজ বীজের রাজকন‍্যা’ বলে। পত্রিকাটি শাহেদা-প্রসঙ্গে লিখছে, ‘সারা দেশের মধ‍্যে পিঁয়াজ বীজ আবাদে তাঁর ধারেকাছেও নেই কেউ।… অনেকেই শাহিদা বেগমের কাছে আসছেন পিঁয়াজ বীজ আবাদের কলাকৌশল জানতে।… ঘর সামলিয়ে কৃষিকাজ করে কোটি টাকা আয়ের যে পথ তিনি তৈরি করেছেন তা এককথায় অবিশ্বাস্য হলেও মোটেও সিনেমার কোনো কল্পকাহিনী নয়।’

শাহেদার বিয়ে হয় ১৯৮৭- তে। উঠোনে লাউ, সিম ইত‍্যাদি দিয়ে তাঁর চাষ-আবাদে হাতেখড়ি। স্বামী সোনালী ব‍্যাঙ্কে চাকরি পাওয়ার আগে নিজহাতে চাষ করতেন। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর আর কৃষকদের সঙ্গে চাষে কামলাদের সঙ্গে অংশ নিতে পারেন না। ফলে শাহেদাকেই খেত তৈরির সময় থেকে শুরু করে চাষের কাজ চলাকালীন সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করতে হত। শ্বশুরবাড়িতে পেঁয়াজবীজের চাষ হত। কিন্তু তা অনেক সময়েই ক্ষতির মুখে পড়ত। প্রথমদিকে বহু টাকা ক্ষতি হয় চাষ করতে গিয়ে। তবু চাষ চালিয়ে যেতে যেতে অবশেষে লাভের মুখ দেখতে পান। বিবিসি-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শাহেদা বলেন, আঠারো-বিশ বছর ধরে পেঁয়াজের চাষ করে এখন বীজের কেজি পাঁচ থেকে ছ’হাজার আর মণ দু’লাখ টাকা হওয়ায় অভূতপূর্ব লাভের মুখ দেখছেন। প্রথমে দুই মণ, পরে তেরো, বত্রিশ, আর এই করে করে ২০২১-এ দুশো মণে পৌঁছেছে তাঁর বীজ উৎপাদন। এত চাহিদা যে পাঁচশো মণ উৎপন্ন হলেও বিক্রি হয়ে যেত।’

সম্মাননা প্রাপ্তি।

‘খান সিডস’ নামে পরিচিত তাঁর পেঁয়াজবীজ সমগ্র বাংলাদেশে আদৃত। এবছর শাহেদা আরও বিশাল জমি লিজ নিয়ে চাষ করছেন উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁওয়ে। সেখানে একদা চিনিকল থাকায় প্রচুর আখচাষ হত। মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আখচাষের জমি অনাবাদী পড়ে আছে। ওই জমিতে ধান বা অন‍্য ফসলের চাষ লাভজনক নয়। তিন-চার বছর ধরে ওখানে পেঁয়াজবীজ চাষ করে সাফল‍্য পেয়েছেন চাষিরা। এজন‍্যই শাহেদার এই নতুন উদ‍্যোগ। এতে হ‍্যাঁপা কম নেই। ফরিদপুর-ঠাকুরগাঁওয়ের দূরত্ব কম নয়। বারবার সেখানে ছুটে যেতে হয়। এখন একূল-ওকূল দু’কূল সামলাচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশের বিখ‍্যাত ইংরেজি দৈনিক ‘The Daily Star’ শাহেদার কৃষিকাজের সাফল‍্যকে সম্ভ্রমের সঙ্গে তুলে ধরেছে এইভাবে, ‘Her endeavours towards ensuing quality made her onion seeds a favorite among local farmers while enabling employment for some fifty people during harvests.’

শাহেদা তাঁর খেতের কৃষকদের জন‍্য নিজহাতে রান্না করেন, একত্রে আহার করেন তাঁদের সঙ্গে। এই গুণাবলি তাঁর মাথায় আর-এক পালক হয়ে দেখা দেয়।

অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড।

ফরিদপুর জেলা পেঁয়াজবীজচাষে অগ্রণী। বাংলাদেশে উৎপাদিত পেঁয়াজবীজের সিংহভাগ, ষাট থেকে সত্তরভাগ উৎপন্ন হয় ফরিদপুরে। মোটামুটি ১৪১৫ একর জমিতে। ভাঙ্গা, নগরকান্দা, সালথা ও ফরিদপুর সদরেই মূলত এর চাষ। শাহেদা কেবল ফরিদপুরে নয়, সারা বাংলাদেশে এ-চাষে অগ্রণী। একাধিক ভ‍্যারাইটির বীজ তৈরি করেন শাহেদা,— রাজশাহী তাহিরপুর, সুপারকিং, নাসিরকিং, সুখসাগর। তাছাড়া হাইব্রিড।

পেঁয়াজের চাষে নিয়োজিত কেউ কেউ আগে অন‍্য পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের কর্মসংস্থানের ব‍্যবস্থা করেছিলেন শাহেদা। দৈনিক বেতন দিতেন চারশো টাকা। তাছাড়া আহার। এখন দৈনিক বেতন পাঁচশো।

বাংলাদেশের প্রতিনিধিস্থানীয় এমন কোনও দৈনিক পত্রিকা নেই, যেখানে শাহেদা সম্পর্কে লেখা না বেরিয়েছে। এবং তা উচ্চ প্রশংসাত্মক। যেমন ‘কালের কণ্ঠ’ তাঁর সম্পর্কে লিখতে গিয়ে জানাচ্ছে, ‘ফরিদপুর জেলার স্থানীয় কৃষক তো বটেই, পুরো বাংলাদেশে তাঁরা বীজ সরবরাহ করে থাকেন।’ শাহেদার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজবীজ রোপণের উদ্বোধন করতে আসেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক।

শাহেদা বেগমের কর্মকাণ্ড পরিদর্শনে স্বয়ং বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

‘ভোরের কাগজ’ লিখেছে, ‘সারা দেশে কালো সোনা হিসাবে পরিচিত ফরিদপুরের পেঁয়াজবীজ।… শাহেদা বেগম শুরু করেছেন… পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন। এ বীজ আকারে যেমন বড়, তেমনি দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায়। সারা দেশে এ পেঁয়াজের বীজ ছড়িয়ে দিতে পারলে অল্প সময়ের মধ‍্যে দেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।’

চার কোটি টাকার পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন, আর প্রায় তিনকোটি টাকা মুনাফা নিঃসন্দেহে এক বড় অর্জন। সেজন‍্য শাহেদাকে সংবর্ধনা দেবার বান ডেকে গেছে। ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চ‍্যানেল আই-এর দীর্ঘ তালিকা। দ্বিতীয়টি শাহেদাকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে পুরস্কৃত করেছে। তাঁর কৃষিজমি দেখতে আসেন ফরিদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সেলীম মিয়া, বগুড়া মশলা গবেষণাকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হামীম রেজার খান, বি এ ডি সি-র প্রকল্প পরিচালক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব‍্যাঙ্কের প্রতিনিধিদল, ঢাকা খামারবাড়ির ফিলড সার্ভিস পরিচালক চণ্ডীদাস কুণ্ডু, গণমাধ‍্যম ও কৃষিব্যক্তিত্ব শায়েখ সিরাজ।

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধপক্ষ (২৫. ১১. ২০২১-১০. ১২. ২০২১) এবং বেগম রোকেয়া দিবস (০৯. ১২. ২০২১) উদ্বোধন উপলক্ষ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরফে যে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ পুরস্কার দেয়, তার-ও প্রাপক তিনি!

>>> ক্রমশ >>>
চিত্র: শাহেদা বেগমের সৌজন্যে

পড়ুন, প্রথম কিস্তি…

অম্বিকাপুর: শাহেদার দিগ্বিজয়

পড়ুন, দ্বিতীয় কিস্তি…

শাহেদার খেতের পথে

পড়ুন, তৃতীয় কিস্তি…

শাহেদা বেগম: পেঁয়াজ সমাচার

পড়ুন, চতুর্থ কিস্তি…

অথ পেঁয়াজচাষ কথা

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঢাকায় বিবেকানন্দ: ১২৫ বছর পূর্তি

ঢাকায় এসে খুব বেশি বক্তৃতা দেননি তিনি। সম্ভবত তাঁর শারীরিক অসুস্থতাই তার কারণ। মার্চের তিরিশ তারিখে রমাকান্ত নন্দীর সভাপতিত্বে ঢাকার বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয়) ভাষণ দেন। বিষয় ‘আমি কী দেখেছি’। শ্রোতার সংখ্যা ছিল দু’হাজার। পরদিন অর্থাৎ ৩১.০৩-এ বক্তৃতা দেন পোগোজ স্কুলে, তিন হাজার দর্শকের সামনে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম’। দুটি সভাতেই শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ, আপ্লুত ও উদ্বুদ্ধ।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »