Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

রম্যগদ্য: প্রতি পদে পদবি

পার্ক স্ট্রিটের এক রেস্টুরেন্টে নীপা ওর বন্ধু মল্লিকার সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। বেশ প্রাণচঞ্চল মেয়েটি। প্রথম সাক্ষাতেই ভাল লেগে গেছিল। আর যখন জানলাম ওর পদবি মল্লিক, মনে মনে বেশ মজা পেয়েছিলাম। সেই মজার সূত্রেই আমার কো-এড কলেজের দুই বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল।

খুলেই বলি। কলেজে পড়ার সময় শীলা আর নন্দার সঙ্গে আমার বেশ বন্ধুত্ব হয়েছিল। ঘটনাচক্রে তাদের দুজনের পদবি ছিল যথাক্রমে শীল আর নন্দী। একদিন কথায় কথায় ব্যাকরণের অনুপ্রাস বোঝাতে গিয়ে তাদের পদবিসহ নামের উদাহরণ দিয়েছিলাম। অনুপ্রাস সম্পর্কে ধারণা কতটা স্পষ্ট হয়েছিল জানি না, তবে তারপর থেকে তাদের সঙ্গে আর আমার বন্ধুত্ব লাস্ট করেনি। মল্লিকার সঙ্গে আলাপ হবার পর বন্ধু হারানোর দুঃখটা জেগে উঠল আর একবার। পরবর্তী সময়ে ঘরপোড়া গোরুর মত সতর্ক কথাবার্তা চালিয়ে গেছি শুধু।

কিন্তু কথায় বলে না, স্বভাব যায় না ম’লে! নাম আর পদবি জড়িয়ে আমার চারপাশে এত মজার খোরাক ছড়িয়ে আছে যে, চোখে পড়লেই কাউকে না কাউকে বলে বসি। তাই সুদাম দাম, শ্রীধর ধর, সুবল বল, গোপাল পাল, সুশীল শীল এমনতর অনেক নাম আমাকে খামোকাই বিপর্যস্ত করে তোলে।

বাঙালির পদবিতে বৈচিত্র্যের অভাব নেই। সেখানে নাগ আছে, হাতি আছে, সিংহও আছে। পাখি আছে, শুনিনি; তবে পাখিরা কিন্তু আছে। মেটো-পেটো-খেটো যেমন আছে, ধর-বর-কর-হর-সর-ভড়ও বড় একটা কম নেই। এমনকি সামন্ত-সেনাপতিরাও হাজির। দাঁ-খাঁ-তা-দে-শী তবলার তালসম একাক্ষরী বাঙালি পদবিরও ঘাটতি নেই। একদিকে বাইন-গাইন-পাইন তো অন্যদিকে রাহা-লাহা-সাহা-নাহা… আহা! কত বাহারি পদবির ছড়াছড়ি! এমনকি ঘরামি যে বাঙালি পদবি আছে, সৈকতের সঙ্গে আলাপ হওয়ার আগে অব্দি আমাদের জানা ছিল না। বন্ধুবৃত্তে সে ‘হারামি’ ডাকে দিব্বি সাড়া দিত। এ নিয়ে তার কোনও ক্ষোভ ছিল, জনান্তিকেও তা শোনা যায়নি।

অনেক বড় হয়ে নবনীতা দেবসেনের এই দেবসেন পদবির রহস্য জানতে পেরেছি। নরেন্দ্রনাথ দেব আর অমর্ত্য সেন এই দুজনের পদবি যে জুড়ে আছে ওই দেবসেনে, তা জানার আগেই অবশ্য পড়া হয়ে গেছে তাঁর বেশ কিছু লেখা। নবনীতা দেবসেন— আহা! নাম আর পদবি যেন পরম ভালবাসায় ভাল বাসা বেঁধে আছে। বিয়ের পর মেয়েদের পদবি বদলে যাওয়াই দস্তুর ছিল একসময়। সময় বদলেছে। বিবাহোত্তর পদবিও বদলাচ্ছে। এই বদলে অবশ্য হারাবার কিছু নেই বরং পুরনো পদবির সঙ্গে যোগ হবে আর একটা। এমনতর বদল নিয়ে ঈষৎ বিড়ম্বনার মুখোমুখি হয়েছিল আমাদের মিতা। তার বাবা অবনী ঘোষ দস্তিদার খুব শখ করে মেয়ের নাম রেখেছিলেন প্রজ্ঞাপারমিতা। অখিলেশ সিংহ চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হবার পর মিতার পোশাকি নাম দাঁড়াল প্রজ্ঞাপারমিতা ঘোষ দস্তিদার সিংহ চৌধুরী। দুটি নয়, যেন চার চারটি পদবির সমাহার। স্বঘোষিত এই সিংহনাদে কতটুকু দোস্তি ছিল, শ্রোতাদের পক্ষে উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব।

মিতার সমস্যা একরকম। শর্মিলা কোলে-র সমস্যাটি বরং জটিলতর। অরিন্দম বোস-এর সঙ্গে বিয়ে হবার পর শর্মিলা তার জোড়া পদবিতে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিল বলেই খবর। যেমন সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের নামকরণে সুবিমলও খারিজ করেছিল তার বউয়ের আবদার। বউয়ের পছন্দ সান্ত্বনা। সুবিমল চায়নি। আসলে তার পদবি ছিল দে। একই বিপর্যয় কি হত না, যদি পদবিসহ কারও নাম হয় করুণা কর?

তা বলে কি পদবি নিয়ে যত সমস্যা মেয়েদের? ছেলেদের নেই? আলবাৎ আছে! এই যেমন চিন্ময়বাবুর বড়ছেলে। ও উঠেপড়ে লেগেছিল, হয় নাম না হয় পদবি, এফিডেবিট করে যে কোনও একটা বদলাবেই বদলাবে। পদবিসহ বেচারার নাম আসলে মৃন্ময় পাত্র।

কলেজের প্রফেসরদের নাম তাদের নামের ইংরেজি আদ্যক্ষরে বলার রেওয়াজ অনেক পুরনো। কল্যাণ ঘোষ স্যার ছিলেন কে. জি., রঞ্জন ভাদুড়ি স্যার ছিলেন আর. বি… এরকম। এ স্টাইল এখন স্কুলেও চলে এসেছে। পুলকের বাবা এম.এল.এ. এমনই বলেছিল পুলক। এম.এল.এ.-র ছেলে চাকরি করে, তাও আবার আমাদের সঙ্গে, ব্যাপারটা যুগপৎ বিস্ময় এবং গর্বের। সহকর্মী হিসেবে বেশ আন্তরিকও ছিল পুলক। এই এম.এল.এ. রহস্য উন্মোচিত হয়েছিল অন্তত বছর দুয়েক পরে। পুলকই ছিল উন্মোচনকর্তা। ওর বাবার নাম যে মানিক লাল আচার্য আর সেটাই যে এম.এল.এ. হবার রহস্য, জানতে জানতে দু’বছর।

কিছু সৌখিন বাঙালি বাংলাতেও সেটি চালু করেছেন। ননামি বা অকৃব-র আড়ালে যে নরেন্দ্র নাথ মিত্র এবং অজিত কৃষ্ণ বসু, এই তথ্যও অনেকেরই জানা। আমি আমার পরিচিত দুজনের কথা জানি, এই সংক্ষিপ্ত নামপরিচিতিতে তাদের প্রবল আপত্তি। অসিত বরণ লাহা এবং বিমল কৃষ্ণ তপাদারের নামের আদ্যক্ষর যে যথাক্রমে ‘অবলা’ আর ‘বিকৃত’ হবে, তা বাস্তবিকই মেনে নেওয়া যায় না। সেদিন আড্ডায় এই বিপর্যয়ের কথা বলায় আমার এক বন্ধু আরও দুজনের নাম উল্লেখ করল— শান্তনু লাহিড়ি আর গায়ত্রী ধাড়া।

আবার পদবিই যখন হয়ে ওঠে নাম, যত গালভরাই হোক আসল নামটা তখন অব্যবহারে অবহেলায় থেকে থেকে একসময় বিস্মৃত হয়ে যায়, তেমন উদাহরণও অজস্র। পবিত্র ভুঁঞ্যা, কাজ করে একটা কারখানায়। তার দুঃখ, অমন পবিত্র তার নাম, সহকর্মীদের কেউই প্রায় জানে না। শুভঙ্কর যত সুন্দর নামই হোক, ‘হাইত’-এর অফিসে ক’জন জানে সে নাম! আবার ঠাকুরদাস বিশ্বাসকে ডাকতে গিয়ে আমরা গুলিয়ে ফেলি ওর নাম আর পদবিকে নিয়ে। ফলে ঠাকুর দাস আর বিশ্বাস এই তিন নামেই সে পরিচিতি বয়ে বেড়াচ্ছে। দুর্লভ, সংখ্যালঘু হবার আভিজাত্যেই সম্ভবত কিছু পদবি ব্যক্তিনামকে নস্যাৎ করে উজ্জ্বলতর উপস্থিতিতে টেক্কা দিচ্ছে। ‘হিমশিখরের চূড়া মাত্র’ কথাটা ইদানীং বাজারে খুব চলছে— হুই গুঁই হোড় ঢ্যাং ঢোল ঘড়া খাঁড়া পান আড়ং শীট মুদি মাটি ব্যাপারী কাটারি দেয়াশী দেয়াটী খাটুয়া… প্রভৃতি দুর্লভ পদবির প্রসঙ্গেও কথাটা লাগসই বটে। আহা! কত বিচিত্র নামে ঐশ্বর্যান্বিত বাঙালির পদবি-ভাণ্ডার।

বেহালার অলোক জানাকে কেউ অলোক নয়, বন্ধুরা সবাই ডাকে ‘জানা’ সম্বোধনে। আমিও ডাকতাম। এক শীতের সকালে ওর খোঁজে একবার ওর বেহালার বাড়িতে গিয়ে সে এক কাণ্ড! খুঁজে খুঁজে বাড়ির নম্বর মিলিয়ে শেষ অব্দি পাওয়া গেল যখন, বন্ধ দরজায় বেল বাজাতে দরজা খুলে যিনি কৌতূহলী দৃষ্টি হেনে সামনে দাঁড়ালেন, সম্ভবত জানার বাবা। জানতে চাইলাম, ‘জানা আছে?’

অলোকের রাশভারি রসিক বাবা হাসি হাসি মুখে বললেন, ‘এ বাড়ির সবাই জানা। অজানা কারোর থাকার কথা তো নয়!’

অপ্রস্তুত আমি তখন একেবারে বাক্যিহারা। না মানে… তোতলাচ্ছি। ততক্ষণে অলোক এসে আমার বেসামাল পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ওর ঘরে ডেকে নেয়। বিশ্বাস করুন, সেই সেদিন থেকেই কারও পদবি ধরে ডাকার বদ অভ্যেস আমি বর্জন করেছি।

অঘোরবাবু পাতিপুকুর এলাকার নামকরা বড়লোক। অঘোরচন্দ্র দাস। তার বাড়ির বিশ্বস্ত চাকর পাঁচু। পাঁচু মালিক। তবে পদবির এ-হেন নির্মম রসিকতায় ওদের কারওই কোনও অনুতাপ আমি অন্তত লক্ষ্য করিনি।

প্রণব বল, এক সময়ের স্টেট লেভেলে খেলা দুর্দান্ত ক্রিকেটার একবার অনুরোধ করেছিল আমাদের, আমরা যদি দাদা-ই বলি, যেন প্রণবদা বলি, বলদা যেন না বলি! তবু ‘বলদা কইতাছিল কি…’ বলেই ফেলত আমাদের বলাই। সেই ক্যাবলা বলাইকে তাই প্রণবদা দু’চক্ষে দেখতে পারত না। বলাই তাতে দুঃখ পেত কিনা বোঝা মুশকিল। কেননা বলাইয়ের মুখের অভিব্যক্তি যে-কোনও পরিবেশেই একইরকম। অত্যন্ত দুঃখজনক পরিস্থিতিতেও বলাইয়ের মুখে লেগে থাকত হালকা একটা হাসির রেশ। সেই বলাই একদিন হাসি হাসি মুখে খবর দিল অমলকান্তি বিশ্বাস অর্থাৎ এ. কে. বিশ্বাস নাকি গেটে নেমপ্লেট লাগিয়েছে। বিশ্বাসদার এই ফুটানি কেন জানি ফাজিল বলাইয়ের অসহ্য লেগেছিল। এক রাতের অন্ধকারে, সব্বার নজর এড়িয়ে এ কে বিশ্বাস নামের নিচে বলাই কাঁচা হাতে লিখে দিয়েছিল, ‘করবেন না।’
বলা বাহুল্য, বিষয়টা বিশ্বাসদার নজরে আসার পরে পরেই নেমপ্লেটটা খুলে দিয়েছিলেন।

ছাড়িলে না ছাড়ে। জন্মে পদবি, চাকরিতে পদবি, সংরক্ষণে পদবি, বিয়েতে পদবি, এমনকি মৃত্যুতেও। প্রতি পদে পদবি।

আর একটা পুরনো দুর্ঘটনার গল্প দিয়ে শেষ করা যাক এই পদবি বিপর্যয়ের বৃত্তান্ত। সারা বাংলা জুড়ে একটা সময় ছিল যাত্রাপালার রমরমা। নট্ট কোম্পানির ‘নটী বিনোদিনী’ ছিল যাত্রা-ইতিহাসের অত্যুজ্জ্বল এক নাম। তখন বিজ্ঞাপনটা হত এরকম: অরুণ দাশগুপ্ত এবং বীণা দাশগুপ্তা অভিনীত যাত্রাপালা ‘নটী বিনোদিনী’। তখন কত আর বয়স আমার! শুনেছিলাম অরুণ আর বীণা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন। সমস্যা সেটা নয়, আমার মাথার পোকা নড়ছিল অরুণ দাশগুপ্ত হলে বীণা দাশগুপ্তা কেন, দাশগুপ্ত কেন নয়? সরলমনে একদিন রক্ষিতদাকে প্রশ্নটা করেই বসলাম। রক্ষিতদা বোঝালেন, ‘আসলে বীণা দাশগুপ্ত স্ত্রী তো, সে জন্যই পদবিতে জেন্ডারটা রিফ্লেক্ট করেছে।’

ততোধিক সারল্যেই আমার পরবর্তী প্রশ্ন ছিল, ‘তা হলে কি বউদির পদবিটা…’। শেষ করার আগেই একখানা দেড়মণি চড় এসে আছড়ে পড়েছিল আমার বাঁ-গালে।

হাত বোলালে আজও পুরনো ব্যথাটা চিনচিন করে ওঠে!

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
Advertisement
4 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঢাকায় বিবেকানন্দ: ১২৫ বছর পূর্তি

ঢাকায় এসে খুব বেশি বক্তৃতা দেননি তিনি। সম্ভবত তাঁর শারীরিক অসুস্থতাই তার কারণ। মার্চের তিরিশ তারিখে রমাকান্ত নন্দীর সভাপতিত্বে ঢাকার বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয়) ভাষণ দেন। বিষয় ‘আমি কী দেখেছি’। শ্রোতার সংখ্যা ছিল দু’হাজার। পরদিন অর্থাৎ ৩১.০৩-এ বক্তৃতা দেন পোগোজ স্কুলে, তিন হাজার দর্শকের সামনে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম’। দুটি সভাতেই শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ, আপ্লুত ও উদ্বুদ্ধ।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »