ই রা জ জি য়া জি
অনুবাদ : শুভঙ্কর সাহা
শিশুর দল ও সূর্য
কখন এসে পৌঁছল ওরা ফুটপাতে, বসেও পড়ল? কীভাবে পার হয়ে এল অন্ধকার; বাড়ির, সিঁড়ির, সরু পথের?
কীভাবে পারল স্মৃতিগুলোকে পিছনে ফেলে দিতে ধাপে ধাপে
এবং ছেড়ে এল?
সকালবেলায়
তাঁতির দল, কাঠমিস্ত্রির দল, আর সারাইকারীরা
থেমে থেমে দেখল
কোনও বাড়ির কেউই চিনল না ওদের
মেয়েরা যারা বাজার করতে বেরিয়েছে, পেরিয়ে গেল তারপর
শিশুদের আর সূর্যের আলোর মধ্যে দিয়ে
সেই পুরোনো খড়ের দড়ির চেয়ারটা
হঠাৎ করেই কেমন যুবক হয়ে উঠল…
*
তেহরানের চিঠি
ডাকপিয়ন ফেলে গেছে
একটুকরো আকাশ, কিছু তারা আর কিছু শুভেচ্ছা অক্ষর
আমার তালুর ওপরে
বারবার ফিরে ফিরে এসেছে ৪৯ নম্বর বাড়িতে
দেখতে নদী এখনও জল ঢালে কি না
জানলার পিছনে বাসা-বাঁধা পাখিটা ঢালে কি না স্বর ঘরের মাঝখানে
আর যদি তুমি জানালাটা খোলো
দেখতে পাবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় লাইন
একটা চিঠির কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম
তারা এসেছিল হত্যা আর আগুনের বিভীষিকা নিয়ে তারা ওই দ্বিতীয় লাইনটা মুছে দিয়েছিল
যা ওই ডাকপিয়ন লিখে দিয়েছিল খামের ওপর পশ্চিমের আন্দিজ পর্বতে তারপরে সব শান্ত…
*
ভাড়াবাড়িতে
ভাড়াবাড়িতে
তুমি তোমার কোটটা খুলে
ঝুলিয়ে রাখো জংধরা ধাতব হুকে
ক্লান্ত চামড়ার চটিতে পাদুটো গলিয়ে দাও
একটু থামো এবং তারপর
কাঠের চেয়ারের অপেক্ষার অবসান হয়
তুমি চোখ বন্ধ করো, খোলো
তুমি জানোও না কোন বাড়িতে তুমি বসে
কবিতা লিখছ ঝরে পড়া আসবাবের ওপর…
[১৯৪৯ সালে উত্তর ইরানের রাসত প্রদেশে জন্ম কবি ইরাজ জিয়াজির। পরবর্তীতে তাঁর পরিবার ইস্পাহান শহরে চলে আসে এবং তিনি ‘জং ই ইস্পাহান’ নামে কবি-সাহিত্যিকদের এক বিখ্যাত গোষ্ঠীর সদস্য হন। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। পরবর্তীতে তাঁর নির্বাচিত কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। এইমুহূর্তে ইরানের জনপ্রিয় কবিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর লেখা মূল পার্সি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ করেছেন আলিরেজা আবিজ।]