র্যাচেল কারসনের আশঙ্কা যে কতটা সঠিক, তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে আজকের কৃষককুল। আর রাসায়নিক দৈত্যের হাত থেকে মুক্তি পেতে বাড়ছে জৈব চাষের প্রতি আগ্রহ।
কে এই র্যাচেল কারসন? স্বল্প কথায়, ইনি এক প্রকৃতি-প্রেমিক লেখিকা যাঁর উপন্যাস ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিল মার্কিন রাসায়নিক শিল্পমালিকদের। তাদের হাতে নানাভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। আর তা হওয়ারই কথা। তাঁর উপন্যাস ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’ এমন কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলেছিল, যা ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল রাসায়নিক শিল্পমহলকে। কিন্তু কেন?
এই ইতিহাস জানতে আমাদের চলে যেতে হবে গত শতকের চারের দশকে। ১৯৩৯ সালে ডিডিটি (ডাইক্লোরো ডাইফিনাইল ট্রাইক্লোরো ইথেন)-এর কীটনাশক দক্ষতা আবিষ্কৃত হয়। এর পর গোটা ৪ ও ৫-এর দশক ধরে এর ব্যবহার গাণিতিক হারে বেড়ে চলে। পাশাপাশি বাড়ে কীটনাশক ও সার হিসেবে অন্যান্য রাসায়নিকের ব্যবহার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যথেচ্ছভাবে। আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গড়ে ওঠে রাসায়নিক শিল্প লবি।
রাসায়নিক কীটনাশকের এই যথেচ্ছ ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকটি তুলে ধরেন পরিবেশবিদ ও মার্কিন কৃষি দফতরে কর্মরত র্যাচেল কারসন। ১৯৬২ সালে ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’ নামক একটি বই লেখেন তিনি। বইটিতে তুলে ধরেন পরিবেশের ওপর রাসায়নিকের প্রভাবের দিকটি। স্বভাবতই এই বইটি হয়ে ওঠে রাসায়নিক শিল্প লবির চক্ষুশূল।
বস্তুত এই বইটির পরিপ্রেক্ষিতটি তৈরি হয়েছিল চার বছর আগে, ১৯৫৮ সালে। সেই বছর কারসনের বন্ধু ও পত্রিকা সম্পাদিকা ওলগা ওয়েনস জানালেন এক ভয়ংকর তথ্য। তাঁর খামারবাড়িতে পাখিদের মড়ক লেগেছে। ওলগা ছিলেন পক্ষীপ্রেমিক। তাঁর খামারবাড়িতে ছিল অনেক গাছ। সেই গাছে বসত নানারকম সুন্দর সুন্দর পাখি। হঠাৎই সেইসব পাখিরা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। আর দেখা পাওয়া যায় না তাদের। যদি-বা পাওয়া যায়, তা তাদের মৃতদেহের।
এর তদন্তভার দেওয়া হল কারসনকে। ততদিনে লেখক হিসেবে নামডাক হয়েছে তাঁর। তিনি দেখলেন মশা মারার জন্য ওই খামারবাড়িতে অত্যধিক পরিমাণে ডিডিটি প্রয়োগ করা হয়েছে। সেই ডিডিটি বিষাক্ত করে তুলেছে সেখানকার গাছের ফলগুলিকে। যে ফল খেয়ে মারা পড়েছে পাখিরা। এই অভিজ্ঞতা নিয়েই লেখা ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’। কল্পনা করা হয়েছে এমন এক বসন্তের যেখানে গাছেরা আগের মত সেজে উঠলেও পাখিরা গাইবে না গান। গান গাইতে পারে এমন পাখিই থাকবে না আর।
স্বভাবতই এমন এক বক্তব্যে প্রমাদ গণল রাসায়নিক শিল্প লবি। তারা ভাবল এমন এক বই মৃত্যুঘণ্টা বাজাবে তাদের ব্যবসার। ডিডিটি এবং অন্যান্য রাসায়নিক বিক্রি করে তারা যে আয় করে, তারা আশঙ্কা করল, সেই আয় তাদের কমে যাবে বলে। নিজেদের স্বার্থেই তারা প্রবলভাবে সমালোচনা করল র্যাচেল কারসনের। তাঁকে হিস্টিরিয়া-গ্রস্ত বলতেও ছাড়ল না তারা।
অথচ, ঠিক কী বলেছিলেন র্যাচেল? এই লেখিকার কথায়, ‘রাসায়নিক কীটনাশক কখনওই ব্যবহৃত হবে না, এমন কথা বলিনি। আমি বলেছি এইসব রাসায়নিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের বিরুদ্ধে। অশিক্ষিত মানুষদের হাতে এই সমস্ত বিষাক্ত ও ভয়ংকর রাসায়নিকের যথেচ্ছ ব্যবহার ক্ষতিকারক। মাটি, জল, জীব ও মানুষের ওপর এইসব রাসায়নিকের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন না-হয়েই এই রাসায়নিকগুলির ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি আমরা। আমাদের এই অবিবেচনার জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না আমাদের।’
তাঁর এই সাবধানবাণীতে কান দিইনি আমরা। খেয়ালখুশিমত রাসায়নিক সার আর কীটনাশক ব্যবহার করেছি। তার ফলে যে প্রথম দিকে ফসল উৎপাদন বেড়েছে, তা অস্বীকার করার কিছু নেই। আমরা তার গালভরা নাম দিয়েছি ‘সবুজ বিপ্লব’। কিন্তু খেয়াল করে দেখিনি, এর ফলে কতটা ক্ষতি হল আমাদের।
এই তথাকথিত ‘সবুজ বিপ্লব’ পাঁচের দশকের প্রথমেই শুরু হয়ে যায় আমেরিকা ও ইউরোপের অন্যান্য উন্নত দেশে। ভারতে এর অভিঘাত পড়ে ছয়ের দশকের শেষে। তখন লালবাহাদুর শাস্ত্রীর আমল। তিনি স্লোগান তোলেন ‘জয় কিষাণ’-এর। কিন্তু এই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রভাবিত সবুজ বিপ্লবের ক্ষতিকর দিকটি সাধারণের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় ওই সহস্রাব্দের শেষাশেষিই। একটানা ও অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিকের ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। যার ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় বহুগুণ। এদিকে কৃষিপণ্যের দাম সেভাবে বাড়ে না। ফলে কৃষিতে লাভ যায় কমে। অনেক সময় কৃষকরা তাদের ফসলের দামটাই পান না। লাভ তো দূরস্থান। ফল কৃষক আত্মহত্যা, যা চরম সীমায় পৌঁছায় ২০০৬ সালে। সরকারি খতিয়ান মোতাবেক, সেবছর শুধু মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলেই ১৪৪৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। যদিও এই আত্মহত্যার পিছনে মোনস্যান্টো কোম্পানির বিটি বীজেরও একটি ভূমিকা ছিল। তবে সে আলোচনা এখন নয়। আপাতত আমরা কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত ও যথেচ্ছ ব্যবহারের বিষয়েই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখি।
৭-এর দশকের শুরুতেই মার্কিন দেশে নিষিদ্ধ হয় ডিডিটি। বস্তুত, প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে মার্কিন সরকারি সংস্থা ইপিএ (এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি) এই নিষিদ্ধকরণে বাধ্য হয়। সমালোচকদের বক্তব্য, কিছু কীটকে দমন করতে পারলেও পরিবেশের বিরাট ক্ষতি করে ডিডিটি। পশুপাখিদের মত বন্যপ্রাণদের তো বিনষ্ট করে বটেই, মানুষের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতিসাধন করে এই রাসায়নিকটি। এটি কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ এর থেকে ক্যানসার হতে পারে। বিশেষত, লিভার ক্যানসারের সৃষ্টি করে এই যৌগটি।
আমাদের দেশে কিন্তু ডিডিটি নিষিদ্ধ হয়নি। কৃষিক্ষেত্রে এর প্রয়োগ বন্ধ হয়েছে শুধু। তাও মাত্র ২০০৮ সাল থেকে। শুধু এই কীটনাশকটিই নয়, আরও অনেক রাসায়নিক আমাদের দেশে প্রচলিত আছে, যার প্রয়োগ আমেরিকা সহ অন্যান্য উন্নত দেশে বেআইনি। দেখা গিয়েছে, এর অপপ্রয়োগ মাটিকে শক্ত করে, উর্বরতাশক্তি কমায়, জলদূষণ ঘটায় এবং গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন ঘটিয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ায়।
এত সমালোচনা সত্ত্বেও ভারতে শুধু ডিডিটিই নয়, অনেক ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহৃত হচ্ছে অবাধে। এইসব রাসায়নিকগুলি জমির ক্ষতি করে তো বটেই, আরও অন্যান্য অনেক ক্ষতি করে। রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে গাছের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটলেও এর শিকড় ও কাণ্ড তেমনভাবে বাড়ে না। ফলে আরও বেশি রোগপোকার আক্রমণের শিকার হয়। ফসলও হয় শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। আর রাসায়নিক কীটনাশক ধারাবাহিকভাবে প্রযুক্ত হলে কীটেদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যার ফলে পরে ওই কীটনাশকের কর্মক্ষমতা কমে যায়। এ ছাড়াও তা মানব-স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে, প্রস্টেট ক্যানসার ঘটায়, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দেয়, কৃষকদের বন্ধুপোকাকে নষ্ট করে। এইসব কারণে আমেরিকা সহ উন্নত দেশগুলিতে এগুলি হয় নিষিদ্ধ, নয় নিয়ন্ত্রিত।
এবার বলব আরও একটি কুপ্রভাবের কথা। তা হল মাছেদের ওপর এইসব রাসায়নিকের প্রভাবের কথা। হ্যাঁ, শুধুমাত্র পাখি, পশু বা মানুষ নয়, নদী ও সমুদ্রের মাছেদের ওপরেও প্রভাব ফেলে এই রাসায়নিকগুলি। জমিতে প্রযুক্ত অতিরিক্ত রাসায়নিক নিকাশি নালার মাধ্যমে নদী বা সমুদ্রে এসে পড়ে। তারপর নদীজল বা সমুদ্রজলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ঘটায় জটিল যৌগ। যার ফলে সেখানে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায়। তার প্রভাব পড়ে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর ওপর।
রাসায়নিক শিল্প লবির প্রচার সত্ত্বেও আমেরিকা ও অন্যান্য উন্নত দেশে এই নতুন আহরিত তথ্যগুলির প্রভাব পড়ে। রাশ টানা হয় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে। কিছু রাসায়নিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে সেগুলির প্রয়োগ হতেই থাকে। এর ফল যে কী হয়েছে তা কুড়ি বছর আগে ‘ডাউন টু আর্থ’ পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে।
ভারতের ‘শস্যভাণ্ডার’ বলে প্রচারিত পঞ্জাব রাজ্যটি নিয়ে তিন বার জরিপ করেছে এই পত্রিকা। প্রথম জরিপটি হয় ১৯৯৯ সালে। বলা হয়, সবুজ বিপ্লবের সর্বাধিক সুফল লাভ করেছে এই রাজ্য। ‘ডাউন টু আর্থ’ পত্রিকাটির ১৯৯৯ সালের তথ্য মোতাবেক, প্রবল জলসংকটে ভুগছে এই রাজ্যের ৮০ শতাংশ কৃষিজমি। আগে যেখানে পাতকুয়োয় সামান্য পরিশ্রমেই অঢেল জল পাওয়া যেত, সেখানে ৯৯ সালেই জলস্তর নেমে গিয়েছিল মাটির ৫ থেকে ৬ মিটার নীচে। জল তুলতে ব্যবহার করা হত সাবমার্সিবল পাম্প। যার কারণ ওই সবুজ বিপ্লব। যার ফলে বন্ধ হয়ে গেল ভুট্টা, মকাই ইত্যাদি চিরাচরিত চাষ। এগুলিতে জলের প্রয়োজন ছিল কম। তার বদলে চাষ হতে লাগল দ্রুত ফলনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ধান ও গম। এগুলির চাষে বেশি জল লাগে। সুতরাং জল ব্যবহৃত হতে লাগল অত্যন্ত বেশি হারে। ফলে নামতে লাগল তার স্তর। পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মতে, প্রতি বছর ২৫-৩০ সেন্টিমিটার নামছে জলস্তর। পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে জৈববৈচিত্র্য। আর উৎপাদন খরচ তো বাড়ছেই। পত্রিকাটি দেখাচ্ছে, ৮৪-৮৫ সালে যেখানে এক টন গম উৎপাদন করতে ১৩৭০ টাকা লাগত, ৯৭-৯৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৬০ টাকায়। ধানের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি আরও বেশি।
বস্তুত এইসব সমস্যার জন্য রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চাষের কথা ভাবা হচ্ছে। ভাবা হচ্ছে মানে শুরুই হয়ে গিয়েছে। ২০১৬-র রিপোর্ট মোতাবেক, শুধু আমেরিকাতেই রয়েছে ১৪ হাজার অনুমোদিত জৈব ফার্ম। এই ফার্মগুলির মোট উৎপাদন ৭.৬ বিলিয়ন ডলার। তবে আমাদের দেশে সেভাবে জৈব চাষ শুরু হয়নি। মাত্র ২ শতাংশ জমিতে জৈব পদ্ধতিতে চাষ হয়। অধিকাংশ রাজ্যে জৈব চাষ তদারকির জন্য কোনও সংস্থা নেই। অথচ জৈব চাষের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভারতের নাম। যাঁরা প্রথম জৈব চাষের কথা বলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাওয়ার্ড। ইনি কৃষি আধিকারিক হিসেবে ভারতে আসেন। পর্যবেক্ষণ করেন ভারতীয় কৃষকদের সাবেক কৃষিপ্রথা। যে অভিজ্ঞতার ফসল হল ১৯৪০ সালে প্রকাশিত বই ‘অ্যান এগ্রিকালচারাল টেস্টামেন্ট’। এই বইটি থেকেই আসে জৈব চাষের ধারণা। যা প্রথমে সেভাবে নজর না-কাড়লেও যখন আধুনিক কৃষিপ্রথার ক্ষতিকর দিকগুলি ফুটে উঠল, তখনই চাহিদা বাড়ে এই বইয়ের।
আগামী দিনে ভারতে যে জৈব চাষের পরিধি বাড়বে, তা এখন থেকেই বলা যায়। কারণ, র্যাচেল কারসনের আশঙ্কাগুলি আমাদের দেশেও দৃশ্যমান হচ্ছে। সরকারও জৈব চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য বেশ কিছু কার্যক্রম ঘোষণা করেছে। চাহিদা বাড়ছে জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলের। তবে এই বিষয়ে সমস্যা যে রয়েই গেছে, তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।
এই সমস্যা মূলত তিনটি স্তরে। কৃষক স্তরে, ক্রেতা স্তরে এবং সর্বোপরি সরকারি স্তরে। জৈব চাষের জন্য সবার আগে প্রয়োজন কেঁচো সার তৈরি করা। অথচ তা কীভাবে করতে হয় তা ৯৯ শতাংশ কৃষকই জানেন না। রাসায়নিক সার ও রাসায়নিক কীটনাশক কৃষকমহলে যতটা জনপ্রিয়, তার সিকিভাগ জনপ্রিয়তা নেই জৈব সার ও কীটনাশকের। তারপর জৈব পদ্ধতিতে চাষ করতে গেলে উৎপাদন ২৫ শতাংশ কমে যায়। এইসব কারণে কৃষকরা জৈব চাষে উৎসাহিত হন না। আর এই রাজ্য সহ অধিকাংশ রাজ্যেই কোনও সার্টিফিকেশন এজেন্সি না-থাকার কারণে ক্রেতারা কোন ফসলটি জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত আর কোনটি তা নয়, বুঝতে পারেন না। আমাদের দেশে মোট ১২টি রাজ্যে এই সার্টিফিকেশন এজেন্সি আছে। এগুলি হল মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাত, সিকিম, বিহার, কর্নাটক, ওড়িশা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড় ও তামিলনাড়ু। এইসব রাজ্যে কম হলেও জৈব চাষ হয়। বিশেষ উল্লেখযোগ্য সিকিম। এই রাজ্যে সব জমিতেই জৈব পদ্ধতিতে চাষ হয়। জমিতে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। মনে করা হচ্ছে, বাকি রাজ্যগুলিতে সরকার অনুমোদিত সার্টিফিকেশন এজেন্সি গঠিত হলে, আরও বেশি জমিতে জৈব চাষ হবে।
তবে সবচেয়ে যেটি বেশি দরকার তা হল, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অপকারিতা এবং জৈব পদ্ধতিতে উপলব্ধ ফল ও সবজির পুষ্টিমূল্য সম্বন্ধে মানুষকে সচেতন করা। এই কাজ সরকারি স্তরে করা দরকার। তবে কেবল সরকারের ঘাড়ের ওপর সমস্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া সঠিক মনোভাব নয়। বেসরকারি স্তরেও কাজ হওয়া দরকার। পরিবেশ সচেতন মানুষ ও বিভিন্ন এনজিও এই নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচার করতে পারেন। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকেও এই বিষয়ে এগিয়ে আসা উচিত। সাময়িকী এবং ওয়েবসাইটগুলিও এই নিয়ে প্রচার করতে পারে।
সবাই সচেতন হলে রাসায়নিক-রাহু থেকে আমাদের মুক্তি ঘটবেই।