Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

লেন্সবন্দি এক অনন্য ছবির কথা

ভূপৃষ্ঠের তিন-চতুর্থাংশ জুড়ে থাকা সাগর-মহাসাগরের গভীর জলরাশির নীচে আরও এক ‘অন্য পৃথিবী’। বিপুল বৈচিত্র্যে ভরা সেই ‘অন্য পৃথিবী’-র কতটুকুই বা আমরা জানি?

এই অজানাকে জানার অসীম কৌতূহল মেটাতে গভীর সমুদ্রের তলদেশে ডুব দেন অসমসাহসী আর অনুসন্ধিৎসু ডুবুরি ও আন্ডারওয়াটার ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের দল। এমনই এক নিবেদিতপ্রাণ (dedicated) আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফার এবং ফরাসি বায়োলজিস্ট লরেন্ট ব্যালেস্টা। দীর্ঘদিন যাবৎ ছুটে বেড়াচ্ছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তের সমুদ্রের তলদেশে আর ক্যামেরাবন্দি করে আনছেন গভীর সমুদ্রের তলদেশে জীবজগতের চমকপ্রদ নানান অজানা তথ্য। এমনই এক বিস্ময়কর, অজানা তথ্য সংগ্রহের সাহসী অভিযানের কথা এখানে বলি।

অভিযান স্থল ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার অন্তর্গত দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত ফাকারাভা অ্যাটল (Atoll)। [অ্যাটল => প্রবাল প্রাচীর (reef) বেষ্টিত উপহ্রদ (lagoon); নীচের চিত্রে দ্রষ্টব্য]।

এই প্রবাল প্রাচীর বেষ্টিত উপহ্রদগুলোয় বাস করে ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ/ব্লু টেইলড, এক বিশেষ প্রজাতির মাছ— এরা বাস করে বড় বড় পাথর আর প্রবাল প্রাচীরের (coral reef) খাঁজে খাঁজে। এই ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ মাছেদের mating rituals— মিলন, প্রজনন ও সর্বোপরি প্রসব (spawning) যেন এক চমকপ্রদ গল্পগাথা। আর গভীর জলের অন্ধকারে সংঘটিত এই গল্পগাথাকে ক্যামেরাবন্দি করে এনেছেন লরেন্ট ব্যালেস্টা। এই কাজ অবশ্যই খুব সহজসাধ্য ছিল না। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে (প্রতি জুলাই মাসে) দিনরাত্রি জলের তলায় থেকে অদম্য ধৈর্য্য আর চেষ্টার ফলে অবশেষে লরেন্ট ব্যালেস্টা সমর্থ হয়েছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত দৃশ্যাবলি ক্যামেরাবন্দি করতে। পাঁচ বছরে মোট ৮৫০০০ ক্যামেরা শট আর মোট ৩০০০ ঘণ্টা রাতের অন্ধকারে ২০ মিটার জলের গভীরে কাটিয়ে অবশেষে তাঁর ঈপ্সিত দৃশ্যাবলি লেন্সের ফোকাসবন্দি করতে সমর্থ হয়েছেন নাছোড় ব্যালেস্টা।

ফাকারাভা অ্যাটল।

এই ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ মাছেদের মিলন ঋতুর (mating season) সময় প্রধানত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল। এরপর চন্দ্র চক্র (lunar cycle) অনুসরণ করে জুলাই মাসের শুক্লপক্ষের ঠিক শুরুতে হাজার হাজার এই মাছ দলবদ্ধভাবে যাত্রা শুরু করে এবং এসে জড়ো হতে থাকে ফাকারাভা লেগুন আর সমুদ্রের সংযোগকারী একটা সরু চ্যানেলে। এই স্থান প্রজনন ও প্রসবের জন্য আদর্শ। প্রসবের পরে প্রসবিত ডিমগুলোকে পূর্ণিমার জোয়ারে স্রোতের অভিমুখে ঠেলে নিয়ে যায় চ্যানেল সংলগ্ন লেগুন থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ খোলা সমুদ্রের উপরিভাগে। এই স্থানান্তকরণের কাজে পুরুষ মাছেরাও সমানভাবে অংশগ্রহণ করে সঙ্গিনী স্ত্রী মাছেদের সঙ্গে।

জুলাই মাসের শুক্লপক্ষে পূর্ণিমার দিন যত এগিয়ে আসে স্ত্রী মাছেরা প্রস্তুত হতে থাকে প্রসবের (spawning) জন্য। অবশেষে আসে সেই পূর্ণিমার রাত। সেই রাতে সংঘটিত হয় এক অপরূপ দৃশ্য। রাত যত গভীর হয় স্ত্রী মাছেরা দলে দলে লেগুন সংলগ্ন চ্যানেল থেকে অজস্র ডিম ছাড়তে ছাড়তে (spawning) ওপরে উঠতে থাকে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের উপরিভাগের দিকে নিষিক্তকরণের উদ্দেশে। আর এই স্ত্রী মাছেদের অনুসরণ করে ঠিক পিছন পিছন পুরুষ মাছেরা দলবদ্ধভাবে ছুটতে থাকে। স্ত্রী মাছেদের দ্বারা প্রসবিত রুপোলি ধারার আকারে নির্গত অজস্র ডিমের গুচ্ছকে আগলে নিয়ে এগোতে থাকে পুরুষ মাছের দল।

এরা বাস করে বড় বড় পাথর আর প্রবাল প্রাচীরের খাঁজে খাঁজে।

প্রাণ সৃষ্টির এই অনন্য সুন্দর দৃশ্যকে সফলভাবে লেন্সবন্দি করতে পাঁচ বছর ধরে প্রত্যেক জুলাই মাসে লরেন্ট ও তাঁর সহযোগী দল ফাকারাভা লেগুনে এসে রাতের সমুদ্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জলের তলায় থেকে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। অবশেষে সাফল্য আসে ২০২১-এর জুলাইতে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নিখুঁতভাবে সমগ্র দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধরা অবশেষে সম্ভব হয়।

লরেন্ট ব্যালেস্টা’র এই ফটোগ্রাফ বর্ষসেরা শ্রেষ্ঠ ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি পুরস্কার লাভ করেছে। “Grand Title of Wildlife Photographer of the Year 2021” নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিযোগিতার সম্মানীয় বিচারকমণ্ডলী ৯৫টি দেশ থেকে ৫০০০০ অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে লরেন্ট ব্যলেস্টা’র এই ছবিকে শ্রেষ্ঠতম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ড. নাটালিয়া কুপার, এই প্রতিযোগিতার একজন অন্যতম বিচারক এবং এনভার্নমেন্টাল বায়োলজিস্ট। তাঁর মতে, “This photo captures the chaos as females release the eggs & males rush to fertilize them. We loved the sense of movement & peril in the image.”

বিচারকদের মতে, এই ছবি হাইলাইট করেছে সমুদ্রের বুকে ঘটে চলা অনন্য সুন্দর এবং বাস্তুতন্ত্রের সাম্য রক্ষার সহায়ক এমন এক প্রাকৃতিক ঘটনা, যা ক্রমশ দুর্লভ হয়ে উঠছে। দুর্লভ কেন? হাঁ, এই ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ প্রজাতি বর্তমানে ক্রমশ অস্তিত্ব ‘বিপন্নতার’ (endangered) সম্মুখীন হয়ে চলেছে। এর কারণ overfishing বা অতিরিক্ত মৎস্যশিকার। আসলে mass spawning-এর সময়ে এই ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ মাছেদের এক জায়গায় প্রচুর মাছের সমাবেশ হওয়ার ফলে মৎস্যশিকারীদের কাছে এসময় এরা খুবই সহজলভ্য হয়। আর মৎস্যশিকারীর দল অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে।

এই ক্যামোফ্লেজ গ্রুপ মাছেদের মিলন ঋতুর সময় প্রধানত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল।

আর এই মৎস্যশিকারী (human predators) ছাড়াও আরও এক বিপদ হল এই, যে সরু চ্যানেলে মাছেদের ভিড়, তা আকৃষ্ট করে আরও এক শ্রেণির প্রিডেটর হাঙরের দলকে। দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর জুলাই মাসে mass spawning-এর সময় প্রচুর হাঙর (grey reef shark) এসে জড়ো হয় এখানে শিকারের উদ্দেশ্যে। ঝাঁপিয়ে পড়ে অবাধ আক্রমণ চালায় দলবদ্ধ মাছেদের ওপর।

প্রাণ সৃষ্টির অনন্যসুন্দর দৃশ্যের পাশাপাশি ধ্বংসের এই নির্মম ছবিও ধরা পড়েছে লরেন্টের ক্যামেরার সন্ধানী চোখে।

শুধু তাই নয়, লরেন্টের ক্যামেরার লেন্সের সন্ধানী নিশানায় ধরা দিয়েছে এই শিকারী হাঙরের দলের আরও এক অদ্ভুত আচরণ যা জীববিজ্ঞানীদের কাছে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন। দেখা গিয়েছে, শিকারী হাঙরের দল সংঘবদ্ধভাবে প্রথমে মাছের বিশাল ঝাঁককে ঘিরে ফেলে, তারপর একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ে পর্যুদস্ত করে মাছের ঝাঁককে। কিন্তু এরপরে অদ্ভুতভাবে যা নজরে এসেছে তা হল, হাঙরের দল যদিও শিকার করেছে সংঘবদ্ধভাবে কিন্তু তারপর সেই শিকার শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের মধ্যে সমানভাবে মিলেমিশে ভাগ করে নেওয়া, তা কিন্তু করে না। শিকার শেষে তখন দেখা গিয়েছে নিজেদের মধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয় শিকারের ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে। আর এ সমস্তই বায়োলজিস্ট লরেন্ট-এর ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়েছে নিখুঁতভাবে। হাঙর প্রজাতির এই বিশেষ আচরণ জীববিজ্ঞানীদের কাছে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন, যা এই হাঙর প্রজাতির social interactions-এর বিষয়ে আরও গবেষণা দাবি করে।

লরেন্ট ব্যালেস্টা।

অতএব বিচারকদের মতে, লরেন্ট ব্যালেস্টা’র এই ফটোগ্রাফি শুধুই যে দৃশ্য হিসেবে আকর্ষণীয় তা নয়, তাঁর এই ফটোগ্রাফিতে জলজ জীবদের অনেক ব্যতিক্রমী ব্যবহারও ধরা পড়েছে যা জীববিজ্ঞানীদের যথেষ্ট দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

বিচারকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সনের মতে, এই ফটোগ্রাফি শুধুই একটা ইমেজ নয়। এই ফটোগ্রাফি একাধারে দর্শককে আশ্চর্যান্বিত ও অভিভূত করেছে এবং সেই সঙ্গে কৌতূহলও জাগিয়েছে। এই ফটোগ্রাফির পেছনে যে নিরলস উদ্যম, এনার্জি আর দীর্ঘ সময় ব্যয়িত হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবি রাখে।

লরেন্ট ব্যালেস্টা’র এই ছবিতে মূর্ত হয়েছে গভীর জলের অন্তরালে ‘প্রাণ সৃষ্টি’-র এক অনির্বচনীয় মুহূর্ত, “a magical moment of a truely explosive Creation of Life.”

তথ্যসূত্র:
https://www.ndtv.com> offbeat
https://www.nhm.ac.uk> October
https://www.thenationalnews.co…

চিত্র: গুগল
5 3 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Siddhartha Majumdar
Siddhartha Majumdar
2 years ago

চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় একটি বিষয়ের চমৎকার উপস্থাপনা। সমুদ্রের তলদেশের এক বিশেষ প্রজাতির মাছেদের প্রণ- সৃষ্টির ম্যাজিকেল মুহূর্তের ফোটোগ্রাফির ঘটনার বর্ণনা পাঠককে ঋদ্ধ করবে ও কৌতূহলী করে তুলবে।

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

যত মত তত পথ

বহুদিক দিয়েই একজন স্বতন্ত্র মননের ধর্মীয় সাধক। তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ধারণাতীত, আর তা কেবল তাঁর স্বদেশ বা এই উপমহাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। এবং দিনের পর দিন তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বাড়ছে। শ্রীরামকৃষ্ণ এবং সারদামণি ও স্বামী বিবেকানন্দকে কেন্দ্র করে যে ভাব-আন্দোলন, তার ফলশ্রুতিতে তাঁদের নিয়ে নিয়ত চর্চা ও গবেষণা হয়ে চলেছে। পৃথিবীব্যাপী দুশোর ওপর রামকৃষ্ণ মিশনের কার্যাবলি প্রমাণ করে (প্রতিবছর এর সংখ্যা বাড়ছে), আজকের এই অশান্ত বিশ্বে তাঁরা মানুষের কতখানি আশ্রয়।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব ছয়]

রবীন্দ্রভাবনায় যে নৃত্যধারা গড়ে উঠল তা দেশিবিদেশি নৃত্যের সমন্বয়ে এক মিশ্র নৃত্যধারা, তৎকালীন শিক্ষিত শহুরে বাঙালির সংস্কৃতিতে যা নতুন মাত্রা যোগ করল। নাচের প্রতি একরকম আগ্রহ তৈরি করল, কিছু প্রাচীন সংস্কার ভাঙল, মেয়েরা খানিক শরীরের ভাষা প্রকাশে সক্ষম হল। এ কম বড় পাওনা নয়। আরও একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, শিল্পক্ষেত্রে ভাবের সাথে ভাবনার মিল ঘটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টির প্রচেষ্টা। গতে বাঁধা প্র্যাক্টিস নয়। নিজের গড়ে নেওয়া নাচ নিজের বোধ অনুযায়ী।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব পাঁচ]

বাংলার মাটি থেকে একদা এই সুদূর দ্বীপপুঞ্জে ভেসে যেত আসত সপ্তডিঙা মধুকর। আর রবীন্দ্রনাথের পিতামহ, যাঁর কথা তিনি কোথাও প্রায় উল্লেখই করেন না, সেই দ্বারকানাথ-ও বাংলার তৎকালীন ব্যবসায়ীকুলের মধ্যে প্রধান ছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, একদা তাঁর প্রিয় জ্যোতিদাদাও স্টিমারের ব্যবসা করতে গিয়ে ডুবিয়েছেন ঠাকুর পরিবারের সম্পদ। নিজে রবীন্দ্রনাথ বাণিজ্য সেভাবে না করলেও, জমির সম্পর্কে যুক্ত থাকলেও একদা বাংলার সাম্রাজ্য বিস্তার, বাণিজ্য-বিস্তার কী তাঁরও মাথার মধ্যে ছাপ ফেলে রেখেছিল? তাই ইউরোপ থেকে আনা বাল্মিকী প্রতিভার ধারাকে প্রতিস্থাপন করলেন জাভা বালির কৌমনৃত্য দিয়ে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »