Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

এইসবের শেষে

এইসব অনাসৃষ্টি বিদেয় হলে আমি পুরনো ভাবনাটাকে নতুন করে ভাবব। আমার অনেকদিনের সাধ, সবুজে ঘেরা চারপাশের মাঝে আমার একটা ছোট্ট ঘর হবে। সে ঘর মাটির হলেও মন্দ হবে না। তবে কিনা সাত-পাঁচ ভেবে মনে হচ্ছে, মাটির ঘর করে কাজ নেই। ছোট্ট একটা পাকাবাড়িই নয় হল। পিঁপড়ে, সাপ, ব্যাঙেরা বাড়ির বাইরেই ভাল দেখায়!

হ্যাঁ, তা যা বলছিলাম… বাড়ির সামনে একটা খোলা উঠোন থাকতেই হবে আর বাড়ির ছাদটিতে আমার চড়ার বন্দোবস্ত। ওই উঠোনে আমি পিটুলি গোলার আলপনা দেব। মায়ের মত সুন্দর হবে না জানি। তবে আমি ঠিক শিখে নেব। লক্ষ্মীর পা, লতা-পাতা, সব ফুটে উঠবে আমার আলপনায়। আঙন পেরিয়ে অল্প যে জমি, তাতে আমি মনের মত বাগান করব। ক’টা পাকাপাকি গাছ অবশ্য না লাগালেই নয়। এই যেমন, একটা কৃষ্ণচূড়া, একটা শিউলি, একটা বারোমেসে টগর আর লাল জবার গাছ। কৃষ্ণচূড়াটা না থাকলে আমার উঠোনে ছায়া হবে না যে! আর শিউলি? মাটির ওপর সকাল-সকাল বিছোনো, অমন সুগন্ধী ফুল-বাহারি চাদর দেখার লোভ আমার দ্বারা সামলানো সম্ভব নয়!

ও হ্যাঁ, উঠোনের পেছনদিকটায় একটা পাতিলেবু আর বাতাবি লেবুর গাছ লাগাব। লেবু ফুলের গন্ধ আমার ভারি ভাল লাগে। আর বাতাবি লেবুর গাছটা বড় হয়ে যখন ছাদ পর্যন্ত পৌঁছবে, আমি ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ওটার ঝাঁকালো পাতাগুলোকে খুব করে আদর করে দেব। ছাদে আমি রংবাহারি ফুলের চারা লাগাব। নয়নতারা, বেলফুল, জুঁই ছাড়াও শীতের দিনে চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা আর ডালিয়া শোভা দেবে সেখানে। গরমের দিনে, ছোটবেলায় মালির বাগানে দেখা রংবিরঙ্গী দোপাটির মেলা আবার আমাকে বসাতেই হবে। ছাদের কার্নিশে পাখিদের জল খাবার জন্য একটা জামবাটি রাখব। গরমের হাওয়ায় বাগানের মাধবীলতার গন্ধ নতুন সুর জুড়ে দেবে।

হ্যাঁ, হ্যাঁ, বাগানে একটা আম গাছ তো থাকতেই হবে। সঙ্গে একটা জাম আর পেঁপে গাছ লাগাব। বাহ রে! নইলে আমগাছটার একা লাগবে না বুঝি? উঠোনের ডানদিকে যে একচিলতে চৌকো খোলা জমি, তাতে আমি কাঁচালঙ্কা, পালং শাক, ধনেপাতা, লাউ, কুমড়ো, উচ্ছে, বেগুন আর ভেন্ডি লাগিয়ে দেব। শীতের দিনে মটরলতারও ঠাঁই হবে সেখানে। আরও ক’টা শীত-গ্রীষ্মের শাকসবজি লাগাব আমি, তবে তা কী কী, এখনও পাকা করে ওঠা হয়নি।

আগে ভাবছিলাম একটা পুকুর কাটালে কেমন হয়? তবে এখন মনে হচ্ছে, আমি একা ওই পুকুরের যত্ন এখনই নিতে পারব না। তার চেয়ে বরং ছাদে দাঁড়ালেই ওই যে ‘শর্বরী’ নামের পুকুরটা উত্তর-পূর্ব দিকে দেখা যায়, ওটার বিকাশ প্রকল্পে জোরদার ভাগ নেব। ওই কচুরিপানাগুলোকে হাটিয়ে, তাতে মাছ চাষ করাব, পদ্মবীজ ঢালব। পূর্ণিমার রাতে পদ্মফুলগুলোকে ভারি মিষ্টি দেখাবে। আর বর্ষার জল যখন পদ্মপাতায় টলটল করবে, আমি জানি, আমার খুব ইচ্ছে করবে ওই পাতা থেকে চুমুক দিয়ে জল খেয়ে নিই! আর শীতের সকালে, পদ্ম পাতায় জমা টলটলানো শিশিরে, রবির আলোর রঙের খেলা দেখতে দেখতে কত বেলা গড়িয়ে গেল আমার খেয়ালই থাকবে না।

মাঝেসাঝে আমি ওই পুকুর থেকে একটা করে পদ্মপাতা এনে তাতেই ভাত খাব। কখনও কলাপাতাতেও খাব। সবুজ পাতার ওপর সাদা ভাতে ঘি, পাশে থাকবে ঘরের গাছের গন্ধরাজ লেবু, আলু-ঝিঙে পোস্ত আর বিউলির ডাল। কুমড়ো ভাজা, কুড়ুম কুড়ুম উচ্ছে ভাজা, মাছ ভাজা আর দুটো-ক’টা সবজি দিয়ে করা মাছের ঝোল। গরমের দিনে কাঁচা আমের টক করব। পোস্তর বড়া তো থাকতেই হবে। কখনও-সখনও মুগ-মুসুরিরও বড়া হবে। এক-আধদিন পটল-চিংড়ি রাঁধব।

খাবার পরে মিষ্টি খেতে বেশ লাগে। গোয়ালপাড়া থেকে দুধ আনিয়ে মাঝেসাঝে পায়েস করব, কখনও বা রাবড়ি। আর যখন কিছু বানাতে ইচ্ছে করবে না, সেই সময়ের জন্য আমি আগে থেকেই নারকেল নাড়ু আর দুধের প্যাড়া করে রাখব। ওগুলোকে ছোট বাঁশের চুপড়িতে ভরে, শিকেয় ঝুলিয়ে রাখব। দোলের আগেই আমি একসাজি আগুনরঙা পলাশ কুড়িয়ে আনব। তাকে মাটির হাঁড়িতে ফোটালে, বেশ পাকা রং তৈরি হবে।

গ্রীষ্মের দুপুরে, হঠাৎ করে যখন আমার মন উদাস হবে, আমি ওই দক্ষিণ খোলা জানলায় গিয়ে দাঁড়াব। দূর থেকে কোনও রাখালের বাজানো বাঁশি আমাকে চমকে দেবে। তখনই আমি দেখতে পাব, দুটো কাক ঠোঁটে করে কাঠি আনছে। আমার আম গাছটাতে বাসা বাঁধছে ওরা। চারটে বুলবুলি যে জোরদার মিটিংয়ে ব্যস্ত, আমি বুঝেই যাব ওরাও এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত পাকা করছে। গলায় লালধারী টিয়াটাকে রোজই দেখছি প্রায়। ওমা! সেও আজ এক সাথি এনেছে। ওরা, আম না কৃষ্ণচূড়া? কোনটাতে বসবে তা নিয়ে চর্চা চালাচ্ছে! শালিক, চড়াইয়ের কিচিরমিচির তো লেগেই আছে। শালিকগুলো যা ঝগড়ুটে! যখনতখন উঠোনে হাঁকাহাঁকি করে!

আমি সকাল-বিকেল দোয়েলের শিস শুনব। খোলা আকাশে গোলা পায়রা উড়তে থাকবে। আরও কত নাম না জানা পাখ-পাখালি আসবে-যাবে তার কি কোনও হিসেব আছে? জানলা থেকে আমি, আমার বাগানে বনকুলের চারাগাছটা দেখতে পাব। এ নিশ্চয়ই কোনও আদিবাসী ছোঁড়ার কাজ! বাড়ির সামনে দিয়ে, গোরুর দল নিয়ে যাবার সময়, কখনও বা কুল খাওয়া শেষ হলে, তার বীজ, এদিক পানে ছুড়ে দিয়ে থাকবে। প্রথমে ভাবলাম উপড়ে দেব… না থাক। বনকুল টিয়া পাখিরা বড় ভালবাসে।

বর্ষার দিনে আমি খিচুড়ি রাঁধব। আলু ভাজা, বেগুন ভাজা, আম, তেঁতুলের আচার আর ডিম ভাজা দিয়ে খিচুড়ি খেতে খেতে আমি বৃষ্টি পড়া দেখব। হঠাৎ করে মনে পড়বে, ছাদের উপর শুকনো লঙ্কা বিছিয়ে ছিলাম যে! এক ছুটে গিয়ে ওগুলোকে ভেতরে করব!

ঘরের ভেতর এক গাদা জিনিস, আসবাবপত্র আমার মোটেও পছন্দ নয়। একটু খালি খালি ঘর থাকলে, ফেলে ছড়িয়ে থাকা যায়। দুর্গাপুজোর আগে, আমি নিজেই যাব তাঁতির বাড়ি। দুটো ঢালা পাড় ডুরে শাড়ি কিনব। বেশি কাপড়চোপড়ে কাজ নেই। তবে কিনা ঢালা পাড়ের ডুরে শাড়ি যে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে পরা যাবে তাই।

শীতের দুপুরে আমাকে হয় ছাদে, নয় উঠোনে দেখতে পাবে। হারান চাষি যখন ওর খেত থেকে ঘরের জন্য দু-চারটি ফুলকপি তুলে নিয়ে যাবে, আমাকে উঠোনে দেখে, ডাক দিয়ে জোর করে দুটো ফুলকপি হাতে ধরিয়ে দেবে। আমি শত জোরাজোরি করলেও সে পয়সা নেবে না। বলবে, ‘এর কি কোনও দাম হয় দিদিমণি?’ সত্যিই তো! এর তো কোনও দামই হয় না। আমি ওকে একটু দাঁড়াতে বলব। ঘর থেকে তাড়াতাড়ি নলেন গুড়ের পাটালি এনে, ওর বাচ্চাদের জন্য নিয়ে যেতে বলব। দুগাল হাসির সঙ্গে ফুলকপি আর পাটালির লেনদেন হবে। আবার আমি আমার সেলাই-ফোঁড়াই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ব।

শীতের দুপুরে যেদিন আমি ছাদে যাব, মাদুরটাও সঙ্গে নেব। আমার ফুলকাটা ওয়ার সমেত বালিশটাকেও নিতে ভুলব না। মাদুরের ওপর, উপুড় হয়ে শুয়ে আমি আবার করে বিভূতিভূষণ পড়ব। পাবলো নেরুদা আর ওয়ার্ডসওয়ার্থও পাশে রাখা থাকবে। রবীন্দ্রনাথের পাশে পাওলো কোয়েলহোও রাখা থাকতে পারে। মনের কোনও গ্যারান্টি নেই! আমার পিঠ ছোঁওয়া, ভিজে, কোঁকড়ানো চুল অনেক যত্নে দুপুরের কমলা রোদ শুকিয়ে দেবে। কোনও কোনও দিন গোধূলিবেলায় আমার ছবি আঁকারও ইচ্ছে হতে পারে। তার যোগাড়ও রাখতে হবে। শীতের রাতে আমি শুতে একটুও দেরি করব না। নরম লেপের মধ্যে শুয়ে শুয়েই আমি, পরের দিন হাটে গিয়ে গোটাকতক কম্বল কেনার কথা ভেবে ফেলব। অদূরের আদিবাসী পাড়ায় ক’জন আছে, যাদের ওই কম্বলের দরকার হবে বলেই মনে হয়।

বসন্তের দিনে আমি জানি, আমার কিচ্ছুটি করতে মন বসবে না। ওই কুহু কুহু কোকিল ডাকে আমার মনও যেন হু হু করে উঠবে। গাছের নতুন পাতা, রংবেরঙের ফুলে ভরা কেয়ারি আমার মনোযোগ চাইবে। আমি আবার করে ওদের যত্নে জুটে যাব। একদিন হঠাৎ করে আয়নায় নিজেকে দেখতে দেখতে আমার মন কোথায় যেন পালিয়ে যাবে। এই সব ঝুটঝামেলা মিটে গিয়ে থাকবে তখন। তাই মন স্বাধীন হবে। হ্যাঁ, তা যা বলছিলাম, হারানো মনকে বাগে আনতে আমি চিঠি লিখতে বসব। আজ ওই চিঠি নীল খামেতে ভরতেও ইচ্ছে করবে। তবে ও চিঠি আমি ডাকে দেব না। এমনিই রেখে দেব।

এমনি করেই দিন চলবে। হঠাৎ কোনও এক নভেম্বরের পড়ন্ত বিকেলে, আমার উঠোনপারের গেট খোলার শব্দ শুনতে পাব। কী যে আমার মনে হবে, ঠিক ঠাহর করার আগেই এক পল থমকে যাব। ‘তুমি তুমি’ হবে মনের ভেতর। তারপর যখন এক ছুটে ঘর থেকে বেরতে যাব, দাওয়ার কাছে হোঁচট খাব, ঠিক তখনই তুমিই আমায় সামলে নেবে। তোমার আমার দেখা হবে, অনেক অভিমানের পর তোমায় জড়িয়ে ধরে বলব, ‘এই বুঝি আমার কথা মনে পড়ল?’

চিত্রণ: আদ্রিয়ান ঘোষ
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »