Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

সৌগত পুরকায়স্থর কবিতা

জল আগুন আকাশ বাতাস মাটি

জলের শরীরে ছিল টান
কী শীতল, শান্ত অপার
সাঁতারু তো বেহুঁশ হবেই—
নদী জানে সব পারাপার।
সে দেখেছে জেগে ওঠা চর
ভাঙন জেনেছে দুই পাড়
নদী তাই সতর্ক ভারি—
আবারো কি এসেছে আষাঢ়?

আয় না নদীর কাছে যাই
থাকুক জলেই ফাঁড়া… ছাই!

আগুন সে ছোঁয়নি কখনো
তবু কাছে গেল দ্বিধাহীন
পুড়ে পুড়ে স্বর্ণ যে হবে—
আগুনের কাছে থাক ঋণ!
অথচ সময় দোলাচলে
বয়ে যায়, প্রহরটি কাটে
যাবতীয় বৈভবে যখন
আগুন দাঁড়িয়ে চৌকাঠে!

দ্যাখ, যা জ্বলছে ধিকি ধিকি—
আগুনের পরশমণি কি?

একদিন তারাটিকে দেখে
যে আলোয় সদাগর, বেনে
সমুদ্রে পথ খুঁজেছিল—
চাঁদ বুঝি সে আলোটি চেনে!
ডুবন্ত জাহাজেরা জানে
আকাশে অনেক তারা, ভিড়
তবুও সে চাঁদের নিবিড়ে
জ্বলছে অমোঘ ধ্রুব স্থির।

সে তারাকে দিই আজ নাম—
আলোর মায়ায় জড়ালাম!

দুপুর অসহ, তবু বুঝি
সুর ছিল বাতাসে, উজানে
যে বাতাস অজুত বছর
বয়ে চলে, সকলেই জানে।
ভিখিরি বাউল হল আজ
বাতাসে ওড়াল সংসার
হাত পেতে দাঁড়াল, যেখানে
গানখানি রাখা আছে তার…

শোন, ওই একতারা-গান
ভিখিরির অশ্রুপুরাণ…

কুমোরপাড়ায় ভোর হলে
জেগে ওঠে ঘুমচোখ, মন
সে যে এক উপাসনাঘোর
শিল্পী তো তখন শ্রমণ!
যে মাটির অন্তরে আলো
তাকে ছেনে-ছুঁয়ে জাগে প্রাণ
ছুঁয়ে থাকে সেই ক্ষত যাতে
মৃত্তিকা পুষে অভিমান!

এভাবেই রোজ ঘাম মাটি
ছুঁয়ে গড়ি কার প্রতিমাটি?

চিত্রণ : চিন্ময় মুখোপাধ্যায়

5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Saptarshi Biswas
Saptarshi Biswas
3 years ago

সৌগতদার কবিতা … অনেক অনেক যুগ পরে!!! “আত্মগত স্বপ্নবীজ…” থেকে এই যাত্রা মহীরূহ হোক।

Recent Posts

মো. বাহাউদ্দিন গোলাপ

জীবনানন্দ দাশের সময়চেতনা: পুরাণ, প্রকৃতি ও আধুনিক নিঃসঙ্গতার নন্দনতত্ত্ব

পৌরাণিক, মনস্তাত্ত্বিক ও প্রকৃতিগত সময়চেতনা তাঁকে রবীন্দ্র-পরবর্তী যুগে এক স্থায়ী ও ব্যতিক্রমী মহাকবির আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। তাঁর শিল্পকর্ম আমাদের শেখায়— দ্রুত ধাবমান জীবনের বাইরে দাঁড়িয়ে ধীরে চলতে, নীরবতার গভীরে কান পাততে এবং প্রতিটি ক্ষণিকের মাঝে অনন্তের ইশারাকে খুঁজে পেতে। তাঁর সাহিত্য ভবিষ্যতের প্রতিটি সংবেদনশীল পাঠকের জন্য আধুনিকতার এক অমূল্য পাঠ হয়ে থাকবে, যা মানুষের জীবনকে শিল্প ও প্রকৃতির একাত্মতায় আবিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং প্রমাণ করে দেয়— কাব্যই চূড়ান্ত আশ্রয়, যখন সমস্ত পথ ফুরিয়ে যায়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

জীবনানন্দ: প্রয়াণদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

হেমন্তকাল ও জীবনানন্দ অভিন্ন, ওতপ্রোত ও পরস্পর পরিপূরক। তাঁর কবিতায় বারবার নানা অনুষঙ্গে, বিভঙ্গে ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গে হেমন্তের বসতি যেন। ‘হেমন্তের মাঠে মাঠে ঝরে শুধু/ শিশিরের জল’, ‘ধানক্ষেতে, মাঠে,/ জমিছে ধোঁয়াটে/ ধারালো কুয়াশা’! কুয়াশা আর শিশির, এই দুই অচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হেমন্তের, চিনিয়ে দেন তিনি। ‘চারিদিকে নুয়ে পড়ে ফলেছে ফসল/ তাদের স্তনের থেকে ফোঁটা ফোঁটা পড়িতেছে শিশিরের জল’, হেমন্তকে বাহন করে এই যে প্রকৃতির অপরূপতা মেলে ধরা, তা অন্য কোন বাঙালি কবির আছে?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গা মাঈ কী! জয়!

ঢাকা বা সমগ্র বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোর চাঁদা আদায়ের চল খুব একটা নেই। মণ্ডপে এসেই পাড়ার লোক চাঁদা দেন। জবরদস্তি করে চাঁদা আদায়ের যে বীভৎসতা কলকাতা তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আছে, তা অন্তত ঢাকা আর বরিশালে দেখিনি। পুজোর দিনেও অনেকে এসে প্যান্ডেলের পাশে চাঁদা আদায়কারীদের টেবিলের সামনে এসে চাঁদা দিয়ে যান। পাড়ার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে। স্বেচ্ছায় এসে চাঁদা দিয়ে যান। এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

Read More »
সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

দুর্গাপুজো সর্বদা শারদ নয় পৃথিবীতে যত জনগোষ্ঠী আছে, প্রত্যেকের বার্ষিক ধর্মীয় আনন্দোৎসব আছে। বৌদ্ধদের বুদ্ধপূর্ণিমা, মুসলমানদের ইদ, খ্রিস্টানদের বড়দিন, তেমনই বাঙালি হিন্দুদের দুর্গাপুজো। এখানে মিল

Read More »
নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী

বিশেষ নিবন্ধ: নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী

দুর্গাপূজার আকালিক সমাধান দুর্গাপুজো এলেই এই কথাটা ‘কুইজ’-এর প্রশ্নে থাকবে। অকালবোধন কে করেছেন? রামচন্দ্র অকালবোধন করেছেন— উত্তর এটাই। কিন্তু কেন এটা অকালবোধন, কেন বলব অকালবোধন—

Read More »
তীর্থঙ্কর মৈত্র

অপ্রকাশিত: তীর্থঙ্কর মৈত্রের কবিতা 

হলুদ পাতার ফাঁকে সব স্মৃতি সুখ আনে, সব গান আকাশে মিলায়! হলুদ পাতার ফাঁকে, তোমার প্রেমিক খুঁজে যায় আহত ঘুড়ির স্বপ্ন— অঘ্রাণের বিকেলবেলায়! তবুও মাটির

Read More »