Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

আল্লা বখশ সুমরু: অন্ধকারে আলো

দেশভাগ, সন্দেহ নেই, জাতীয় জীবনে এক অত্যন্ত ঘটনা। সপ্তম শতাব্দী থেকে একসঙ্গে বেড়ে উঠেছে যে দুটি ধর্মের মানুষ, তেরোশো বছর বাদে তাদের ‘ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই’ হওয়ার মত কী এমন ঘটল, তা বোঝা দুষ্কর। আর সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এই দেশভাগের দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় মুসলমানদের ওপর। বলা হয়, মুসলিম লিগ যে পাকিস্তান প্রস্তাব এনেছিল, তার ভিত্তিতেই হয় দেশভাগ।

হ্যাঁ, ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তান প্রস্তাব গ্রহণ করে মুসলিম লিগ। কিন্তু তারাই যে ভারতীয় মুসলমানদের একমাত্র প্রতিনিধি, তা কে বলল? এই নিবন্ধে তুলে ধরা হবে এমন এক মুসলমানকে যিনি দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন নিজের প্রাণ। তিনি আল্লা বখশ সুমরু। এঁর নাম পাকিস্তানে তো বটেই, উচ্চারিত হয় না ভারতেও। অথচ আজকের এই কঠিন সময়ে, যখন হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল সকল মুসলমানকেই দেশদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করতে তৎপর, তখন আল্লা বখশের মত মানুষদের স্মরণ করা দরকার।

সিন্ধুপ্রদেশে সুমরু গোষ্ঠীটি ধনাঢ্য এবং অভিজাত। ১৯০০ সালে এই গোষ্ঠীটির এক পরিবারে আল্লা বখশের জন্ম। তাঁর পরিবারের প্রচুর জমিজমা ও কন্ট্র্যাক্টরির ব্যবসা ছিল। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাঁর রাজনীতিতে পদার্পণ। সিন্ধুপ্রদেশকে বোম্বে প্রেসিডেন্সি থেকে বের করে আনার লড়াইয়ে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। দুবার সিন্ধুপ্রদেশের প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি অসাম্প্রদায়িক দল ইত্তিহাদ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। তবে তাঁর সেরা কাজটি অবশ্যই মাতৃভূমিকে অটুট রাখার লড়াই। এই লড়াইয়ের কারণে মাত্র ৪২-৪৩ বছর বয়সে শহিদত্ব বরণ করতে হয় তাঁকে।

১৯৪০ সালের মার্চ মাসে গৃহীত হয় ‘পাকিস্তান প্রস্তাব’। সোজা কথায়, দেশের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব অংশ কেটে নিয়ে মুসলমানদের জন্য একটি হোমল্যান্ড বানানোর ব্লু প্রিন্ট। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ১৯৪০ সালের এপ্রিল মাসেই এক বিশাল সম্মেলন করেন আল্লা বখশ। নাম ‘আজাদ মুসলিম কনফারেন্স’। চার দিনের এই সম্মেলনে তাঁর নিজের দল ইত্তেহাদ পার্টি তো ছিলই, ছিল আরও ১০টি সংগঠন। এগুলি হল সারা ভারত জমিয়তউল উলেমা, সারা ভারত মোমিন সম্মেলন, সারা ভারত মজলিস-ই-অহরার, সারা ভারত শিয়া রাজনৈতিক সম্মেলন, খুদা ই খিদমতগার, বেঙ্গল কৃষক প্রজা পার্টি, সারা ভারত মুসলিম সংসদীয় বোর্ড, আঞ্জুমান ই ওয়াতন (বালুচিস্তান), সারা ভারত মুসলিম মজলিশ ও জমায়েত আহল ই হাদিশ। আসাম, বাংলা, বালুচিস্তান, হায়দরাবাদ, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ-সহ ভারতের প্রতিটি কোণ থেকে প্রতিনিধিরা যোগ দেন এই সম্মেলনে। এই প্রতিনিধিদের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে তিনটি বিশাল মাপের হোটেল তাঁদের থাকার জন্য সংগঠকদের ভাড়া করতে হয়। আগের মাসে অনুষ্ঠিত মুসলিম লিগের সম্মেলনটির তুলনায় এটি যে অনেক বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক, তা একবাক্যে স্বীকার করে নেয় দিল্লি, বোম্বে-সহ ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলি। আনন্দবাজার তো উচ্ছ্বসিত হয়ে মত দেয় গোলটেবিল বৈঠক-সহ বিভিন্ন বৈঠকে আজাদ মুসলিম কনফারেন্সের প্রতিনিধি রাখার।

অত্যন্ত সাড়া জাগিয়েছিল ‘আজাদ মুসলিম কনফারেন্স’। দেশীয় সংবাদপত্রগুলি যেমন এর প্রশংসা করেছিল, তেমনি ইংরেজ রাজবাহাদুরদেরও বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল এই কনফারেন্স। আর সাধারণ মানুষের মধ্যে জেগেছিল এর প্রতি আগ্রহ। যা এতটাই যে ৫০ হাজার মানুষের উপযোগী প্যান্ডেল করতে হয়। ৫ হাজার মহিলার উপযোগী বিশেষ বন্দোবস্ত করতে হয়। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার প্রাক্তন ছাত্ররা এর ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন।

এই কনফারেন্সের সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আল্লা বখশ প্রথমেই মুসলিম লিগ নেতৃত্বকে ‘অপরিণামদর্শী’ বলে তুলোধনা করেন। দ্বিজাতি তত্ত্ব সম্বন্ধে বলেন, ‘ভারতে হিন্দু ও মুসলমান দুটি পৃথক জাতি— এমন ধারণার ভিত্তি মিথ্যা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রতিটি ভারতীয়র ‘এই মাতৃভূমির ওপর’ সমান অধিকার রয়েছে। তিনি জোর দেন ভারতে গড়ে ওঠা মিশ্র সংস্কৃতির ওপর।

এত সাড়া জাগিয়েও দেশভাগ-বিরোধী মুসলমানদের এই সংগঠনের কাজে ভাটা পড়ে যায়। ১৯৪১ সালের ৭ মার্চ সিন্ধুপ্রদেশের প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পান আল্লা বখশ। তখন ওই রাজ্যের গভর্নর ছিলেন হিউঘ ডৌ (Hugh Dow)। এই ব্রিটিশ রাজকর্মচারীটির সঙ্গে আল্লা বখশের সংঘাত সর্বজনবিদিত। ১৯৪২ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন। ১০ সেপ্টেম্বর হাউজ অব কমন্সে এই আন্দোলনের নিন্দা করেন উইনস্টন চার্চিল। এর প্রতিবাদে আল্লা বখশ ত্যাগ করেন ব্রিটিশের দেওয়া ‘খান বাহাদুর’ ও ‘ওবিই’ খেতাব (১৯ সেপ্টেম্বর)। এর পর ১০ অক্টোবর বরখাস্ত করা হয় তাঁর সরকারকে। যে পদক্ষেপের নিন্দা করেছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমও। আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, আল্লা বখশ সরকারের অপসারণের পর দায়িত্ব নেয় সাভারকরের কলকাঠি নাড়ানো মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভার কোয়ালিশন সরকার। এই তথ্যই বলে দেয়, ইংরেজ সরকারের গুডবুকে ছিল ঠিক কারা। আর কারাই বা বিশ্বস্ত ছিলেন মাতৃভূমির প্রতি।

এর ঠিক সাত মাস বাদেই ঘটে সেই হৃদয়বিদারক ঘটনা, যাকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে আখ্যায়িত করেছিল প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্র ‘হিন্দুস্তান টাইমস’। ১৯৪৩ সালের ১৪ মে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করা হয় আল্লা বখশকে। অভিযোগের আঙুল ওঠে মুসলিম লিগ নেতৃত্বের দিকে। অভিযোগ অস্বীকার করে মুসলিম লিগ। তারা দোষ চাপায় উপজাতি সম্প্রদায় হুরের ঘাড়ে। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে বিবৃতি প্রকাশ করে তারা। তবে সেরা কথাটি বলে লাহোর থেকে প্রকাশিত ইংরাজি দৈনিক ‘দ্য ট্রিবিউন’। এই পত্রিকার কথায়—

মি. আল্লা বখশের হত্যাকাণ্ডের জন্য যারা
প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ী, তারা ছাড়া আরও
অনেককেই এই হত্যার জন্য জবাবদিহি
করতে হবে।

আর লাহোর থেকে প্রকাশিত বিশিষ্ট উর্দু দৈনিক ‘জমিনদার’-এর কথায়—

এটা ছিল যুক্তি ও বুলেটের দ্বৈরথ।… যদি
অস্ত্রকে এক বার যুক্তির জায়গায় বসাতে
হয়, তা হলে কোনও দলের নেতাই আর
সুরক্ষিত থাকবেন না।

এই বুলেটেই বার বার রক্তাক্ত হয়েছে এই উপমহাদেশের রাজনীতি। বেড়ে উঠেছে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে অসহিষ্ণুতা। ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মকে টেনে আনা হচ্ছে রাজনীতির আঙিনায়। পয়দা করা হচ্ছে অবিশ্বাসের বাতাবরণ। এই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লা বখশের মত মানুষদের স্মরণ করা অতীব জরুরি।

তথ্যঋণ: ভারতভাগ বিরোধী মুসলিম জনমত— মূল রচনা শামসুল ইসলাম, ভাষান্তর চিররঞ্জন সেনগুপ্ত

চিত্র: গুগল
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঢাকায় বিবেকানন্দ: ১২৫ বছর পূর্তি

ঢাকায় এসে খুব বেশি বক্তৃতা দেননি তিনি। সম্ভবত তাঁর শারীরিক অসুস্থতাই তার কারণ। মার্চের তিরিশ তারিখে রমাকান্ত নন্দীর সভাপতিত্বে ঢাকার বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয়) ভাষণ দেন। বিষয় ‘আমি কী দেখেছি’। শ্রোতার সংখ্যা ছিল দু’হাজার। পরদিন অর্থাৎ ৩১.০৩-এ বক্তৃতা দেন পোগোজ স্কুলে, তিন হাজার দর্শকের সামনে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম’। দুটি সভাতেই শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ, আপ্লুত ও উদ্বুদ্ধ।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »