Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

বাবা আলাউদ্দীন খান: ঢাকা-কলকাতা-মাইহার সঙ্গীত সফর

ঐতিহ্যশালী এই ভারতবর্ষের সঙ্গীতজগতে বহু নক্ষত্রের জন্ম হয়েছে। তাঁরা তাঁদের নিজেদের প্রতিভার মাধ্যমে ভারতবর্ষের সঙ্গীতশাস্ত্রকে বিশ্বের দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বামী হরিদাস, মিঞা তানসেন, পুরন্দর দাস প্রমুখ সঙ্গীত বিশারদের নাম ভারতবর্ষের সঙ্গীত জগতের সঙ্গে সমার্থক হয়ে গিয়েছে। আর ভারতবর্ষের চিরন্তন সঙ্গীত জগতের হয়তো শেষ সাধক বাবা আলাউদ্দীন খান।

একটা কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভারতের মধ্যে ঐক্য থাকলেও উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের সঙ্গীতের মধ্যে একটি চোখে পড়বার মত বৈপরীত্য আছে। সঙ্গীত ভাষার মতই প্রবাহিত হয়। উত্তর ভারতের ভাষাতে যেমন বিদেশী প্রভাব লক্ষ্য করা যায়, তেমনি উত্তর ভারতের সঙ্গীতেও লক্ষ্য করা যায়। সে জায়গা থেকে আলাদা হল দক্ষিণ ভারতের ভাষা ও সঙ্গীত। স্বভাবতই ইংরেজ শাসনের অনেক আগে থেকেই ভারতবর্ষে আসা শক, হুনদের পাশে পারসি, আরব ও আফগান প্রভাব ভারতের সঙ্গীত জগতে এসে পড়ে। পরবর্তীকালে যা ভারতীয় সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করে। বাবা আলাউদ্দীন খান এই সমৃদ্ধ ভারতীয় সঙ্গীতের প্রতিনিধি।

সঙ্গীত জগতে তাঁর পরিচয় শুধু ‘বাবা’ নামে। বাবা আলাউদ্দীনের জন্ম হয় বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার শিবপুর গ্রামে, ১৮৭১ সালে। তাঁর বাবার নাম ছিল সাধু মিঞা, মায়ের নাম হরসুন্দরী দেবী। সাধু মিঞার পূর্বপুরুষ হিন্দু ছিলেন। যতদূর জানা যায় আলাউদ্দীনের এক পূর্বপুরুষের নাম ছিল ছিল দীননাথ দেব শর্মা, কিন্তু তাঁর সন্তান পরবর্তীকালে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন, অবশ্য ইসলাম ধর্মালম্বী হলেও আলাউদ্দীন নিয়মিত কালীপূজা করতেন। আলাউদ্দীনের নিজের ভাই ফকির আফতাবউদ্দীন একজন কালীসাধক ছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁর অনেক হিন্দু শিষ্যও ছিল। দাদা আফতাবউদ্দীন নিজে হারমোনিয়াম, বাঁশি, পাখোয়াজ, তবলা, দোতারা সহ অনেক রকমের সঙ্গীতযন্ত্র বাজাতে পারতেন। আলাউদ্দীনের বাবাও একজন সেতারবাদক ছিলেন। বাবা ও দাদার কাছ থেকে বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনতে শুনতে শৈশবেই আলাউদ্দীনের সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহের সৃষ্টি হয়।

বাবা ওস্তাদ আলাউদ্দীন খান।

ছোট থেকেই বাবা আলাউদ্দীনের (ডাক নাম আলাম) পড়াশোনাতে বিশেষ মন ছিল না। বেশিরভাগ সময়েই গ্রামের শিব বা কালী মন্দিরে কীর্তন বা গান শুনতে চলে যেতেন অথবা দাদা আফতাবউদ্দীন যেখানে তবলা-পাখোয়াজ শিখতেন সেখানে চলে যেতেন। দুঃখের বিষয়, বাবা ও দাদা দুজনেই সঙ্গীত অনুরাগী হলেও বাবা আলাউদ্দিনের সঙ্গীত শিক্ষার পথ সুগম হয়নি। মা হরসুন্দরী ছেলের স্কুল কামাই করে সঙ্গীত শুনতে চলে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এমনকি একবার তিনদিন খাওয়াও বন্ধ করে দেন ছেলের। কিন্তু তাঁর সঙ্গীত প্রতিভাকে কোনও অবস্থাতেই বন্ধ করে রাখা যায়নি, বরং আট বছর বয়সে সঙ্গীত শিক্ষার জন্যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বাড়ি থেকে পালিয়ে ঘটনাচক্রে এক যাত্রাদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। তাদের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরতে থাকেন। ওই যাত্রাদলে থাকাকালীন বাবা আলাউদ্দীন তবলা, পাখোয়াজ, হারমোনিয়াম বাজাতে শেখেন। যদিও সঙ্গীত সাগরের সন্ধানী সাধককে শুধুমাত্র তবলা, পাখোয়াজের মধ্যেই আবদ্ধ রাখা যায় কি? তাই সেই যাত্রাদলকে ছেড়ে আবার বেরিয়ে পড়েন।

ঢাকা থেকে আলাউদ্দীন কলকাতা চলে আসেন। কলকাতা শহরে তাঁর না ছিল কোনও চেনাশোনা, না ছিল থাকবার আস্তানা। স্বভাবতই এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াতে আরম্ভ করেন। খিদে পেলে শুধু গঙ্গার জল পান করতেন বা কাঙালি ভোজনের জায়গাতে চলে যেতেন। রাতে কারও বারান্দাতে শুয়ে থাকতেন। আর দিনে শহরটার এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্তে ঘুরে বেড়াতেন। কলকাতা শহরে টুকটাক কাজ করে কিছু টাকাও জমিয়েছিলেন, যদিও সেসব টাকা চুরি হয়ে যায়। শেষকালে কলকাতাতেই কেদারনাথ নামে এক দয়ালু চিকিৎসকের সাহায্যে গোপাল চক্রবর্তী (যিনি নুলো গোপাল নামে পরিচিত ছিলেন) নামের এক গোঁড়া ব্রাহ্মণের কাছে প্রসন্ন বিশ্বাস ছদ্মনামে সঙ্গীত শেখা আরম্ভ করেন। তাঁর কাছে বাবা প্রায় সাত বছর সঙ্গীত শিক্ষা নেন। এই নুলো গোপাল বা গোপাল চক্রবর্তী রাজা জ্যোতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের বিশেষ প্রিয়জন ছিলেন। এই সময় বাবা বেশ কিছু অনুষ্ঠানও করেন।

গোপাল চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর বাবা আলাউদ্দীন পুনরায় প্রসন্ন বিশ্বাস ছদ্মনামে গিরিশ থিয়েটারে কাজ আরম্ভ করেন। এই সময় বিবেকানন্দের ভাই হবু দত্তের সঙ্গে তাঁর বিশেষ পরিচয় ঘটে। হবু দত্ত সেই সময় একটি অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করতেন। আলাউদ্দীনের এই সময় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্ম্য সঙ্গীত সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ হয়। একবার কোনও সঙ্গীত শুনেই বাবা তার নোটেশন তৈরি করে নিতে পারতেন। ‘ব্যান্ড’ তৈরির পরিকল্পনাও এই সময়কার। আলাউদ্দীন লোবো নামের একজন অ্যাংলো ইণ্ডিয়ানের কাছ থেকে বেহালা, আনন্দবাবু নামে একজনের কাছ থেকে তবলা ও মৃদঙ্গ, মেছুয়াবাজারের হাজারিলাল ওস্তাদের কাছ থেকে সানাই, টিকারা ও নাকারা বাজনা শেখেন। এই সময় থেকেই বেশি করে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান আরম্ভ করেন। এইরকম এক অনুষ্ঠানেই আলাউদ্দীনের সঙ্গে তাঁর দাদা ফকির আফতাবউদ্দীনের দেখা হয়ে যায়, তাঁকে নিজের ঘরে নিয়ে আসেন। কিছু দিনের মধ্যে আলাউদ্দীনের সঙ্গে মদনমঞ্জরির প্রথম বিবাহও হয়, কিন্তু সঙ্গীত জগতের অমোঘ আকর্ষণে আলাউদ্দীন আবার ঘর ছাড়েন।

Advertisement
বাবা ওস্তাদ আলাউদ্দীন খানের সঙ্গে পণ্ডিত রবিশংকর ও আলি আকবর খান।

ঘুরতে ঘুরতে উপস্থিত হন রাজা জগৎকিশোর আচার্যের রাজ্যে। রাজার অনুরোধে এরপর প্রখ্যাত সরোদবাদক আহমেদ আলির কাছে বাবা আলাউদ্দীনের সরোদ শিক্ষা আরম্ভ হয়। আলাউদ্দীনের বাজনা আহমেদ আলিকেও মুগ্ধ করত। আহমেদ আলির সঙ্গে বাবা আলাউদ্দীন বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে যেতেন। তবে আহমেদ আলির মাত্রাধিক্য সুরাসক্তি বাবা আলাউদ্দীনকে মানসিকভাবে আঘাত করে। অল্পদিনের মধ্যেই আলাউদ্দীন তাঁর নিজের ঠাকুমার নির্দেশমত ওস্তাদ আহমেদ আলিকে ছেড়ে রামপুরে ওস্তাদ উজির আলির কাছে সঙ্গীতের তালিম নেবার জন্যে নাড়া বাঁধেন। এই সময় ধ্রুপদ, ধামার, খেয়াল, টপ্পা, ঠুমরির সঙ্গে সুরবাহার, সেতার, সারেঙ্গি, বাঁশি প্রভৃতি বিভিন্ন রকমের সঙ্গীতযন্ত্র শিখতে আরম্ভ করেন ও অল্পকালের মধ্যে যথেষ্ট দক্ষ হয়ে ওঠেন। রামপুরের নবাব হামিদ আলি খান বাহাদুরের পৃষ্টপোষকতায় রামপুর ব্যান্ড নামে একটি ব্যান্ডে মাসে পঁচিশ টাকা মাইনেতে বেহালাবাদক হিসাবে যোগ দেন।

রামপুরে থাকবার সময় সঙ্গীতের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আরম্ভ হয়। বাড়ির লোকেরা রামপুরে থাকবার খবর পান, এবং তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন করা হয়। আলাউদ্দীনের দ্বিতীয় বউ ছিলেন খুব সুন্দরী, কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ের পরেও আলাউদ্দীনের সঙ্গীত শিক্ষার ইচ্ছে কণামাত্রও কমে যায়নি, এমনকি বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই আলাউদ্দীন আবার রামপুলে চলে যান। রামপুরে পৌঁছানোর কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যার খবর আসে। তবে এসবের পরেও আলাউদ্দীনের সঙ্গীত শিক্ষায় কোনও ছেদ পড়ে না। এরপরেই গুরু ওয়াজির আলির আদেশে ও নির্দেশমত সঙ্গীতকে সারা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবার মহান দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। শ্যামলাল খেত্রি নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে মাইহার নামের এক শহরে মাইহারের রাজা ব্রিজি নারায়ণ সিংজির রাজদরবারে সভাগায়ক হিসাবে যোগ দেন এবং আমৃত্যু সেই মাইহারের মা সারদার (মা কালী) পায়ের নিচেই জীবন উৎসর্গ করেন।

এটা বলা হয়, ভারতীয় রাগসঙ্গীত পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ দিকে পর্দার আড়ালে চলে যায়। সঙ্গীতের নবজীবন আসে গোয়ালিয়রের মহারাজা মানসিংহ ও মহারানি মৃগনয়নীর হাত ধরে। পরে মহারানির মৃত্যু হলে ওই রাজ্যে তানসেনের সঙ্গীত চর্চা আরম্ভ হয়। সঙ্গীত জগতে তানসেনের অবদান এখন নতুন করে বলবার কিছু নেই। তানসেনের মৃত্যুর পর তাঁর চারপু্ত্রের মধ্যে (সুরাট সেন, সরত সেন, তরঙ্গ সেন ও বিলাস খান) ছোটপুত্র বিলাস খান সঙ্গীতচর্চার ঐতিহ্য সারা ভারতে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিলাস খানের উত্তরাধিকারীরা রাবাইয়া ঘরানা এবং অন্য সন্তানদের উত্তরাধিকারী সেনিয়া ঘরানা হিসেবে পরিচিত হন। তানসেনের কন্যা সরস্বতীর হাত ধরেই বীনকর ঘরানার সূত্রপাত। ওস্তাদ আলাউদ্দীন খানের অন্যতম গুরু ওস্তাদ ওয়াজির খান এই ঘরানার অর্ন্তগত। তাই আলাউদ্দীনের খানের মধ্যেও সেই তানসেনের ঘরানার ছাপ লক্ষ্য করা যায়।

আধুনিক ভারতীয় সঙ্গীত জগতে আলাউদ্দীন খানের মত সঙ্গীত প্রতিভা না জন্মেছে, না আর জন্মাবে। ভাবতেই অবাক লাগে, কীভাবে একজন মানুষ একা ধ্রুপদ, ধামার, খেয়াল, তারানা, তিরবাট, হলকের মত তানে নিজস্ব প্রতিভার নিদর্শন রাখবার পাশে তবলা, খোল, পাখোয়াজের সঙ্গে সরোদ, সুরবাহার, সেতার এমনকি সানাইও সমান দক্ষতায় বাজাতে পারতেন। তালযন্ত্রে তাঁর প্রতিভা দেখেই তাঁকে ‘তালবাজ’ উপাধিও দেওয়া হয়। বাবা আলাউদ্দিন হেমন্ত, হেমবেহাগ, প্রভাকাল সুভারথি, কৌশিক, ভৈরব রাগিণী এবং অনেক তাল সৃষ্টি করেন। ‘মাইহার ব্যান্ড’ অর্কেস্ট্রা জগতে বিপ্লব নিয়ে আসে। চন্দ্রসারং ও তালতরঙ্গ প্রভৃতি বেশ কিছু সঙ্গীত যন্ত্রও তিনি তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন ভারতীয় সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ কারিগর। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, তিমিরবরণ প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত শিল্পীদের গুরু বাবা আলাউদ্দীন। এতসব বলবার পরেও আর একটা কথা না বলে পারা যায় না, এই শিল্পী তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি কোনওটাই পাননি। হয়তো এটাই আমাদের দেশের ঐতিহ্য।

চিত্র: গুগল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 1 =

Recent Posts

মো. বাহাউদ্দিন গোলাপ

জীবনচক্রের মহাকাব্য নবান্ন: শ্রম, প্রকৃতি ও নবজন্মের দ্বান্দ্বিকতা

নবান্ন। এটি কেবল একটি ঋতুভিত্তিক পার্বণ নয়; এটি সেই বৈদিক পূর্ব কাল থেকে ঐতিহ্যের নিরবচ্ছিন্ন ধারায় (যা প্রাচীন পুথি ও পাল আমলের লোক-আচারে চিত্রিত) এই সুবিস্তীর্ণ বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষের ‘অন্নময় ব্রহ্মের’ প্রতি নিবেদিত এক গভীর নান্দনিক অর্ঘ্য, যেখানে লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে শস্যের অধিষ্ঠাত্রী লোকদেবতার আহ্বানও লুকিয়ে থাকে। নবান্ন হল জীবন ও প্রকৃতির এক বিশাল মহাকাব্য, যা মানুষ, তার ধৈর্য, শ্রম এবং প্রকৃতির উদারতাকে এক মঞ্চে তুলে ধরে মানব-অস্তিত্বের শ্রম-মহিমা ঘোষণা করে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব বসু: কালে কালান্তরে

বুদ্ধদেব বসুর অন্যতম অবদান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য (Comparative Literature) বিষয়টির প্রবর্তন। সারা ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়-মানে এ বিষয়ে পড়ানোর সূচনা তাঁর মাধ্যমেই হয়েছিল। এর ফল হয়েছিল সুদূরপ্রসারী। এর ফলে তিনি যে বেশ কয়েকজন সার্থক আন্তর্জাতিক সাহিত্যবোধসম্পন্ন সাহিত্যিক তৈরি করেছিলেন তা-ই নয়, বিশ্বসাহিত্যের বহু ধ্রুপদী রচনা বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে তাঁরা বাংলা অনুবাদসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। অনুবাদকদের মধ্যে কয়েকজন হলেন নবনীতা দেবসেন, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবীর রায়চৌধুরী প্রমুখ। এবং স্বয়ং বুদ্ধদেব।

Read More »
দেবময় ঘোষ

দেবময় ঘোষের ছোটগল্প

দরজায় আটকানো কাগজটার থেকে চোখ সরিয়ে নিল বিজয়া। ওসব আইনের বুলি তার মুখস্থ। নতুন করে আর শেখার কিছু নেই। এরপর, লিফটের দিকে না গিয়ে সে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে উঠে বসল গাড়িতে। চোখের সামনে পরপর ভেসে উঠছে স্মৃতির জলছবি। নিজের সুখের ঘরের দুয়ারে দাঁড়িয়ে ‘ডিফল্ট ইএমআই’-এর নোটিস পড়তে মনের জোর চাই। অনেক কষ্ট করে সে দৃশ্য দেখে নিচে নেমে আসতে হল বিজয়াকে।

Read More »
সব্যসাচী সরকার

তালিবানি কবিতাগুচ্ছ

তালিবান। জঙ্গিগোষ্ঠী বলেই দুনিয়াজোড়া ডাক। আফগানিস্তানের ঊষর মরুভূমি, সশস্ত্র যোদ্ধা চলেছে হননের উদ্দেশ্যে। মানে, স্বাধীন হতে… দিনান্তে তাঁদের কেউ কেউ কবিতা লিখতেন। ২০১২ সালে লন্ডনের প্রকাশনা C. Hurst & Co Publishers Ltd প্রথম সংকলন প্রকাশ করে ‘Poetry of the Taliban’। সেই সম্ভার থেকে নির্বাচিত তিনটি কবিতার অনুবাদ।

Read More »
নিখিল চিত্রকর

নিখিল চিত্রকরের কবিতাগুচ্ছ

দূর পাহাড়ের গায়ে ডানা মেলে/ বসে আছে একটুকরো মেঘ। বৈরাগী প্রজাপতি।/ সন্ন্যাস-মৌনতা ভেঙে যে পাহাড় একদিন/ অশ্রাব্য-মুখর হবে, ছল-কোলাহলে ভেসে যাবে তার/ ভার্জিন-ফুলগোছা, হয়তো বা কোনও খরস্রোতা/ শুকিয়ে শুকিয়ে হবে কাঠ,/ অনভিপ্রেত প্রত্যয়-অসদ্গতি!

Read More »
শুভ্র মুখোপাধ্যায়

নগর জীবন ছবির মতন হয়তো

আরও উপযুক্ত, আরও আরও সাশ্রয়ী, এসবের টানে প্রযুক্তি গবেষণা এগিয়ে চলে। সময়ের উদ্বর্তনে পুরনো সে-সব আলোর অনেকেই আজ আর নেই। নিয়ন আলো কিন্তু যাই যাই করে আজও পুরোপুরি যেতে পারেনি। এই এলইডি আলোর দাপটের সময়কালেও।

Read More »