Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

আইম্যাক্স ক্যামেরার জাদু

ভারতীয় সিনেমায় ইতিহাসে প্রথমবার এক অত্যাধুনিক ক্যামেরার ব্যবহার হয়েছে। জানলে অবাক হবেন, এই ক্যামেরার দাম এতটাই যে, এই ক্যামেরা কেনার সামর্থ্য পৃথিবীতে অনেকেরই নেই। এই ক্যামেরার নাম হচ্ছে ‘IMAX’। সারা পৃথিবীব্যাপী মাত্র ২৬টি ক্যামেরা রয়েছে আইম্যাক্সের। অত্যধিক দামের কারণে এই ক্যামেরা বিক্রি করা হয় না। দৈনিক বা সাপ্তাহিক হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়। ভারতে ‘পাঠান’-ই প্রথম ছবি, যা আইম্যাক্স ক্যামেরা দিয়ে শুট হয়েছে। এর আগে ভারতীয় অন্য কোনও মুভিতে এই ক্যামেরা ব্যবহার হয়নি।

যেহেতু আইম্যাক্স ক্যামেরা সাধারণ্যে বিক্রি করা হয় না, তাই এর দামও জানায়নি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তবে এই ক্যামেরার ইন্সুরেন্স খরচ থেকে অনুমান করা যেতে পারে এই ক্যামেরার দাম। এই ক্যামেরা একবার ইন্সুরেন্স করাতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এই ক্যামেরার দাম কত হতে পারে। আপনি শুধুমাত্র এই ক্যামেরাগুলিকে প্রতিদিন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ভাড়া নিতে পারেন, তবে এ শুধুমাত্র ক্যামেরা বডিটুকুর ভাড়া। সম্পূর্ণ ক্যামেরা প্যাকেজের মূল্য পৃথক।

চলুন, আইম্যাক্স ক্যামেরার সম্পর্কে আরও অবাক করা তথ্য জেনে নিই আজকের এই প্রতিবেদনে। আইম্যাক্স মূলত দুই ধরনের হতে পারে। প্রথমত আইম্যাক্স ক্যামেরা এবং দ্বিতীয়ত IMAX সিনেমা হল। ভারতে বহু আইম্যাক্স সিনেমা হল থাকলেও কোনও আইম্যাক্স ক্যামেরা নেই। ইউরোপিয়ান কান্ট্রি থেকে এই ক্যামেরা ভাড়া করে নিয়ে আসা হয় ভারতে। আর পাঠান-এর শুটিংয়ের জন্য প্রথম ভারতে আনা হয় আইম্যাক্স ক্যামেরা।

যেখানে সাধারণ ক্যামেরা 4K থেকে 8K-তে শুট করে, সেখানে আইম্যাক্স ক্যামেরা 18K-তে শুট করে। তাহলে বুঝতে পারছেন ছবির কোয়ালিটি কতটা সুন্দর হবে। যেখানে অন্যান্য ক্যামেরার ওজন ১৫ থেকে ২০ কেজির মধ্যে হয়ে থাকে, সেখানে আইম্যাক্স ক্যামেরার ওজন হয়ে থাকে ১১০ কেজির ওপরে। এই ক্যামেরা সামলানোর জন্য বিশেষ ক্রেন অথবা বেশ কয়েকজন মানুষের প্রয়োজন হয়।

আপনি যদি একবার আইম্যাক্স ক্যামেরায় শুট করা কোনও মুভি আইম্যাক্স সিনেমা হলে বসে দেখেন, তাহলে আপনার অনুভব হবে সত্যিকারেই অভাবনীয়, মনে হবে আপনার সামনে সব ঘটনাগুলো ঘটছে। মনে করবেন আপনি মুভির মধ্যে নিজেই ঢুকে গিয়েছেন। আইম্যাক্স সিনেমা হলে মুভি দেখার পর আর কখনওই সাধারণ সিনেমা হলে মুভি দেখতে চাইবেন না।

আইম্যাক্স-এর অ্যাসপেক্ট রেশিও হল 1.43:1, অর্থাৎ আইম্যাক্স ক্যামেরা দিয়ে ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের শুটিং হয়। আর যখন সিনেমা হলে চালানো হয়, তখন এটাকে দেখতে অনেকটা চৌকো আকৃতির মনে হয়। আইমেক্স ক্যামেরায় 70mm-এ শুটিং করা হয়। আইম্যাক্স ক্যামেরা দিয়ে শুটিং হয়েছে হলিউড মুভি ‘Apollo 13’, যা ১৯৯৫ সালের রিলিজ হয়েছিল। এ ছাড়াও ‘Hubble’, ‘Mission: Impossible’, ‘Star Wars’, ‘The Avengers’ ইত্যাদি মুভিতেও এই আইম্যাক্সের জাদু দেখা গিয়েছে।

চিত্র: গুগল
5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

স্বামী বিবেকানন্দ : প্রয়াণদিনে স্মরণ

বিবেকানন্দই সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক বাঙালি তথা ভারতীয়। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ১৯১২-পর্বে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাওয়ার পর, এবং তার পরের বছর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু এর প্রায় কুড়ি বছর পূর্বেই বিবেকানন্দ শিকাগো-বক্তৃতা ও আমেরিকা-ইয়োরোপে এক নাগাড়ে প্রথম দফায় চার বছর থাকার সুবাদে আমেরিকার বিদ্বজ্জনমহলে যেমন, তেমনই জার্মানির মাক্সমুলার, ফ্রান্সের রোমাঁ রোলাঁ, রাশিয়ার টলস্টয় প্রমুখের শ্রদ্ধা এবং মনোযোগ আদায় করেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

প্রফুল্ল রায়: ব্রাত্য সময়ের কথাকার

প্রফুল্ল রায় নাকি অতীশ দীপঙ্করের বংশের। দেশভাগের অভিশাপেই দেশছাড়া হতে হয় তাঁকে, ১৯৫০-এ। একটা বিধুর বিষয় আমরা লক্ষ্য না করে পারি না। দেশভাগ সুনীল-শ্যামল-মহাশ্বেতা-শীর্ষেন্দু-অতীনদের কেবল ভূমিচ্যুত করেই ছাড়ল না, এমনকি তাঁদের কারুবাসনাকেও অন্যতর রূপ দেওয়ালো। দেশভাগ না হলে আমরা সুনীলের হাতে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, শীর্ষেন্দুর ‘দূরবীণ’ বা প্রফুল্ল রায়ের ‘পূর্বপার্বতী’ পেতাম না, যেমন পেতাম না শওকত ওসমানের ‘কর্ণফুলি’ বা হাসান আজিজুল হকের ‘আগুনপাখি।’

Read More »
শৌনক দত্ত

মন্দ মেয়ে ভদ্র অভিনেত্রী: সুকুমারী দত্ত

বিনোদিনী দাসীর বর্ণময় জীবনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া এই ‘তারকা অভিনেত্রী’-র বহুমাত্রিক জীবনটিও কম রঙিন নয় বরং বিস্মৃত নক্ষত্র এক, যিনি ১২৮২ বঙ্গাব্দের ৩ শ্রাবণ (১৮৭৫ খ্রি., মূল্য ছিল ১ টাকা) ‘অপূর্ব্বসতী’ নাটকটি লিখে বাংলা নাট্যাতিহাসের প্রথম নারী নাট্যকার হিসেবে সুবিদিত হয়ে আছেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

আষাঢ়স্য প্রথম দিবস ও কালিদাস

পণ্ডিতেরা তর্ক তুলেছেন, কালিদাস ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ লেখেননি৷ কেননা একেবারে পয়লা আষাঢ়েই যে মেঘ নেমে বৃষ্টি আসবে, তা হয় না। তাঁদের মতে, ওটা আষাঢ়ের শেষদিন, ‘আষাঢ়স্য প্রশম দিবস’ হবে। কিন্তু প্রথম দিবস-ই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এবং তা এতটাই যে, কালিদাসকে নিয়ে ভারত সরকার যে ডাকটিকিট বের করেছে, সেখানে ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবসে’ শ্লোকটি উৎকীর্ণ।

Read More »
রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »