Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

লকডাউন: এক আলো-আঁধারি খেলা

ভারতের মতো দরিদ্রবহুল ‘উন্নয়নশীল’ দেশে ‘লকডাউন’ (ঘরবন্দি) ব্যবস্থাপনা চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। লকডাউন বস্তুত একটি রোগ-প্রতিরোধক পন্থা, যে পন্থাটি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে কোভিড-১৯ বা করোনা নামক অতি ক্ষুদ্র অকস্মাৎ আগন্তুক একটি সংক্রামক ব্যাধি-উৎপাদক ভাইরাসকে ঠেকিয়ে রাখতে। অজানা অচেনা এক জীবাণুর প্রতাপে সারা বিশ্বে আতঙ্ক-আলোড়ন-বিপর্যয় তৈরি হয়েছে অবিশ্বাস্য মাত্রায়। বিশ্বে তথাকথিত সভ্য, উন্নত, ধনী দেশগুলিতেই প্রথম এই ভাইরাসটি অতি ভয়ংকর, মনুষ্যবিনাশের পক্ষে বিপুল শক্তিধারক বলে গণ্য হয়েছিল। প্রতিষেধক বা করোনা বিনাশসাধক কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত না হলেও বিদেশি রাষ্ট্রনেতারা তাদের দেশবাসীর ক্ষতি যাতে কম হতে পারে তার জন্য যথাবিহিত ব্যবস্থাবলম্বন করেছেন। বাস্তব সত্য হল, তারা পারেন। তাদের মতো ‘উন্নত’ দেশে সেসব সম্ভব। কিন্তু সচেতন ভারতবাসী যেসব সংশয় বা কাঁটায় ক্রমাগত বিদ্ধ হয়ে চলেছেন সেগুলি প্রখর বাস্তব এবং সেসবের কোনও সদুত্তর একেবারেই মিলছে না বলে ভারত ঘিরে আঁধারের ছায়া প্রতিনিয়ত ঘন হয়ে চলেছে। সেগুলি তুলে ধরা যাক প্রথমে।

প্রধানতম যে সংশয়টির কোনও জবাবই মিলছে না সেটি হল, ২০২০ জানুয়ারিতে বিদেশগুলিতে করোনার আবির্ভাব বার্তা জানতে পারা সত্ত্বেও আমাদের মতো দরিদ্রপ্রধান দেশের জননায়করা নিশ্চিন্তে দিনাতিপাত করছিলেন কীভাবে? কেন? বিশ্বে যখন ৩৯টি দেশে কোভিড-১৯ মনুষ্যঘাতী আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফেলেছে, তারপর বিশ্ব-বাণিজ্য বিপর্যয়মুখী হয়ে পড়েছে, সুখে-ভোগে ডুবে থাকা বিশ্ববাসী দিশেহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছে, চিন সহ অন্যান্য উন্নত দেশেও মৃত্যুহার বেড়ে চলেছে অবিশ্বাস্য হারে, তখন আমাদের দেশের রাষ্ট্রনেতারা ধনীতম দেশের মহানায়কের আগমনে অভিভূত হয়ে আপ্যায়নব্যবস্থায় অতিমাত্রায় মগ্ন থেকে নিজ দেশ ও দেশবাসীর কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে তূরীয়ানন্দে মেতে গিয়েছিলেন। অথচ আমাদের ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে মনে হয়, সেসময় অর্থাৎ জানুয়ারিতেই সচেতন হলে ধনী দেশ থেকে গরীব দেশে এই রোগের আগমনেচ্ছা ঠেকানো যেত। এমন ভাবনার হেতু স্বাস্থ্যবিধিসম্মত। আমাদের বিপুলসংখ্যক ক্ষুধাপীড়িত মানুষের দেশ হলেও সেই মানুষরা শ্রম-নির্ভর জীবনে নানাবিধ আপদবিপদের মোকাবিলায় নিত্যদিন অভ্যস্ত থাকার কারণে রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা অর্জনে পিছিয়ে থাকে না। বরং এই হতভাগ্য দেশবাসীরা এ ব্যাপারে এগিয়ে থেকে ক্ষুধাহীন অথচ খাদ্যসম্ভারে মজে থাকা-দের পিছিয়ে ফেলে রেখে দিন কাটায়। এইপ্রকার প্রতিরোধশক্তি কোভিড-১৯-কেও দমিয়ে দিতে পারত এবং বলা বাহুল্য এখনও এইপ্রকার দেশবাসীরাই করোনামুক্ত জীবন কাটাতে পারছেন অধিক সংখ্যায়। যদি সীমান্তব্যবস্থা এবং প্রতিদিনের উড়ান ব্যবস্থার দিকে একটু নজর দেওয়ার সময় দিতেন রাষ্ট্রনায়করা তাহলে বাকিটুকু এই দেশবাসীরাই করোনার পথে বাধা সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়ে সমগ্র দেশকে আতঙ্কমুক্ত করতে পারতেন! পরিবর্তে, করোনা ঢুকে পড়ার পর বিদেশিদের বৃথা অনুকরণে অন্ধভাবে ‘লকডাউন’ বলবৎ করা হয়। সেসময় যারা আপত্তির হাত তুলেছিলেন তাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল সুকৌশলে। পরিকল্পনাবিহীন, সময় না দিয়ে অকস্মাৎ লকডাউন-এর ওপরতলা থেকে পড়া নির্দেশ-আওয়াজ দেশময় ছড়িয়ে পড়লে অধিকতর আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে। কতকগুলি বিদেশি শব্দ মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং, হোম কোয়ারেন্টাইন, সেলফ আইসোলেশন প্রভৃতি শব্দ দেশি শব্দে পরিণত হয়ে যায়। আতঙ্ক পরিকল্পিত পদ্ধতিতে ছড়িয়ে পড়ে সমাজের (বা দেশের) উপর থেকে নিচু স্তর পর্যন্ত। তার জের নিচের তলায় কমে এলেও উপরতলায় কমেনি এতটুকু! লড়াই-লড়াই ভাবনা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মানুষের জীবনে। লড়াই করো করোনার সঙ্গে। সাহস সঞ্চয় করো। মরতে হলে মরো। তবুও লড়াই চালিয়ে যাও। তারই নাম বেঁচে থাকা। মঞ্চের পিছন থেকে আওয়াজ উঠতেই থাকল— লড়াই! লড়াই! লড়াই! ক্ষোভ-বিক্ষোভের বিষজ্বালা বুকে নিয়ে বঞ্চিত দেশবাসীরা লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। বাঁচার লড়াই। বাঁচার জন্য যা যা প্রয়োজন সেগুলি হারিয়ে আবার ফিরে পাওয়ার লড়াই। করোনাকে ভয় পেয়ে ঘরে বন্দি থাকলে তাদের চলে না। ঘর নেই। বন্দি থাকার মতো ঘর নেই। ‘ঘরবন্দি’ হাসির খোরাক যোগানোর মতো কথা তাদের কাছে। ‘ঘরছাড়া’ মানুষরা বেপরোয়া হয়ে পড়লেন। আঁধার নেমে পড়ল দেশের সবদিক ঘিরে ফেলবে বলে। কেমন সেই আঁধার?

১. দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ রুজি-রোজগার হারিয়ে আজ কী করবে? কারা তাঁরা?
• ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন যারা
• হকারি করে আয় করতেন যারা
• প্রাইভেট টিউশনি ছিল যাদের একমাত্র ভরসা
• পান, সিগারেট, বিড়ির ছোট্ট দোকানদার
• মুড়ি, বিস্কুট, ছোলাভাজা ইত্যাদি বিক্রির ছোট দোকানি
• রেলে নানা ধরনের জিনিস বিক্রি করতেন যারা
• রেলে গান শুনিয়ে পয়সা পেতেন যারা
• রাস্তায় তেলেভাজা বিক্রিওয়ালা, ফুচকা বিক্রিওয়ালা
• জুতো পালিশওয়ালা, সারাইওয়ালা
• চুল-দাড়ি কাটার দোকান মালিক ও কর্মী
• ছোট ছোট দরজি-দোকান
• ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট-হোটেল মালিক ও কর্মচারী
তালিকা আরও লম্বা। সম্পূর্ণ করার প্রয়োজন নেই। ভুক্তভোগীরা তো জানেনই। সঙ্গে সচেতন দেশবাসী মাত্রেই এসব ভেবে কষ্ট নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

২. দেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের জন্য দেশ-ধ্বংসের জন্য অতীব কার্যকর একটি পরিস্থিতি প্রস্তুত হয়েছে করোনার তাড়নায় এবং তার প্রতিরোধ-পন্থা হিসেবে লকডাউনের কারণে দেশে প্রায় অচলাবস্থা সৃষ্টিতে।

৩. স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিতান্তই অক্ষম একটি ব্যবস্থাপনা যে, তা প্রমাণিত হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। করোনা-টেস্টের যথাযথ ব্যবস্থা বা পরিষেবা নেই। পজিটিভ করোনার শিকার রোগীর জন্য সুচিকিৎসা-ব্যবস্থা নেই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মৃত্যু ঘটেছে রাস্তাতেই রোগীর। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভরসা কেবল সরকারি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কথা উঠেছে— তাঁরা কতটা করতে পারবেন? তাঁরাও তো মানুষ! এমন কথা যে পরিস্থিতিতে শুনতে হয় তা যে কতখানি মারাত্মক তা বুঝতে কারও বাকি থাকার কথা নয়।
করোনা ব্যতীত অন্যান্য অসুখ-বিসুখে চিকিৎসা পেতে হলে হয়রানির শেষ নেই মানুষের। অসুস্থ মানুষ নিতান্তই অসহায়। কীসের কারণে? কাদের ব্যর্থতায়? উত্তর সকলেরই জানা। তবু মুখ বন্ধ করে মেনে নিতে হয়েছে। মুখ খোলা তো হাজতের দরজাও খোলা!
বেসরকারি হাসপাতালগুলি অর্থ রোজগারের লালসায় বেসামাল হয়ে পড়েছে। নৈতিক শিক্ষা ভুলেছে। আদর্শ ভুলে অর্থ রোজগারকেই জীবনের মূল লক্ষ্য বলে মেনে নিয়ে সেইমতো পথাবলম্বন করেছে। মানুষের পরিষেবা দেওয়ার আদর্শ সেখানে মিথ্যে প্রতিপন্ন হয়েছে!
এখনও যাঁরা চিকিৎসক জীবনের মাহাত্ম্য ভোলেননি, তাঁরা পুষ্টির অভাব এবং প্রতিরোধক্ষমতা হারানো ও সংক্রমণ লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা ভেবে দেশবাসীর জন্য চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এবং অসহায়তা বোধ করেও কর্তব্যপালনে সক্রিয় থেকেছেন। দুঃখের বিষয়, তাঁরা সংখ্যায় নগণ্য।

৪. দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় লকডাউন নিদারুণ আঘাত হানার মারাত্মক কাজ করে ফেলেছে। সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা-জানালা বন্ধ ছিল। সেগুলি কবে খুলবে বা আর কোনওদিন খুলবে কি না সংশয় দেখা দিয়েছিল। অতঃপর প্রযুক্তিনির্ভরতার দিকে ঝুঁকেছে প্রতিষ্ঠানগুলি। প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা আদৌ শিক্ষাব্যবস্থা বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য আমাদের মতো সমাজ-নির্ভর দেশে? শিক্ষার্থীদের চরিত্রগঠনের শিক্ষা তাহলে দেশে শিক্ষাদানের লক্ষ্য হিসেবে নিতান্তই উপেক্ষিত বিষয় বলে গণ্য হবে না কি? শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যও তো তাতে ক্ষতিগ্র্স্ত হবে না কি? তাদের দৃষ্টিশক্তি? আর, অর্থাভাবগ্রস্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা তাহলে শিক্ষামহলে ব্রাত্য বলেই মেনে নেওয়ার ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে? জবাব নেই! মিলছে না!

৫. মানুষে মানুষে সামাজিক আদান-প্রদানের সম্পর্ক? নির্মূল হতে চলেছে। সংক্রামক ব্যাধির মহামারী এদেশে আগেও হয়েছে— কলেরা, স্মল পক্স, প্লেগ। অথচ মানুষ ছুটে গিয়ে পাশে দাঁড়াতে ভয় পেয়েছে, অমানবিক হয়েছে এমন চিত্র ভয়াবহ রূপ নিতে পারেনি। করো ‘অতিমারি’ (!)-তে তুমুল মাত্রায় সচেতনতা বাড়ানোর নামে অজেয় আতঙ্ক ছড়ানোর কায়দা-কৌশলে সফল হয়েছে সকল উদ্যোগী পক্ষ। তাতে সমাজের টুঁটি টিপে মারার ব্যবস্থাটি প্রায় পাকা হয়েছে।

৬. ভোগবাদিতা, বাজারসর্বস্বতা, কর্পোরেট-শক্তির সঙ্গে রাষ্ট্রশক্তির গলাগলি, পুঁজি নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ইত্যাদি দেশবাসীর স্বাস্থ্য-পরিষেবা পাওয়ার ন্যায্য অধিকারকে ক্রমাগত অস্বীকৃতির পথে টেনে নিয়ে চলেছে। লকডাউন সেই ভয়ংকর রাষ্ট্রব্যবস্থাকে মদত দেওয়ার কাজটুকু সেরে ফেলেছে, নির্দ্বিধায় বলা যায়।

৭. বিশ্ব স্বাস্থ্যগবেষণাকর্মে নিরন্তর নিযুক্ত থাকা মেধাশক্তি কি আজ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র করোনা তাঁদের মেধাকে পথহারা, দিশাহীন করে ছাড়ল! আজও কোনও প্রতিষেধক, ওষুধ ইত্যাদির দেখা মিলছে না!

৮. সর্বোপরি, সাবাসি জানাতে হয় জন-নায়ক-নায়িকাদের! ক্ষমতা রক্ষা করা অথবা ক্ষমতা কায়েম করার স্বার্থে বিদেশি রাষ্ট্রের অনুকরণে লকডাউন চালু করা হল! মানুষকে বোকা বানানোর এমন নজির কাছের অতীতে তো নেই, সুদূরেও নেই! কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনের দায় নিতে তারা ব্যর্থ। জাতীয় আয়ের এক শতাংশ কেবল স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করা হয়! বস্তুত করোনা-বিপর্যয় ঠেকাতে নয়, তাকে কাজে লাগানোতেই তারা নিমগ্ন। সে কাজের স্বার্থসাধন— দলীয় এবং ব্যক্তিগত উভয়ই। লকডাউন সেক্ষেত্রে তাঁদের প্রবল সহায়তা দিয়েছে।

দেশজুড়ে ব্যাপ্ত করে তোলা এই আঁধারের মধ্যে জোনাকির মতো জ্বলেছে কিছু আলো, সেসবের উল্লেখ করে নিবন্ধে ইতি টানা যাক।

ক. ক্রমাগত চিকিৎসা না পাওয়ার ফলস্বরূপ, অবশ্যই লকডাউনের কারণে, মানুষের ওষুধ-নির্ভরতা অনেকটাই কমবে বলে আশা করা যায়।
খ. দেশবাসী এখন থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে করা যায়।
গ. আমাদের দেশের দেশীয় চিকিৎসাপদ্ধতির মূলোচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে ওষুধ ব্যবসা-চক্রের দ্বারা। সেই ব্যবস্থার দিকে ফিরবেন আবার দেশবাসী, প্রবল ধাক্কা খাওয়ার ফলস্বরূপ। এমন সম্ভাবনা অমূলক নয়।
ঘ. ক্ষতিকর খবর ছড়ানোর নিরন্তর আয়োজন প্রভাব ফেলে মানুষের ওপর সমধিক। দেশবাসী সেপ্রকারের প্রভাব থেকে নিজেদের এবার থেকে মুক্ত রাখায় সচেষ্ট হবেন, আশা করা যায়।
ঙ. অন্যান্য ব্যাধিজনিত মৃত্যুর হারের চেয়ে করোনা ব্যাধিজনিত মৃত্যুর হার যে বেশি নয় তা ইতিমধ্যেই সম্ভবত বুঝে নিয়েছেন দেশবাসী। সেটি সুলক্ষণ!
চ. যে আলোর ঔজ্জ্বল্য, লকডাউনেরই কল্যাণে, সব আলোকে ছাপিয়ে যায় তা হল, প্রকৃতি-পরিবেশ-নিম্নতর প্রাণীঘাতক মানুষের সর্বগ্রাসী দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া দূষণমুক্তির আলো। সে আলো যেন স্থায়িত্ব পায়! সমগ্র দেশবাসী তা চাইলে ভবিষ্যতে, বর্তমানে ছড়িয়ে থাকা লকডাউন-প্রসূত অমানবিকতা নামক অতি ভয়ংকর আতঙ্ক, আর কখনও ফিরে আসবে না নানাপ্রকার অভাবের সঙ্গে মোকাবিলা করা এই দুর্ভাগা দেশে!
লকডাউনের এই খেলাকেই নাম দিলাম— আলো-আঁধারি খেলা, যে খেলায় আঁধারের ঘনঘটা বেশি মনে হলেও আলোর শক্তি হারবে না বলেই বিশ্বাস রাখি।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

কাজী তানভীর হোসেন

ধানমন্ডিতে পলাশী, ৫-ই আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কয়েকদিন ধরে যা ঘটেছিল, তা শুরু থেকেই গণআন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পরিণত হয়েছিল। আজ আমরা কার্যক্রম দেখেই চিনে যাই ঘটনাটি কারা ঘটাচ্ছে। আগুন আর অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব রয়েছে বিএনপি-জামাত ও রোহিঙ্গাদের। তারা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা করে না।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

আমরা বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিলাম, যাঁকে খুব সঙ্গত কারণেই ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ বলা হয়। পেয়েছি প্রফুল্লচন্দ্র সেন ও অজয় মুখোপাধ্যায়ের মতো স্বার্থত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী। এবং জ্যোতি বসুর মতো সম্ভ্রান্ত, বিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখর কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ছিলেন বুদ্ধদেব। কেননা তাঁর মতো সংস্কৃতিমনা, দেশবিদেশের শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক সম্পর্কে সর্বদা অবহিত, এককথায় এক আধুনিক বিশ্বনাগরিক মানুষ পাইনি। এখানেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনন্যতা।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর দুটি কবিতা

তারার আলো লাগে না ভাল, বিজলীবাতি ঘরে/ জ্বালাই তাই অন্তহীন, একলা দিন কাটে/ চেতনা সব হয় নীরব, বেদনা ঝরে পড়ে/ যজ্ঞবেদী সাজানো থাকে, জ্বলে না তাতে ধূপ/ রাখে না পদচিহ্ন কেউ ঘরের চৌকাঠে/ শরীরে ভয়, নারীরা নয় এখন অপরূপ/ তারারা সব নিঝুম ঘুমে, চাঁদের নেই দেখা/ অর্ধমৃত, কাটাই শীত ও গ্রীষ্ম একা একা

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বিশ্বকর্মার ব্রতকথা

বিশ্বকর্মা পুজোতেও কেউ কেউ বিশ্বকর্মার ব্রত পালন করে থাকেন। এমনিতে বিশ্বকর্মা যেহেতু স্থাপত্য ও কারিগরির দেবতা, তাই কলকারখানাতেই এই দেবতার পুজো হয়ে থাকে। সেখানে ব্রতকথার স্থান নেই। আবার কোন অলৌকিক কারণে এবং কবে থেকে যে এদিন ঘুড়িখেলার চল হয়েছে জানা নেই। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শহর ও গ্রামের আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ও নানা আকৃতির ঘুড়িতে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

উত্তমকুমার কখনও বাংলাদেশে পা রাখেননি!

ভাবতে অবাক লাগে, ‘৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ উত্তমকুমারকে অভিনয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি। টালিগঞ্জের কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছিলেন সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে। অন্যদিকে ববিতা, অলিভিয়া ও আরও কেউ কেউ টলিউডের ছবিতে কাজ করেছেন। ঋত্বিক ঘটক, রাজেন তরফদার ও পরে গৌতম ঘোষ ছবি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশে এসে, কিন্তু উত্তমকুমারকে আহ্বান করার অবকাশ হয়নি এখানকার ছবি-করিয়েদের।

Read More »
নন্দিনী কর চন্দ

স্মৃতি-বিস্মৃতির অন্দরমহলে: কবিতার সঙ্গে গেরস্থালি

বিস্মৃতির অতলে প্রায় তলিয়ে যাওয়া এমন কয়েকজন মহিলা কবির কথা আলোচনা করব, যাঁরা তাঁদের কাব্যপ্রতিভার দ্যুতিতে বাংলা কাব্যের ধারাকে উজ্জ্বল ও বেগবান করে তুলেছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষ্ণকামিনী দাসী, মোক্ষদায়িনী দেবী, প্রসন্নময়ী দেবী, লজ্জাবতী বসু, জগন্মোহিনী দেবী, গিরিন্দ্রমোহিনী দাসী, হিরণ্ময়ী দেবী, অম্বুজাসুন্দরী দাশগুপ্ত, সুরবালা ঘোষ প্রমুখ।

Read More »