Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

কুকুর পুষলে ভাল থাকবে আপনার হৃদয়, হৃদযন্ত্রও

কুকুর পুষুন। কুকুর কেবল আপনার পরিবারকে নিরাপদে রাখে তাই নয়, কুকুরের সঙ্গলাভে আপনার হার্ট বা হৃদযন্ত্রও সুরক্ষিত থাকে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এবং আপনি হতে পারেন দীর্ঘ জীবনের অধিকারী। বিভিন্ন সমীক্ষা ও গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান সেকথাই বলছে। বেশ কয়েক বছরের বেশ কয়েকটি গবেষণা ও সমীক্ষার ফলাফলে এমনই আশাব্যঞ্জক তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে কমপক্ষে ৪০ লক্ষ মানুষের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সেইসব তথ্যাদি বিচার-বিশ্লেষণ করে এমনই সিদ্ধান্তে এসেছেন গবেষকরা।

কুকুরপ্রেমীরা জানেন যে, পোষ্যের সান্নিধ্য তাঁদের জীবনে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ এবং যতটুকু উষ্ণতা ও আদর তাঁরা তাঁদের পোষ্যটিকে দেন, তার কয়েকগুণ বেশি তাঁরা ফেরতও পান নিঃসন্দেহে। পোষ্য কুকুরের সঙ্গ ও তাদের শান্ত প্রভাব মানুষকে মানসিকভাবে খুশি এবং চনমনে রাখতে অতুলনীয়। তবে তাদের সঙ্গ যে হৃদযন্ত্রকেও চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে, একাধিক সমীক্ষায় তা উঠে এসেছে। বাড়িতে পোষ্য থাকা, বিশেষ করে একটি কুকুর থাকা, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে বলে প্রমাণ মিলেছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, বাড়িতে পোষ্য থাকলেই হৃদযন্ত্র গোলমাল করবে না বা উভয়ের (পোষ্য ও পোষিত) সম্পর্কের মধ্যেই কোনও স্পষ্ট কারণ এবং প্রভাব রয়েছে। এর মানে এই যে, পোষ্য রাখা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর সামগ্রিক কৌশলের একটি যুক্তিসঙ্গত অংশ হতে পারে।

হাজার হাজার বছর আগে কুকুর মানুষের সংস্পর্শে এসেছে।

সমীক্ষা চলাকালীন গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, কুকুর যাদের পোষ্য হিসেবে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে গিয়েছে ২৪ শতাংশ। যাদের ইতিমধ্যে একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মারা যাওয়ার ঝুঁকি কমেছে ৩১ শতাংশ। ৪ মিলিয়ন মানুষের ওপর চলা এই সমীক্ষার মাধ্যমে গবেষকরা আরও জেনেছেন, কুকুর পালন আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, উদ্বেগ এবং হতাশা কমাতে সাহায্য করে। কারণটাও বলেছেন তাঁরা। প্রধানতম কারণটি হচ্ছে, কুকুর সঙ্গী হিসেবে অসাধারণ। কুকুর-পালকরা সচরাচর পোষ্যদের নিয়ে হাঁটতে বের হন। তাতে করেও অন্তত আধঘণ্টা শারীরিক কসরতের কাজটি হয়ে যায়। তা স্বাভাবিক কারণেই ‘কার্ডিয়োভাসকুলার রিস্ক’ কমিয়ে দেয়। মানবশরীরে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বজায় রাখতেও সাহায্য করে।

তাই গবেষকরা নিদান দিয়েছেন, বাড়িতে কুকুর পুষুন। তাদের সাহচর্য আপনাকে অকালমৃত্যু থেকে বাঁচাবে। শরীরের পাশাপাশি মন ভাল রাখার জন্য তার চেয়ে যোগ্য সাথি আর নেই। তবে মনে রাখতে হবে, কেবল হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর প্রাথমিক উদ্দেশ্যে পোষা প্রাণী গ্রহণ করা উচিত নয়। আপনি যদি আপনার জীবনে একটি পোষ্যকে জায়গা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত না থাকেন বা পোষ্যটির যথাযথ দেখভাল করতে অপারগ হন, তাহলে কুকুর পুষবেন না। কুকুর পুষলেই তো শুধু হবে না, তার জন্য উপযুক্ত যত্ন এবং প্রয়োজনীয় সক্ষমতা থাকতে হবে, যাতে পোষ্যটিকে যথাযথ শারীরিক কসরত করাতে পারেন।

হাজার হাজার বছর আগে কুকুর মানুষের সংস্পর্শে এসেছে। পুরাণেও দেখা গিয়েছে, মহাপ্রস্থানে যুধিষ্ঠিরের সঙ্গী ছিল একটি কুকুর। মানুষের বিশ্বস্ত সহচর কুকুর মালিকের জন্য জীবন বাজি রাখতেও পিছপা হয় না। প্রভু বা মনিবের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। বিপদের দিনে সহচর মানুষ ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ বলে পালিয়ে গেলেও পোষ্য সারমেয়রা কোনওদিন পিঠ দেখায়নি। নিজের প্রাণ তুচ্ছ মেনেছে। ঝুঁকির কথা মাথায় না রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রতিপালককে বাঁচাতে। এমন অসংখ্য নমুনা ছড়িয়ে আছে আপনার নিজস্ব পরিসরেই। গোটা বিশ্বেই।

চিত্র: অমিয় বাগ
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
J.Ghosh
J.Ghosh
2 years ago

কুকুর সব সময় আমাদের ভালো বন্ধু। লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো🙏

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »