Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

রক্তাক্ত পিতার মুখ নিয়ে সিংহাসনে

বাংলাদেশের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা যখন ভাবি, একদিকে আনন্দিত হই এই ভেবে যে, দক্ষিণ এশিয়ার একটি অতি ছোট দেশকে তিনি তাঁর একক প্রচেষ্টায় কোথায় নিয়ে গেছেন! অন্যদিকে পরম বেদনা অনুভব না করেও পারি না, যখন মনে পড়ে, নির্মম নিষ্ঠুর একদল ঘাতকের হাতে তাঁর পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত‍্যার মরমী বেদনা নিয়ে তিনি দেশের জন্য প্রাণপাত করে চলেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে রাষ্ট্রনেতাদের হত‍্যা কম দেখেনি মানুষ। কিন্তু একটি পরিবারের এত মানুষের নিহত হওয়ার নজির দ্বিতীয়রহিত।

এর চেয়েও যা উল্লেখযোগ্য, জুলিয়াস সিজার বা আব্রাহাম লিঙ্কন, আল সালভাদর আলেন্দে, আনোয়ার সাদাত নিহত হওয়ার পর তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যা কেউ ব‍্যক্তিগত শোক সামলে দেশবাসীর মঙ্গলচিন্তায় ব‍্যয় করেননি। যাঁরা করেছেন, ইন্দিরা গান্ধী-উত্তর রাজীব গান্ধী বা জুলফিকার আলী ভুট্টো-তনয়া বেনজির ভুট্টো, তাঁদের কৃতি, ইতিহাসের স্বার্থে স্বীকার করতেই হবে আমাদের, শেখ হাসিনার ধারেকাছেও নয়। নিজের ও পরিবারের উচ্চমানের শিক্ষা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর জনদরদী মন গড়ে তুলেছে তাঁর মতো এক দেশনায়িকাকে। বঙ্গবন্ধুর সার্থক উত্তরসূরি বলা হয় তাঁকে। এখানে সত‍্যের অর্ধাংশ আড়ালে থেকে যায়, কেননা কেবল পিতা নয়, তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে ও বিচক্ষণতায়, সমস্যা সমাধানে ধীর এবং কার্যকর ভূমিকাপালনে তাঁর মাতা বঙ্গমাতা শ্রদ্ধেয়া শেখ ফজিলাতুন্নেছার নেপথ‍্য ভূমিকাও ক্রিয়াশীল।

আমরা যদি মনে রাখি বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার পর দেশের মাটিতে পা রাখার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর নির্বাসিত জীবনের দিনগুলির কথা, মনে রাখি একুশ বছরের অপশাসনের পরে কীভাবে গণতান্ত্রিক পথে তিনি দেশের হাল ধরলেন, তাহলে অনুভব করতে পারব, পরিবারের সকলের নিহত হওয়ার পরেও কী অটুট মনোবল তাঁকে সঞ্জীবিত রেখেছিল।

১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ আর ১৯৮১-র সতেরোই মে, অর্থাৎ শেখ হাসিনার ঢাকায় ফেরার দিন, এই দশ বছর কী টানাপোড়েনের মধ‍্য দিয়েই না অতিবাহিত হয়েছে তাঁর জীবন! মুক্তিযুদ্ধ চলছে, গৃহবন্দি হাসিনা, পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মা-মেয়ের প্রতিমুহূর্তের উদ্বেগ! আর এর মধ‍্যেই সাতাশে জুলাই তিনি মা হলেন, জন্মালেন সজীব ওয়াজেদ জয়। দুঃখের আঁধার রাত্রি তাঁর জীবনে। উনিশশো পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টে তিনি হারালেন পিতা মাতা ভাই ভ্রাতৃবধূদের। জার্মানি লন্ডন বেলজিয়াম ভারতে বাধ‍্য হলেন থাকতে। ইতিমধ্যে ১৯৭২-এর ডিসেম্বর ৯ তারিখ জন্মেছেন কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। একাশিতে যখন তিনি বাংলাদেশে ফিরে এলেন, কী দেখেছিলেন সেই ঊষর দেশটিতে? কোথায় বাহান্নোর উত্তাপ, চুয়ান্নোর গণতন্ত্রের মাথা তুলে দাঁড়ানো, ছেষট্টির উদ্দীপনা, উনসত্তরের গণজাগরণের জোয়ার, একাত্তরের সাতই মার্চের ডাক? সব অলীক মনে হচ্ছিল। সেই শূন্যতায় নতুন প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার নাম-ই শেখ হাসিনা।

তাঁদের ট্র‍্যাজেডির ধরন ও মাত্রা ভিন্নরকমের হলেও বিষাদসিন্ধুর মধ‍্য দিয়েই তাঁদের অভিযান। মিশরের রানি ক্লিওপেট্রা তাঁর দুই প্রণয়ীকে হারান, জুলিয়াস সিজার এবং মার্ক এন্টনি। ইংল্যান্ডের রানি প্রথম এলিজাবেথের মা এনি বোলিনকে হত‍্যা করা হয়েছিল, এলিজাবেথ যখন মাত্রই আড়াই বছরের। উপমহাদেশের প্রথম নারী-শাসক সুলতানা রাজিয়াকে পদে পদে হেনস্থা করেছে সমসাময়িক প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী, এবং অতঃপর হত‍্যাই করেছে স্বামীসহ তাঁকে। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের শিশুপুত্র দামোদর রাওয়ের অকালমৃত‍্যু তাঁকে সিংহাসনচ‍্যুত করল, কেননা ব্রিটিশের মধুর ‘স্বত্ববিলোপ নীতি’-তে বলা ছিল, উত্তরাধিকারী না থাকলে তাঁর রাজ‍্য ব্রিটিশের অধীনে চলে যাবে, দত্তক পুত্রের উত্তরাধিকার চলবে না।

আধুনিক যুগে এসেও দেখতে পাই, এশিয়া মহাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়ক তাঁর স্বামী সলোমন বন্দরনায়কের রক্তস্নাত হত‍্যার মধ‍্য দিয়ে উঠে এসেছিলেন। কোরাজন অ্যাকুইনো। এশিয়ার প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি। তাঁর স্বামী বেনিগনো-ও নিহত হয়েছিলেন অ্যাকুইনো ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতিপদে বসার আগে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হারিয়েছেন পুত্র সঞ্জয়কে, যদিও হত‍্যা নয়, সঞ্জয়ের মৃত‍্যু হয় দুর্ঘটনাজনিত কারণে।

ইতিহাসের যে সুবিশাল সরণী বেয়ে আমরা শেখ হাসিনায় এসে পৌঁছলাম, তাতে দেখা যায়, কথিত সব রাষ্ট্রনায়কদের তুলনায় বহুগুণ বিধুরতার মধ‍্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে পৃথিবীর মাত্র দুই শতাংশ অঞ্চল নিয়ে আঠারো কোটি মানুষের জীবনকে সুখী ও সমৃদ্ধিশালী করার লক্ষ্যে নিয়োজিত শেখ হাসিনাকে। ‘জন্ম তোর বেদনার দহে’— তাঁর সম্পর্কে বলতেই পারি আমরা। ১৯৪৭-এর সাতাশে সেপ্টেম্বর পৃথিবীর আলো প্রথম দেখেন তিনি। পিতার কারাবাস, মায়ের উদ্বেগ ও অর্থচিন্তা, ভাইবোনদের জীবনের অনিশ্চয়তা, এর মধ‍্যেই বড় হওয়া তাঁর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করা, সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান। ১৯৭১-এ দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে জন্ম দিচ্ছেন প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের। সাতাশে জুলাই। কোলে শিশুসন্তান, দেশে মুক্তিযুদ্ধ, হৃদয়ে পাকিস্তানে বন্দি পিতার জন্য উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। এর একবছর পরে কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এল ঘরে, ৭ ডিসেম্বরে। কোনও মনঃস্তত্ত্ববিদ কি ব‍্যাখ‍্যা করতে পারবেন, এহেন নাজুক পরিস্থিতিকে সহজভাবে নেওয়া কতখানি দৃঢ় মনের পরিচয়? এল স্বাধীনতা, বিজয়, ফিরে এলেন পিতা। স্বস্তি! কিন্তু ইতিহাসের দেবীটিও বড় নিষ্ঠুর, বড়ই স্বেচ্ছাচারী। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট তাই চিহ্নিত হয়ে রইল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে করুণ নেতৃহত‍্যার, পরিবার-সহ। জুলিয়াস সিজার বা আব্রাহাম লিঙ্কন, আনোয়ার সাদাত বা আলেন্দে, হত‍্যা ঠিকই, তবে এতটা পাশবিক নয়।

১৯৭৫ থেকে ১৯৮১-র সতেরই মে পর্যন্ত পরবাসী থাকতে হল হাসিনাকে, জার্মানি, বেলজিয়াম, ব্রিটেন ও ভারতে। যেদিন ফিরলেন, এক দশকের ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস থামতে চায়নি তাঁর, আমরা নিশ্চিত। দেখছেন এক রক্তাক্ত প্রান্তর, পরানের গহীন ভিতর থেকে উঠে আসছে আর্ত পদাবলি! কোথায় বাহান্নো? কোথায় চুয়ান্নোর সেই গণতন্ত্রের ঊষাকাল? সালাম জব্বার রফিকের আত্মা নিভৃতে কাঁদছে, আসাদের শার্ট ধুলায়, তিরিশ লক্ষ শহিদের দীর্ঘশ্বাস ভরিয়ে তুলছে বাংলাদেশকে। দুলক্ষ নির্যাতিতা মা-বোন মূক, নতমুখ। অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে তাঁর স্বদেশ! এইসব ম্লানমুখে ভাষা দেবার সংকল্প নিলেন তিনি। নতুন করে শুরু। এ যেন সাপ-লুডো খেলা।

খেললেন। এবং ‘দূর হ দুঃশাসন’-কে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করলেন। এজন্য জেলে যেতে হয়েছে তাঁকে, বারবার হত‍্যার চক্রান্ত হয়েছে তাঁর ওপর। ১৯৯৬-তে অযুত বাধা পেরিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় এলেন। এবং এ-পর্যন্ত চার চারবার। ফলশ্রুতি?

বহু। আজ বাংলাদেশ বিশ্বক্রিকেটে সম্মানের সঙ্গে অংশ নিচ্ছে, এভারেস্টজয়ী হয়েছেন নারী-সহ বাংলাদেশের একাধিক পর্বতারোহী, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে ক্রমশ বর্ধিত হারে, বাড়ছে জিডিপি। এতসবের মানে শেখ হাসিনা।

শুধু কি তাই? শেখ হাসিনা মানে মেট্রো রেল, শেখ হাসিনার অর্থ কর্ণফুলি টানেল, শেখ হাসিনার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য পদ্মা সেতু। আরও, হ্যাঁ, আরও। তিনি লেখক। বিশ্বের বহু দেশ তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করেছে। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী দিয়েছে ‘দেশিকোত্তম’। তাঁর দুই সন্তান শিক্ষাগত যোগ‍্যতা ও কর্মতৎপরতায় গোটা পৃথিবীতে সম্ভ্রম আদায় করেছেন। বছরের শুরুতে কোটি কোটি স্কুলছাত্রছাত্রীকে পাঠ‍্যপুস্তক দানের যে অনুপম নজির, অন্য কোনও দেশে তা আছে বলে আমাদের জানা নেই। আজ বাংলাদেশ মধ‍্যম আয়ের দেশে উপনীত। সর্বোপরি, প্রতিবছর রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাতে ভাষণ দিয়ে তিনি তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ সালের ঐতিহ্যকে সম্মানদানের মাধ‍্যমে বাংলাদেশকে, বাংলা ভাষাকে এবং তাঁর দেশবাসীকে আত্মগর্বে গর্বিত করে তুলছেন।

চিত্র: গুগল
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »