Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

বাংলা বানানের জগাখিচুড়ি, অভিন্ন বিধি প্রণয়ন জরুরি

বাংলা বানান এক অভিনব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বর্তমান কালখণ্ডে এসে। বাংলা বানান সংস্কারের পথটিকে অনুসরণ করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন কবি, সাহিত্যিক, পত্রিকা সম্পাদক, প্রকাশক, ছাপাখানার প্রুফরিডার, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, এমনকী ভাষাবিদরাও। বিভিন্ন সংবাদপত্র, লিটল ম্যাগাজিন, প্রকাশকরাও বাংলা বানানের নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করে বিভ্রান্ত করছেন সাংবাদিক, লেখক এবং প্রুফরিডারদের। অথচ শুদ্ধ বানান না লিখতে পারলে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার খাতায় নম্বর কাটার চল আজও রয়েছে। ফলে, ছাত্রছাত্রীরা যেমন বিভ্রান্ত, শিক্ষকরাও অনেক সময় এ নিয়ে তালগোল পাকিয়ে বসেন। একথা আজ অস্বীকার করে লাভ নেই যে, বাংলা বানানের বৈচিত্র‌্য বেশ কিছু নতুন সমস্যার সৃষ্টি করছে। বাংলা বানানের পৃথক ঘরানা তৈরি হয়েছে বাংলায়। আনন্দবাজার গোষ্ঠী নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেছে, বাংলা আকাদেমি নিজস্ব বিধি প্রণয়ন করেছে, করেছে সংসদও। বাংলা বানানের এই সমস্যাটি আসলে কী?
বাংলা বানান সংস্কারকরা বাংলা বর্ণমালা থেকে কয়েকটি বর্ণকে আজীবন নির্বাসনে পাঠানোর প্রস্তাব রেখেছেন। যে বর্ণগুলিকে তাঁরা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন তা হল স্বরবর্ণ থেকে ঈ, ঊ, ঋ, ৯, ঐ এবং ঔ-কার; ব্যঞ্জনবর্ণ থেকে ঙ, ঞ, ণ, য, ব (অন্তঃস্থ), শ, ষ, ক্ষ, ড়, ঢ়, এবং ং। এই সুপারিশের ফলে, ব্যাকরণবিদদের দেওয়া ফতোয়া ‘নত্ব বিধান, ষত্ব বিধান’-এর তেমন গুরুত্ব রইল না। বাংলা বানান সংস্কারকরা ‘তৎসম’ শব্দের বদল না ঘটিয়ে এই বানানবিধি প্রয়োগের সুপারিশ করেছেন।
একথা স্বীকৃত যে, সংস্কৃত বাংলা ভাষার মাতৃভাণ্ডার। বাংলা ভাষায় জায়গা নিয়েছে বহু সংস্কৃত শব্দ। বেশ কিছু শব্দ বাংলায় এসেছে অবিকৃতভাবে, আবার কিছু এসেছে সংস্কৃতজাত হয়েও কিছুটা বিকৃতভাবে। অবিকৃতভাবে যে-সব সংস্কৃত শব্দ বাংলায় ক্ষমতা নিয়েছে সেগুলিই তৎসম। প্রচলিত এই রীতিতে তৎসম শব্দের সংস্কৃত রূপকে অক্ষুন্ন রাখার কথা বলা হলেও, অতৎসম শব্দ, অন্য বিদেশি শব্দের নানারকম বানান হতে পারে বলে অভিমত তাঁদের। ফলে, অতৎসম শব্দেই বানান বিশৃঙ্খল অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণ, বুৎপত্তিগত নিয়মকানুন অনেকেরই জানা নেই।
বাংলা শব্দের আদি উৎস জানতে বাংলারও বুৎপত্তিগত ধারণা থাকা জরুরি। যা অনেকেরই অজানা। কেবলমাত্র বাংলার ভাষাতাত্ত্বিক ছাত্রছাত্রীদের পক্ষেই তা জানা থাকতে পারে। ফলে, কোন শব্দ অবিকৃতভাবে বাংলায় এসেছে, তা সঠিকভাবে জানতে না পারার কারণেই বাংলা বানান-বিভ্রাট চরম রূপ পরিগ্রহ করেছে। মজার কথা হল, এই পরিবর্তনের সুপারিশ মেনে পাঠ্যপুস্তকে, সাহিত্যে বাংলা বানানের বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু আজ অবধি বাংলা বর্ণমালার সেই অর্থে কোনও পরিবর্তন সূচিত হয়নি। আজ প্রচলিত বাংলা বানান আদি সংস্কৃত থেকে অনেকটাই সরে এলেও বাংলা বর্ণমালা হুবহু সংস্কৃত ধারাতেই বিদ্যমান। বিভ্রাট এখানেও।
সংস্কারকদের মতে, বাংলা উচ্চারণের প্রকরণ মেনেই এই পরিবর্তনের সুপারিশ। আর প্রয়োজন নেই, এই বিশ্বাসেই বিদ্যাসাগরের সংস্কৃতভিত্তিক বর্ণমালা থেকে ৯ (লি-কার)-এর মুক্তি ঘটেছে। আধুনিক বাংলায় ই-কার এবং ঈ-কারের একই উচ্চারণ হয়ে থাকে বলেই ঈ-কার বর্জনের প্রস্তাব এসেছে। তাঁদের যুক্তি, ইলিশ-এর ই আর ঈশ্বর-এর ঈ-কার একইভাবে উচ্চারিত হয়। এই উচ্চারণের নিয়ম মেনে ঊ-কারকেও বর্জন করতে বলা হয়েছে। কেননা, শুচি ও শূন্য একইভাবে উচ্চারিত হয়। সব ক্ষেত্রেই ‘র’ ‘ঋ’-এর কাজ করে দিতে পারে বলে ঋ-এর আর প্রয়োজন নেই। একইভাবে ঋ-ফলাকে বর্জন করা যায়। ঐ এবং ঔ তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে বলা হয়েছে, ঔষধ (তৎসম) না লিখে ওষুধ (তদ্ভব) অনায়াসেই লেখা যায়। শৈশব শব্দ না লিখে শইশব লিখতে বলা হচ্ছে। ঙ তুলে দিয়ে ং ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। উচ্চারণের দিক থেকে ঞ-এর প্রয়োজন নেই আর। জ এবং য-এর পার্থক্য উচ্চারণের ক্ষেত্রে তেমন আর নজরে পড়ে না বলে য-কে ব্রাত্য ঘোষণা করা হয়েছে। ণ-এর অবলুপ্তিও যুক্তিসঙ্গত মনে করছেন সংস্কারকরা। বাংলা উচ্চারণবিধি মেনে শ এবং ষ-এর আর প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না তাঁদের। ড় এবং ঢ়-এর পরিবর্তে র রাখার সুপারিশ আছে। এমনটি ঘটলে ১১টি স্বরবর্ণের মাত্র ৬টি বর্ণ বেঁচে থাকবে।
অন্যদিকে, ব্যঞ্জনবর্ণের ৪১টি অক্ষরের মধ্যে ৩০টি জীবিত অবস্থায় থাকবে। বাংলা বর্ণমালার মোট অক্ষর সেখানে ৫৩ থেকে কমে গিয়ে ৩৬টিতে দাঁড়াবে। এই অক্ষরগুলি অপসৃত করার পাশাপাশি আরও যে সুপারিশগুলি রয়েছে, তার অন্যতম হল যুক্তাক্ষরের মুক্তি। এখন মুর্শিদাবাদ না লিখে মুরশিদাবাদ কিংবা শক্তি না লিখে শকতি লেখার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ্য-ফলা, ও-কার এবং হস্ (্) চিহ্নের প্রয়োগ বন্ধ করার নিদান আছে। তবে এই বানান-বিভ্রাটকে লঘু করার লক্ষ্যে অনেক তৎসম শব্দকেও এই পরিবর্তনে সামিল করার সুপারিশ আছে। তাঁদের পরামর্শ, ১. তৎসম শব্দকেও পরিবর্তনে সামিল করা প্রয়োজন, ২. বর্ণমালার বদল ঘটিয়ে ৩৬টি অক্ষর দিয়ে নতুন বর্ণমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন, ৩. আনন্দবাজার, বাংলা আকাদেমি কিংবা সংসদ সমেত প্রত্যেকের ক্ষেত্রে বাংলা বানানে একটিমাত্র নির্দিষ্ট ঘরানা রাখা প্রয়োজন। তা হলেই সমস্যার ঘেরাটোপ কাটিয়ে বাংলা বানানের সরলীকরণ সম্ভব হবে।
বাংলা বানান সংস্কারের এই শক্ত সুপারিশটি কিন্তু একদিনে আসেনি। বহু বছর আগে থেকেই বাংলা বানানের সংস্কারসাধনের প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সংস্কৃত-ঘেঁষা সাধু বাংলার প্রচলন করেছিলেন। তার মুক্তি ঘটিয়েছেন শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ। সাধুভাষা বর্জন করে চলতি ভাষার প্রয়োগ বেড়েছে রবীন্দ্রোত্তর যুগে। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং বাংলা বানানের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ১২৯২ বঙ্গাব্দে। ‘বাংলা উচ্চারণ’ নামে তাঁর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল ‘বলাকা’ পত্রিকায়।
১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিভাষা সমিতি গঠন করে থাকলেও বানান সংস্কারের এমন সৎসাহস দেখাতে পারেনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত বানান সংস্কার কমিটির সুপারিশের পরে বাংলা বানান নিয়ে ১৩৪৬ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত হয় দেবপ্রসাদ ঘোষের ‘বাঙ্গালা ভাষা ও বানান’ গ্রন্থটি। পরবর্তীতে ১৩৮৫ সালে মণীন্দ্রকুমার ঘোষের ‘বাংলা বানান’ প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বানানরীতির সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা রয়েছে এই পুস্তকে। মণীন্দ্রকুমার ঙ-এর পরিবর্তে ং-এর ব্যবহারকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছিলেন এবং কী-এর পরিবর্তে কি ব্যবহারের পক্ষে সায় দিয়েছিলেন।
পরেশচন্দ্র মজুমদারের ‘বাংলা বানান বিধি’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। তিনি বাংলা বানান সমস্যার তিনটি শর্ত উল্লেখ করেছেন। ১. অনুস্বারকে স্বীকার করা, ২. উচ্চারণ অনুযায়ী বানান লেখার বিভ্রান্তি বন্ধ করা এবং ৩. ঊর্ধ্বকমার ব্যবহার, ও-কারের ব্যবহার এবং হস্ চিহ্নের ব্যবহার সম্বন্ধে উদারতা।
অধ্যাপক পবিত্র সরকারের ‘বাংলা বানান সংস্কার : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বইটি প্রকাশ করেন তিনি। বাংলা বর্ণমালার জন্যই বানানের বিভ্রান্তি, তা আলোচনা করা হয়েছে এই পুস্তকে। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় অধ্যাপক সুভাষ ভট্টাচার্যের ‘বাংলা ভাষা চর্চা’ নামক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি। ১৯৯১ সালে প্রকাশিত নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘কী লিখবেন, কেন লিখবেন’ বাংলা বানানের ক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য গ্রন্থ। ১৯৯৭ সালে বাংলা আকাদেমি প্রকাশ করে ‘আকাদেমি বাংলা অভিধান’, যার সম্পাদনা করেছেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীই।
ওপার বাংলায় বাংলা বানান নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আবদুল হাই প্রমুখ ভাষাবিদ বাংলা বানানবিধি নিয়ে অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। সেখানেও রয়েছে অনেক বিতর্ক।
এই বিতর্ক যদি না শেষ হয়, বাঙালি জীবনে নেমে আসবে চরম বিভ্রান্তি। ফলে, বাংলা বানানের জগাখিচুড়ি ঠিক করতে এক এবং অভিন্ন বাংলা বানানবিধি প্রণয়ন আজ ভীষণ জরুরি। যা ছড়িয়ে দিতে হবে স্কুলে, কলেজে এবং সর্বস্তরে। এই পথ অতিক্রম করেই এগিয়ে যাক বাংলা বানান ও বাঙালি– তাতেই নিহিত রয়েছে বাংলা ভাষার মঙ্গল, মান ও মর্যাদা।

চিত্রণ : চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

যত মত তত পথ

বহুদিক দিয়েই একজন স্বতন্ত্র মননের ধর্মীয় সাধক। তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ধারণাতীত, আর তা কেবল তাঁর স্বদেশ বা এই উপমহাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। এবং দিনের পর দিন তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বাড়ছে। শ্রীরামকৃষ্ণ এবং সারদামণি ও স্বামী বিবেকানন্দকে কেন্দ্র করে যে ভাব-আন্দোলন, তার ফলশ্রুতিতে তাঁদের নিয়ে নিয়ত চর্চা ও গবেষণা হয়ে চলেছে। পৃথিবীব্যাপী দুশোর ওপর রামকৃষ্ণ মিশনের কার্যাবলি প্রমাণ করে (প্রতিবছর এর সংখ্যা বাড়ছে), আজকের এই অশান্ত বিশ্বে তাঁরা মানুষের কতখানি আশ্রয়।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব ছয়]

রবীন্দ্রভাবনায় যে নৃত্যধারা গড়ে উঠল তা দেশিবিদেশি নৃত্যের সমন্বয়ে এক মিশ্র নৃত্যধারা, তৎকালীন শিক্ষিত শহুরে বাঙালির সংস্কৃতিতে যা নতুন মাত্রা যোগ করল। নাচের প্রতি একরকম আগ্রহ তৈরি করল, কিছু প্রাচীন সংস্কার ভাঙল, মেয়েরা খানিক শরীরের ভাষা প্রকাশে সক্ষম হল। এ কম বড় পাওনা নয়। আরও একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, শিল্পক্ষেত্রে ভাবের সাথে ভাবনার মিল ঘটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টির প্রচেষ্টা। গতে বাঁধা প্র্যাক্টিস নয়। নিজের গড়ে নেওয়া নাচ নিজের বোধ অনুযায়ী।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব পাঁচ]

বাংলার মাটি থেকে একদা এই সুদূর দ্বীপপুঞ্জে ভেসে যেত আসত সপ্তডিঙা মধুকর। আর রবীন্দ্রনাথের পিতামহ, যাঁর কথা তিনি কোথাও প্রায় উল্লেখই করেন না, সেই দ্বারকানাথ-ও বাংলার তৎকালীন ব্যবসায়ীকুলের মধ্যে প্রধান ছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, একদা তাঁর প্রিয় জ্যোতিদাদাও স্টিমারের ব্যবসা করতে গিয়ে ডুবিয়েছেন ঠাকুর পরিবারের সম্পদ। নিজে রবীন্দ্রনাথ বাণিজ্য সেভাবে না করলেও, জমির সম্পর্কে যুক্ত থাকলেও একদা বাংলার সাম্রাজ্য বিস্তার, বাণিজ্য-বিস্তার কী তাঁরও মাথার মধ্যে ছাপ ফেলে রেখেছিল? তাই ইউরোপ থেকে আনা বাল্মিকী প্রতিভার ধারাকে প্রতিস্থাপন করলেন জাভা বালির কৌমনৃত্য দিয়ে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »