বয়স
ভোরের পাখির ডাক। আলো।
ভেতর-ঘরের থেকে চা-কে পাঠাল৷
সুগন্ধযুক্ত চা৷ দুর্মূল্য কাপে৷
হাতে প্লেট৷ থর্থর… থর্থর… কাঁপে৷
হাতে কী যে হয়!
ভয়৷ একটা— ভয়!
*
হে ভৈরব
অনেক দুঃখ পেয়ে, তবে আমি বনমালীপুরে এসেছি
এসে ভাবছি, এর চেয়ে বাণেশ্বরপুর গেলে ভাল হত
জীবন ফাটিয়ে যে রক্ত বের হল
তাতে দু’হাত মেখে খোলা ছাদে দাঁড়িয়ে হাহা করে কাঁদলাম
কী এমন করেছি যে, একটা প্রজাপতিও ধরতে পারলাম না
কপালে মাটি মাখিয়ে নিয়ে এ-পাড়ার মধ্যে দিয়ে ও-পাড়ার মধ্যে দিয়ে
. সে-পাড়ার মধ্যে দিয়ে হেঁটে বেড়ালাম ক’টা দিন
হে ভৈরব, তুমি কি একবার বনমালীপুরে আসবে
যেখানে একপাশ দিয়ে খাওয়া আর অন্য পাশ দিয়ে না-খাওয়া ছুটে চলে
আমি দাঁড়িয়ে দেখি নিভৃত উঠোনে…
*
সেই কবিতা
সেই কবিতা আসবে কি?
সেই কবিতা পড়বে কি?
ধুলোর মতন, জলের মতন, বায়ুর মতন?
একটি ঠোঁটের তিলের মতন দৃষ্ট, কিন্তু স্পর্শহীনা—
দুইটি পায়ের ছন্দে বাজে… কিন্তু বাজে নূপুর বিনা?
সেই কবিতা লিখবে কি
বাবার মতন, ভাইয়ের মতন, মায়ের মতন?
হারিয়ে যাওয়া দাদু এবং দিদিমাদের গায়ের মতন?
*
ফ্যানের সুইচ দিলে
আমার স্কুলের মধ্যে ফ্যানের সুইচ দিলে
ফ্যান ঘোরে পথিকের মতো।
দিশেহারা পথিক যেন, হারানো মেয়েকে না-পেয়ে
বনের মধ্যে দিয়ে পুকুরের পাড়ে গিয়ে
. একবার আকাশে তাকায়
পুকুরের জলে দ্যাখো মেঘ পড়ে, নড়ানড়ি করে
এরপর দিশেহারা, পুকুরকে কেন্দ্র করে
. মাথাটা নাড়িয়ে নাড়িয়ে ঘুরে যেতে থাকে
মেয়ের নাম কী ছিল! যেন একটু ভুল হয়ে গেল।
মেঘমালা নাকি? নাকি তার মেজ দাদা
. আল্পনা— নাম রেখেছিল?
এবার দেখছি, সামনে, ছাত্ররা বসে-বসে
. ক্রমাগত পরীক্ষা দিয়ে যায়
ফ্যান আমি বন্ধ করি। ছাত্ররা চেঁচিয়ে ওঠে—
. সুইচটা দিয়ে দিন স্যার।
দিয়ে দিই। ফ্যান ঘোরে দিশেহারা পথিকের মতো।
. আমিও তাকিয়ে দেখি ঘোরার বাহার।
আহা, প্রতিটি লেখায় ছুঁয়ে গেল