যদি ঋণ করেও ভালবাসতে পারি তোকে
যদি ঋণ করেও ভালবাসতে পারি তোকে
ভালবাসব।
প্রতীক্ষিত সকালেই দেখব
আঙিনায় দৌড়ে বেড়াচ্ছে
ভালবাসার স্বচ্ছতা।
এই ভূমণ্ডলে কী আছে?
এই যাপন তো কেবলই মধু-যাপন নয়।
নৈসর্গিক বেদনার ধারাবাহিক অন্তরায় ভেদ করে করে
এগিয়ে যাওয়া সময় ছিন্ন করে দেখব
তুই আমার ভালবাসার
নিরবচ্ছিন্ন আন্তর্জালের রচয়িতার
রচয়িতা মাত্র নোস।
◊
২
পাপড়ির মত পায়েও
ধুলো ওড়াতে পারে,
পাপড়ির মত পায়েও
ছিটোতে পারে জল।
কীসের প্রতীক্ষায় আছ তুমি
সে তোমার একান্ত আপন।
আমার প্রতীক্ষা
গড়ে ওঠা ইমারতের কাচে যেন
লেখা থাকে আমাদেরই নাম।
শুধু ইট বালি সিমেন্ট নয়,
ইমারত গড়া যায় পঞ্চভূতে
এই মন্ত্র তোমাকে দিলাম
নিতান্তই কানে কানে।
জানো তো, দেওয়ালেরও কান আছে।
আমাদের ইতিহাস কেউ যেন
লেখে না কখনও
এইটুকু সজাগ থেকে
গড়ে যেতে হবে প্রতিদিনের ইতিহাস
কাজলে সিঁদুরে।
◊
৩
বৃষ্টি ঝরানোটাই আবশ্যিক নয়
হিসেবের খাতা একটা রেখে দিয়ো
নিত্যদিন যাওয়া-আসার পথ-পাশে।
সেই তোমার আবশ্যিক চাঁদ হবে
আলো দেবে ফসলের খেতে।
দুর্যোগ শুধুই তোমার নয়
আমারও খড়োচাল এলোমেলো করে যেতে পারে।
সংকেত বোঝো
কোন মেঘ বৃষ্টির, কোন মেঘ ঝড়ের নাচন আনে
আনে, গড়ে তোলা সবকিছু
ভেঙে দেওয়া ঢেউ।
গড়ে তোলো অথবা ভেঙে ফেলো
দুটোকেই মনে রাখে ইতিহাস
আমি শুধু আলো দেখাই
তোমার গড়ে তোলার সময়
একান্ত আপন নিয়মে।
◊
৪
ভালবেসে ঋণী হলে
সে আমার বয়ঃসন্ধি কাল,
ভালবাসায় ঋণী হলে
সে আমার অপূর্ব সকাল
এই মহাপথ-জয় শেষে
আমাদের দেখা হয়, কথা হয়
জীবনের গান একে একে লেখা হয়
পথপাশে উঁচু হয়ে থাকা
পাথরে পাথরে,
জলাশয়ের ঘাটের পাশে বেড়ে ওঠা বৃক্ষের গায়ে।
এখনও কি খুঁজে দেখো
আঁজলায় বালি তুলে তুলে,
যে নোলক হারিয়েছ
ডুবোজলে স্নানের সময়
আমার এই ঘাটে?
যে ঘাটে হারিয়েছ
সে ঘাটেই পাবে
অন্য ঘাটে কেন গিয়ে শুধুই চেঁচাবে?
বালি তোলো বালি তোলো
ডুব দিয়ে দিয়ে
দেখে নাও
কোন গভীরতায় পড়ে আছে তোমার নোলক।
◊
৫
অনেকগুলো পথ ভেঙে
এসেছি তোর কাছে,
অনেকগুলো পথ ভেঙে
আমাদের আঙিনায় পা রেখেছে সেও।
তার ন্যূনতম আবদারে
আমাদের আঙিনায়
ডেকে ওঠে শালিক-চড়াই,
ফুটে ওঠে পলাশের ফুল আঁদাড়ে পিঁদাড়ে।
শালের জঙ্গল ঘুরে দেখে আয়
সে আমার কোন মণি-কাঞ্চন হাতে
খেলা করে ঝরা পাতা, হরিণ শাবক আর
ডোরাকাটা দাগের সীমায়?