Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

দিবাকর পুরকায়স্থর কবিতাগুচ্ছ

হ্লাদিনীর বারোমাস্যা

হ্লাদিনীর বারোমাস্যা চলে শহরের শতাব্দীপ্রাচীন কোঠাবাড়িটায়,
পাশেই নূতন পানশালা, কানাই, বলাই আসে নিতি
সাঁঝের বেলায় হয় হুল্লোড়,
মাতোয়ারা হয় প্রেমে সবক’টা।
পেছনের দেয়ালে ঝোলানো শক্তির ছবির শিশ্নটা
লম্বা হতে হতে একেবারে খোঁচা মারে
গতিহীন দীনতার পাঁজরে, বলে, ‘চলে যা ওখানে
এবার, যেখানে রামধনু উঠেছে বৃষ্টির পর।’

সবক’টা মাতাল চমকে উঠে বলে, ‘যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব?
যাবার আগে একবার হ্লাদিনীর মুখে চুমো খাব।’

*

সীমান্ত সংবাদ

স্বাধীনতা দিবসে অমৃত মহোৎসব ছিল।
রাজধানী কলকাতা পর্ব শেষ,
এখন বসিরহাট হয়ে বাগদা এসেই ওরা দেখল
সামনে কাঁটাতার
দূরে উড়ছে নিশান পতপত করে,
বাজছে গানের সুর—
‘ঝান্ডা উঁচা রহে হমারা’।

পাশে পটলের খেতে ঝটাপটি, ঝাপটিয়ে ডানা
মাটি আঁচড়ায় পাখি। পাশে কাঁদে ছানা।
সীমা পাহারা দেয়া পতাকা ড্যাব ড্যাব করে দেখে
দেশরক্ষকের উদ্ধত শিশ্নটা
যার গায়ে লেখা আছে বড় বড় করে—
‘ঝান্ডা উঁচা রহে হমারা’।

*

শীতঘুম

মেঘের দেয়াল‌ ভেঙে শীতের দুপুরে
তোমার চুড়োয় সখী
সুখচরী সহচরী
ঘুম ঘুম নিঃঝুম।

বিষাক্ত নিশ্বাসে
তোমার বদ্বীপে সখী
র‌্যাটেল সাপের ফণা দোলে
রুমঝুম রুমঝুম।

রাত বাড়ে, জল পড়ে
ঝর্নাধারায় সখী
সুখচরী সহচরী
ঝম ঝম ঝম ঝম।
চারদিক ঘুম ঘুম নিঃঝুম।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গাপুজো: অতীত দিনের স্মৃতি

মহালয়া দিয়ে হত পুজোর প্রকৃত সূচনা। শরতের ভোররাতে আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচারিত এই অনুষ্ঠানটির শ্রোতা অন্তহীন, এবং এখনও তা সমান জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও অনুষ্ঠানটির শ্রোতা অগণিত। আমাদের শৈশবে বাড়ি বাড়ি রেডিও ছিল না, টিভি তো আসেইনি। বাড়ির পাশে মাঠে মাইক থাকত, আর প্রায় তিনশো গজ দূরের এক বাড়িতে মাউথপিস রাখা থাকত। সেখান থেকে ভেসে আসত মহালয়ার গান, ভাষ্য।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গাপূজা, মূর্তিপূজা: দেশে দেশে

আসলে বাঙালি নিরন্তর এক অনুসন্ধানী, ব্যতিক্রমী, অভিনব-চিন্তক, ক্রমবিকাশপ্রিয় ও অন্তিমে রহস্যময় জাতি। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলমান আস্তিক নাস্তিকে মিলিত এই জাতি সঙ্ঘারাম আর মিনার, ধ্বজা ও ওংকার, জগমোহন-মিরহাব-স্তূপ-ভস্মাচ্ছাদিত এক জাতি, নিজ মুদ্রাদোষে নয়, মু্দ্রাগুণে আলাদা।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

শারদোৎসব: বাংলাদেশে

দুর্গাপুজো কেবল ভক্তের জন্য-ই নয়, ভাল লাগাদের জন্যও। যে ভাল লাগা থেকে ভাই গিরীশচন্দ্র সেন কোরানশরীফ বাংলায় অনুবাদ করেন, অদ্বৈত আচার্য যবন হরিদাসের উচ্ছিষ্ট নিজহাতে পরিষ্কার করেন, স্বামী বিবেকানন্দ মুসলিম-তনয়াকে কুমারীপুজো করেন! দুর্গা বাঙালির কাছে, ধর্মনির্বিশেষে আগ্রহের, যেহেতু এই দেবী পরিবারসহ আসেন, আর সঙ্গে নিয়ে আসেন কাশফুল আর শিউলি। তাই তো সনাতন রামপ্রসাদ, খ্রিস্টান মাইকেল, ব্রাহ্ম রবীন্দ্রনাথ এবং মুসলমান কাজী নজরুল দুর্গাকে নিয়ে কলম না ধরে পারেননি!

Read More »
কাজী তানভীর হোসেন

ধানমন্ডিতে পলাশী, ৫-ই আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কয়েকদিন ধরে যা ঘটেছিল, তা শুরু থেকেই গণআন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পরিণত হয়েছিল। আজ আমরা কার্যক্রম দেখেই চিনে যাই ঘটনাটি কারা ঘটাচ্ছে। আগুন আর অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব রয়েছে বিএনপি-জামাত ও রোহিঙ্গাদের। তারা যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা করে না।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

আমরা বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিলাম, যাঁকে খুব সঙ্গত কারণেই ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ বলা হয়। পেয়েছি প্রফুল্লচন্দ্র সেন ও অজয় মুখোপাধ্যায়ের মতো স্বার্থত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী। এবং জ্যোতি বসুর মতো সম্ভ্রান্ত, বিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখর কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ছিলেন বুদ্ধদেব। কেননা তাঁর মতো সংস্কৃতিমনা, দেশবিদেশের শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক সম্পর্কে সর্বদা অবহিত, এককথায় এক আধুনিক বিশ্বনাগরিক মানুষ পাইনি। এখানেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনন্যতা।

Read More »