Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

অরিজিৎ চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা

মোহিনীঅট্টম

বৃষ্টি

তোমাকে দেখার পর
কষ্ট বেড়ে গেছে।

ভালবাসার আগের শোক।
চোখ বিদীপ্ত। বৃষ্টি ভেজা অশোক!

ঠিক লাজুক নও, তবু লাজুক দোলা।

কৃষ্ণকলি, আমি বড়ই মেঘলা।

কৃপার কৃপাণ হাতে
যদি দেখা দাও রাতে?

আমি ঠোঁটের করাতে
তোমাকেই দিয়ে যাব
বাদামি তিতির…

উৎসর্গ

তোমার ঘৃণার মধ্যে আমার বেঁচে থাকা। এও কি কম কথা! জাটিঙ্গা পাখির উপমা আমার জন্য নয়। পিঁপড়ের কোনও অধ্যাবসায় তোমার জন্যে নয়। তবু সমূহ ঘৃণার ভেতর এই কবিতা লেখা হয়

ফ্রেম

সবাই ঘুমিয়ে পড়লে আমি জেগে থাকি। আর চোখ মেলে দেখি ঘুমন্ত খাট বিছানা ক্যালেন্ডার টিপের পাতা জলের গ্লাস এমনকি বাগানের গাছগুলো!

পথের কুকুর বসে থাকে পাহারায়।

মুক্তি

অবিকল হেমন্তকাল তোমার আঁচলে এঁকে দেব।

বসন্তে ঝগড়া হবে খুব।

শীতে দার্জিলিংয়ের ম্যালে বসে কফি খেতে খেতে চিনে নেব দুর্গম সৌন্দর্যতত্ত্ব

আমাদের কোনও শরৎকাল থাকবে না।

একটা অভিমানী বর্ষাকাল নিয়ে বেঁচে থাকব .                      মোহিনীঅট্টম…

আমাদের কোনও ছাতা থাকবে না।
বর্ষাতি থাকবে না।

তুমি আমার নাম দেবে ‘ঝড়’
আমি তোমার নাম দেব ‘ঝর্না’

Advertisement

তারপর একদিন দধিমঙ্গলের আলো ফুটবে আকাশে।

পুরুষ অগ্নির বীরত্বগাঁথায় চাকভাঙা মধু
মুহূর্ত বসন্ত দেখে বলে উঠবে মৌচাক! মৌচাক!

জন্ম

মনখারাপ হলে আজকাল আর কোথাও যাই না। তোমার কাছে যাই। মনে হয় নির্জন তুমি আমি নিষেধের আকর্ষণে ধাবমান। ফিরে আসি, যেন নিষ্ঠুরের অধরা বিস্ময়।

এই আসা যাওয়ার মাঝে চাঁদ ওঠে বৃষ্টি পড়ে।

এই আসা যাওয়ার মাঝে তোমার মুখটি মনে পড়ে খুব

স্বীকারোক্তি

তাকে ভালবাসা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। অগত্যা পরাজয় স্বীকার করতেই হল। মন বলল, চলো নদীর তীরে বাঁশির কাছে চলো। চোখ দেখল, রাখাল বালক একাগ্ৰ মনে বাঁশি বাজাচ্ছে। আমার দেখাগুলো কেমন যেন অবাক হয়ে নৈকট্য খুঁজল। এলোমেলো বাতাস বইল। শীতের বাতাস। নিজেকে নিজে চিনতে চেষ্টা করলাম। পারলাম কই! ভালবাসা ততক্ষণে একটা আলোয়ান হয়ে আমাকে জড়িয়ে উষ্ণতা দিচ্ছে। সত্যি! তাকে ভালবাসা ছাড়া বোঝা যেত না মুহূর্তবিন্দু থেকে দিগন্তের দূরত্ব অনেক।

বিবাহ

সিঁড়ি ভেঙে
ছাদে ওঠো             আত্মসমর্পণ

তাহলেই
বারো মাসে           তেরো পার্বণ

প্রেম

কতটা ভাইরাল হলে তুমি আজ ক্যাডবেরি দেবে?
কতটা ভাইরাল হলে আজ তুমি ভালবাসা নেবে?

বাউলের চাঁদ আর আউলের জাগানিয়া সুর
তোমার পাশে, ওই ঘুমভোলা মগ্ন দুপুর

কতটা ভাইরাল হলে মেঘে ঢাকা আষাঢ়ের নদী
‘ভালবাসি’ একদিন বলে ফেলি বলে ফেলি যদি!

নত গোধূলির ডালে দোল খায় বকুলের ফুল
দুরাশারা রাত জেগে বুনে চলে শীতার্ত উল।

চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

নগর জীবন ছবির মতন হয়তো

আরও উপযুক্ত, আরও আরও সাশ্রয়ী, এসবের টানে প্রযুক্তি গবেষণা এগিয়ে চলে। সময়ের উদ্বর্তনে পুরনো সে-সব আলোর অনেকেই আজ আর নেই। নিয়ন আলো কিন্তু যাই যাই করে আজও পুরোপুরি যেতে পারেনি। এই এলইডি আলোর দাপটের সময়কালেও।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঋত্বিক ঘটক ও বাংলাদেশ

ঋত্বিক ঘটকের জীবনের প্রথম বাইশ বছর (১৯২৫-১৯৪৭) কেটেছে মূলত পূর্ব-বাংলায়, যা এখনকার বাংলাদেশ। তাঁর জন্ম ঢাকার ২,ঋষিকেশ দাস রোডের ঝুলন বাড়িতে। ১৯৪৭, অর্থাৎ দেশভাগ ও স্বাধীনতা প্রাপ্তির আগে পর্যন্ত তিনি মূলত পূর্ব-বাংলায় কাটান। আমরা দেখব, পূর্ব-বাংলা যেমন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল, সে-দেশ, সে-ভূমির প্রভাব তদনুরূপ ঋত্বিকেরও পড়েছিল তাঁর চলচ্চিত্রে।

Read More »
মণিকর্ণিকা রায়

অনুগল্প: অর্জন

অসহায় বৃদ্ধের খাওয়া হয়ে গেলে মাঝেমাঝে গল্পও করত ওঁর সাথে। আদিত্য লক্ষ্য করেছিল এই ব্যাপারটা যেন তার মনে একটা বদল আনছে— যেন রোজ তার শরীর-মন জুড়ে সঞ্চালিত হচ্ছে এক অদ্ভুত আনন্দের অনুভূতি। যেন সে সত্যিই মানুষ হয়ে উঠছে।

Read More »
মো. বাহাউদ্দিন গোলাপ

জীবনানন্দ দাশের সময়চেতনা: পুরাণ, প্রকৃতি ও আধুনিক নিঃসঙ্গতার নন্দনতত্ত্ব

পৌরাণিক, মনস্তাত্ত্বিক ও প্রকৃতিগত সময়চেতনা তাঁকে রবীন্দ্র-পরবর্তী যুগে এক স্থায়ী ও ব্যতিক্রমী মহাকবির আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। তাঁর শিল্পকর্ম আমাদের শেখায়— দ্রুত ধাবমান জীবনের বাইরে দাঁড়িয়ে ধীরে চলতে, নীরবতার গভীরে কান পাততে এবং প্রতিটি ক্ষণিকের মাঝে অনন্তের ইশারাকে খুঁজে পেতে। তাঁর সাহিত্য ভবিষ্যতের প্রতিটি সংবেদনশীল পাঠকের জন্য আধুনিকতার এক অমূল্য পাঠ হয়ে থাকবে, যা মানুষের জীবনকে শিল্প ও প্রকৃতির একাত্মতায় আবিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং প্রমাণ করে দেয়— কাব্যই চূড়ান্ত আশ্রয়, যখন সমস্ত পথ ফুরিয়ে যায়।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

জীবনানন্দ: প্রয়াণদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

হেমন্তকাল ও জীবনানন্দ অভিন্ন, ওতপ্রোত ও পরস্পর পরিপূরক। তাঁর কবিতায় বারবার নানা অনুষঙ্গে, বিভঙ্গে ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গে হেমন্তের বসতি যেন। ‘হেমন্তের মাঠে মাঠে ঝরে শুধু/ শিশিরের জল’, ‘ধানক্ষেতে, মাঠে,/ জমিছে ধোঁয়াটে/ ধারালো কুয়াশা’! কুয়াশা আর শিশির, এই দুই অচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হেমন্তের, চিনিয়ে দেন তিনি। ‘চারিদিকে নুয়ে পড়ে ফলেছে ফসল/ তাদের স্তনের থেকে ফোঁটা ফোঁটা পড়িতেছে শিশিরের জল’, হেমন্তকে বাহন করে এই যে প্রকৃতির অপরূপতা মেলে ধরা, তা অন্য কোন বাঙালি কবির আছে?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

দুর্গা মাঈ কী! জয়!

ঢাকা বা সমগ্র বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোর চাঁদা আদায়ের চল খুব একটা নেই। মণ্ডপে এসেই পাড়ার লোক চাঁদা দেন। জবরদস্তি করে চাঁদা আদায়ের যে বীভৎসতা কলকাতা তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আছে, তা অন্তত ঢাকা আর বরিশালে দেখিনি। পুজোর দিনেও অনেকে এসে প্যান্ডেলের পাশে চাঁদা আদায়কারীদের টেবিলের সামনে এসে চাঁদা দিয়ে যান। পাড়ার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে। স্বেচ্ছায় এসে চাঁদা দিয়ে যান। এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

Read More »