Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

বাথুকাম্মা: মেয়েদের একান্ত নিজস্ব কুসুম মহোৎসব

‘উত্তরের দক্ষিণ এবং দক্ষিণের উত্তর’, তেলেঙ্গানা দীর্ঘকাল ধরে বিবিধ ভাষা ও সংস্কৃতির মিলনস্থল। একে সহজেই ভারতের মিশ্র সংস্কৃতি, বহুত্ববাদ এবং সহাবস্থানের জন্য সর্বোত্তম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। দাক্ষিণাত্য মালভূমির উচ্চভূমিতে অবস্থিত তেলেঙ্গানা উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের সেতু। এটা কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, গোটা অঞ্চলটি তার ‘গঙ্গা-যমুনী তহজীব’-এর জন্য এবং এর রাজধানী হায়দ্রাবাদ একটি ‘ক্ষুদ্র ভারত’ হিসাবে পরিচিত! ‘গঙ্গা-যমুনী তহজীব’ একটি উর্দু লবজ, যা হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্র বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
এই অঞ্চলের ভূগোল, রাজনীতি এবং অর্থনীতি তেলেঙ্গানার সাংস্কৃতিক পটভূমি নির্ধারণ করেছে। এই অঞ্চলের প্রাচীনতম সাতবাহন শাসকরা স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম অর্থনীতির বীজ বপন করেছিলেন, যার রেশ আজও অনুভব করা যায়। মধ্যযুগে কাকতিয় রাজবংশের শাসন (এগারো থেকে এবং চোদ্দো শতকের মধ্যে ওয়ারঙ্গল তাদের রাজধানী ছিল) এবং পরবর্তীকালে হায়দ্রাবাদ রাজ্যে কুতুব শাহী বংশ এবং আসফ জাহী বংশের শাসনে এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয়েছিল।
তেলেঙ্গানা, একটি ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক সত্তা হিসাবে ২০১৪ সালের ২ জুন ভারতের ২৯তম এবং সর্বকনিষ্ঠ রাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সত্তা হিসেবে এর গৌরবময় ইতিহাস অন্তত আড়াই হাজার বছর বা তারও বেশি। ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশ শাসকের কবল থেকে মুক্ত হয়ে যখন ভারত স্বাধীন হল, তখনও ১৩ মাসের জন্য একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে ছিল হায়দ্রাবাদ। পরে তার ভারতভুক্তি ঘটে। মাঝখানে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্যটি। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি ভৌগোলিক-রাজনৈতিক ধাপ পেরিয়ে তেলেঙ্গানার জন্মবৃত্তান্ত পর্যন্ত ইতিহাস প্রায় সকলেরই জানা। আমাদের আজকের আলোচ্য তেলেঙ্গানা রাজ‍্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় উ‌ৎসব বাথুকাম্মা নিয়ে। আমরা বরং সেখানে ফিরি।

বাথুকাম্মার প্রতীক আসলে একটি সুন্দর ফুলের স্তূপ।

ভারতের অন্যান্য উৎসবের মত বাথুকাম্মাও কৃষি সংস্কৃতির একটি উৎসব। বর্ষাকালের সফল সমাপ্তি এবং সেই সময়ে জীবনরক্ষার জন্য দেবী মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এই শারদোৎসব উদযাপিত হয়। বাথুকাম্মা তেলেঙ্গানার সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতিনিধিত্বকারী উৎসব। ২০১৪-তে তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের পর থেকেই বাথুকাম্মা তাদের রাজ্য উৎসব হিসাবে পালিত হচ্ছে। বাথুকাম্মার প্রতীক আসলে একটি সুন্দর ফুলের স্তূপ, যা মন্দিরের আকারে সাতটি কেন্দ্রিক স্তরে শরৎকালে ফোটা বিভিন্ন মৌসুমী ফুল ও লতাপাতায় তৈরি করা হয়।
বাথুকাম্মার নাম ‘বাতুকু’ থেকে এসেছে, তেলুগুতে যার অর্থ জীবন আর আম্মা অর্থাৎ মা। দেবী মহাগৌরীকে জীবনদাত্রী বাথুকাম্মারূপে উপাসনা করা হয়। নারীত্বের পৃষ্ঠপোষক হলেন গৌরীদেবী।
বাথুকাম্মা উৎসব মহালয়া অমাবস্যার দিন থেকে শুরু হয় এবং ৯ দিন ধরে চলে। এই উৎসবটি সমাপ্ত হয় অশ্বয়ুজা নবমীতে, যা দুর্গাষ্টমী নামে পরিচিত।
প্রথম দিন: ইঙ্গিলি পুলা বাথুকাম্মা
দ্বিতীয় দিন: আত্তুকুলা বাথুকাম্মা
তৃতীয় দিন: মুদ্দাপ্পু বাথুকাম্মা
চতুর্থ দিন: নানাবিয়্যাম বাথুকাম্মা
পঞ্চম দিন: আতলা বাথুকাম্মা
ষষ্ঠ দিন: আলিগিনা বাথুকাম্মা (অলকা বাথুকাম্মা)
সপ্তম দিন: ভেপাকায়ালা বাথুকাম্মা
অষ্টম দিন: ভেন্নায়ি মুদ্দালা বাথুকাম্মা
নবম দিন: সাদ্দুলা বাথুকাম্মা।
প্রতিটি দিনের এই নামকরণ মূলত এরজন্য প্রস্তাবিত ‘নৈবেদ‍্যম’ বা নৈবেদ্যের প্রকারকে নির্দেশ করে। বেশিরভাগ নৈবেদ্য প্রস্তুত করা খুব সহজ এবং সাধারণত অল্পবয়সী বাচ্চা বা অল্পবয়সী মেয়েরা উৎসবের প্রথম আট দিনের নৈবেদ্য প্রস্তুত করে। শেষদিন, সাদুলা বাথুকাম্মার নৈবেদ্য প্রস্তুতিতে পরিবারের সমস্ত মহিলা অংশ নেন। উৎসবের প্রতিটি দিন নৈবেদ্যম বা একটি বিশেষ থালা দেবীর উদ্দেশে প্রস্তুত ও উৎসর্গ করা হয়। এর সাধারণ উপাদান হল ভুট্টা, বাজরা, কালো ছোলা, হলুদ ছোলা, সবুজ ছোলা, বাদাম, তিল, গম, চালের গুঁড়ো, কাজুবাদাম, গুড়, দুধ, মাখন, ঘি ইত্যাদি।

ভারতের অন্যান্য উৎসবের মত বাথুকাম্মাও কৃষি সংস্কৃতির একটি উৎসব।

সাদ্দুলা বাথুকাম্মা অর্থাৎ বাথুকাম্মার নবম দিন, অশ্বয়ুজা মাসের অষ্টম দিনে দুর্গাষ্টমীর সঙ্গে মিলিত হয়। এই দিনে খাবারের নৈবেদ্য বা নৈবেদ্যম পাঁচ ধরনের রান্না করা ভাতের থালা: পেরুগান্নম সাদ্দি (দই ভাত), চিন্থাপান্ডু পুলিহোরা সাদ্দি (তেঁতুলের চাল), নিম্মকায়া সাদ্দি (লেবু ভাত), কোব্বরা সাদ্দি (নারকেল চাল) এবং নুভ্ভুলা সাদ্দি (তিলের চাল) নিবেদন করা হয়।
সামাজিকভাবে, বাথুকাম্মা মানে ‘জীবনের উৎসব’ এবং গোলাভর্তি ফসল তোলা ও আর্থিক সমৃদ্ধির জন্য দেবী পার্বতীর আশীর্বাদ প্রার্থনা করার বিশেষ পার্বণ। বাথুকাম্মা উৎসবের প্রস্তুতির জন্যে প্রথম পাঁচ দিন মহিলারা তাদের ভাকিলি (উঠোন) পরিষ্কার করেন গোবরজল দিয়ে, এরপর আঙিনায় বেস হিসাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় মানাগলা আকারা বা মগগু, অর্থাৎ চালের ময়দা। এর পরে রাঙ্গোলির সাহায্যে সাজানো হয়। বাড়ির পুরুষ সদস্যরা এই সময় ফুল সংগ্রহ করেন বিভিন্ন জলাভূমির পাশে বা উন্মুক্ত মাঠ থেকে।
বাথুকাম্মার প্রতীকী গোপুরমটি মোরগ ফুল, সোনামুখী ফুল, গাঁদা ফুল, চন্দ্রমল্লিকা ফুল, পদ্ম ফুল, কুকুরবিতা (Cucurbita) ও কুকুমিস স্যাটিভাস (Cucumis Sativus) পাতা ও ফুল, নীল অঞ্জন ফুল, ত্রিধারা ফুল, জোয়ান ফুল ইত্যাদি প্রাণবন্ত বিভিন্ন রঙের ফুল দিয়ে। এত দৃষ্টিনন্দনভাবে এত রকম ফুল দিয়ে এটি সাজানো হয়, যে কারণে বাথুকাম্মাকে ‘ফুলের উৎসব’ বলেও অভিহিত করা হয়।

বাথুকাম্মাকে ‘ফুলের উৎসব’ বলেও বর্ণনা করা হয়।

বাথুকম্মার প্রতীকী গোপুরম প্রস্তুত করা তেলেঙ্গানার একটি লোকশিল্প। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু অংশের মহিলারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অত্যন্ত রুচিশীলভাবে এই সজ্জায় তাদের পারদর্শিতা প্রদর্শন করে আসছেন নিষ্ঠা ও ভক্তির সঙ্গে সৃজনশীলতার সম্মিলনে।
বাথুকম্মার অর্থ, ‘জীবনে ফিরে আসুন মা’ এবং এটি দেবী সতীকে ফিরে আসার অনুরোধ। জনশ্রুতি এই যে, সতীদেবী পার্বতী হিসাবে ফিরে এসেছিলেন এবং তাই উৎসবটি দেবী পার্বতীর জন্য উত্সর্গীকৃত। এই উৎসবের পিছনে কয়েকটি মিথ রয়েছে। একটি পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে দেবী গৌরী ‘মহিষাসুর’-কে তীব্র লড়াইয়ের পরে হত্যা করেছিলেন। এই লড়াইয়ের পরে ক্লান্তির কারণে তিনি ‘অশ্বয়ুজা পদ্যমী’-তে ঘুমাতে গেলেন। ভক্তরা তাঁর ঘুম থেকে ওঠার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন‌ এইসময়ে দেবী যাতে ঘুম থেকে উঠে ফুলের শোভা ও সুগন্ধে আবার সতেজ হয়ে ওঠেন।

তেলেঙ্গানা রাজ‍্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় উ‌ৎসব বাথুকাম্মা।

অন্য মিথটি হল, বাথুকাম্মা ‘চোল’ রাজা ‘ধর্মাঙ্গদ’ ও ‘সত্যবতী’র মেয়ে হিসাবে জন্মান। রাজা এবং রানি যুদ্ধের ময়দানে তাদের ১০০ পুত্রকে হারিয়ে দেবতা লক্ষ্মীর কাছে তাদের সন্তানের মত জন্মের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। দেবী লক্ষ্মী তাঁদের আন্তরিক প্রার্থনা শুনে তাতে সাড়া দিয়েছিলেন। লক্ষ্মীদেবী যখন রাজপ্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সমস্ত ঋষি তাঁকে আশীর্বাদ করতে এসেছিলেন এবং তারা তাঁকে অমরত্ব দিয়েছিলেন, যার অর্থ বাথুকাম্মা বা ‘চিরকাল জীবিত‌ ও জাগ্রত’। সেই থেকে তেলেঙ্গানার যুবতী মেয়েরা বাথুকাম্মা উৎসব পালন করে আসছেন। কন্যারা যেন ভাল স্বামী পান এই বিশ্বাসে দেবীর কাছে প্রার্থনা করা আর বিবাহিত মহিলারা তাদের পরিবারের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনার জন্য উৎসবটি উদযাপন করেন। তাই পরিবারের ছোট থেকে বড় সকল মহিলা বিশেষভাবে সাজানো ফুলের উপাচারের চারপাশে তাদের সেরা পোশাক ও গহনায় সুসজ্জিত হয়ে নাচগান সহযোগে নয়দিন ব‍্যাপী বাথুকাম্মা উৎসবে সামিল হন।

জলে ভাসানোর বেলা।

নবমতম দিনে সাতটি স্তরে সজ্জিত, ফুলের অনন্য শৈলীর স্তূপটি, যা এতদিন যে যার বাড়িতে নৈবেদ্য দিয়ে পুজো করছিলেন, সেগুলি বহন করে নিয়ে এসে পুকুর, দিঘি বা নদীর পাশে কোনও উন্মুক্ত প্রান্তরে একসঙ্গে গোল করে রেখে তাকে ঘিরে নাচগান করেন মেয়েরা। এই স্থানটি আলো দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে মহিলারা শোভাযাত্রা করে ওই ফুলের তৈরি গোপুরম-সদৃশ কাঠামো বা কখনও তার ওপর স্থাপিত দেবীমূর্তিকে ধীরে ধীরে জলে সংস্থাপন করেন। এরপর বাড়ি ফিরে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের মধ‍্যে প্রসাদ বিতরণ করেন।

হুসেন সাগর লেক।

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই অনুষ্ঠানটির গুরুত্ব হল একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে এগিয়ে নিয়ে চলা। অশুভের বিরুদ্ধে শুভ ও মৈত্রীর আদর্শ বহন করা এবং মানুষে মানুষে একত্রিত হয়ে একতা ও সম্প্রীতির সুযোগ করে দেওয়া ও আমাদের দেশীয় লোকশিল্পকে উজ্জীবিত করা।

চিত্র : গুগল

ফুল দেই: উত্তরাখণ্ডের ফুলেল উৎসব

গড়িয়া: ত্রিপুরার জনজাতিদের উৎসব আজ সর্বজনীন

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

স্বামী বিবেকানন্দ : প্রয়াণদিনে স্মরণ

বিবেকানন্দই সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক বাঙালি তথা ভারতীয়। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ১৯১২-পর্বে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাওয়ার পর, এবং তার পরের বছর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু এর প্রায় কুড়ি বছর পূর্বেই বিবেকানন্দ শিকাগো-বক্তৃতা ও আমেরিকা-ইয়োরোপে এক নাগাড়ে প্রথম দফায় চার বছর থাকার সুবাদে আমেরিকার বিদ্বজ্জনমহলে যেমন, তেমনই জার্মানির মাক্সমুলার, ফ্রান্সের রোমাঁ রোলাঁ, রাশিয়ার টলস্টয় প্রমুখের শ্রদ্ধা এবং মনোযোগ আদায় করেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

প্রফুল্ল রায়: ব্রাত্য সময়ের কথাকার

প্রফুল্ল রায় নাকি অতীশ দীপঙ্করের বংশের। দেশভাগের অভিশাপেই দেশছাড়া হতে হয় তাঁকে, ১৯৫০-এ। একটা বিধুর বিষয় আমরা লক্ষ্য না করে পারি না। দেশভাগ সুনীল-শ্যামল-মহাশ্বেতা-শীর্ষেন্দু-অতীনদের কেবল ভূমিচ্যুত করেই ছাড়ল না, এমনকি তাঁদের কারুবাসনাকেও অন্যতর রূপ দেওয়ালো। দেশভাগ না হলে আমরা সুনীলের হাতে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, শীর্ষেন্দুর ‘দূরবীণ’ বা প্রফুল্ল রায়ের ‘পূর্বপার্বতী’ পেতাম না, যেমন পেতাম না শওকত ওসমানের ‘কর্ণফুলি’ বা হাসান আজিজুল হকের ‘আগুনপাখি।’

Read More »
শৌনক দত্ত

মন্দ মেয়ে ভদ্র অভিনেত্রী: সুকুমারী দত্ত

বিনোদিনী দাসীর বর্ণময় জীবনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া এই ‘তারকা অভিনেত্রী’-র বহুমাত্রিক জীবনটিও কম রঙিন নয় বরং বিস্মৃত নক্ষত্র এক, যিনি ১২৮২ বঙ্গাব্দের ৩ শ্রাবণ (১৮৭৫ খ্রি., মূল্য ছিল ১ টাকা) ‘অপূর্ব্বসতী’ নাটকটি লিখে বাংলা নাট্যাতিহাসের প্রথম নারী নাট্যকার হিসেবে সুবিদিত হয়ে আছেন।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

আষাঢ়স্য প্রথম দিবস ও কালিদাস

পণ্ডিতেরা তর্ক তুলেছেন, কালিদাস ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ লেখেননি৷ কেননা একেবারে পয়লা আষাঢ়েই যে মেঘ নেমে বৃষ্টি আসবে, তা হয় না। তাঁদের মতে, ওটা আষাঢ়ের শেষদিন, ‘আষাঢ়স্য প্রশম দিবস’ হবে। কিন্তু প্রথম দিবস-ই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এবং তা এতটাই যে, কালিদাসকে নিয়ে ভারত সরকার যে ডাকটিকিট বের করেছে, সেখানে ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবসে’ শ্লোকটি উৎকীর্ণ।

Read More »
রূপকুমার দাস

রূপকুমার দাসের কবিতাগুচ্ছ

পড়তি বিকেলে আলতা রং রৌদ্রের রক্তিম ইজেলে,/ লজ্জারাঙা মুখ হত তরতাজা বসরাই গোলাপ।/ এখন ঈশানের মেঘপুঞ্জ ঢেকে দেয় সব কারুকাজ।/ বারুদের কটু ঝাঁঝে গোলাপের গন্ধ উবে যায়।/ নক্ষত্রের আলো কিংবা জ্যোৎস্নার ঝর্নাধারা নয়,/ বজ্রের অগ্নিঝলকে ঝলসে যায় উদভ্রান্ত চোখের নজর।/ হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রাখা আরাধ্যার চিত্রলেখা,/ অজানা শংকায় ডুবে যায় অন্ধকার সমুদ্রের জলে।/ সে সমুদ্র তোলপাড় লবেজান আমি তার পাই না হদিস।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

জাতীয়তাবাদ এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য

সরকারিভাবে এবং বিত্তশালী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ভক্তি ও নিবেদনের সংস্কৃতিকেই ভারতীয় সংস্কৃতি বলে উপস্থাপনের উদ্যোগ অনেকটা সফল হলেও এই একমাত্র পরিচয় নয়। সমস্ত যুগেই যেমন নানা ধারা ও সংস্কৃতি তার নিজস্বগতিতে প্রবাহিত হয় তেমনই আধুনিক, উত্তর-আধুনিক যুগেও অন্যান্য ধারাগুলিও প্রচারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলা ও বাঙালি বড় ভূমিকা পালন করেছে। যে যুগে শাস্ত্রীয় নৃত্য গড়ে তোলার কাজ চলছে সে যুগেই শান্তিনিকেতনে বসে রবীন্দ্রনাথ আধুনিক নৃত্যের ভাষা খুঁজেছেন। নাচের বিষয় হিসেবেও গড়ে নিয়েছেন নতুন কাহিনি, কাব্য। পুরাণ থেকে কাহিনি নিয়েও তাকে প্রেমাশ্রয়ী করেছেন। নারীকে দেবী বা দাসী না মানুষী রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধর্মের স্থানে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগে গড়েছেন নতুন উৎসব।

Read More »