Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

কবি ও বিজ্ঞানী: দুই ভুবনের সংযোগ

ইংল্যান্ডের লেক ডিস্ট্রিক্টে গ্রাসমিয়র নামে একটি জায়গায় বিশ্ববন্দিত কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ একটি পুরোনো বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ছিলেন। বাড়িটির নাম ‘ডোভ কটেজ’। বাড়িটি বর্তমানে কবি উইলিয়াম বাড়ি হিসেবে পরিচিত। এই বাড়িতে কবি ও তাঁর বোন ডোরোথি থেকেছেন, ডিসেম্বরের ১৭৯৯ থেকে ১৮০৮-র মে অবধি প্রায় আট বছর। একদিন বন্ধুবর কবি স্যামুয়েল টেলর কোলরিজের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখনই চোখে পড়ে ওই বাড়িটি। বাড়িটি বেশ মনে ধরে যায় ওয়ার্ডসওয়ার্থের। ঠিক করেন যে এখানেই বোনের সঙ্গে থাকলে বেশ হয়। এই বাড়িতেই ওয়ার্ডসওয়ার্থ তাঁর বেশ কয়েকটি স্মরণযোগ্য কবিতা লিখেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ‘I Wandered Lonely as a Cloud’ (Daffodils)। এখানেই তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু মেরি হ্যাচিনসনের (Mary Hutchinson) সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। ডোভ কটেজেই ওয়ার্ডসওয়ার্থ দম্পতির তিনটি সন্তানের জন্ম হয়েছে। মেরি যখন চতুর্থবার সন্তানসম্ভবা, সে-সময় ওয়ার্ডসওয়ার্থ ‘ডোভ কটেজ’ ছেড়ে কাছাকাছি এলাকাতেই একটি দোতলা বাগানবাড়িতে উঠে যান। আসলে ‘ডোভ কটেজ’ শুরুর দিকে ঠিক ছিল। পরে পরিবারে লোকসংখ্যা বাড়ায় তুলনামূলক ছোট ওই বাড়িতে অসুবিধা হচ্ছিল। আর সেই কারণেই বড় বাড়িতে সকলে মিলে একসঙ্গে থাকার সুবিধার জন্যেই বাড়িবদল।

কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ।

নানান কবি-সাহিত্যিকদের আনাগোনা ছিল এই ডোভ কটেজে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্কটিশ লেখক স্যার ওয়াল্টার স্কট, কবি রবার্ট সাউদি, কবি ও সাহিত্যিক চার্লস ল্যাম্ব, লেখক মেরি অ্যান ল্যাম্ব এবং অবশ্যই ছিলেন কবি কোলরিজ। এছাড়াও আরও একজন বন্ধু আসতেন, তিনি হলেন উদ্ভাবক হাম্ফ্রি ডেভি। ওয়ার্ডসওয়ার্থের বাড়িতে কবি-সাহিত্যিকদের যাতায়াত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু হাম্ফ্রি ডেভি-র মত একজন উদ্ভাবক এবং কিংবদন্তি রসায়নবিদ ও দার্শনিকের কবির সঙ্গে কী করে বন্ধুত্ব হল? শুধু কি কবির বাড়িতে যাতায়াতই? পরবর্তী সময়ে দেখা গিয়েছে, ডোভ কটেজে বিখ্যাত ইলেক্ট্রোকেমিস্ট স্যার হাম্ফ্রি ডেভির (১৭৭৮–১৮২৯) তেলরঙে আঁকা একটি পোর্টেট রয়েছে! কবির বাড়িতে বিজ্ঞানীর ছবি! আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। আসলে কবির থেকে বয়সে বছর আটেকের ছোট বরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার হাম্ফ্রি ডেভির সঙ্গে ওয়ার্ডসওয়ার্থ-এর গভীর সখ্য ছিল। ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। ১৮০৪ সালে কবি তাঁর তরুণ বন্ধু ডেভিকে এই বাড়িতেই নেমন্তন্ন করেছেন বেশ কয়েকবার।

কবি ও বিজ্ঞানীর এই বন্ধুত্বের কথা অনেকেরই জানা নেই। পাঠকদের কাছে হয়তো আলাদা করে ডেভির পরিচয় না দিলেও চলবে। তবু দু-এক কথায় ডেভির পরিচয় দিই। হ্যাঁ, তিনিই আধুনিক রসায়নবিদ্যার স্থপতি স্বয়ং স্যার হাম্ফ্রি ডেভি। তাঁর উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবনের মধ্যে ‘মাইনারস সেফটি ল্যাম্প’, যা ‘ডেভি’জ সেফটি ল্যাম্প’ হিসেবে অনেকেরই জানা। এছাড়াও ‘ইলেক্ট্রো-কেমিস্ট্রি’ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। পরবর্তীকালে সুবিখ্যাত রয়্যাল সোসাইটির ‘প্রেসিডেন্ট’ নির্বাচিত হয়েছিলেন ডেভি।

স্যার হাম্ফ্রি ডেভি।

ডেভি ও ওয়ার্ডসওয়ার্থ দুজনেরই আরও একটি বিষয়ে খুব ভাল লাগার মিল ছিল। তা হল, দুজনেই ভালবাসতেন পুকুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরতে। বেশ কয়েকবার তাঁরা একসঙ্গে ছিপ হাতে মাছ ধরার জন্যে গিয়েছিলেন।

ডেভির বিজ্ঞানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু ডেভির কাব্যপ্রীতির কথা অনেকেরই জানা নেই। শুধু কাব্য অনুরাগ বলা ঠিক হবে না, বস্তুত ডেভি একসময় কেবল কবিতা লেখার কথা-ই ভেবেছিলেন। উল্লেখ্য যে, হাম্ফ্রি ডেভি কবিতাও লিখেছেন অনেক। রসায়ন চর্চার পাশাপাশি ডেভি আজীবন কাব্যচর্চা করে গিয়েছেন। যেগুলি কাব্য আলোচকদের দ্বারা উচ্চপ্রশংসিতও হয়েছে। তাঁর চিন্তাজগতে কাব্য ও বিজ্ঞানের দুটি ভুবন অপরূপভাবে মিশে গিয়েছিল। কবিতার গুণমুগ্ধ ও বোদ্ধা তো ছিলেনই, পাশাপাশি কাব্যরস সমৃদ্ধ অনেক কবিতাও রচনা করেছেন তিনি। ‘লিরিক্যাল ব্যালাড’-এর দ্বিতীয় সংস্করণে, ওয়ার্ডসওয়ার্থকে তাঁর প্রথমে লেখা ‘ভূমিকা’-টি ডেভির বক্তৃতা শুনে আবার নতুন করে সংশোধন করতে হয়েছিল। ডেভির মন্তব্য শোনার পরে কীভাবে বিজ্ঞান ও কবিতার আদানপ্রদান গড়ে উঠতে পারে, সেই অংশটি লিখেছিলেন ওয়ার্ডসওয়ার্থ।

ডোভ কটেজ।

প্রসঙ্গত, এখানে বিজ্ঞানী হাম্ফ্রি ডেভির সঙ্গে স্বনামধন্য কবি স্যামুয়েল টেলর কোলরিজের বন্ধুত্বের কথা ছুঁয়ে যেতে চাই। বিজ্ঞানী হাম্ফ্রি ডেভি ১৭৯০-এর শেষের দিকে ‘নাইট্রাস অক্সাইড’, যা ‘লাফিং গ্যাস’ নামে পরিচিত, তা নিয়ে ব্রিস্টলে গবেষণা করছিলেন। তার দু’দশক আগে জোসেফ প্রিস্টলি নাইট্রাস অক্সাইড আবিষ্কার করেছিলেন। বস্তুত, ডেভি সে-সময় বোঝার চেষ্টা করছিলেন, লাফিং গ্যাস মানুষের শরীরে ও চেতনায় কী রকম প্রভাব ফেলে। তাঁর সেই লাফিং গ্যাস সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষাতে অংশ নিয়েছিলেন কবিবন্ধু কোলরিজ। নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের প্রভাবে সংবেদন ও চেতনানাশক আচ্ছন্নতার অনুভূতি কেমন হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতার কথা কোলরিজ বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। এছাড়া রয়্যাল সোসাইটির বক্তৃতাকক্ষে যখন ডেভি জনপ্রিয় বিজ্ঞানের কথা পরিবেশন করেছিলেন তাঁর ধারাবাহিক বক্তৃতায়, বিভিন্ন বিজ্ঞানের পরীক্ষা প্রদর্শন করেছিলেন, ডেভির সেইসব প্রতিটি বক্তৃতাতে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান অনুরাগী কবি কোলরিজ।

এই প্রতিবেদকের ‘দুই ভুবনের পারে’ গ্রন্থের (*) ‘সীমানা ছাড়িয়ে’ শীর্ষক একটি রচনায় ডেভি ও কোলরিজের সংযোগ ও সম্পর্কের বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছে।

যাই হোক, বুঝতে অসুবিধা হয় না, সে-সময় এখনকার মত বিদ্যাক্ষেত্র এত বিভাগের খোপে আবদ্ধ ছিল না। শিল্পকলা জগতের একাধিক মানুষ যেমন সমসাময়িক বিজ্ঞান দুনিয়ার নানান অগ্রগতি ও উদ্ভাবন সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতেন, তেমনই একাধিক বিজ্ঞানীর সঙ্গেও ছিল কাব্য, সাহিত্য ও শিল্পকলা জগতের গভীর সংযোগ। তাছাড়া, সেসময় চিন্তানায়ক, দার্শনিক, কবি, শিল্পী, বিজ্ঞানীরা জ্ঞানের একাধিক শাখায় বিচরণ করেছেন, এমন দৃষ্টান্ত অনেক আছে।

কবিতা ও বিজ্ঞানের পারস্পরিক সংযোগ আর অপরূপ সহাবস্থানের এক সংস্কৃতির মোহনার দিকে ফিরে দেখলাম; আজ ৭ এপ্রিল, কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের (১৭৭০-১৮৫০) জন্মদিনে।

* দুই ভুবনের পারে, সিদ্ধার্থ মজুমদার, সৃষ্টিসুখ প্রকাশনা, ২০১৭।

চিত্র: গুগল

5 4 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
3 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Anjana Ghosh
Anjana Ghosh
1 year ago

শিল্পকলা, সাহিত্য, কবিতার সঙ্গে বিজ্ঞানের সহাবস্থান…… লেখক সিদ্ধার্থ মজুমদারের দীর্ঘদিনের গবেষণার এই প্রিয় বিষয়ে….. তাঁর কলম নিঃসৃত নান্দনিক উপস্থাপনায় আরও একবার সমৃদ্ধ হলাম।, ছুঁয়ে গেল ভাললাগা।

Siddhartha Majumdar
Siddhartha Majumdar
1 year ago
Reply to  Anjana Ghosh

মন্তব্যের জন্যে সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ জানাই।

মোহাম্মদ কাজী মামুন
মোহাম্মদ কাজী মামুন
1 year ago

”তাঁর চিন্তাজগতে কাব্য ও বিজ্ঞানের দুটো ভুবন অপরূপভাবে মিশে গিয়েছিল।” দারুণ উক্তি। আসলে দুটোতেই দরকার হয় ইমাজিনেশান। তাই আর্ট ও সায়েন্সের মাঝে – যতই গভীরে ঢোকা – পার্থক্যরেখা ততই ক্ষীণ হতে থাকে। আইনস্টাইন মিউজিকের কী সমঝদারই না ছিলেন। লিউনার্দো দা ভিঞ্চি একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন; কিন্তু খুলে দিয়েছেন বিজ্ঞানের দ্বার। এদিকে আমাদের রবীন্দ্রনাথও সাহিত্যিক হয়েও ছিলেন বৈজ্ঞানিক। তার বিজ্ঞান চিন্তা এতো পরিণত ছিল যে আইনস্টাইনের সাথে ডিবেটে এতটুকু বেগ পেতে হয়নি।

Recent Posts

ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব চার]

তৎকালীন দেশের বাস্তব সত্যের সঙ্গে মিলছে না বর্ণবাদ, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ, মিলছে না পিকেটিং ও বিদেশি দ্রব্য পোড়ানোর আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথ দেখতে পাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষের খাওয়া নেই, নেই বেশি দাম দিয়ে দেশি ছাপ মারা কাপড় কেনার ক্ষমতা। দেখছেন পিকেটিংয়ের নামে গরিব মুসলমানের কাপড়ের গাঁঠরি পুড়ে যাচ্ছে যা দিয়ে সে তার পরিবার প্রতিপালন করে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিবাদ করছেন তাঁর লেখায়। ‘গোরা’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এমনই দু’টি উপন্যাস। গোরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়। পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯১০ সালে। ঘরে বাইরের প্রকাশকাল ১৯১৬।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব তিন]

সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোয় মেয়েদের অবস্থান কী, তা নিশ্চিত অজানা ছিল না তাঁর। সে চিত্র তিনি নিজেও এঁকেছেন তাঁর গল্প উপন্যাসে। আবার ব্রাহ্মধর্মের মেয়েদের যে স্বতন্ত্র অবস্থান খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠেছে, যে ছবি তিনি আঁকছেন গোরা উপন্যাসে সুচরিতা ও অন্যান্য নারী চরিত্রে। শিক্ষিতা, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বময়ী— তা কোনওভাবেই তথাকথিত সনাতন হিন্দুত্বের কাঠামোতে পড়তেই পারে না। তবে তিনি কী করছেন? এতগুলি বাল্যবিধবা বালিকা তাদের প্রতি কি ন্যায় করছেন তিনি? অন্তঃপুরের অন্ধকারেই কি কাটবে তবে এদের জীবন? বাইরের আলো, মুক্ত বাতাস কি তবে কোনওদিন প্রবেশ করবে না এদের জীবনে?

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব দুই]

১৭ বছর বয়সে প্রথম ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে ইংরেজদের বেশ কিছু সামাজিক নৃত্য তিনি শিখেছিলেন। সেদেশে সামাজিক মেলামেশায় নাচ বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে, তা এখন আমরা একপ্রকার জানি। সদ্যযুবক রবীন্দ্রনাথ তাদেরই দেশে তাদের সাথেই নাচের ভঙ্গিতে পা মেলাচ্ছেন। যে কথা আগেও বলেছি, আমাদের দেশের শহুরে শিক্ষিত পুরুষরা নাচেন না। মূলবাসী ও গ্রামীণ পরিসর ছাড়া নারী-পুরুষ যূথবদ্ধ নৃত্যের উদাহরণ দেখা যায় না। এ তাঁর কাছে একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এবং তা তিনি যথেষ্ট উপভোগই করছেন বলে জানা যায় তাঁরই লেখাপত্র থেকে।

Read More »
ড. সোমা দত্ত

রবীন্দ্রনৃত্যভাবনা: প্রেক্ষিত ও চলন [পর্ব এক]

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে জুড়ে থাকা গ্রামজীবনের যূথবদ্ধতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা তাদের শিল্পসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, নানান ঝড়ঝাপটা সত্ত্বেও একেবারে ভেঙে পড়েনি, তবে এই শতাব্দীর বিচ্ছিন্নতাবোধ একে গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। নগরজীবনে সংকট এসেছে আরও অনেক আগে। যত মানুষ প্রকৃতি থেকে দূরে সরেছে, যত সরে এসেছে কায়িক শ্রম থেকে, উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যূথবদ্ধতা ততটাই সরে গেছে তাদের জীবন থেকে। সেখানে নাচ শুধুমাত্র ভোগের উপকরণ হয়ে থাকবে, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

Read More »
শুভদীপ রায়চৌধুরী

শুভদীপ রায়চৌধুরীর দুটি কবিতা

অন্ধকারের তুমি,/ নরম পুঁইমাচার নিচে সবজেটে বহুরূপী/ তোমাকে আলোর কণার ভেতর গড়িয়ে যেতে দেখব বলে/ আমি এই পাগলের পৃথিবী ছেড়েছি/ টিলাপায়ে বাস করি/ নাম, সমুদ্রসম্ভব।/ পাতার ইমারত আছে, আছে/ কিছু দৈনন্দিন কাজ/ মাছ ধরার নাম করে/ বালসাভেলায় অনেকদূর যাওয়া/ যতদূর ভেসে গেলে ঢেউয়ের চুম্বন থেকে/ ছোবলটুকু আলাদা করাই যায় না

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | দ্বিতীয় পর্ব

সকালে চিড়ে নারকেল-কোরা আর গুড় খেয়ে আমি সাইকেলে চেপে ছুটিয়ে দিলাম— আট মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে যখন পৌঁছালাম— তখন গণগণে রোদ্দুর তেষ্টায় গলা কাঠ। ঘন্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে একটা বাড়ি দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়লাম যদি একটু জল খাওয়া যায়। বাড়ির বারান্দায় একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি বসেছিলেন— তার কাছে উদ্দিষ্ট ঠিকানার কথা প্রশ্ন করতেই তিনি উঠে এসে আমার হাত ধরে আমাকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে একটা পাটি পেতে বসতে দিলেন। আমি আবার জল চাইলে বললেন, “দাদাঠাকুর ব্যস্ত হবেন না— ঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন।”

Read More »