তায়েব স্যালি
অনুবাদ: মানব সাধন বিশ্বাস
সে সময় আমি নিশ্চয়ই খুব ছোট ছিলাম। বয়েস তখন ঠিক কত ছিল মনে নেই, তবে এটুকু মনে আছে যে, লোকজন আমায় ঠাকুরদার ন্যাওটা হিসেবেই দেখত। তারা আদর করে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিত, গাল টিপে দিত— যা ঠাকুরদাকে করত না। তাজ্জবের ব্যাপার হল, বাবার সঙ্গে আমি কখনও বাইরে বেরোইনি। আমি রোজ সকালবেলায় মসজিদে কোরান শিখতে যেতাম। সে-সময়টুকু ছাড়া ঠাকুরদা যখনি বাইরে বেরোতেন, আমায় সঙ্গে নিতেন। সেই মসজিদ, সেই নদী, আর তার লাগোয়া খেত— এই ছিল তখন আমাদের জীবনের চৌহদ্দি। আমার সমবয়েসি বেশিরভাগ বাচ্চা মসজিদে কোরান শিখতে যাওয়া নিয়ে গাঁইগুঁই করলেও আমার কিন্তু বেশ লাগত। নিঃসন্দেহে কারণটা হল, চটপট মুখস্থ করে ফেলতে পারতাম পড়াগুলো। যখনি বাইরের কেউ আসত, মসজিদের শেখ-সায়েব সবসময় আমায় ডেকে দাঁড় করিয়ে দিতেন তার সামনে, আর পবিত্র কোরানের পরম করুণাময়ের পরিচ্ছেদটা আবৃত্তি করতে বলতেন। তারপর ওরা আমার মাথায় হাত রেখে, গাল ছুঁয়ে দোয়া করত। ঠিক যেমনটি গাঁয়ের লোকজন করত ঠাকুরদার সঙ্গে আমায় দেখতে পেলে।
হ্যাঁ, আমি মসজিদ ভালবাসতাম। ভালবাসতাম নদীকেও। সকালের কোরান পড়ার পাট চুকিয়ে হাতের কাঠের স্লেটখানা ছুড়ে ফেলে দিয়ে গল্পের জিনের মত একছুটে সিধে চলে যেতাম মায়ের কাছে। তারপর চটপট সকালের নাস্তা সেরে নদীর দিকে ছুটতাম একটা ডুব লাগানোর জন্যে। সাঁতারে দম ফুরিয়ে গেলে নদীর কিনারায় বসে জলের ঢেউ দেখতাম— যে ঢেউয়ের একটা চিলতে বেঁকে পুবমুখী হয়ে উজিয়ে এসে ঘন বাবলা বনের পেছনে লুকিয়ে পড়ত। কল্পনাগুলোকে কব্জায় এনে নিজেকে ওই বনের পেছনে বসত করা দানোদের গুষ্টির একজন হিসেবে দেখতে ভালবাসতাম। ওরা ঢ্যাঙা আর লিকপিকে রোগাটে— ওদের দাড়ি সাদা, আর নাক টিকোলো— ঠিক আমার ঠাকুরদার মত। আমার হাজারো সওয়ালের জবাব যোগানোর আগে ঠাকুরদা তর্জনী দিয়ে নাকের ডগা ঘষে নিতেন। তাঁর দাড়ির কথা বলতে গেলে, সেটা ছিল নরম তুলতুলে আর এলাহি সৌখিন— তুলোর পাঁজার মত ধবধবে সাদা। জীবনে কখনও তামাম মহল্লার এমন কাউকে দেখিনি যে ঠাকুরদার দিকে নজর না দিয়ে তাঁকে সম্বোধন করেছে। কস্মিনকালে এমন কাউকেও দেখিনি যে দরজায় নতজানু না হয়ে আমাদের বাড়িতে ঢুকেছে— আমার মনের ছবিতে সেই বেঁকে যাওয়া আমাদের সেই নদীর বাঁক নিয়ে বাবলা গাছের জঙ্গলের আড়ালে চলে যাওয়ার মত লাগত। আমি ঠাকুরদাকে ভালবাসতাম। মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিলাম, বড় হয়ে ওঁর মত একজন মানুষ হব, অমনই লম্বা রোগাটে চেহারা হবে আমার, দরাজ লম্বা পা ফেলে রাস্তায় হাঁটব।
আমার বিশ্বাস আমিই ছিলাম ওঁর সবচেয়ে প্রিয় নাতি। কেন না আমার তুতোভাইরা ছিল সব হাবাগোবার দল, আর খানদানের বুদ্ধিমান বাচ্চা বলতে ছিলাম আমিই— লোকে অন্তত তাই বলত। আমি বেশ ধরতে পারতাম, ঠাকুরদা কখন আমার হাসিমুখ দেখতে চাইতেন, আর কখন চুপ থাকতে হবে। এ বাদে, ওঁর নামাজের সময়টাও আমি খেয়ালে রাখতাম। কিছু বলার আগেই ওঁর নামাজ-পাটি, আর আঁজলার জন্যে বড় হাতলওয়ালা জগে জল ভরে তৈরি রাখতাম। হাতে কোনও কাজ না থাকলে উনি পবিত্র কোরান থেকে আমার সুরেলা গলার আবৃত্তি মনভরে উপভোগ করতেন। ওঁর মুখ দেখেই বেশ বুঝতাম মনের মাতন।
একদিন ঠাকুরদার কাছে আমাদের পড়শি মাসুদের কথা জানতে চাইলাম। বললাম, ‘পড়শি মাসুদের মত লোককে আপনি ভীষণ অপছন্দ করেন, তাই না?’
নাকের ডগা ঘষে নিয়ে উনি জবাব দিলেন, ‘ওটা একটা কুঁড়ের বাদশা; ওরকম লোককে একদম বরদাস্ত হয় না।’
আমি বললাম, ‘কুঁড়ের বাদশা কী?’
ঠাকুরদা কয়েক মুহূর্ত মাথা ঝুঁকিয়ে, বিশাল মাঠটার বিস্তার দেখতে দেখতে বললেন, ‘মরুভূমির ধার থেকে শুরু করে ওই নীল নদীর কিনারা— দেখতে পাস তুই? মাপলে একশো ফেদান তো হবেই। আর ওই খেজুর গাছ দেখছিস? ওই সন্ত-বাবুল বাবলা শাল গাছগুলো— দেখতে পাচ্ছিস? সব তালুক-মুলুকের মালিক ছিল একা মাসুদ— তার বাপের থেকে ওয়ারিশনের হকদারিতে পাওয়া।’
এরপর ঠাকুরদা চুপ করে গেলেন। ওঁর থেমে যাওয়ার ফাঁকে সুবিধে বুঝে আমি নজর সরিয়ে ওঁর বর্ণনামাফিক সেই বিশাল মাঠের বিস্তার দেখতে লাগলাম। আমি মনে মনে বললাম, ‘ওই খেজুরগাছ, ওইসব গাছপালা বা ওই ফেটেযাওয়া কালোমাটির জমিজেরাতের মালিক কে— এ জেনে কাজ নেই। আমি যা জানি তা হল, এই জায়গাটা আমার স্বপ্নের দুনিয়া— স্রেফ আমার নিজস্ব খেলার খোলা ময়দান।’
ঠাকুরদা এবারে বললেন, ‘হ্যাঁ রে ভাই, চল্লিশ বছর আগেও পুরো তালুকের খোদ মালিক ছিল মাসুদ। এখন তিন ভাগের দুই ভাগের মালিক আমি।’
খবরটা নতুন শোনাল। কেন না এতদিন জানতাম খুদাতালার দুনিয়া সৃষ্টির শুরু থেকে এ জমির মালিক ঠাকুরদা।
‘এই গাঁয়ে পা রাখার সময়ে আমার এক ফেদান জমিও ছিল না, তামাম খাজানার মালিকানা ছিল মাসুদের হাতে। হাল এখন বিলকুল বদলে গেছে। মনে হচ্ছে, ওর কাছে আল্লাতালার আখেরি ডাক আসার আগেই বাকি জমিটাও কিনে ফেলব।’
ঠাকুরদার কথায় কেন যে ভয় পেলাম জানি না। তবে পড়শি মাসুদের অবস্থা বুঝে আমার বড় মায়া হল। আমি কিন্তু সব সময় চাইতাম, ঠাকুরদা যেমন বললেন, তেমনটি যেন একেবারেই না করে বসেন। মাসুদের গান, তার মিঠে গানের গলা, আর দমদার বুদ্বুদের মত খলখল শব্দের প্রাণখোলা হাসির কথা মনে পড়ে গেল। ঠাকুরদা অমন করে কখনও হাসেননি।
আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘মাসুদ কেন জমিজমা বিক্রি করে দেয়?’
‘জেনানা।’ ঠাকুরদা যেভাবে শব্দটা উচ্চারণ করলেন, মনে হচ্ছিল ‘জেনানা’ নির্ঘাত সাঙ্ঘাতিক কিছু হবে। ‘বেটা, এই মাসুদ বহুবার নিকা করা বান্দা। সে প্রতিদফা নিকায় ফেদান-দুয়েক জমি বেচে আমার কাছে।’ একথা শুনে আমিও চটপট হিসেব করে দেখলাম, তাহলে মাসুদ কমবেশি নব্বুই জন জেনানার সঙ্গে এরমধ্যে নিকা সেরে ফেলেছে। তারপরেই মনে এল মাসুদের তিন বিবির কথা, তার দীনহীন নাকাল দশা, তার খোঁড়া গাধা আর সেটার পিঠে-লাগানো ছেঁড়া-ফাটা গদিখানা, আর লোকটার গায়ের ছেঁড়া-আস্তিনের জেলেবা-আলখাল্লার কথা। যে ভাবনাটা এতক্ষণ মনে খোঁচা দিয়ে চলেছিল সেটা প্রায় ঝেড়ে ফেলেছি, এমন সময় দেখি সে আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। আমার সঙ্গে ঠাকুরদার চোখাচোখি হল।
‘আজ আমাদের খেজুর কাটার দিন’, মাসুদ বলল, ‘কি, তোমরা থাকবে তো?’
যদিও আমার মনে হল, সে হয়তো সত্যিই চায় না ঠাকুরদা সেখানে থাকুন, কিন্তু আমি দেখলাম উনি একেবারে এক পায়ে খাড়া হয়ে গেলেন— বিলক্ষণ হাজির থাকবেন। ওঁর চোখদুটো নিমেষের জন্যে চকচক করে উঠল। আমার হাত হ্যাঁচকা টেনে নিলেন— আমরা চললাম মাসুদের জমির দিকে— যেখানে খেজুর কাটা হবে।
সেখানে কেউ একজন ঠাকুরদার বসার জন্যে বলদের চামড়া-বিছানো একটা বসার ছোট চৌকি নিয়ে এল। আমি দাঁড়িয়েছিলাম। বহু লোক জড়ো হয়েছিল, এদের অনেককেই চিনতাম। একসময় আবিষ্কার করলাম, কোনও কারণে আমি একভাবে তাকিয়ে আছি মাসুদের দিকে: দেখি এত লোকজনের ভিড়েও সে নির্বিকার— ঠায় দাঁড়িয়ে। খেজুর গাছের সেই মস্ত ঝাড়ের মালিক সে নিজে, অথচ এসব নিয়ে সে ভাবলেশহীন। মাঝেমধ্যে উঁচু থেকে খেজুরের এক একটি বড় গোছা মাটিতে আছড়ে পড়ার শব্দে সে সজাগ হয়ে ওঠে। গাছের একেবারে মাথায় উঠে-যাওয়া ছেলেটি লম্বা ধারালো কাস্তে দিয়ে খেজুরের বড় একটা গোছায় বেপরোয়া কোপ লাগাচ্ছিল। তা দেখে মাসুদ বলে উঠল, ‘হুঁশিয়ার ভাই, দেখিস— গাছটার দিল খতম করিস না যেন।’
কেউ তার কথায় কান দিল না। গাছের মাথায় উঠে যাওয়া ছেলেটি তার কাজ চালিয়ে গেল ঝটপট, জোরকদমে— যতক্ষণ পর্যন্ত না খেজুরের গোছা মাটিতে আছড়ে এসে পড়ে। মনে হচ্ছিল যেন সত্যিই বলার মত কিছু একটা সিধে বেহেস্ত থেকে নেমে আসছে।
যাই হোক, আমার মনে মাসুদের সেই কথাটা বারবার চক্কর কাটতে লাগল— ‘গাছটার দিল’। তখন থেকেই খেজুর গাছকে ভাবতে লাগলাম এমন কিছু যার অনুভব আছে, একটা দিল আছে যা হরদম ধুকপুক করে। মাসুদের সেই কথাটা ফের একদিন আমার মনে পড়ে গেল, যেদিন একটা ছোট খেজুর গাছের ডাল নিয়ে খেলার সময় তার নজর পড়ল আমার ওপর। ‘এই খেজুরগাছ, বেটা, এরা বিলকুল মানুষদের মত— কী খুশি, আর কী কষ্ট— সব বুঝতে পারে।’ আমি ভেতর থেকে বেমক্কা অস্বস্তির মধ্যে পড়লাম।
এবার আমি যখন আবার একবার দিগন্ত জুড়ে থাকা মাঠটার দিকে তাকালাম, দেখি পিঁপড়েদের সারির মত খেজুরগাছগুলোর গোড়ায় আমার কচিকাঁচা সঙ্গীসাথিরা দিব্বি ভিড় জমিয়েছে। তারা খেজুর জড়ো করছে। তবে বেশ কিছু মুখেও পুরছে। সেগুলো একসঙ্গে জড়ো করে উঁচু একটা ঢিবি তৈরি হল। সেখানে আরও লোক আসতে দেখলাম। তারা পাল্লার হিসেবে ওজন বুঝে নিয়ে খেজুরগুলো বস্তায় পুরে নিচ্ছিল। গুনে দেখলাম তিরিশ বস্তা। ভিড় পাতলা হতে হতে দেখলাম, হুসেন বানিয়া ছাড়া আমাদের মাঠের পুবদিকের ভাগের মালিক মৌসা, আর দুজন লোক শেষমেশ রয়ে গেল। এই দুজনকে আগে কখনও দেখিনি।
একটা হাল্কা শিসের মত আওয়াজ কানে আসতে দেখি, ঠাকুরদা ঘুমিয়ে পড়েছেন। আমি লক্ষ্য করলাম, মাসুদ তার মত একটুও বদলায়নি। সে শুধু একটা বোঁটা মুখে দিয়ে চিবিয়ে চলেছে। ভাবটা এমন যেন খাওয়াটা তার আজ বড্ড বেশি হয়েছে, মুখে যা আছে সেটাকে এখন কী করবে ঠিক করতে পারছে না ।
ঠাকুরদা হঠাৎ জেগে গেলেন। ধড়মড়িয়ে উঠে পড়ে তিনি খেজুরভর্তি বস্তাগুলোর দিকে চলে গেলেন। বানিয়া হুসেন আর মৌসা, যে আমাদের পাশের জমির মালিক, তাঁর পেছন পেছন গেল। মাসুদকে অতি ধীরে ধীরে আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে দেখলাম। মনে হল সে এমন একজন মানুষ যে পিছিয়ে আসতে চায়, কিন্তু তার পা তাকে সামনে এগিয়ে দিচ্ছে। খেজুরের বস্তাগুলোকে মাঝে রেখে তারা গোল হয়ে ঘিরে দাঁড়াল। কেউ কেউ দুটো-একটা খেজুর তুলে মুখে নিয়ে পরখ করতে লাগল। ঠাকুরদা সেখান থেকে একমুঠো তুলে নিয়ে আমার হাতে দিলেন, আমিও চিবোতে লাগলাম। তখন নজরে এল, মাসুদ দু’হাতের তেলোয় কয়েকটা খেজুর নিয়ে নাকের কাছে তুলে নিয়ে পরক্ষণেই ফেরত করে দিল।
এবার ভাগবাঁটোয়ারা হল বস্তাগুলো। হুসেন বানিয়া পেল দশ বস্তা, অচেনা লোকগুলোর প্রত্যেকে পেল পাঁচটা করে, আর ঠাকুরদা পাঁচটা। হিসেবটার কিছুই বুঝতে পারলাম না। এবার মাসুদের দিকে চোখ পড়তেই দেখি, তার চোখদুটো একবার ডানদিক, একবার বাঁদিকে জোরগতিতে নড়াচড়া করছে— ঠিক পথহারানো দুটো ইঁদুরের মত।
‘তাহলে এখনও তোর দেনা থাকছে পঞ্চাশ পাউন্ড’, ঠাকুরদা মাসুদকে বললেন, ‘এ নিয়ে পরে কথা হবে।’
হুসেন তার সাঙ্গপাঙ্গদের ডেকে নিল; তারা গাধা নিয়ে এল। সেই অচেনা দু’জনও উটগুলোকে নিয়ে এল। খেজুরবস্তাগুলো চাপানো হল তাদের পিঠে। গাধাগুলোর একটা ভীষণ চিৎকার জুড়ে দিল। গাধাটার সেই ডাকে বিরক্ত উটগুলোর মুখে গাঁজলা উঠতে লাগল— তারা বিকট আওয়াজ করে নালিশ জাহির করছিল। মনে হল আমি এর মধ্যে মাসুদের কাছাকাছি চলে গিয়েছি— তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছি এমনভাবে যেন আমি তার জামার কিনারাটা অন্তত ছুঁতে পারি। তার গলা থেকে জবাই হওয়া ভেড়ার বাচ্চার মত অদ্ভুত একটা খর্খর্ শব্দ বেরিয়ে আসছিল। কেন জানি না, বুকের মধ্যে একটা তীক্ষ্ণধার চিনচিনে ব্যথার অনুভূতি হল।
আমি ছুটে দূরে চলে গেলাম। ঠাকুরদা ডাকছিলেন, একটু থমকে গেলাম, কিন্তু দৌড়তেই থাকলাম। সেই মুহূর্তে আমার মনে হল, আমার ঠাকুরদা একজন ঘৃণ্য মানুষ। আমি আরও দ্রুতগতিতে দৌড়তে লাগলাম। এ যেন আড়াল করা কোনও গভীর গোপন বয়ে চলেছি। এই অসহ্য ভার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইছিলাম আমি। শেষে নদীর কিনারায় সেই বাঁকটায় পৌঁছে গেলাম, যেখানে নদী বাবলা গাছের জঙ্গলের পেছনে আড়াল হয়ে গেছে। তারপর কী কারণে জানি না, আঙুল ঢুকিয়ে দিলাম গলায়— বমি করে বের করে দিলাম খেজুরগুলো।
চিত্রণ: চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
***
লেখক পরিচিতি
তায়েব স্যালির (১৯২৯-২০০৯) জন্ম ১৯২৯ সালে আফ্রিকার দেশ সুদানের উত্তরাংশের আল শামালিয়া প্রদেশের অন্তর্গত নীল নদ তীরবর্তী আল দাব্বা শহরের অনতিদূরে কারমাকোল নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র ধর্মশিক্ষক পরিবারে। শিক্ষা খারতুম বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজীবন সাহিত্যসেবী। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বি.বি.সি.)-এর আরবি ভাষা বিভাগে সাংবাদিক ছিলেন এবং সেখানে নাটক বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেন। পরে ইউনেস্কো-র প্যারিস শাখায় বেশ কিছুদিন কর্মরত ছিলেন। বিশ শতকের আধুনিক আরবি সাহিত্যের অন্যতম প্রতিভাবান এই জনপ্রিয় লেখক ২০০৯ সালে লন্ডনে প্রয়াত হন। পৃথিবীর ত্রিশটিরও বেশি ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে। তাঁর বহু ছোটগল্পের মধ্যে সংকলনগ্রন্থ ‘ওয়েডিং অফ জিন অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’ ও উপন্যাস ‘দ্য সিজন অফ মাইগ্রেশন’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।