Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

দা ভিঞ্চি কি মোনা লিসার ভ্রু-যুগল আঁকতে ভুলে গিয়েছিলেন

মোনা লিসা। একসঙ্গে উচ্চারণ করে অনেকে বলেন, মোনালিসা। ভুলক্রমেই বলে থাকেন সন্দেহ নেই। অনেকেই জানেন, একমেবাদ্বিতীয়ম এই পেইন্টিংটি এঁকেছিলেন জগদ্বিখ্যাত চিত্রকর লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চি। পাঁচশো বছরেরও আগে আঁকা এই ছবিটি চিত্রকলার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত এবং আলোচিত। দা ভিঞ্চি এই অসামান্য ছবিটি ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি কোনও সময়ে এঁকেছিলেন বলে মনে করা হয়। আজকের প্রতিবেদনে এই মাস্টারপিসটি সম্পর্কে দু-চার কথা, যা আমরা জানি না।

নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, মোনা লিসার কোনও ভ্রু নেই! মনে হয়তো প্রশ্ন জেগেছে, কেন মোনা লিসার ভ্রু নেই? শিল্পী লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চি কি তবে মোনা লিসার ভ্রু-যুগল আঁকতে ভুলে গিয়েছিলেন? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? অনেকেই অবাক হন মোনা লিসার কোনও ভ্রু নেই দেখে। তবে প্যাসকল কোট নামে জনৈক প্রযুক্তিবিদ এই রহস্যের কিনারা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে দা ভিঞ্চি যখন মোনা লিসা এঁকেছিলেন, তখন চিত্রটিতে ভ্রু ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বারবার পরিষ্কার করার কারণে ভ্রুগুলো এমনভাবে মুছে গেছে, যা আজ আর দেখা যায় না।

মোনা লিসা রাজা প্রথম ফ্রান্সিস, চতুর্দশ লুই এবং নেপোলিয়ানের সঙ্গে ঘর করেছেন। অবাক হচ্ছেন? আসলে, চিত্রকর্মটি রাজা প্রথম ফ্রান্সিস, চতুর্দশ লুই এবং নেপোলিয়ানের প্রাসাদে শোভা পেয়েছে কয়েকশো বছর। হ্যাঁ, ইতালিতে থাকার সময়েই দা ভিঞ্চি মোনা লিসা আঁকতে শুরু করেন। রাজা প্রথম ফ্রান্সিসের আমন্ত্রণে ফ্রান্সে যাওয়ার আগে অবধি ছবিটির অঙ্কন সমাপ্ত করেননি শিল্পী। প্রথম ফ্রান্সিস ফন্টেইনব্লু প্রাসাদে মোনা লিসাকে রাখার ব্যবস্থা করেন। অন্তত একশো বছর সেখানে প্রাসাদ আলো করে থেকেছে মোনা লিসা। এরপর রাজা চতুর্দশ লুই এটিকে ভার্সাইয়ের গ্র্যান্ড প্যালেসে রাখেন শোভাবর্ধনের জন্য। সেখান থেকে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে, নেপোলিয়ন বোনাপার্ট পেইন্টিংটি নিয়ে তাঁর খাসকামরায় রাখেন।

মোনা লিসা তখনও বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়নি। আশ্চর্য লাগলেও সত্য, একজন চোর মোনা লিসাকে বিখ্যাত করেছে। হ্যাঁ, মোনা লিসা চুরি হয়ে যাওয়ার পরই বিশ্বজোড়া খ্যাতি পায়। সত্যি বলতে, মোনা লিসা ছবিটি শিল্পজগতে চিরদিন একটি মাস্টারপিস হিসেবেই স্বীকৃত ছিল। তার ঠিকানা ছিল প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়াম। ১৯১১-র গরমকালে ছবিটি চুরি না হওয়া পর্যন্ত মোনা লিসা বিশ্বের সাধারণ মানুষের কাছে ছিল অখ্যাত। সংবাদমাধ্যম এই চুরির কাহিনি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়। দুবছরের বেশি সময় মোনা লিসার পাত্তা পাওয়া যায়নি। একদিন ভিনসেঞ্জো পেরুগিয়া নামে একজন কাচ লাগানোর মিস্ত্রি বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এই চিত্রকর্মটি একজন ইতালীয় শিল্প ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। ভিনসেঞ্জো ল্যুভর মিউজিয়ামে কিছুদিন কাজ করেছিল। যাই হোক, অবশেষে মোনা লিসা পুনরুদ্ধার হওয়ায় গোটা পৃথিবীই কার্যত উল্লাসে মেতে ওঠে।

জেনে অবাক হবেন, মোনা লিসা চুরির ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী পিকাসোর। হ্যাঁ, চুরি-কাণ্ডে সন্দেহভাজনদের তালিকায় নাম ছিল পাবলো পিকাসো-রও। ঘটনার তদন্তের সময়, ফরাসি আধাসামরিক পুলিশকর্তারা এতদূর গিয়েছিলেন যে, চুরি সম্পর্কে পিকাসোর মত বিখ্যাত শিল্পীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেও ছাড়েননি। পুলিশ অফিসাররা অল্পসময়ের জন্য কবি গুইলাম অ্যাপোলিনায়ার-কেও গ্রেপ্তার করেছিলেন, কারণ গুইলাম নাকি একবার বলেছিলেন যে মোনা লিসা চিত্রটি পুড়িয়ে ফেলা উচিত। যদিও পরবর্তীতে পুলিশের সন্দেহ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।

একবারই দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে মোনা লিসা। এমনিতেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, ফরাসি কর্মকর্তারা খুব কমই মোনা লিসাকে তাদের নজরের বাইরে যেতে দিয়েছেন। ফ্রান্সের বাইরে একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই প্রদর্শনের জন্য গিয়েছে মোনা লিসা। তৎকালীন আমেরিকান ফার্স্ট লেডি জ্যাকলিন লি কেনেডি ওনাসিস, যিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির স্ত্রী তথা সমাজকর্মী, লেখক, ফটোগ্রাফার এবং পুস্তক সম্পাদক, তিনি জানতে চেয়েছিলেন যে মোনা লিসাকে ঝটিকা-সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনা যেতে পারে কিনা? এই প্রস্তাবে সম্মত হন ফরাসি রাষ্ট্রপতি দে গল। সেবার ওয়াশিংটন ডিসি-র ন্যাশনাল গ্যালারি অফ আর্ট এবং তারপরে নিউ ইয়র্ক সিটির মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টসে ‘মোনা লিসা’ প্রদর্শিত হয়েছিল।

পাঁচশো বছরেরও আগে আঁকা এই ছবিটি চিত্রকলার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত এবং আলোচিত।

মোনা লিসা কোনও ক্যানভাসে আঁকা চিত্রকর্ম নয়। বরং এটি আঁকা হয়েছে পপলার গাছে কাঠের তক্তার ওপর। দা ভিঞ্চি সাধারণত সরাসরি দেয়ালের ওপর ভেজা প্লাস্টারে ফ্রেস্কো পদ্ধতিতে চিত্রকলা অঙ্কন করতেন, তাই কাঠের তক্তার ওপর মোনা লিসাকে আঁকার বিষয়টা খুব অস্বাভাবিক মনে হয় না। যদিও চতুর্দশ শতক থেকেই শিল্পীদের কাছে ক্যানভাস সহজলভ্য ছিল, তা সত্ত্বেও রেনেসাঁর অনেক অগ্রণী শিল্পী তাঁদের ছোটখাটো শিল্পকর্মের ভিত্তি হিসেবে কাঠই পছন্দ করতেন।

জানলে অবাক হবেন, সকলেই মোনা লিসার অনুরাগী নন। অনেকে এই অপূর্ব চিত্রকর্মটির দফারফা করতে চেয়েছে নানা সময়ে। এইরকম অন্তত দুটি হামলার ঘটনা ঘটে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে। এক দুষ্কৃতী মোনা লিসার গায়ে অ্যাসিড মেরে এবং অপর দুষ্কৃতী পাথর ছুড়ে ছবিটির ক্ষতি করতে চেয়েছে। সেই ক্ষত ক্ষীণ পরিমাণে হলেও আজও লক্ষ্যনীয়। ১৯৭৪ এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে আরও দুবার দুষ্কৃতী হামলার শিকার হয়েছে মোনা লিসা। প্রথমবার স্প্রে পেইন্ট ছড়িয়ে এবং শেষ বার কফির কাপ ছুড়ে মোনা লিসাকে বিকৃত করার চেষ্টা হয়। তবে দুবারই বুলেটপ্রুফ কাচের আড়াল অসামান্য ছবিটিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।

মোনা লিসা চিঠি পায় এবং তার নিজস্ব মেলবক্স-ও রয়েছে। বিশ্ববাসীর আদরের মোনা লিসা রীতিমত প্রেমপত্র পায়। হ্যাঁ, ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামে আসার পর থেকে মোনা লিসা অনুরাগীদের কাছ থেকে অজস্র প্রেমপত্র ও ফুল পেয়ে এসেছে। যে কারণে মোনা লিসার একান্ত মেলবক্স-ও রয়েছে। পাশাপাশি, ল্যুভর মিউজিয়ামে মোনা লিসার নিজস্ব কক্ষও রয়েছে। ২০০৩ সালে একটি চতুর্বার্ষিকী প্রকল্পে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫২ কোটি টাকা খরচ করে মোনা লিসার খাসকামরার ব্যবস্থা হয়। সেখানে প্রাকৃতিক আলোর জন্য রয়েছে একটি কাচের সিলিং। একটি অভঙ্গুর কাচের শো-কেস ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় রাখতে এবং সামান্য স্পটলাইটের আলো ভিঞ্চির আঁকা ছবির আসল রং ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

মোনা লিসা ক্রয় অথবা বিক্রয়যোগ্য নয়। ফরাসি হেরিটেজ আইন অনুসারে মোনা লিসা কোনওদিন কেনা কিংবা বেচা যায় না। ল্যুভর মিউজিয়ামের সংগ্রহের অংশ হিসেবে ‘মোনা লিসা’ ফরাসি জনতার এবং মোনা লিসা তাঁদের হৃদয়ে বিদ্যমান। আক্ষরিক অর্থেই মোনা লিসা অমূল্য। তার দাম হয় না।

কতিপয় ঐতিহাসিক মনে করেন যে, মোনা লিসা আদতে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির একটি আত্মপ্রতিকৃতি। দা ভিঞ্চি প্রয়াত হন ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে। তাঁকে একটি ফরাসি দুর্গে সমাহিত করা হয়। ইতালির ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর কালচারাল হেরিটেজ’ একটি অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং সেই অনুসন্ধানের অঙ্গ হিসেবে দা ভিঞ্চির মাথার খুলি খুঁড়ে বের করার পরিকল্পনাও করছে। আসলে, তারা সিএসআই-স্টাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে লিওনার্দোর মুখাবয়বের পুনর্নির্মাণ করতে চাইছে। তবে তা কি রহস্যময় হাসির মোনা লিসার সঙ্গে মিলবে?

চিত্র: গুগল
5 3 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
নুশান
নুশান
1 year ago

বেশ লাগল পড়তে! অজানা মজার কিছু ঘটনা জানলাম!

Recent Posts

শুভ্র মুখোপাধ্যায়

ভূতের একটি বাজে গল্প

দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিতেই প্রথমে যেটি চোখে পড়ল, সেটি সেই লাল-হলুদ মাফলার, খাটের পাশে ঝোলানো। তাহলে সিড়িঙ্গেবাবু নিশ্চয়ই এই ঘরেই অধিষ্ঠান করেন, তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছেন। হঠাৎ আমি ভূতগ্রস্তের মত করিডর ধরে হাঁটছি আর এক-একটা করে ঘরের দরজা ঠেলে ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছি। কী আশ্চর্য, প্রতিটি ঘরেই কোথাও না কোথাও দেখছি একটা করে ওই লাল-হলুদ মাফলার ঝুলছে। যত দ্রুত পারি দোতলায় ঘরগুলোর দরজা ঠেলে উঁকি দিলাম। সবখানেই এক ছবি।

Read More »
সুজিত বসু

কবিতা: জীবনের নানা দিক

ট্রেনের জানালা থেকে চোখে পড়ে ঘাসের গালিচা/ কোমল রোদের স্নেহে ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল শান্তির নিদ্রায়/ সমুদ্রে দ্বীপের মতো ছোট ছোট বাড়িগুলি ঘাসের শয্যায়/ অতি দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যাবলি, ট্রেন থামে ব্রাসেলস স্টেশনে/ বেলজিয়ামের মোহ দূরে রেখে ট্রেন চলে স্থির নিশানায়/ অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে, আমস্টারডাম ডাকে কুহকী মায়ায়/ নগরে পৌঁছেই এক নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরী ট্রামেরা/ হাতছানি দিয়ে ডাকে, বহু বহুদিন পরে প্রিয় বাহনের/ ডাকে সাড়া দিয়ে আমি পৌঁছে যাই মহার্ঘ নিবাসে

Read More »
নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়

অবিন্যস্ত | প্রথম পর্ব

আমাদের খেলা করা দরকার, তাই আমাদের কয়েকজন ছেলে মিলে ক্লাব তৈরি করতে হবে। কোথায় করা যায়? — অমুক জায়গায় — ওই জায়গাটা পড়ে আছে, তা যাদের জায়গা তারা বললেন, “ওই তো ওখানে জঙ্গল হয়ে আছে, তা যদি তোমরা জঙ্গল-টঙ্গল পরিষ্কার-ঝরিষ্কার করে ক্লাব তৈরি করতে পার তো করো।” আমাদের আর পায় কে — আমরা মহাবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম সেই জঙ্গলে। উদ্ধার করলাম। উদ্ধার-টুদ্ধার করে এর বাড়ি থকে চারটে বাঁশ, ওর বাড়ি থেকে তিনটে হোগলা এভাবে যোগাড়-যন্ত্র করে-টরে একটা চালাঘর তৈরি করা হলো। সেই চালাঘরকেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে আমাদের নতুন লাইব্রেরী তৈরি হলো। ক্লাবের নাম হলো ‘সেনহাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

Read More »
সন্দীপ মজুমদার

বাঘের হাত থেকে বাঁচতে বাঘেশ্বরীদেবীর পুজো! সেই থেকেই ‘বাগনান’!

ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি বাঘের উপস্থিতির জন্যই তখন ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয় বলে প্রখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরার অভিমত। এই বিষয়ে তিনি আরও জানান, আরবি ভাষা অনুযায়ী ‘নান’ কথার অর্থ হল ‘চরভূমি’। ‘নান’ শব্দের আরও একটি অর্থ হল ‘ছাউনি’। তখন কাছারিপাড়া ছাড়াও নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ইংরেজ সেনাদের ছাউনি ছিল বলে জানা যায়। যার মধ্যে খাদিনান, পাতিনান, খাজুরনান, বাইনান, চিৎনান, মাছিনান ইত্যাদি জনপদগুলি উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নদীর চরে বাঘেশ্বরী দেবীর পুজো হত, সেই জন্য প্রাথমিকভাবে এলাকাটি ‘বাঘনান’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে ‘বাঘনান’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বাগনান’-এ পরিণত হয়েছে।

Read More »
আবদুল্লাহ আল আমিন

কবিগান: সমাজবাস্তবতা, বিষয়বৈভব ও রূপবৈচিত্র্য

এমন লোকপ্রিয় বিষয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলা ভাষা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে কবিগান ও কবিয়ালদের অবদানের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিগান সংগ্রহ এবং এ বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিয়ালদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কিংবা কবিগানকে সংরক্ষণে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আলোচ্য গ্রন্থের লেখক এ গানকে সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন, এই গানের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে লোকায়ত বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা দিক যার অধিকাংশই অনালোচিত ও অনালোকিত রয়েছে অদ্যাবধি।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

মহাত্মা অশ্বিনীকুমার: মৃত্যুঞ্জয়ী প্রতিভা

সর্বভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন, এবং জাতীয় কংগ্রেসে নিয়মিত যোগ দিতেন। কংগ্রেসের আবেদন-নিবেদনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখে সিপাহী বিদ্রোহের পূর্ববর্তী বছরের জাতক এবং প্রখর প্রজ্ঞাবান অশ্বিনীকুমার ১৮৯৭-এর কংগ্রেসের অমরাবতী অধিবেশনে দৃঢ়তার সঙ্গে একে ‘Threedays’ mockery’,— ‘তিনদিনের তামাশা’ বলে উল্লেখ করেন। দুর্ভাগ্য দেশের, তাঁর কথা অনুধাবন করলেও কেউ গুরুত্ব দেননি। সে-অধিবেশনের সভাপতি চেট্টুর শঙ্করণ নায়ারকে নিয়ে অক্ষয়কুমার-অনন্যা পাণ্ডে অভিনীত বায়োপিক তৈরি হয়েছে। অথচ সারা উপমহাদেশ-কাঁপানো অশ্বিনীকুমারের মূল্যায়ন আজ-ও অপেক্ষিত।

Read More »