Search
Generic filters
Search
Generic filters
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp

দুই দার্শনিকের আদালত-যুদ্ধ

ভারতবর্ষে আবহমান কাল থেকে গুরু-শিষ্যের একটা পরম্পরা চলে আসছে। সেখানে গুরুর স্থান পিতা ও মাতার সঙ্গেই। কিন্তু এই পরম্পরাতেও কখনও কখনও গুরু-শিষ্যের বিরোধ এমন একটা জায়গায় চলে গিয়েছে, সেখানে আমরা প্রমাদ গণতে আরম্ভ করেছি। এই প্রসঙ্গে আমরা মহাভারতের কথা উল্লেখ করতে পারি। আমরা গুরু দ্রোণাচার্যের সঙ্গে পাণ্ডবদের সম্মুখসমরের কথা জানতে পারি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, দ্রোণাচার্য ও পাণ্ডবরা উভয়েই কিন্তু গুরু-শিষ্যের পরম্পরায় বিশ্বাসী ছিলেন।

আধুনিককালেও এমন এক গুরু-শিষ্যের বিরোধের কথা জানতে পারি, সেখানে আমাদের স্তম্ভিত হয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। এই গুরু-শিষ্যের বিরোধ হল ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ও ড. যদুনাথ সিংহের বিরোধ। যেখানে যদুনাথ ছিলেন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের ছাত্র। কথাগুলো শুনতে অদ্ভুত লাগবারই কথা। পরিচিতির দিক থেকে কোথায় যদুনাথ সিংহ, আর কোথায় স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (১৯৫২-১৯৬২) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি (১৯৬২-১৯৬৭) ও দেশের অন্যতম সেরা দার্শনিক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ।

ড. যদুনাথ সিংহ।

ঘটনাটি আপাতভাবে হাস্যকর মনে হলেও ভুলে গেলে চলবে না, বিদ্যায় ও বুদ্ধিতে যদুনাথ রাধাকৃষ্ণণের চেয়ে কোনও অংশে কম ছিলেন না। পেয়েছিলেন দেশ ও বিদেশের অনেক পুরস্কার। রাধাকৃষ্ণণ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর তিরুট্টানিতে। তাঁর বাবা সর্বপল্লী বীরস্বামী তাঁকে পুরোহিত বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেই নিজের অদম্য ইচ্ছেশক্তি ও পরিশ্রমের দ্বারা ভারতের অন্যতম একজন শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর জন্মদিনেই দেশে পালিত হয় ‘শিক্ষক দিবস’।

অন্যদিকে যদুনাথ সিংহের জন্ম ১৮৯২ সালে, বীরভূমের করুম গ্রামে। পরবর্তী কালে তাঁর পরিবার মুর্শিদাবাদ এবং কলকাতায় থাকতে শুরু করেন। এই সময় তাঁর জীবনে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার বিকাশ ঘটে এবং তিনি তন্ত্র ও ভক্তিসাধনার ওপর বিশ্বাস করে জীবনযাপন আরম্ভ করেন। ১৯১৭ সালে তিনি এমএ পাশ করেন এবং ১৯৩৪ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে ফিলিপ স্যামুয়েল ও ক্লাইন্ট মেমোরিয়াল পুরস্কারের জন্যেও আবেদন করেন।

খবরের কাগজে প্রতিবেদনের অংশ।

১৯২৫ সালে যদুনাথ সিংহ ‘ইণ্ডিয়ান সাইকোলজি অফ পারসেপশন’ নামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যদিও এর আগে ১৯২২ ও ১৯২৩ সালে গবেষণাপত্রটি দুটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়। শুধু তাই নয়, এই গবেষণার জন্য যদুনাথ সিংহ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌয়াট মেডেল ও গ্রিফিত পুরস্কার পান। এরপর যদুনাথ মীরাট কলেজে অধ্যাপনার জন্য চলে যান। অন্যদিকে ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কিং জর্জ ফাইভ চেয়ার অব মেন্টাল অ্যান্ড মোরাল সায়েন্স’ পদে নির্বাচিত হন ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। দর্শনশাস্ত্রের নিরিখে এই পদটি সেই সময় গোটা ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা সম্মানজনক পদ ছিল। বলা হয়, সম্ভবত ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এইখানেই যদুনাথ সিংহর গবেষণাপত্রটি পড়েন। দুজনের মধ্যে এরপর একটা সাময়িক বিচ্ছেদ ঘটে। রাধাকৃষ্ণণ তাঁর বিখ্যাত ‘ইন্ডিয়ান ফিলোসফি’ লেখার কাজে মন দেন, যদুনাথ সিংহের কথা আগে বলা হয়েছে।

এরপরেই ঘটে সেই ভয়ংকর ঘটনা। অভিযোগ করা হয়, যদুনাথ সিংহের ‘ইন্ডিয়ান সাইকোলজি অফ পারসেপশন’ থেকে হবহু পাতার পর পাতা রাধাকৃষ্ণণ তাঁর ‘ইন্ডিয়ান ফিলোসফি’-র দ্বিতীয় খণ্ডে টুকে দেন। ঘটনাচক্রে এই সময় রাধাকৃষ্ণণের ‘দ্য বেদান্ত অ্যাকর্ডিং টু শংকর অ্যান্ড রামানুজ’ নামের অপর একটি বই প্রকাশ হয়, এবং এই বই থেকেই যদুনাথ সেই ‘চুরি’-র কথা জানতে পারেন। যে বইয়ের মাধ্যমে রাধাকৃষ্ণণ সমগ্র ভারতবর্ষের সামগ্রিক দর্শন তুলে ধরবার চেষ্টা করেন, সেই বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ড নিয়েই মূলত রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

খবরের কাগজে প্রতিবেদনের অংশ।

যদুনাথ সিংহ এই অভিযোগটি পেয়ে চুপ করে বসে না থেকে সেই সময় রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ‘মর্ডান রিভিউ’-এর ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল তিন মাস ধরে এই খবর প্রকাশ করেন। বিষয়টি এখানেই থেমে থাকে না। এই বছরের অগাস্ট মাসে যদুনাথ সিংহ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে মামলা করেন। রাধাকৃষ্ণণও চুপ না থেকে যদুনাথ সিংহ ও ‘মর্ডান রিভিউ’-এর সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এক লক্ষ টাকার মামলা করেন। এই প্রসঙ্গে রাধাকৃষ্ণণ নিজে দাবি করেন, ১৯২৪ সালেই তাঁর ‘ইন্ডিয়ান ফিলোসফি’ লেখা হয়ে যায়, প্রকাশক না পাওয়ার কারণে প্রকাশ করতে দেরি হয়।

এই মামলার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় তারিখ। এক স্বনামধন্য শিক্ষক ও তাঁর ছাত্রর মামলা এবং মধ্যে এক বিশ্ববিদ্যালয়, সব মিলিয়ে এই মামলা নিয়ে সবার একটা আলাদা উদ্দীপনা ছিল। অনেকে অবশ্য এই মামলার অন্য আর-একটি দিকের কথাও ভাবেন। তাঁরা বলেন, যদুনাথ সিংহয়ের সঙ্গে একটা বাঙালি আবেগ কাজ করে। আসলে অনেকেই দক্ষিণ ভারতীয় সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ওই রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেননি। স্বয়ং রাধাকৃষ্ণণ কলকাতার শিক্ষিত সমাজের একটি অংশের উপেক্ষার শিকার হন।

খবরের কাগজে প্রতিবেদনের অংশ।

যদুনাথ সিংহ মহাশয়ের অভিযোগের অনেক আগে থেকেই ‘মর্ডান রিভিউ’-তে রাধাকৃষ্ণণের সমালোচনা হত। স্বাভাবিকভাবে যদুনাথ সিংহ মহাশয়ের অভিযোগের পরে আগুনে ঘি পড়বার মত অবস্থার সৃষ্টি হয়। যেহেতু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে এই রকম একটা বিতর্কিত বিষয় আদালত পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তাই বিশ্ববিদ্যালয়, বলা ভাল ‘বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’-এর পক্ষ থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায়, দুপক্ষের মধ্য আলোচনার ভেতর দিয়ে বিতর্কটির অবসান হয়। অনেকে মনে করেন, প্রভাবশালী মহল থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল যদুনাথের ওপর। ১৯৩০ সালের মে মাসে উভয় পক্ষই নিজের নিজের দাবি তুলে নেয়।

শোনা যায়, আদালতের বাইরেই এই ‘মামলা’-র নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আসল বিষয় ঠিক কী ছিল বা কী হয়েছিল, এবং তার সমাধানই বা কীভাবে হল সে বিষয়ে কেউই আর কোনও কথা বলেননি। সে যাই হোক, বিষয়টি নিয়ে সেই সময় একটা অপরিসীম আগ্রহ সবার মধ্যে তৈরি হয়েছিল। তবে দুই দার্শনিকের আদালত-যুদ্ধ এতদিন পরেও দেশের অন্যতম চর্চিত বিষয়, যা রাধাকৃষ্ণণের মত ব্যক্তিত্বেরও গায়ে অমোচনীয় দাগের মত লেগে রয়েছে।

চিত্র: গুগল
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Recent Posts

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

কবি-কিশোর সুকান্ত: মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

শৈশবেই জন্মস্থান কালীঘাট থেকে বেলেঘাটায় চলে আসেন। ওখানকার দেশবন্ধু বিদ্যালয়ে পড়াকালীন হাতেলেখা ‘সপ্তমিকা’ বের করতেন। বরাবর ভাল ফল করতেন বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ম্যাট্রিক পাশ করতে পারেননি, সম্ভবত অঙ্কে কাঁচা ছিলেন বলে। বাংলার তিন বরেণ্য কবি-ই দশম মান উৎরোননি। আর আজ ম্যাট্রিকে এঁদের তিনজনের লেখা-ই পাঠ্যতালিকায় অপরিহার্য! একটি কৌতূহলী তথ্য হল, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তাঁকে নিয়ে বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কাজী নজরুল এবং সুকান্ত। তাঁদের পরস্পরের সঙ্গে কি আলাপ হয়েছিল?

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

বাঙালি রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ ছিল না। বিশ্বভারতীতে তিনি বক্তৃতা দিতে উদার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে, কাজী নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দীন খাঁ, কাজী আবদুল ওদুদকে। গান শেখাতে আবদুল আহাদকে। বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্দিন প্রমুখকে তিনি কাহিনির প্লট বলে দেন, যেমন দেন গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়কে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়েন তাঁর-ই বদান্যতায়। লালন শাহ্ তাঁর কল্যাণেই পরিচিতি পান ইংল্যান্ড তথা ইয়োরোপে। বঙ্গভঙ্গকালীন সময়ে কলকাতার নাখোদা মসজিদে গিয়ে তিনি মুসলমানের হাতে রাখী পরিয়ে আসেন। বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল ফজল, আবুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ চলে, যেমন চলে হেমন্তবালা দেবী, বুদ্ধদেব বসু বা বনফুলের সঙ্গে। এক অখণ্ড বাঙালিয়ানায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি, জাতপাত, বর্ণ বা ধর্মের ঊর্ধ্বে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

গুড ফ্রাইডে

রাজশক্তি যখন কাউকে বিপজ্জনক মনে করে, যেমন অতীতে সক্রেটিসকে মনে করেছে, তখন তাঁকে বিনাশ করতে যাবতীয় তৎপরতা দেখাতে কুণ্ঠিত হয় না। একথা অনস্বীকার্য, বুদ্ধদেব, হজরত মুহাম্মদ বা যিশু মানবজাতির মৌল একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যিশু যা চেয়েছিলেন, তার সরলার্থ রবীন্দ্রনাথ ‘মুক্তধারা’ নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর রাজার প্রতি যে উক্তি, তাতে স্পষ্ট করেছিলেন, ‘মানুষের ক্ষুধার অন্ন তোমার নয়, উদ্বৃত্ত অন্ন তোমার’। যেমন রসুলুল্লাহ সুদ বর্জনের নিদান দেন, সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচাতে। এঁরা তাই মানবমুক্তির অগ্রদূত।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

সনজীদা খাতুন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাতচল্লিশ-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক সংস্থা গড়ে ওঠে, যাদের মধ‍্যে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’, ‘ক্রান্তি’, ‘উদীচী’ অন‍্যতম। রাজনৈতিক শোষণ ও পূর্ববঙ্গকে নিপীড়নের প্রতিবাদে কখনও পরোক্ষভাবে কখনও সরাসরি ভূমিকা রেখেছিল এইসব সংগঠন। ‘ছায়ানট’ এমনি আর এক আগ্নেয় প্রতিষ্ঠান, ১৯৬৭-তে জন্মে আজ পর্যন্ত যার ভূমিকা দেশের সুমহান ঐতিহ‍্যকে বাংলাদেশের গভীর থেকে গভীরতরতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে সুস্থ ও সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তোলা। ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুনের মানসসন্তান এই ছায়ানট। মূলত রবীন্দ্রনাথের আদর্শে গড়ে ওঠা সঙ্ঘ, কাজী নজরুলের প্রিয় নামটিকে জয়ধ্বজা করে এগিয়ে চলেছে বহু চড়াই-উৎরাই, উপলব‍্যথিত গতি নিয়ে।

Read More »
মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়

ঢাকায় বিবেকানন্দ: ১২৫ বছর পূর্তি

ঢাকায় এসে খুব বেশি বক্তৃতা দেননি তিনি। সম্ভবত তাঁর শারীরিক অসুস্থতাই তার কারণ। মার্চের তিরিশ তারিখে রমাকান্ত নন্দীর সভাপতিত্বে ঢাকার বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয়) ভাষণ দেন। বিষয় ‘আমি কী দেখেছি’। শ্রোতার সংখ্যা ছিল দু’হাজার। পরদিন অর্থাৎ ৩১.০৩-এ বক্তৃতা দেন পোগোজ স্কুলে, তিন হাজার দর্শকের সামনে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম’। দুটি সভাতেই শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ, আপ্লুত ও উদ্বুদ্ধ।

Read More »
সুজিত বসু

সুজিত বসুর গুচ্ছকবিতা

বিলাপ অভিসার জল আনতে চল রে সখী, জল আনতে চল নিভু নিভু আলোর সাজে সূর্য অস্তাচলে শেষবিকেলের রশ্মিমালায় বুকে ব্যথার ঢল লজ্জা আমার আবির হয়ে

Read More »